Ajker Patrika

রবীন্দ্রনাথের ব্রজেশ্বর

সম্পাদকীয়
রবীন্দ্রনাথের ব্রজেশ্বর

রবীন্দ্রনাথকে নিয়েই কথা, আবার রবীন্দ্রনাথকে নিয়েও নয়। আসলে কথা হচ্ছে ব্রজেশ্বরকে নিয়ে। রবীন্দ্রনাথের ছেলেবেলায় পরিচারকদের সর্দার ছিলেন তিনি। চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলতেন, গম্ভীর ছিল মেজাজ, আর ছিল কড়া গলা।

পেটুক ছিলেন তিনি। ভেতরে ভেতরে খাওয়ার লোভটা ছিল। রবীন্দ্রনাথদের  পাতে খাবার সাজিয়ে রাখা ছিল নিয়ম, কিন্তু খাওয়ার সময় নাকের সামনে লুচি দুলিয়ে ব্রজেশ্বর বলতেন, ‘আর দেব কি?’

রবীন্দ্রনাথ বুঝতেন, কোন উত্তর শুনলে ব্রজেশ্বর খুশি হবেন। তাই বলতেন, ‘চাইনে!’ এ শব্দটি শুনলে লুচি নিতে আর পীড়াপীড়ি করতেন না ব্রজেশ্বর।

রবীন্দ্রনাথ দুধ পছন্দ করতেন না আর ব্রজেশ্বরের ছিল দুধের প্রতি অসম্ভব টান। তাই সে দুধ কার ভোগে লাগত, সেটা নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না। ব্রজেশ্বরের কল্যাণেই কম খাওয়ার অভ্যাস হয়ে  গিয়েছিল রবীন্দ্রনাথের। রবীন্দ্রনাথের শরীর এতটাই ভালো ছিল যে শরীরের ওপর নানা জুলুম করেও কোনো অসুখে পড়তে পারতেন না। মাস্টারের সামনে না পড়ার জন্য কত চেষ্টা করতেন। জুতো ভেজাতেন পানিতে, তা পায়ে দিয়ে চলতেন পথ। না, তাতে জ্বর আসত না, সর্দি হতো না। কার্তিক মাসে ভিজে চুলে, ভিজে জামা পরে খোলা ছাদে শুয়ে থাকতেন, কিন্তু একটুও খুসখুসে কাশির দেখা মেলেনি। পেট খারাপও হতো না। কিন্তু মাস্টার মশায়ের হাত থেকে বাঁচার জন্য অবলীলায় পেটব্যথার কথা বলতেন। তাতে মা হাসতেন, অর্থাৎ তিনি বুঝতে পারতেন রোগটা আসলে কী। কিন্তু কিছু বলতেন না। বরং মাস্টারকে খবর পাঠাতেন, আজ পড়া বন্ধ।

রবীন্দ্রনাথ এ নিয়ে লিখতে লিখতে তারপর লিখেছেন, কেন ব্রজেশ্বরের মতো পরিচারক দরকার। ব্রজেশ্বর ভালো ও ভেজালহীন খাবারের ব্যবস্থা করত বলে অসুখ হতো না, তাই ডাক্তারের খরচা বেঁচে যেত। আর ব্রজেশ্বরের বদান্যতায় কম খাওয়া হতো বলে খাবার খরচাও যেত বেঁচে! 

সূত্র: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ছেলেবেলা, পৃষ্ঠা ১৯

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত