সম্পাদকীয়
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতির গর্ব, অথচ সময়ের ব্যবধানে মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও বিতর্ক আর বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। জাতি হিসেবে এ সত্য অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে স্বাধীনতা অর্জনের লড়াইয়ে সব মানুষ একই কাতারে ছিল না। কোনো দেশেই কখনো সব মানুষ একটি বিষয়ে একইভাবে ভাবে না। চিন্তার বৈচিত্র্যই মানুষের বৈশিষ্ট্য।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিরূপতার একটি বড় কারণ রাজনৈতিক বিভক্তি। তা ছাড়া গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থতাও সমাজে ভুল ধারণা তৈরিতে সহায়ক হয়েছে। এখন আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধকে কোনোভাবেই বিতর্কিত করতে না দেওয়া। একাত্তর আমাদের গৌরবময় অতীত, এর ভিত্তি ধ্বংস হলে জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্বও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তাই একাত্তরের চেতনা থেকে বিচ্যুত না হয়ে, বরং এটিকে ঘিরেই ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে গড়ে তোলা প্রয়োজন।
বৈষম্য বিরোধিতা একাত্তরের মূলমন্ত্রগুলোর একটি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ সময় পরেও আমাদের সমাজে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, আর্থিক সামর্থ্য—প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই বৈষম্য প্রকট। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, ধর্মবিশ্বাসকে ব্যবহার করে বৈষম্যকে বৈধতা দেওয়ার প্রয়াস। কেউ যদি নিজেকে ধার্মিক দাবি করেন, অথচ অপর ধর্ম বা ভিন্ন বিশ্বাসের মানুষের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেন, তাহলে বিষয়টি কেমন দাঁড়ায়?
মানবিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি মানুষের জন্য ন্যায়বিচার ও সমান অধিকারের নিশ্চয়তা। ধর্মবিশ্বাস থাকুক বা না থাকুক, মানুষ হিসেবে সম্মান পাওয়ার অধিকার সবার রয়েছে।
একটি আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মানুষের চিন্তার বৈচিত্র্য মেনে নেওয়াই বড় কথা। মানুষ কখনো যন্ত্র নয়, তাদের চিন্তা, বিশ্বাস এবং মূল্যবোধ ভিন্ন হতেই পারে। তবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে বৈচিত্র্যের মধ্য থেকে সঠিক দিকটি তুলে ধরা এবং সেটা গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করা। একটি জাতিকে পরিচালনা করতে হলে পুরো জাতিকে যান্ত্রিক সমতাভাবে বিচার করা অসম্ভব। বরং তাদের চাহিদা, সামর্থ্য ও বেঁচে থাকার ন্যূনতম প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিতে হবে। রাষ্ট্র যদি প্রকৃত সমতা নিশ্চিত করতে চায়, তাহলে প্রতিটি মানুষের প্রতি প্রয়োজনানুসারে দায়িত্বশীল হতে হবে।
সমতা মানে যে সব মানুষকে একই আকার-আকৃতি, ধ্যানধারণার মধ্যে বেঁধে দেওয়া নয়, সেটা বুঝতে হবে। এটি এমন একটি নীতির দাবি করে, যেখানে মানুষ তার প্রয়োজনমতো জীবিকার উপকরণ ও সুযোগ পায়। কেউ খাদ্যের অভাবে না খেয়ে মারা যাবে না, কেউ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবে না, কেউ শিক্ষালাভের সুযোগ হারাবে না—এটাই সমতার ভিত্তি।
বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। একাত্তরের চেতনার আলোকে, সাম্য, ন্যায় ও মানবিকতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। আমাদের রাজনীতি আর সমাজব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে একটাই প্রশ্ন রাখতে হবে—কীভাবে সবচেয়ে বেশি মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়।
বিভিন্ন মতবাদকে স্বীকার করে, মানুষের বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে এবং মুক্তিযুদ্ধের গৌরবকে অটুট রেখে বাংলাদেশ যে ঐক্যের পথে হাঁটতে পারে, সেটিই হবে এক নতুন দিনের সূচনা।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতির গর্ব, অথচ সময়ের ব্যবধানে মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও বিতর্ক আর বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। জাতি হিসেবে এ সত্য অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে স্বাধীনতা অর্জনের লড়াইয়ে সব মানুষ একই কাতারে ছিল না। কোনো দেশেই কখনো সব মানুষ একটি বিষয়ে একইভাবে ভাবে না। চিন্তার বৈচিত্র্যই মানুষের বৈশিষ্ট্য।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিরূপতার একটি বড় কারণ রাজনৈতিক বিভক্তি। তা ছাড়া গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থতাও সমাজে ভুল ধারণা তৈরিতে সহায়ক হয়েছে। এখন আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধকে কোনোভাবেই বিতর্কিত করতে না দেওয়া। একাত্তর আমাদের গৌরবময় অতীত, এর ভিত্তি ধ্বংস হলে জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্বও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তাই একাত্তরের চেতনা থেকে বিচ্যুত না হয়ে, বরং এটিকে ঘিরেই ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে গড়ে তোলা প্রয়োজন।
বৈষম্য বিরোধিতা একাত্তরের মূলমন্ত্রগুলোর একটি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ সময় পরেও আমাদের সমাজে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, আর্থিক সামর্থ্য—প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই বৈষম্য প্রকট। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, ধর্মবিশ্বাসকে ব্যবহার করে বৈষম্যকে বৈধতা দেওয়ার প্রয়াস। কেউ যদি নিজেকে ধার্মিক দাবি করেন, অথচ অপর ধর্ম বা ভিন্ন বিশ্বাসের মানুষের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেন, তাহলে বিষয়টি কেমন দাঁড়ায়?
মানবিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি মানুষের জন্য ন্যায়বিচার ও সমান অধিকারের নিশ্চয়তা। ধর্মবিশ্বাস থাকুক বা না থাকুক, মানুষ হিসেবে সম্মান পাওয়ার অধিকার সবার রয়েছে।
একটি আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মানুষের চিন্তার বৈচিত্র্য মেনে নেওয়াই বড় কথা। মানুষ কখনো যন্ত্র নয়, তাদের চিন্তা, বিশ্বাস এবং মূল্যবোধ ভিন্ন হতেই পারে। তবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে বৈচিত্র্যের মধ্য থেকে সঠিক দিকটি তুলে ধরা এবং সেটা গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করা। একটি জাতিকে পরিচালনা করতে হলে পুরো জাতিকে যান্ত্রিক সমতাভাবে বিচার করা অসম্ভব। বরং তাদের চাহিদা, সামর্থ্য ও বেঁচে থাকার ন্যূনতম প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিতে হবে। রাষ্ট্র যদি প্রকৃত সমতা নিশ্চিত করতে চায়, তাহলে প্রতিটি মানুষের প্রতি প্রয়োজনানুসারে দায়িত্বশীল হতে হবে।
সমতা মানে যে সব মানুষকে একই আকার-আকৃতি, ধ্যানধারণার মধ্যে বেঁধে দেওয়া নয়, সেটা বুঝতে হবে। এটি এমন একটি নীতির দাবি করে, যেখানে মানুষ তার প্রয়োজনমতো জীবিকার উপকরণ ও সুযোগ পায়। কেউ খাদ্যের অভাবে না খেয়ে মারা যাবে না, কেউ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবে না, কেউ শিক্ষালাভের সুযোগ হারাবে না—এটাই সমতার ভিত্তি।
বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। একাত্তরের চেতনার আলোকে, সাম্য, ন্যায় ও মানবিকতার ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। আমাদের রাজনীতি আর সমাজব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে একটাই প্রশ্ন রাখতে হবে—কীভাবে সবচেয়ে বেশি মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়।
বিভিন্ন মতবাদকে স্বীকার করে, মানুষের বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে এবং মুক্তিযুদ্ধের গৌরবকে অটুট রেখে বাংলাদেশ যে ঐক্যের পথে হাঁটতে পারে, সেটিই হবে এক নতুন দিনের সূচনা।
আবদুল হাই তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে তুলে ধরেছেন ঈদের উৎসব কীভাবে সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে। আগে ঈদ ছিল আন্তরিকতা, ভাগাভাগি ও আত্মত্যাগের প্রতীক; আজ তা হয়ে উঠেছে প্রদর্শন, প্রতিযোগিতা ও বাহ্যিক আয়োজনের উৎসব। লেখক আক্ষেপ করেন, এখন ঈদের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে ‘কন্টেন্ট’, গরুর নাম, ব্যানার আর মোবাইল ক্যাম
৪ ঘণ্টা আগে২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে এক বিশেষ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, যেখানে একটি অভ্যুত্থানোত্তর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে রয়েছে এবং পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র একধরনের অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা ও বৈষম্যের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। আশা করা হয়েছিল, অরাজনৈতিক সরকারের বাজেটে
১ দিন আগেসংবাদপত্রের পাতায় প্রকাশিত কোনো কোনো শিরোনাম ও সংবাদ বিশেষ আগ্রহ নিয়ে পড়তে চান পাঠক। আজকের পত্রিকায় ৩১ মে প্রকাশিত প্রধান শিরোনাম, ‘৬ মাসের টানাটানিতে ভোট’ শীর্ষক সংবাদটি সম্পর্কে আমাকে একজন সম্পাদক ফোন করে প্রশংসা করলেন। আমি বুঝতে পারলাম শিরোনামটি যথেষ্ট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভোট নিয়ে জনগণের আগ
৩ দিন আগেঈদ—এই শব্দটির সঙ্গে অগণিত মানুষের হৃদয়ে যে অনুভব জাগে, তা আনন্দ, উৎসব আর মিলনের। ঘরে ঘরে নতুন জামা, সুস্বাদু খাবার, কোলাকুলি আর রঙিন খুশির চিত্র যেন ঈদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে সেই পরিচিত দৃশ্যের বাইরে যে একটা বড় প্রশ্ন থেকে যায়, তা হলো—ঈদ কি সবার জন্য একরকম? ঈদের দিন কি সকলের মুখেই সমান হাসি? ঈদের আনন
৩ দিন আগে