ড. মো. গোলাম রহমান
সংবাদপত্রের পাতায় প্রকাশিত কোনো কোনো শিরোনাম ও সংবাদ বিশেষ আগ্রহ নিয়ে পড়তে চান পাঠক। আজকের পত্রিকায় ৩১ মে প্রকাশিত প্রধান শিরোনাম, ‘৬ মাসের টানাটানিতে ভোট’ শীর্ষক সংবাদটি সম্পর্কে আমাকে একজন সম্পাদক ফোন করে প্রশংসা করলেন। আমি বুঝতে পারলাম শিরোনামটি যথেষ্ট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভোট নিয়ে জনগণের আগ্রহ এবং ভোটে অংশগ্রহণ করার উৎসাহ দেশের মানুষের কাছে সব সময়ই ছিল এবং আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক কালের ভোটের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য জনগণকে শুধু নিরুৎসাহিতই করেনি, বরং রাজনীতিবিমুখ হতে বাধ্য করেছে। উপরিউক্ত সংবাদটিতে রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন মহলের ভাবনার প্রতিচ্ছবি উন্মোচিত হয়েছে। বিএনপি বলছে ভোট ডিসেম্বরের মধ্যেই হতে হবে; সরকার আশ্বস্ত করেছে জুনের পর এক দিনও না। এই দোলাচলে দেশের জনগণ অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করছে—কবে নাগাদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়?
১০ মাস। যেকোনো হিসাবেই ১০ মাস খুব সংক্ষিপ্ত সময় নয়। একজন মা অনেক কষ্ট আর যত্ন দিয়ে জন্ম দেন তাঁর শিশুটিকে। এই বিশ্বে অনেক শিশুর মতো ১০ মাসে একটি শিশু জন্মলাভ করে। নতুন আলোর মুখ দেখে। নতুন প্রত্যাশায় জন্ম নেয় প্রতিটি শিশু। দ্রুত পেরিয়ে যাচ্ছে সময়। যে শিরোনামের কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম, তার মূল বিষয়টি হচ্ছে নির্বাচন।
‘মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে আলোচনাসহ নানা ইস্যুতে সৃষ্ট অস্থির পরিস্থিতিতে গত মাসের মাঝামাঝিতে নড়েচড়ে বসে বিএনপিসহ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। এ পরিস্থিতিতে ২৪ ও ২৫ মে বিএনপিসহ দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। এসব বৈঠকে অধিকাংশ দলের পক্ষ থেকেই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা দিতে প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানানো হয়। বিএনপি নির্বাচনের রোডম্যাপ, জামায়াত সংস্কার ও নির্বাচন, এনসিপির পক্ষ থেকে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানানো হয়।’
এই সংবাদ নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সেই সম্পাদক। এইসব মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, দেশের নির্বাচন সংশয়ের মুখোমুখি।
বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় ও উদ্বেগের পেছনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভিন্ন মতামত রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল ও নিরপেক্ষতার প্রশ্নে দেখা যায়, ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়, ফলে বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা অনেকের কাছে নিরপেক্ষতার অভাব হিসেবে দেখা যায়। অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে কি না, তা নিয়ে জনমনে গভীর সন্দেহ রয়েছে, পত্র-পত্রিকায় এসব মতামতের প্রকাশ ঘটেছে। দেখা যায়, বিগত নির্বাচনের বিতর্ক ও অংশগ্রহণের সীমাবদ্ধতাও একই কারণে। বিগত নির্বাচনে বিরোধী দলের অংশগ্রহণ ছিল সীমিত, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ ছিল খুবই কম। ভোট জালিয়াতি, পেশিশক্তির ব্যবহার এবং প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ প্রসঙ্গক্রমেই উত্থাপিত হয়েছে। তাতে করে নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা হ্রাস পাওয়া স্বাভাবিক।
গত ২৮ মে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশে বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশের জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ একটি সরকার দ্রুত দেখতে চাই।’ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তিনি জোর দাবি জানান যে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। তিনি নতুন প্রজন্মের ভাই-বোনদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আপনারা জাতীয় নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত হয়, তার প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন।’
এদিকে সুশীল সমাজও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সংশয়ের মধ্যে রয়েছে। বর্তমান প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে তারা সন্দেহমুক্ত নয়। ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা বাহিনীর আচরণ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয় করছে বলে তারা মনে করে। অনেকে মনে করেন, নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা উচিত। ভোটারদের মধ্যে অনেকে বিশ্বাস করেন, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা এবং প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা যেমন জরুরি বিষয়, তেমনি রাজনৈতিক সহনশীলতা নিশ্চিত না হলে সুষ্ঠুভাবে জনমুখী নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়তো সম্ভব নয়।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জনমনে সংশয় ও উদ্বেগ বিরাজ করছে, তা বলাই বাহুল্য। আমরা জানি, সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যকর অংশগ্রহণ যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রশাসনিক নিরপেক্ষতাও প্রয়োজন। নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে, তবে তাদের সিদ্ধান্তের ওপর সুষ্ঠু নির্বাচন যেন নির্ভরশীল না হয়ে পড়ে।
নির্বাচন নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের দোদুল্যমান মনোভাব এবং এর ফলে পরিলক্ষিত হচ্ছে সুস্পষ্ট নীতি-নির্দেশনার অভাব। সংস্কারের প্রশ্নে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিদ্যমান মতভিন্নতা এই সরকারকে আরও বেশি দ্বিধাদ্বন্দ্বে ফেলেছে বলে মনে হয়। কিংবা বলা যায়, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল, এদের অনেককেই খুচরা দল হিসেবে মনে করে থাকে, তাদের সমর্থন এবং সামর্থ্য যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন, তারা এই সুযোগে উদ্দেশ্য হাসিলের রাজনীতি করছে। আমরা জানি, জনগণের সমর্থন ব্যতীত কোনো সরকার দেশ শাসনের অধিকার রাখে না। দেশে সংস্কারের যে স্লোগান শুরু হয়েছে, তাতে সময়ক্ষেপণের অভিযোগ হিসেবেও পরিগণিত হচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে। সংস্কারের মূল বক্তব্য সম্পর্কে আমরা এখনো কোনো মহল থেকে তার সুস্পষ্ট রূপরেখা পাচ্ছি না।
দেশের উন্নয়নের সঙ্গে অর্থনীতি, অবকাঠামো এবং সমাজ উন্নয়ন ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অভ্যন্তরীণ গুণগত পরিবর্তনই সংস্কার। অবশ্যই সংস্কার একটি গতিশীল প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া কতটুকু ধাবমান কিংবা তার গতিপথে কী কী প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে তার প্রতিকার করতে পারাই সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। অতএব, সংস্কারের সূত্রপাত যেভাবেই হোক না কেন, তা গতিশীল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চালু থাকবে। নির্বাচিত সরকারই পারে জনগণের মতামতের ওপর ভিত্তি করে সমাজ উন্নয়নের এই বৈশিষ্ট্যগুলোকে কার্যকরভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে। সংস্কারের অন্যতম দর্শন হতে পারে দেশ ও সমাজের স্বাভাবিক সময়ের দাবি এবং গণ-আন্দোলনে সৃষ্ট নতুন ধারার উন্নয়ন চিন্তা সমন্বয়ের মাধ্যমে এই সমাজ কার্যকরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
সংস্কার প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে হেলাফেলা করা চলবে না। ‘আজ তরুণদের সুনামি হয়েছে, তাঁরা গণতন্ত্র ও নির্বাচনের বার্তা দিচ্ছেন। সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনের রোডম্যাপ পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।...এখন বলা হচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে নাকি ঐকমত্য হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য না হয়ে থাকলে সেটা করবে জনগণ। ভোট ও ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার সেই সংস্কার করবে।’
বিএনপিকে যমুনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেছেন, ‘আলোচনার কোনো কমতি নেই; কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং সংস্কারের নামে তাঁদের কলা দেখানো হচ্ছে। ২ তারিখে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার আবার শুভ উদ্বোধন হবে। প্রথম পর্যায়ে আলোচনার একবার উদ্বোধন করেছেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে আবার উদ্বোধন করবেন, তৃতীয় পর্যায়ে গিয়ে আপনারা আবার এটা একত্র করবেন। এভাবে আপনারা আমাদের সংস্কারের কলা দেখাচ্ছেন!’
ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন দিতে হবে জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এটা জনগণের দাবি। ডিসেম্বরের পর নির্বাচন না দেওয়ার কোনো কারণ নেই। ডিসেম্বরের পর নির্বাচনের জন্য একটি যুক্তি থাকলেও তা যেন সরকার প্রকাশ করে।’
বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। এ দেশের অর্থনীতি, সমাজ, উন্নয়ন—সবকিছুর সঙ্গে রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। বিশ্বে আমাদের ভাবমূর্তি গঠন ও উন্নয়নে আন্তর্জাতিক শক্তিসমূহকে অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শক্তি বিশেষভাবে আগ্রহ দেখিয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে এসব দেশের চাপ বিভিন্ন সময়ে লক্ষ করা গেছে। তবে আমাদের এই দেশ নিয়ে তাদের নিজস্ব ভূরাজনৈতিক স্বার্থও রয়েছে। এই আন্তর্জাতিক চাপ ও প্রভাব নির্বাচনী পরিবেশকে ক্রমেই আলোচনার বিষয় হিসেবে দেশে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
জনগণের মতামত কিংবা রায় ব্যতীত দেশ শাসনের অধিকার কারও নেই। গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান এই যুক্তির কোনো বিকল্পও নেই। কারণ, অনির্বাচিত সরকার কোনো দেশেই দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করে সেই দেশের স্থায়ী মঙ্গল করতে পারেনি। এই ধরনের প্রচেষ্টা যেকোনো দেশের জন্য অভিশাপ হিসেবেই বিবেচিত হয়ে থাকে। যত দিন পর্যন্ত স্বাভাবিক গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প আবিষ্কার না হয়, তত দিন আমাদের এই দর্শনের ওপর ভিত্তি করেই চলতে হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠের পছন্দ ও মতামতকে শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখানো জাতির জন্য কল্যাণকর বলে বিবেচনা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ক্ষমতায় গেলেই সাধারণত শাসকগোষ্ঠী স্বেচ্ছায় বা বিশেষ উদ্দেশ্যে অন্ধ কিংবা বধির হয়ে যায়। তাদের শ্রবণ বা দর্শন ইন্দ্রিয় পুরোপুরি কাজ করে বলে মনে হয় না। তখন জনগণ অতি ক্ষুদ্র এবং বিরক্তিকর অপ্রয়োজনীয় উপাদান হয়ে ওঠে। জনগণকে ভুলে থাকতে পারলে তাদের অনেক সুবিধা। জনগণ সত্যি কথা উচ্চারণ করলে কিংবা স্লোগান দিলে তাদের বড় কষ্ট হয়! নির্বোধ জনগণ কেন যে অহেতুক তাদের বিরক্ত করে, তা তারা বুঝতে পারে না! সেই বোধ ও শক্তি তাদের থাকে না। নানা আইনকানুনের আশ্রয়ে তারা জনগণের আন্দোলন, বিদ্রোহ দমন করতে তৎপর হয়ে ওঠে।
দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলের সমর্থনে ভোটে জয়লাভ করে জনগণের শাসন বহাল রাখার জন্য যে সরকার গঠিত হয়, তাদের নির্দিষ্ট সময় দেশের সেবা করার অধিকার প্রশংসার দাবি রাখে। নির্বাচন নিয়ে ছয়নয় করার কোনো সুযোগ ভোটার কিংবা জনগণ কাউকে দেয়নি। জনগণের সমর্থন ব্যতীত কোনো সরকার দেশের জন্য কল্যাণকামী কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, যুগে যুগে এটি প্রতীয়মান হয়েছে। আশা করি, আমাদের শিক্ষা ভুল হওয়ার নয়। আমরা জনগণের হয়ে তাঁদের সঙ্গে থাকি, তাঁদের নিয়ে সম্মানের সঙ্গে বাঁচি।
সংবাদপত্রের পাতায় প্রকাশিত কোনো কোনো শিরোনাম ও সংবাদ বিশেষ আগ্রহ নিয়ে পড়তে চান পাঠক। আজকের পত্রিকায় ৩১ মে প্রকাশিত প্রধান শিরোনাম, ‘৬ মাসের টানাটানিতে ভোট’ শীর্ষক সংবাদটি সম্পর্কে আমাকে একজন সম্পাদক ফোন করে প্রশংসা করলেন। আমি বুঝতে পারলাম শিরোনামটি যথেষ্ট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভোট নিয়ে জনগণের আগ্রহ এবং ভোটে অংশগ্রহণ করার উৎসাহ দেশের মানুষের কাছে সব সময়ই ছিল এবং আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক কালের ভোটের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য জনগণকে শুধু নিরুৎসাহিতই করেনি, বরং রাজনীতিবিমুখ হতে বাধ্য করেছে। উপরিউক্ত সংবাদটিতে রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন মহলের ভাবনার প্রতিচ্ছবি উন্মোচিত হয়েছে। বিএনপি বলছে ভোট ডিসেম্বরের মধ্যেই হতে হবে; সরকার আশ্বস্ত করেছে জুনের পর এক দিনও না। এই দোলাচলে দেশের জনগণ অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করছে—কবে নাগাদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়?
১০ মাস। যেকোনো হিসাবেই ১০ মাস খুব সংক্ষিপ্ত সময় নয়। একজন মা অনেক কষ্ট আর যত্ন দিয়ে জন্ম দেন তাঁর শিশুটিকে। এই বিশ্বে অনেক শিশুর মতো ১০ মাসে একটি শিশু জন্মলাভ করে। নতুন আলোর মুখ দেখে। নতুন প্রত্যাশায় জন্ম নেয় প্রতিটি শিশু। দ্রুত পেরিয়ে যাচ্ছে সময়। যে শিরোনামের কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম, তার মূল বিষয়টি হচ্ছে নির্বাচন।
‘মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে আলোচনাসহ নানা ইস্যুতে সৃষ্ট অস্থির পরিস্থিতিতে গত মাসের মাঝামাঝিতে নড়েচড়ে বসে বিএনপিসহ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। এ পরিস্থিতিতে ২৪ ও ২৫ মে বিএনপিসহ দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। এসব বৈঠকে অধিকাংশ দলের পক্ষ থেকেই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা দিতে প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানানো হয়। বিএনপি নির্বাচনের রোডম্যাপ, জামায়াত সংস্কার ও নির্বাচন, এনসিপির পক্ষ থেকে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানানো হয়।’
এই সংবাদ নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সেই সম্পাদক। এইসব মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, দেশের নির্বাচন সংশয়ের মুখোমুখি।
বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় ও উদ্বেগের পেছনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভিন্ন মতামত রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল ও নিরপেক্ষতার প্রশ্নে দেখা যায়, ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়, ফলে বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা অনেকের কাছে নিরপেক্ষতার অভাব হিসেবে দেখা যায়। অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে কি না, তা নিয়ে জনমনে গভীর সন্দেহ রয়েছে, পত্র-পত্রিকায় এসব মতামতের প্রকাশ ঘটেছে। দেখা যায়, বিগত নির্বাচনের বিতর্ক ও অংশগ্রহণের সীমাবদ্ধতাও একই কারণে। বিগত নির্বাচনে বিরোধী দলের অংশগ্রহণ ছিল সীমিত, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ ছিল খুবই কম। ভোট জালিয়াতি, পেশিশক্তির ব্যবহার এবং প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ প্রসঙ্গক্রমেই উত্থাপিত হয়েছে। তাতে করে নির্বাচন নিয়ে জনগণের আস্থা হ্রাস পাওয়া স্বাভাবিক।
গত ২৮ মে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশে বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশের জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ একটি সরকার দ্রুত দেখতে চাই।’ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তিনি জোর দাবি জানান যে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। তিনি নতুন প্রজন্মের ভাই-বোনদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আপনারা জাতীয় নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত হয়, তার প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন।’
এদিকে সুশীল সমাজও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সংশয়ের মধ্যে রয়েছে। বর্তমান প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে তারা সন্দেহমুক্ত নয়। ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা বাহিনীর আচরণ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয় করছে বলে তারা মনে করে। অনেকে মনে করেন, নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা উচিত। ভোটারদের মধ্যে অনেকে বিশ্বাস করেন, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা এবং প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা যেমন জরুরি বিষয়, তেমনি রাজনৈতিক সহনশীলতা নিশ্চিত না হলে সুষ্ঠুভাবে জনমুখী নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়তো সম্ভব নয়।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জনমনে সংশয় ও উদ্বেগ বিরাজ করছে, তা বলাই বাহুল্য। আমরা জানি, সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যকর অংশগ্রহণ যেমন প্রয়োজন, তেমনি প্রশাসনিক নিরপেক্ষতাও প্রয়োজন। নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে, তবে তাদের সিদ্ধান্তের ওপর সুষ্ঠু নির্বাচন যেন নির্ভরশীল না হয়ে পড়ে।
নির্বাচন নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের দোদুল্যমান মনোভাব এবং এর ফলে পরিলক্ষিত হচ্ছে সুস্পষ্ট নীতি-নির্দেশনার অভাব। সংস্কারের প্রশ্নে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিদ্যমান মতভিন্নতা এই সরকারকে আরও বেশি দ্বিধাদ্বন্দ্বে ফেলেছে বলে মনে হয়। কিংবা বলা যায়, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল, এদের অনেককেই খুচরা দল হিসেবে মনে করে থাকে, তাদের সমর্থন এবং সামর্থ্য যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন, তারা এই সুযোগে উদ্দেশ্য হাসিলের রাজনীতি করছে। আমরা জানি, জনগণের সমর্থন ব্যতীত কোনো সরকার দেশ শাসনের অধিকার রাখে না। দেশে সংস্কারের যে স্লোগান শুরু হয়েছে, তাতে সময়ক্ষেপণের অভিযোগ হিসেবেও পরিগণিত হচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে। সংস্কারের মূল বক্তব্য সম্পর্কে আমরা এখনো কোনো মহল থেকে তার সুস্পষ্ট রূপরেখা পাচ্ছি না।
দেশের উন্নয়নের সঙ্গে অর্থনীতি, অবকাঠামো এবং সমাজ উন্নয়ন ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অভ্যন্তরীণ গুণগত পরিবর্তনই সংস্কার। অবশ্যই সংস্কার একটি গতিশীল প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া কতটুকু ধাবমান কিংবা তার গতিপথে কী কী প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে তার প্রতিকার করতে পারাই সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। অতএব, সংস্কারের সূত্রপাত যেভাবেই হোক না কেন, তা গতিশীল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চালু থাকবে। নির্বাচিত সরকারই পারে জনগণের মতামতের ওপর ভিত্তি করে সমাজ উন্নয়নের এই বৈশিষ্ট্যগুলোকে কার্যকরভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে। সংস্কারের অন্যতম দর্শন হতে পারে দেশ ও সমাজের স্বাভাবিক সময়ের দাবি এবং গণ-আন্দোলনে সৃষ্ট নতুন ধারার উন্নয়ন চিন্তা সমন্বয়ের মাধ্যমে এই সমাজ কার্যকরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
সংস্কার প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে হেলাফেলা করা চলবে না। ‘আজ তরুণদের সুনামি হয়েছে, তাঁরা গণতন্ত্র ও নির্বাচনের বার্তা দিচ্ছেন। সংস্কারের কথা বলে নির্বাচনের রোডম্যাপ পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।...এখন বলা হচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে নাকি ঐকমত্য হয়নি। গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য না হয়ে থাকলে সেটা করবে জনগণ। ভোট ও ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার সেই সংস্কার করবে।’
বিএনপিকে যমুনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেছেন, ‘আলোচনার কোনো কমতি নেই; কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং সংস্কারের নামে তাঁদের কলা দেখানো হচ্ছে। ২ তারিখে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার আবার শুভ উদ্বোধন হবে। প্রথম পর্যায়ে আলোচনার একবার উদ্বোধন করেছেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে আবার উদ্বোধন করবেন, তৃতীয় পর্যায়ে গিয়ে আপনারা আবার এটা একত্র করবেন। এভাবে আপনারা আমাদের সংস্কারের কলা দেখাচ্ছেন!’
ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন দিতে হবে জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এটা জনগণের দাবি। ডিসেম্বরের পর নির্বাচন না দেওয়ার কোনো কারণ নেই। ডিসেম্বরের পর নির্বাচনের জন্য একটি যুক্তি থাকলেও তা যেন সরকার প্রকাশ করে।’
বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। এ দেশের অর্থনীতি, সমাজ, উন্নয়ন—সবকিছুর সঙ্গে রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক। বিশ্বে আমাদের ভাবমূর্তি গঠন ও উন্নয়নে আন্তর্জাতিক শক্তিসমূহকে অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শক্তি বিশেষভাবে আগ্রহ দেখিয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে এসব দেশের চাপ বিভিন্ন সময়ে লক্ষ করা গেছে। তবে আমাদের এই দেশ নিয়ে তাদের নিজস্ব ভূরাজনৈতিক স্বার্থও রয়েছে। এই আন্তর্জাতিক চাপ ও প্রভাব নির্বাচনী পরিবেশকে ক্রমেই আলোচনার বিষয় হিসেবে দেশে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
জনগণের মতামত কিংবা রায় ব্যতীত দেশ শাসনের অধিকার কারও নেই। গণতন্ত্রের অন্যতম প্রধান এই যুক্তির কোনো বিকল্পও নেই। কারণ, অনির্বাচিত সরকার কোনো দেশেই দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করে সেই দেশের স্থায়ী মঙ্গল করতে পারেনি। এই ধরনের প্রচেষ্টা যেকোনো দেশের জন্য অভিশাপ হিসেবেই বিবেচিত হয়ে থাকে। যত দিন পর্যন্ত স্বাভাবিক গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প আবিষ্কার না হয়, তত দিন আমাদের এই দর্শনের ওপর ভিত্তি করেই চলতে হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠের পছন্দ ও মতামতকে শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখানো জাতির জন্য কল্যাণকর বলে বিবেচনা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ক্ষমতায় গেলেই সাধারণত শাসকগোষ্ঠী স্বেচ্ছায় বা বিশেষ উদ্দেশ্যে অন্ধ কিংবা বধির হয়ে যায়। তাদের শ্রবণ বা দর্শন ইন্দ্রিয় পুরোপুরি কাজ করে বলে মনে হয় না। তখন জনগণ অতি ক্ষুদ্র এবং বিরক্তিকর অপ্রয়োজনীয় উপাদান হয়ে ওঠে। জনগণকে ভুলে থাকতে পারলে তাদের অনেক সুবিধা। জনগণ সত্যি কথা উচ্চারণ করলে কিংবা স্লোগান দিলে তাদের বড় কষ্ট হয়! নির্বোধ জনগণ কেন যে অহেতুক তাদের বিরক্ত করে, তা তারা বুঝতে পারে না! সেই বোধ ও শক্তি তাদের থাকে না। নানা আইনকানুনের আশ্রয়ে তারা জনগণের আন্দোলন, বিদ্রোহ দমন করতে তৎপর হয়ে ওঠে।
দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলের সমর্থনে ভোটে জয়লাভ করে জনগণের শাসন বহাল রাখার জন্য যে সরকার গঠিত হয়, তাদের নির্দিষ্ট সময় দেশের সেবা করার অধিকার প্রশংসার দাবি রাখে। নির্বাচন নিয়ে ছয়নয় করার কোনো সুযোগ ভোটার কিংবা জনগণ কাউকে দেয়নি। জনগণের সমর্থন ব্যতীত কোনো সরকার দেশের জন্য কল্যাণকামী কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, যুগে যুগে এটি প্রতীয়মান হয়েছে। আশা করি, আমাদের শিক্ষা ভুল হওয়ার নয়। আমরা জনগণের হয়ে তাঁদের সঙ্গে থাকি, তাঁদের নিয়ে সম্মানের সঙ্গে বাঁচি।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে এক বিশেষ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, যেখানে একটি অভ্যুত্থানোত্তর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে রয়েছে এবং পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র একধরনের অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা ও বৈষম্যের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। আশা করা হয়েছিল, অরাজনৈতিক সরকারের বাজেটে
৪ ঘণ্টা আগেঈদ—এই শব্দটির সঙ্গে অগণিত মানুষের হৃদয়ে যে অনুভব জাগে, তা আনন্দ, উৎসব আর মিলনের। ঘরে ঘরে নতুন জামা, সুস্বাদু খাবার, কোলাকুলি আর রঙিন খুশির চিত্র যেন ঈদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে সেই পরিচিত দৃশ্যের বাইরে যে একটা বড় প্রশ্ন থেকে যায়, তা হলো—ঈদ কি সবার জন্য একরকম? ঈদের দিন কি সকলের মুখেই সমান হাসি? ঈদের আনন
১ দিন আগে১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঈদ এসেছিল। সেই ঈদের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে একটা বিশেষ নাটক লিখেছিলাম। যুদ্ধরত শিল্পীদের অভিনয়ে সমৃদ্ধ হয়ে নাটকটি প্রচারিত হয়েছিল ঈদের আগের দিন। নাটকটির নাম ছিল ‘চান্দের তলোয়ার’। ঈদের চাঁদ সাধারণত আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। খুশির এই ঈদের বড় প্রতীক হলো চাঁদ।
১ দিন আগেদরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। প্রতিবছর আরবি বর্ষপঞ্জির ১০ জিলহজ ঈদের নামাজ ও পশু কোরবানির মাধ্যমে উদ্যাপিত হয় এই উৎসব। আনন্দ-উল্লাসের পাশাপাশি এই উৎসবের লক্ষ্য—ত্যাগের মহিমায় সমাজটা সুন্দর করে তোলা, স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জনে সৃষ্টির জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া।
১ দিন আগে