Ajker Patrika

অপরাধ নিয়ন্ত্রণ জরুরি

সম্পাদকীয়
অপরাধ নিয়ন্ত্রণ জরুরি

রাজধানী ঢাকায় সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধপ্রবণতার উদ্বেগজনক বৃদ্ধি জনমনে গভীর দুশ্চিন্তার সৃষ্টি করেছে। ২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে খুন, অপহরণ, ছিনতাই ও ডাকাতি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৮২.৫ শতাংশ বেশি। এ নিয়ে ১৩ জুলাই আজকের পত্রিকায় একটা সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

এ ধরনের অপরাধ বৃদ্ধি শুধু এ বছরের ব্যাপার না। গত বছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে তা ধারাবাহিকভাবে চলছে। আমাদের স্মরণে থাকা দরকার যে, গত বছরের ৫ আগস্টের রাত থেকে দেশের অধিকাংশ থানা থেকে পুলিশের অস্ত্র লুট করা হয়েছিল। সেই লুট করা অস্ত্র পরবর্তী সময়ে সিকি পরিমাণ উদ্ধার করা সম্ভব হলেও অধিকাংশ অস্ত্র বেহাত থেকে যায়। কথা হলো, এই অস্ত্রগুলো কার হাতে গেছে? আমরা ধারণা করতে পারি, নিশ্চয়ই কোনো নিরপরাধ মানুষ সেসব অস্ত্র নেয়নি। অপরাধীদের কাছে অস্ত্রগুলো আছে। তারাই এখন নিজের প্রয়োজনে সেই অস্ত্র দিয়ে নানা ধরনের অপরাধ করছে।

৫ আগস্টের পর চিহ্নিত অনেক দাগি আসামি এবং জঙ্গিদের জেলখানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তারাই যে অপরাধগুলো করছে না, তার নিশ্চয়তা কী? আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সেভাবে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত কেন তাদের সক্রিয় করা গেল না, সেটা সরকারের ব্যর্থতা নয়কি?

সহিংস ও প্রাণঘাতী অপরাধের এই ঊর্ধ্বগতিতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে হত্যাকাণ্ডে। এ ছাড়া ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনাও দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে, যা নাগরিকদের নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা তৈরি করেছে। এসব অপরাধ শুধু পুলিশের নথিভুক্ত ঘটনা, বাস্তবে অপরাধের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

দ্রুত এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর ও সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে ‘বিশেষ অভিযান’ পরিচালনা করা হয়। কিন্তু শুধু এই অভিযানই যথেষ্ট নয়। অপরাধ দমনের পাশাপাশি অপরাধের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধানে নজর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং যুবকদের মধ্যে হতাশা কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সক্রিয় ও জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে, যাতে অপরাধীরা আইনের ফাঁক গলে বের হতে না পারে। এ ছাড়া নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পুলিশের সঙ্গে তাদের সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক নিশ্চিত করাও গুরুত্বপূর্ণ।

অপরাধ বৃদ্ধির এই প্রবণতা যদি এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। সরকারকেই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। একটি ঘটনা ঘটানোর পর প্রতিপক্ষের প্রতি দোষ দিয়ে সমস্যার সমাধান করা যাবে না। অপরাধের মূল ব্যাপার চিহ্নিত করে, সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সরকারের এখনই উচিত এই সমস্যাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা এবং একটি সমন্বিত সমাধানের রূপরেখা তৈরি করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বদলির আদেশ ছিঁড়ে বরখাস্ত হলেন এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা

বাংলাদেশের সোনালি মুরগিতে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া: গবেষণা

প্রেক্ষাপটবিহীন প্রতিবেদন কি সাংবাদিকতা হতে পারে?

বিমানবন্দর থেকেই ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

বিধি লঙ্ঘন করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হলেন এনসিপি নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত