আব্দুর রাজ্জাক

গত বছর জুলাইয়ের আন্দোলনে একটি স্লোগান শুনে আমি পুলকিত বোধ করেছিলাম। স্লোগানটা ছিল—‘কোটা না মেধা মেধা, মেধা মেধা’। এই স্লোগানের আরেকটি সমার্থক প্রবাদ বাক্য আছে আমাদের সমাজে—‘জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো’। আপনি কার ছেলে বা মেয়ে, কার নাতি বা নাতনি অর্থাৎ পিতা-মাতা বা দাদা-দাদির পরিচয় সূত্রে আপনি সমাজের ভালো আসন পাবেন, এটা কাম্য হতে পারে না। তাই তো সমাজের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ কোটা না, মেধাকে প্রাধান্য দিয়েছিল। রেজিম পরিবর্তন হয়েছে, আন্দোলনের সঙ্গে যাঁরা একাত্মতা পোষণ করেছিলেন, তাঁরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন—এ জাতি মেধার মূল্যায়ন করতে জানে—এই কথা ভেবে।
উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষের সেই আশা ধীরে ধীরে ফিকে হতে লাগল। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এইচএসসি পরীক্ষা না দিয়ে অটোপাসের ব্যবস্থা হয়েছিল। বলতে দ্বিধা নেই যে, এটাকে এ দেশের বেশির ভাগ মানুষ মেনে নিতে পারেনি সেই সময়। অটোপাসের এই ধারা অব্যাহত রাখতে পরবর্তী সময়ে আরও কিছু স্কুল-কলেজ পর্যায়ে আন্দোলন করতে দেখা গেছে, অবশ্য সেটা ছিল স্বল্প পরিসরে। মেধাবী ছাত্রদের আন্দোলন সফল হয়েছিল, আমরা যারা অভিভাবক পর্যায়ের আছি, আমাদের ছেলেমেয়েরা যারা এখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, তাদের বুকে আশার সঞ্চার হয়েছিল, এখন থেকে স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়—সর্বক্ষেত্রে মেধার অগ্রাধিকার হবে। মেধা যদি সব জায়গায় প্রাধান্য পায় তাহলেই মেধার বিকাশ ঘটবে।
পৃথিবীতে সব সময় সব জায়গায় মেধা ছিল, আছে, থাকবে। মেধার বিকাশ ঘটাতে হবে উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিস্থিতির মাধ্যমে। মেধার বিকাশের পরিবেশ দুই রকম হতে পারে। এক. মেধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে মানবকল্যাণে ভালো শিক্ষা, জ্ঞান ও বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটানো যায়। দুই. নেতিবাচকভাবেও মেধার বিকাশ ঘটানো যায়, যেটা সমাজকে পেছন দিকে নিয়ে যায়। এক বছর হতে চলল আমরা নতুন বাস্তবতায় বসবাস করছি। এখন পর্যন্ত কোনো লক্ষণ দেখছি না যে, ইতিবাচকভাবে মেধার বিকাশ ঘটছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেনি যে মেধার বিকাশ ঘটানোর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফল দেখলে কিছুটা অনুমান করা যায়, ছাত্রছাত্রীরা মনোনিবেশ করতে পারেনি তাদের পাঠক্রমে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে অবস্থা, যাঁরা এর সংস্পর্শে আছেন অথবা যেসব অভিভাবক পর্যবেক্ষণ করছেন যে তাঁদের ছেলেমেয়েরা বর্তমানে কী শিক্ষা পাচ্ছে, একটু সচেতনভাবে তাকালে দেখতে পাবেন, খুব একটা সামনের দিকে আমরা এগোতে পারছি না। প্রায় ক্ষেত্রেই গতানুগতিক অথবা তার চেয়ে একটু পেছনের দিকে যাচ্ছি। অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। যা হওয়ার কথা ছিল সেটা হলো না কেন, তা নিয়ে সমাজচিন্তকেরা একটু ভেবে দেখতে পারেন। গবেষকেরা গবেষণা করে দেখতে পারেন—কেন এমনটা ঘটছে, আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে বহির্বিশ্ব থেকে কেন পেছনের দিকে যাচ্ছি? এ রকম চলতে থাকলে একসময় আমরা কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হব, যার থেকে বের হয়ে আসতে কয়েক যুগ লাগতে পারে। ইতিমধ্যেই পৃথিবী সামনের দিকে অনেক অগ্রসর হবে, চলমান পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। অনগ্রসর জাতি হিসেবে আমরা পরিগণিত হব।
সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে দরকার নতুন নতুন কর্মসংস্থান। প্রতিবছর আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হচ্ছে কয়েক লাখ শিক্ষিত তরুণ। তা ছাড়া শ্রমবাজারে তৈরি হচ্ছে আরও কয়েক লাখ শ্রমজীবী মানুষ। গড়ে প্রতিবছর কম করে হলেও ১০ লাখ কর্মজীবী মানুষ কর্মক্ষম হয়, শ্রমবাজারে যুক্ত হয়। ধারণা করি, সরকারি খাতে বড়জোর প্রতিবছর ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করা যায়। আমি একটু বাড়িয়ে বললাম, বাস্তবে এর চেয়ে হয়তো কম হবে। বাকি শ্রমজীবী মানুষ ব্যক্তিগত উদ্যোগে হয়তো কিছু ব্যবসা-বাণিজ্য করে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে অথবা বিদেশে পাড়ি জমায়। যেসব কর্ম ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করলাম, প্রায় ক্ষেত্রেই বর্তমানে বন্ধ্যত্ব দেখা যাচ্ছে। বেকার হয়ে পড়ছে আমাদের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী।
এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক তাদের পর্যালোচনামূলক একটি গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, ইতিমধ্যে ২৭ লাখ মানুষ কর্মচ্যুত হয়েছে। যেখানে ১০ লাখ মানুষের নতুন কর্মসংস্থান হওয়ার কথা, সেটা না হয়ে নতুন করে এই ২৭ লাখ কর্মজীবী মানুষের বোঝা জাতির ঘাড়ে চেপেছে। নতুন বাস্তবতায় লক্ষ করা যাচ্ছে যে, কর্মচ্যুত হওয়ার সঙ্গে নতুন নতুন কর্মসংস্থান হওয়ার কোনো পরিকল্পনা আমাদের সামনে নেই। নতুন করে শিল্পকলকারখানা স্থাপনের তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বিদেশমুখিতাও অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। এরপর যদি কয়েক শ গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যায়, এর পারিপার্শ্বিক অবস্থা কী হবে, সেটা ভাবাই যায় না।
নতুন করে যদি আরও কর্ম-উপযোগী মানুষ কর্মচ্যুত হয়, তারা বিভিন্ন কলকারখানায় ভিড় করবে, সেখানে প্রতিযোগিতা বাড়বে। এই ফাঁকে মালিকপক্ষ সঠিক পারিশ্রমিকের পরিবর্তে শ্রমিকদের শোষণ করার একটা হাতিয়ার পেলেও পেতে পারে। সবকিছু মিলিয়ে একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা যেতে পারে আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে।
এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য এখনই দরকার নতুন নতুন পরিকল্পনা। অনতিবিলম্বে নতুন কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা করা উচিত। কর্মসংস্থানের বিভিন্ন দিক উন্মোচন করা উচিত। নতুন বিনিয়োগের আহ্বান করা উচিত। একটু ছাড় দিয়ে হলেও জাতীয় স্বার্থে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতেই হবে।
শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে, মেধার বিকাশ ঘটানোর লক্ষ্যে, শক্তভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কড়া নজরদারি করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে একটা উদাহরণ দিতে চাই। ১৯৯২ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত রাশিয়ায় শিক্ষাক্ষেত্রে কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল। পরীক্ষা পদ্ধতি ও মেধা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সঠিক পন্থা অবলম্বন হয়নি। রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ক্ষমতায় আসার পরেই শিক্ষাব্যবস্থার ওপর প্রথমে নজর দিয়েছিলেন। আগে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকেরা গাফিলতি করেছিলেন, তাঁদের আইনের আওতায় এনেছিলেন। বহু শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক, ফ্যাকাল্টির ডিনদের শাস্তির আওতায় এনেছিলেন। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চাই সেই রকম একটি ব্যবস্থা, যে ব্যবস্থা অবলম্বন করে মেধার বিকাশ ঘটিয়ে সঠিক শিক্ষা পায় আমাদের ভবিষ্যতের সুনাগরিকেরা।
লেখক: প্রকৌশলী

গত বছর জুলাইয়ের আন্দোলনে একটি স্লোগান শুনে আমি পুলকিত বোধ করেছিলাম। স্লোগানটা ছিল—‘কোটা না মেধা মেধা, মেধা মেধা’। এই স্লোগানের আরেকটি সমার্থক প্রবাদ বাক্য আছে আমাদের সমাজে—‘জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো’। আপনি কার ছেলে বা মেয়ে, কার নাতি বা নাতনি অর্থাৎ পিতা-মাতা বা দাদা-দাদির পরিচয় সূত্রে আপনি সমাজের ভালো আসন পাবেন, এটা কাম্য হতে পারে না। তাই তো সমাজের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ কোটা না, মেধাকে প্রাধান্য দিয়েছিল। রেজিম পরিবর্তন হয়েছে, আন্দোলনের সঙ্গে যাঁরা একাত্মতা পোষণ করেছিলেন, তাঁরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন—এ জাতি মেধার মূল্যায়ন করতে জানে—এই কথা ভেবে।
উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষের সেই আশা ধীরে ধীরে ফিকে হতে লাগল। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এইচএসসি পরীক্ষা না দিয়ে অটোপাসের ব্যবস্থা হয়েছিল। বলতে দ্বিধা নেই যে, এটাকে এ দেশের বেশির ভাগ মানুষ মেনে নিতে পারেনি সেই সময়। অটোপাসের এই ধারা অব্যাহত রাখতে পরবর্তী সময়ে আরও কিছু স্কুল-কলেজ পর্যায়ে আন্দোলন করতে দেখা গেছে, অবশ্য সেটা ছিল স্বল্প পরিসরে। মেধাবী ছাত্রদের আন্দোলন সফল হয়েছিল, আমরা যারা অভিভাবক পর্যায়ের আছি, আমাদের ছেলেমেয়েরা যারা এখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, তাদের বুকে আশার সঞ্চার হয়েছিল, এখন থেকে স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়—সর্বক্ষেত্রে মেধার অগ্রাধিকার হবে। মেধা যদি সব জায়গায় প্রাধান্য পায় তাহলেই মেধার বিকাশ ঘটবে।
পৃথিবীতে সব সময় সব জায়গায় মেধা ছিল, আছে, থাকবে। মেধার বিকাশ ঘটাতে হবে উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিস্থিতির মাধ্যমে। মেধার বিকাশের পরিবেশ দুই রকম হতে পারে। এক. মেধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে মানবকল্যাণে ভালো শিক্ষা, জ্ঞান ও বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটানো যায়। দুই. নেতিবাচকভাবেও মেধার বিকাশ ঘটানো যায়, যেটা সমাজকে পেছন দিকে নিয়ে যায়। এক বছর হতে চলল আমরা নতুন বাস্তবতায় বসবাস করছি। এখন পর্যন্ত কোনো লক্ষণ দেখছি না যে, ইতিবাচকভাবে মেধার বিকাশ ঘটছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেনি যে মেধার বিকাশ ঘটানোর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফল দেখলে কিছুটা অনুমান করা যায়, ছাত্রছাত্রীরা মনোনিবেশ করতে পারেনি তাদের পাঠক্রমে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে অবস্থা, যাঁরা এর সংস্পর্শে আছেন অথবা যেসব অভিভাবক পর্যবেক্ষণ করছেন যে তাঁদের ছেলেমেয়েরা বর্তমানে কী শিক্ষা পাচ্ছে, একটু সচেতনভাবে তাকালে দেখতে পাবেন, খুব একটা সামনের দিকে আমরা এগোতে পারছি না। প্রায় ক্ষেত্রেই গতানুগতিক অথবা তার চেয়ে একটু পেছনের দিকে যাচ্ছি। অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। যা হওয়ার কথা ছিল সেটা হলো না কেন, তা নিয়ে সমাজচিন্তকেরা একটু ভেবে দেখতে পারেন। গবেষকেরা গবেষণা করে দেখতে পারেন—কেন এমনটা ঘটছে, আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে বহির্বিশ্ব থেকে কেন পেছনের দিকে যাচ্ছি? এ রকম চলতে থাকলে একসময় আমরা কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হব, যার থেকে বের হয়ে আসতে কয়েক যুগ লাগতে পারে। ইতিমধ্যেই পৃথিবী সামনের দিকে অনেক অগ্রসর হবে, চলমান পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। অনগ্রসর জাতি হিসেবে আমরা পরিগণিত হব।
সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে দরকার নতুন নতুন কর্মসংস্থান। প্রতিবছর আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হচ্ছে কয়েক লাখ শিক্ষিত তরুণ। তা ছাড়া শ্রমবাজারে তৈরি হচ্ছে আরও কয়েক লাখ শ্রমজীবী মানুষ। গড়ে প্রতিবছর কম করে হলেও ১০ লাখ কর্মজীবী মানুষ কর্মক্ষম হয়, শ্রমবাজারে যুক্ত হয়। ধারণা করি, সরকারি খাতে বড়জোর প্রতিবছর ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করা যায়। আমি একটু বাড়িয়ে বললাম, বাস্তবে এর চেয়ে হয়তো কম হবে। বাকি শ্রমজীবী মানুষ ব্যক্তিগত উদ্যোগে হয়তো কিছু ব্যবসা-বাণিজ্য করে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে অথবা বিদেশে পাড়ি জমায়। যেসব কর্ম ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করলাম, প্রায় ক্ষেত্রেই বর্তমানে বন্ধ্যত্ব দেখা যাচ্ছে। বেকার হয়ে পড়ছে আমাদের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী।
এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক তাদের পর্যালোচনামূলক একটি গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, ইতিমধ্যে ২৭ লাখ মানুষ কর্মচ্যুত হয়েছে। যেখানে ১০ লাখ মানুষের নতুন কর্মসংস্থান হওয়ার কথা, সেটা না হয়ে নতুন করে এই ২৭ লাখ কর্মজীবী মানুষের বোঝা জাতির ঘাড়ে চেপেছে। নতুন বাস্তবতায় লক্ষ করা যাচ্ছে যে, কর্মচ্যুত হওয়ার সঙ্গে নতুন নতুন কর্মসংস্থান হওয়ার কোনো পরিকল্পনা আমাদের সামনে নেই। নতুন করে শিল্পকলকারখানা স্থাপনের তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বিদেশমুখিতাও অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। এরপর যদি কয়েক শ গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যায়, এর পারিপার্শ্বিক অবস্থা কী হবে, সেটা ভাবাই যায় না।
নতুন করে যদি আরও কর্ম-উপযোগী মানুষ কর্মচ্যুত হয়, তারা বিভিন্ন কলকারখানায় ভিড় করবে, সেখানে প্রতিযোগিতা বাড়বে। এই ফাঁকে মালিকপক্ষ সঠিক পারিশ্রমিকের পরিবর্তে শ্রমিকদের শোষণ করার একটা হাতিয়ার পেলেও পেতে পারে। সবকিছু মিলিয়ে একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা যেতে পারে আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে।
এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য এখনই দরকার নতুন নতুন পরিকল্পনা। অনতিবিলম্বে নতুন কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা করা উচিত। কর্মসংস্থানের বিভিন্ন দিক উন্মোচন করা উচিত। নতুন বিনিয়োগের আহ্বান করা উচিত। একটু ছাড় দিয়ে হলেও জাতীয় স্বার্থে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতেই হবে।
শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে, মেধার বিকাশ ঘটানোর লক্ষ্যে, শক্তভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কড়া নজরদারি করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে একটা উদাহরণ দিতে চাই। ১৯৯২ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত রাশিয়ায় শিক্ষাক্ষেত্রে কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল। পরীক্ষা পদ্ধতি ও মেধা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সঠিক পন্থা অবলম্বন হয়নি। রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ক্ষমতায় আসার পরেই শিক্ষাব্যবস্থার ওপর প্রথমে নজর দিয়েছিলেন। আগে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকেরা গাফিলতি করেছিলেন, তাঁদের আইনের আওতায় এনেছিলেন। বহু শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক, ফ্যাকাল্টির ডিনদের শাস্তির আওতায় এনেছিলেন। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চাই সেই রকম একটি ব্যবস্থা, যে ব্যবস্থা অবলম্বন করে মেধার বিকাশ ঘটিয়ে সঠিক শিক্ষা পায় আমাদের ভবিষ্যতের সুনাগরিকেরা।
লেখক: প্রকৌশলী
আব্দুর রাজ্জাক

গত বছর জুলাইয়ের আন্দোলনে একটি স্লোগান শুনে আমি পুলকিত বোধ করেছিলাম। স্লোগানটা ছিল—‘কোটা না মেধা মেধা, মেধা মেধা’। এই স্লোগানের আরেকটি সমার্থক প্রবাদ বাক্য আছে আমাদের সমাজে—‘জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো’। আপনি কার ছেলে বা মেয়ে, কার নাতি বা নাতনি অর্থাৎ পিতা-মাতা বা দাদা-দাদির পরিচয় সূত্রে আপনি সমাজের ভালো আসন পাবেন, এটা কাম্য হতে পারে না। তাই তো সমাজের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ কোটা না, মেধাকে প্রাধান্য দিয়েছিল। রেজিম পরিবর্তন হয়েছে, আন্দোলনের সঙ্গে যাঁরা একাত্মতা পোষণ করেছিলেন, তাঁরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন—এ জাতি মেধার মূল্যায়ন করতে জানে—এই কথা ভেবে।
উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষের সেই আশা ধীরে ধীরে ফিকে হতে লাগল। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এইচএসসি পরীক্ষা না দিয়ে অটোপাসের ব্যবস্থা হয়েছিল। বলতে দ্বিধা নেই যে, এটাকে এ দেশের বেশির ভাগ মানুষ মেনে নিতে পারেনি সেই সময়। অটোপাসের এই ধারা অব্যাহত রাখতে পরবর্তী সময়ে আরও কিছু স্কুল-কলেজ পর্যায়ে আন্দোলন করতে দেখা গেছে, অবশ্য সেটা ছিল স্বল্প পরিসরে। মেধাবী ছাত্রদের আন্দোলন সফল হয়েছিল, আমরা যারা অভিভাবক পর্যায়ের আছি, আমাদের ছেলেমেয়েরা যারা এখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, তাদের বুকে আশার সঞ্চার হয়েছিল, এখন থেকে স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়—সর্বক্ষেত্রে মেধার অগ্রাধিকার হবে। মেধা যদি সব জায়গায় প্রাধান্য পায় তাহলেই মেধার বিকাশ ঘটবে।
পৃথিবীতে সব সময় সব জায়গায় মেধা ছিল, আছে, থাকবে। মেধার বিকাশ ঘটাতে হবে উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিস্থিতির মাধ্যমে। মেধার বিকাশের পরিবেশ দুই রকম হতে পারে। এক. মেধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে মানবকল্যাণে ভালো শিক্ষা, জ্ঞান ও বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটানো যায়। দুই. নেতিবাচকভাবেও মেধার বিকাশ ঘটানো যায়, যেটা সমাজকে পেছন দিকে নিয়ে যায়। এক বছর হতে চলল আমরা নতুন বাস্তবতায় বসবাস করছি। এখন পর্যন্ত কোনো লক্ষণ দেখছি না যে, ইতিবাচকভাবে মেধার বিকাশ ঘটছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেনি যে মেধার বিকাশ ঘটানোর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফল দেখলে কিছুটা অনুমান করা যায়, ছাত্রছাত্রীরা মনোনিবেশ করতে পারেনি তাদের পাঠক্রমে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে অবস্থা, যাঁরা এর সংস্পর্শে আছেন অথবা যেসব অভিভাবক পর্যবেক্ষণ করছেন যে তাঁদের ছেলেমেয়েরা বর্তমানে কী শিক্ষা পাচ্ছে, একটু সচেতনভাবে তাকালে দেখতে পাবেন, খুব একটা সামনের দিকে আমরা এগোতে পারছি না। প্রায় ক্ষেত্রেই গতানুগতিক অথবা তার চেয়ে একটু পেছনের দিকে যাচ্ছি। অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। যা হওয়ার কথা ছিল সেটা হলো না কেন, তা নিয়ে সমাজচিন্তকেরা একটু ভেবে দেখতে পারেন। গবেষকেরা গবেষণা করে দেখতে পারেন—কেন এমনটা ঘটছে, আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে বহির্বিশ্ব থেকে কেন পেছনের দিকে যাচ্ছি? এ রকম চলতে থাকলে একসময় আমরা কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হব, যার থেকে বের হয়ে আসতে কয়েক যুগ লাগতে পারে। ইতিমধ্যেই পৃথিবী সামনের দিকে অনেক অগ্রসর হবে, চলমান পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। অনগ্রসর জাতি হিসেবে আমরা পরিগণিত হব।
সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে দরকার নতুন নতুন কর্মসংস্থান। প্রতিবছর আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হচ্ছে কয়েক লাখ শিক্ষিত তরুণ। তা ছাড়া শ্রমবাজারে তৈরি হচ্ছে আরও কয়েক লাখ শ্রমজীবী মানুষ। গড়ে প্রতিবছর কম করে হলেও ১০ লাখ কর্মজীবী মানুষ কর্মক্ষম হয়, শ্রমবাজারে যুক্ত হয়। ধারণা করি, সরকারি খাতে বড়জোর প্রতিবছর ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করা যায়। আমি একটু বাড়িয়ে বললাম, বাস্তবে এর চেয়ে হয়তো কম হবে। বাকি শ্রমজীবী মানুষ ব্যক্তিগত উদ্যোগে হয়তো কিছু ব্যবসা-বাণিজ্য করে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে অথবা বিদেশে পাড়ি জমায়। যেসব কর্ম ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করলাম, প্রায় ক্ষেত্রেই বর্তমানে বন্ধ্যত্ব দেখা যাচ্ছে। বেকার হয়ে পড়ছে আমাদের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী।
এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক তাদের পর্যালোচনামূলক একটি গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, ইতিমধ্যে ২৭ লাখ মানুষ কর্মচ্যুত হয়েছে। যেখানে ১০ লাখ মানুষের নতুন কর্মসংস্থান হওয়ার কথা, সেটা না হয়ে নতুন করে এই ২৭ লাখ কর্মজীবী মানুষের বোঝা জাতির ঘাড়ে চেপেছে। নতুন বাস্তবতায় লক্ষ করা যাচ্ছে যে, কর্মচ্যুত হওয়ার সঙ্গে নতুন নতুন কর্মসংস্থান হওয়ার কোনো পরিকল্পনা আমাদের সামনে নেই। নতুন করে শিল্পকলকারখানা স্থাপনের তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বিদেশমুখিতাও অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। এরপর যদি কয়েক শ গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যায়, এর পারিপার্শ্বিক অবস্থা কী হবে, সেটা ভাবাই যায় না।
নতুন করে যদি আরও কর্ম-উপযোগী মানুষ কর্মচ্যুত হয়, তারা বিভিন্ন কলকারখানায় ভিড় করবে, সেখানে প্রতিযোগিতা বাড়বে। এই ফাঁকে মালিকপক্ষ সঠিক পারিশ্রমিকের পরিবর্তে শ্রমিকদের শোষণ করার একটা হাতিয়ার পেলেও পেতে পারে। সবকিছু মিলিয়ে একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা যেতে পারে আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে।
এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য এখনই দরকার নতুন নতুন পরিকল্পনা। অনতিবিলম্বে নতুন কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা করা উচিত। কর্মসংস্থানের বিভিন্ন দিক উন্মোচন করা উচিত। নতুন বিনিয়োগের আহ্বান করা উচিত। একটু ছাড় দিয়ে হলেও জাতীয় স্বার্থে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতেই হবে।
শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে, মেধার বিকাশ ঘটানোর লক্ষ্যে, শক্তভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কড়া নজরদারি করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে একটা উদাহরণ দিতে চাই। ১৯৯২ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত রাশিয়ায় শিক্ষাক্ষেত্রে কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল। পরীক্ষা পদ্ধতি ও মেধা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সঠিক পন্থা অবলম্বন হয়নি। রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ক্ষমতায় আসার পরেই শিক্ষাব্যবস্থার ওপর প্রথমে নজর দিয়েছিলেন। আগে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকেরা গাফিলতি করেছিলেন, তাঁদের আইনের আওতায় এনেছিলেন। বহু শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক, ফ্যাকাল্টির ডিনদের শাস্তির আওতায় এনেছিলেন। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চাই সেই রকম একটি ব্যবস্থা, যে ব্যবস্থা অবলম্বন করে মেধার বিকাশ ঘটিয়ে সঠিক শিক্ষা পায় আমাদের ভবিষ্যতের সুনাগরিকেরা।
লেখক: প্রকৌশলী

গত বছর জুলাইয়ের আন্দোলনে একটি স্লোগান শুনে আমি পুলকিত বোধ করেছিলাম। স্লোগানটা ছিল—‘কোটা না মেধা মেধা, মেধা মেধা’। এই স্লোগানের আরেকটি সমার্থক প্রবাদ বাক্য আছে আমাদের সমাজে—‘জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো’। আপনি কার ছেলে বা মেয়ে, কার নাতি বা নাতনি অর্থাৎ পিতা-মাতা বা দাদা-দাদির পরিচয় সূত্রে আপনি সমাজের ভালো আসন পাবেন, এটা কাম্য হতে পারে না। তাই তো সমাজের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ কোটা না, মেধাকে প্রাধান্য দিয়েছিল। রেজিম পরিবর্তন হয়েছে, আন্দোলনের সঙ্গে যাঁরা একাত্মতা পোষণ করেছিলেন, তাঁরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন—এ জাতি মেধার মূল্যায়ন করতে জানে—এই কথা ভেবে।
উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষের সেই আশা ধীরে ধীরে ফিকে হতে লাগল। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এইচএসসি পরীক্ষা না দিয়ে অটোপাসের ব্যবস্থা হয়েছিল। বলতে দ্বিধা নেই যে, এটাকে এ দেশের বেশির ভাগ মানুষ মেনে নিতে পারেনি সেই সময়। অটোপাসের এই ধারা অব্যাহত রাখতে পরবর্তী সময়ে আরও কিছু স্কুল-কলেজ পর্যায়ে আন্দোলন করতে দেখা গেছে, অবশ্য সেটা ছিল স্বল্প পরিসরে। মেধাবী ছাত্রদের আন্দোলন সফল হয়েছিল, আমরা যারা অভিভাবক পর্যায়ের আছি, আমাদের ছেলেমেয়েরা যারা এখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে, তাদের বুকে আশার সঞ্চার হয়েছিল, এখন থেকে স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়—সর্বক্ষেত্রে মেধার অগ্রাধিকার হবে। মেধা যদি সব জায়গায় প্রাধান্য পায় তাহলেই মেধার বিকাশ ঘটবে।
পৃথিবীতে সব সময় সব জায়গায় মেধা ছিল, আছে, থাকবে। মেধার বিকাশ ঘটাতে হবে উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিস্থিতির মাধ্যমে। মেধার বিকাশের পরিবেশ দুই রকম হতে পারে। এক. মেধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে মানবকল্যাণে ভালো শিক্ষা, জ্ঞান ও বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটানো যায়। দুই. নেতিবাচকভাবেও মেধার বিকাশ ঘটানো যায়, যেটা সমাজকে পেছন দিকে নিয়ে যায়। এক বছর হতে চলল আমরা নতুন বাস্তবতায় বসবাস করছি। এখন পর্যন্ত কোনো লক্ষণ দেখছি না যে, ইতিবাচকভাবে মেধার বিকাশ ঘটছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেনি যে মেধার বিকাশ ঘটানোর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফল দেখলে কিছুটা অনুমান করা যায়, ছাত্রছাত্রীরা মনোনিবেশ করতে পারেনি তাদের পাঠক্রমে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে অবস্থা, যাঁরা এর সংস্পর্শে আছেন অথবা যেসব অভিভাবক পর্যবেক্ষণ করছেন যে তাঁদের ছেলেমেয়েরা বর্তমানে কী শিক্ষা পাচ্ছে, একটু সচেতনভাবে তাকালে দেখতে পাবেন, খুব একটা সামনের দিকে আমরা এগোতে পারছি না। প্রায় ক্ষেত্রেই গতানুগতিক অথবা তার চেয়ে একটু পেছনের দিকে যাচ্ছি। অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। যা হওয়ার কথা ছিল সেটা হলো না কেন, তা নিয়ে সমাজচিন্তকেরা একটু ভেবে দেখতে পারেন। গবেষকেরা গবেষণা করে দেখতে পারেন—কেন এমনটা ঘটছে, আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে বহির্বিশ্ব থেকে কেন পেছনের দিকে যাচ্ছি? এ রকম চলতে থাকলে একসময় আমরা কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হব, যার থেকে বের হয়ে আসতে কয়েক যুগ লাগতে পারে। ইতিমধ্যেই পৃথিবী সামনের দিকে অনেক অগ্রসর হবে, চলমান পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। অনগ্রসর জাতি হিসেবে আমরা পরিগণিত হব।
সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে দরকার নতুন নতুন কর্মসংস্থান। প্রতিবছর আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হচ্ছে কয়েক লাখ শিক্ষিত তরুণ। তা ছাড়া শ্রমবাজারে তৈরি হচ্ছে আরও কয়েক লাখ শ্রমজীবী মানুষ। গড়ে প্রতিবছর কম করে হলেও ১০ লাখ কর্মজীবী মানুষ কর্মক্ষম হয়, শ্রমবাজারে যুক্ত হয়। ধারণা করি, সরকারি খাতে বড়জোর প্রতিবছর ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করা যায়। আমি একটু বাড়িয়ে বললাম, বাস্তবে এর চেয়ে হয়তো কম হবে। বাকি শ্রমজীবী মানুষ ব্যক্তিগত উদ্যোগে হয়তো কিছু ব্যবসা-বাণিজ্য করে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে অথবা বিদেশে পাড়ি জমায়। যেসব কর্ম ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করলাম, প্রায় ক্ষেত্রেই বর্তমানে বন্ধ্যত্ব দেখা যাচ্ছে। বেকার হয়ে পড়ছে আমাদের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী।
এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক তাদের পর্যালোচনামূলক একটি গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, ইতিমধ্যে ২৭ লাখ মানুষ কর্মচ্যুত হয়েছে। যেখানে ১০ লাখ মানুষের নতুন কর্মসংস্থান হওয়ার কথা, সেটা না হয়ে নতুন করে এই ২৭ লাখ কর্মজীবী মানুষের বোঝা জাতির ঘাড়ে চেপেছে। নতুন বাস্তবতায় লক্ষ করা যাচ্ছে যে, কর্মচ্যুত হওয়ার সঙ্গে নতুন নতুন কর্মসংস্থান হওয়ার কোনো পরিকল্পনা আমাদের সামনে নেই। নতুন করে শিল্পকলকারখানা স্থাপনের তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বিদেশমুখিতাও অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। এরপর যদি কয়েক শ গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যায়, এর পারিপার্শ্বিক অবস্থা কী হবে, সেটা ভাবাই যায় না।
নতুন করে যদি আরও কর্ম-উপযোগী মানুষ কর্মচ্যুত হয়, তারা বিভিন্ন কলকারখানায় ভিড় করবে, সেখানে প্রতিযোগিতা বাড়বে। এই ফাঁকে মালিকপক্ষ সঠিক পারিশ্রমিকের পরিবর্তে শ্রমিকদের শোষণ করার একটা হাতিয়ার পেলেও পেতে পারে। সবকিছু মিলিয়ে একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা যেতে পারে আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে।
এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য এখনই দরকার নতুন নতুন পরিকল্পনা। অনতিবিলম্বে নতুন কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা করা উচিত। কর্মসংস্থানের বিভিন্ন দিক উন্মোচন করা উচিত। নতুন বিনিয়োগের আহ্বান করা উচিত। একটু ছাড় দিয়ে হলেও জাতীয় স্বার্থে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতেই হবে।
শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে, মেধার বিকাশ ঘটানোর লক্ষ্যে, শক্তভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কড়া নজরদারি করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে একটা উদাহরণ দিতে চাই। ১৯৯২ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত রাশিয়ায় শিক্ষাক্ষেত্রে কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল। পরীক্ষা পদ্ধতি ও মেধা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সঠিক পন্থা অবলম্বন হয়নি। রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ক্ষমতায় আসার পরেই শিক্ষাব্যবস্থার ওপর প্রথমে নজর দিয়েছিলেন। আগে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকেরা গাফিলতি করেছিলেন, তাঁদের আইনের আওতায় এনেছিলেন। বহু শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক, ফ্যাকাল্টির ডিনদের শাস্তির আওতায় এনেছিলেন। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চাই সেই রকম একটি ব্যবস্থা, যে ব্যবস্থা অবলম্বন করে মেধার বিকাশ ঘটিয়ে সঠিক শিক্ষা পায় আমাদের ভবিষ্যতের সুনাগরিকেরা।
লেখক: প্রকৌশলী

মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সে কথা সবাই এখন জানেন। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা জানেন এটা তাঁদের পরিবারের জন্য কত বড় ক্ষতি। নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কি না, তাদের জীবনে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে কী করা দরকার...
১৯ ঘণ্টা আগে
না, সব উপদেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ নন। তবে সংখ্যাটা যে নেহাত কম হবে না, তা অনুমান করা যায় যখন প্রধান তিনটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলই আলাদা আলাদাভাবে উপদেষ্টাদের দলঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে, যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কোনো কোনো উপদেষ্টার সেফ...
১৯ ঘণ্টা আগে
সমাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে, পৃথিবী প্রবেশ করেছে এক নতুন যুগে। এই গতিময় সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা হয়তো অনেক কিছু পাচ্ছি, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আরও বেশি কিছু। আজ আমরা এক অদ্ভুত স্বার্থপর সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিটি সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি।
২০ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এই সুন্দরবনের এক অনন্য প্রজাতির প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
২০ ঘণ্টা আগেসম্পাদকীয়

মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সে কথা সবাই এখন জানেন। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা জানেন এটা তাঁদের পরিবারের জন্য কত বড় ক্ষতি। নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কি না, তাদের জীবনে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে কী করা দরকার—তা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চয়ই ভাববেন। এ রকম একটা অবস্থায় দুর্ঘটনা-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে খুব কম মানুষই মাথা ঘামায়। দুর্ঘটনা-পরবর্তী সময়টিতে স্থানীয় পরিবেশ ও পরিস্থিতি যে মোটেও অনুকূল থাকে না, সেটা বোঝা দরকার।
সম্প্রতি আমাদের প্রতিবেদক শিয়ালবাড়ীর ক্ষতিগ্রস্ত রাসায়নিক গুদামে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেছেন, এতগুলো দিন পার হওয়ার পরও বিষাক্ত রাসায়নিকের কারণে এখনো অসুস্থ হচ্ছে মানুষ। রাসায়নিকের ড্রাম থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়া মানুষকে অসুস্থ করে দিচ্ছে। অসুস্থদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধরা রয়েছেন ঝুঁকির মধ্যে। প্রায়ই দেখা যায়, একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর দু-এক দিন সংবাদপত্রে রিপোর্ট হয়, তারপর একসময় সেটা ভুলে যায় মানুষ। কিন্তু যে মানুষেরা ভুক্তভোগী, তাদের প্রতিটি দিনই যে কাটছে ভয়ংকর রাসায়নিকের সঙ্গে লড়াই করে, সে খবর কয়জন রাখে?
চিকিৎসকেরা বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের কয়েক দিন পরও বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়ার ঘনত্ব বেশি থাকে। পরে ধীরে ধীরে তা কমে যায়। মাটিতে পড়ে থাকা রাসায়নিক দ্রব্যের অবশিষ্টাংশ ভুক্তভোগীর শরীরে ঢোকে। ঘন ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ার কারণে বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্র ধূলিকণা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে যায়। এই কারণে ভবিষ্যতেও তা বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।
বিষাক্ত কণিকা বা গ্যাস মানবদেহে ঢোকে শ্বাসের মাধ্যমে, ত্বকের মাধ্যমে এবং খাদ্যের মাধ্যমে। এই গ্যাস অ্যাজমা, কাশি, গলাজ্বলা বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। চোখ আর ত্বকও তাতে আক্রান্ত হতে পারে। তৈরি হতে পারে মাথাব্যথা, বমি ও ক্লান্তির মতো ঘটনা। ভারী ধাতু দীর্ঘ মেয়াদে স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল করে দেয়। তাতে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।
শিয়ালবাড়ীর দুর্ঘটনাস্থলের অন্তত এক হাজার গজ পর্যন্ত এলাকায় বাতাসে এখনো পোড়া জিনিস ও গ্যাসের মতো কটু গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তাতে মনে হয়, এই এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এখনো রয়েছে সংকটের মুখে।
আমরা সবাই জানি, স্বাস্থ্য আমাদের মৌলিক অধিকারের একটি। কিন্তু দেশের মানুষ এ কথাও জানে, সেই মৌলিক অধিকার সব সময় সমুন্নত রাখা হয় না। রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ড ঘটলে কীভাবে তার মোকাবিলা করতে হবে, তার পূর্বপ্রস্তুতি কয়টি গুদামে আছে? এসব জায়গায় কি নিয়মিত ইন্সপেকশন হয়? শুধু গুদাম কেন, কারখানাগুলোয় কি সঠিক নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে? শ্রমিকেরা কি নিরাপদে তাঁদের কাজ করে যেতে পারেন?
এসব দুর্ঘটনায় মূলত সমাজের নিচুতলার মানুষেরা বিপদে পড়েন। তাঁদের পাশে যদি দাঁড়ানো না হয়, তাহলে বুঝতে হবে, শিল্প-ব্যবস্থাপনায় যে ঘাটতি আছে, তা নিরসনের কোনো চিন্তা কারও নেই।

মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সে কথা সবাই এখন জানেন। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা জানেন এটা তাঁদের পরিবারের জন্য কত বড় ক্ষতি। নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কি না, তাদের জীবনে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে কী করা দরকার—তা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা নিশ্চয়ই ভাববেন। এ রকম একটা অবস্থায় দুর্ঘটনা-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে খুব কম মানুষই মাথা ঘামায়। দুর্ঘটনা-পরবর্তী সময়টিতে স্থানীয় পরিবেশ ও পরিস্থিতি যে মোটেও অনুকূল থাকে না, সেটা বোঝা দরকার।
সম্প্রতি আমাদের প্রতিবেদক শিয়ালবাড়ীর ক্ষতিগ্রস্ত রাসায়নিক গুদামে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেছেন, এতগুলো দিন পার হওয়ার পরও বিষাক্ত রাসায়নিকের কারণে এখনো অসুস্থ হচ্ছে মানুষ। রাসায়নিকের ড্রাম থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়া মানুষকে অসুস্থ করে দিচ্ছে। অসুস্থদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধরা রয়েছেন ঝুঁকির মধ্যে। প্রায়ই দেখা যায়, একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর দু-এক দিন সংবাদপত্রে রিপোর্ট হয়, তারপর একসময় সেটা ভুলে যায় মানুষ। কিন্তু যে মানুষেরা ভুক্তভোগী, তাদের প্রতিটি দিনই যে কাটছে ভয়ংকর রাসায়নিকের সঙ্গে লড়াই করে, সে খবর কয়জন রাখে?
চিকিৎসকেরা বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের কয়েক দিন পরও বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়ার ঘনত্ব বেশি থাকে। পরে ধীরে ধীরে তা কমে যায়। মাটিতে পড়ে থাকা রাসায়নিক দ্রব্যের অবশিষ্টাংশ ভুক্তভোগীর শরীরে ঢোকে। ঘন ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ার কারণে বাতাসে ভাসমান ক্ষুদ্র ধূলিকণা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে যায়। এই কারণে ভবিষ্যতেও তা বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।
বিষাক্ত কণিকা বা গ্যাস মানবদেহে ঢোকে শ্বাসের মাধ্যমে, ত্বকের মাধ্যমে এবং খাদ্যের মাধ্যমে। এই গ্যাস অ্যাজমা, কাশি, গলাজ্বলা বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। চোখ আর ত্বকও তাতে আক্রান্ত হতে পারে। তৈরি হতে পারে মাথাব্যথা, বমি ও ক্লান্তির মতো ঘটনা। ভারী ধাতু দীর্ঘ মেয়াদে স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল করে দেয়। তাতে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।
শিয়ালবাড়ীর দুর্ঘটনাস্থলের অন্তত এক হাজার গজ পর্যন্ত এলাকায় বাতাসে এখনো পোড়া জিনিস ও গ্যাসের মতো কটু গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তাতে মনে হয়, এই এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এখনো রয়েছে সংকটের মুখে।
আমরা সবাই জানি, স্বাস্থ্য আমাদের মৌলিক অধিকারের একটি। কিন্তু দেশের মানুষ এ কথাও জানে, সেই মৌলিক অধিকার সব সময় সমুন্নত রাখা হয় না। রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ড ঘটলে কীভাবে তার মোকাবিলা করতে হবে, তার পূর্বপ্রস্তুতি কয়টি গুদামে আছে? এসব জায়গায় কি নিয়মিত ইন্সপেকশন হয়? শুধু গুদাম কেন, কারখানাগুলোয় কি সঠিক নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে? শ্রমিকেরা কি নিরাপদে তাঁদের কাজ করে যেতে পারেন?
এসব দুর্ঘটনায় মূলত সমাজের নিচুতলার মানুষেরা বিপদে পড়েন। তাঁদের পাশে যদি দাঁড়ানো না হয়, তাহলে বুঝতে হবে, শিল্প-ব্যবস্থাপনায় যে ঘাটতি আছে, তা নিরসনের কোনো চিন্তা কারও নেই।

গত বছর জুলাইয়ের আন্দোলনে একটি স্লোগান শুনে আমি পুলকিত বোধ করেছিলাম। স্লোগানটা ছিল—‘কোটা না মেধা মেধা, মেধা মেধা’। এই স্লোগানের আরেকটি সমার্থক প্রবাদ বাক্য আছে আমাদের সমাজে—‘জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো’। আপনি কার ছেলে বা মেয়ে, কার নাতি বা নাতনি অর্থাৎ পিতা-মাতা বা দাদা-দাদির পরিচয় সূত্রে আপনি...
১৫ জুলাই ২০২৫
না, সব উপদেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ নন। তবে সংখ্যাটা যে নেহাত কম হবে না, তা অনুমান করা যায় যখন প্রধান তিনটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলই আলাদা আলাদাভাবে উপদেষ্টাদের দলঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে, যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কোনো কোনো উপদেষ্টার সেফ...
১৯ ঘণ্টা আগে
সমাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে, পৃথিবী প্রবেশ করেছে এক নতুন যুগে। এই গতিময় সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা হয়তো অনেক কিছু পাচ্ছি, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আরও বেশি কিছু। আজ আমরা এক অদ্ভুত স্বার্থপর সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিটি সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি।
২০ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এই সুন্দরবনের এক অনন্য প্রজাতির প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
২০ ঘণ্টা আগেঅরুণ কর্মকার

না, সব উপদেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ নন। তবে সংখ্যাটা যে নেহাত কম হবে না, তা অনুমান করা যায় যখন প্রধান তিনটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলই আলাদা আলাদাভাবে উপদেষ্টাদের দলঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে, যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কোনো কোনো উপদেষ্টার সেফ এক্সিটের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। আর এবার তো জানা গেল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে গত বুধবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দৃষ্টিতে দলঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের নামধামের তালিকাই নিয়ে গিয়েছিল। তবে ওই দিন সেই তালিকা তারা প্রধান উপদেষ্টাকে দেয়নি। প্রয়োজন হলে পরে দেবে। এবার শুধু বিষয়টি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং কয়েকজন উপদেষ্টা বিএনপির পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছে।
শুধু উপদেষ্টা নয়, জামায়াত সুনির্দিষ্ট নাম-ঠিকানা নিয়ে গিয়েছিল প্রায় ৪০ জন আমলারও, যাঁরা তাদের দৃষ্টিতে কোনো না কোনো দলের হয়ে, বিশেষত বিএনপির হয়ে কাজ করছেন। আর বৈঠক-পরবর্তী সংবাদ ব্রিফিংয়ে জামায়াতের নেতারা উল্লেখ করেছেন যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসন ও পুলিশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ লোকই বিএনপির। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত বলেছে, নির্বাচনের আগে সরকারকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। এ জন্য সচিবালয়, পুলিশ প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে রদবদল আনতে হবে। বিএনপির বিরুদ্ধে জামায়াতের আরও অভিযোগ, বিএনপি রাজনৈতিক চাপে পড়ে গণভোটে রাজি হলেও এখন জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
ওই দিনই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি প্রতিনিধিদলও পৃথকভাবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন, নির্বাচনের আগে বড় রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসন ও পুলিশে নিজেদের মতো ভাগ-বাঁটোয়ারা শুরু করেছে। ডিসি-এসপিদের তালিকা করে সরকারকে দিচ্ছে এবং সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের মধ্য থেকেও এ ব্যাপারে তারা সহযোগিতা পাচ্ছে।
এনসিপির আরও বড় অভিযোগ নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে। প্রধান উপদেষ্টাকে তারা বলেছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। কোনো কোনো দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। শাপলা প্রতীক পাওয়া প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলামের স্পষ্ট বক্তব্য হলো, যে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন এবং প্রতীকের বিষয়ে এনসিপির সঙ্গে ন্যায়বিচার করে না, তার অধীনে নির্বাচনে গিয়ে ন্যায়বিচার এবং নিরপেক্ষতা বা সঠিক ফলাফল পাওয়ার ব্যাপারে ভরসা করা যায় না। তাই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের যুক্তি হলো, নির্বাচন কমিশনের কারণে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয়, সেই দায়ও সরকারের ওপরই পড়বে।
উপদেষ্টাদের নিয়ে প্রশ্ন আছে বিএনপিরও। জামায়াত ও এনসিপির এক দিন আগে, গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। সেই বৈঠকে তারাও কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি তুলেছে। কারও নাম উল্লেখ না করেই বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছে দলটি। এর আগেও বিএনপির পক্ষ থেকে এমন আহ্বান জানানো হয়েছিল। তখন দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল বলেও খবর বেরিয়েছে। তবে তাঁরা তখনই তাতে রাজি হননি। উপদেষ্টাদের ছাড়াও প্রশাসন নিয়েও অন্য দুই দলের মতোই উদ্বেগ আছে বিএনপিরও। মঙ্গলবারের বৈঠকে তারা এই বলে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যে প্রশাসন, পুলিশ এবং বিচার বিভাগের প্রায় ৫০ ভাগ ফ্যাসিস্টের দোসর।
তিনটি দলের সঙ্গে বৈঠকেই প্রধান উপদেষ্টা সরকারের নিরপেক্ষ অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে আপনারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে আমরা ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি; সামনে আরও অনেক উদ্যোগ আপনারা দেখতে পাবেন।’
তা প্রধান উপদেষ্টা যতই নিশ্চয়তা দিন না কেন, যেখানে সব দলের কাছেই উপদেষ্টাদের (সবার নয়) এবং প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্টতা স্পষ্ট, যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে উল্লেখ করে যখন প্রকাশ্যে বারবার অভিযোগ করা হচ্ছে, সেখানে রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে নিশ্চিন্তে নিশ্চিত থাকতে পারে! তা ছাড়া, মাঝেমধ্যেই তো দলগুলোর পরস্পরের প্রতি বৈরী বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। যেমন কিছুদিন আগে এনসিপির আহ্বায়ক তাঁর ফেসবুক পোস্টে বললেন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) নিয়ে জামায়াতের আন্দোলন রাজনৈতিক প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। কিংবা জামায়াত জুলাই অভ্যুত্থানের আগে-পরে কখনোই সংস্কার আলোচনায় যুক্ত হয়নি। তারা কোনো কার্যকর প্রস্তাব দেয়নি। কোনো সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেনি এবং গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের প্রতি কোনো অঙ্গীকারও দেখায়নি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বললেন আরও একটু শক্ত কথা—‘জন্মের পরই বাপের সাথে পাল্লা দিতে যেও না।’ সরকার ভাবতে পারে যে এগুলো তো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেকার বাহাস। এটা নিয়ে তাদের অতটা না ভাবলেও চলবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই বাহাসগুলো তো রাজনৈতিক বাস্তবতা। এগুলো তো রাজনৈতিক অঙ্গনকে অস্থিতিশীল করতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশেও প্রভাব ফেলতে পারে।
তারপর উল্লেখ করা যায় মঙ্গলবারের বৈঠকে বিএনপি যে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, সে সম্পর্কে এনসিপির প্রতিক্রিয়ার কথা। এনসিপি বলল হঠাৎ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শটি দুরভিসন্ধিমূলক। কারণ, অন্তর্বর্তী সরকার গণ-অভ্যুত্থানের সরকার। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিনটি তাদের ম্যান্ডেট। অথচ বিএনপির বক্তব্যটি ছিল—নিরপেক্ষতার নিরিখে এখন অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা নিতে হবে।
এইসব রাজনৈতিক টানাপোড়েন ছাড়াও কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো অমীমাংসিত রয়েছে। যেমন জামায়াতের কাছে অমীমাংসিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি, ওই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে আগামী নভেম্বরে গণভোট। এই দাবিতে জামায়াতসহ আটটি দল আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এনসিপির কাছে অমীমাংসিত বিষয় জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি, নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন এবং তাদের দাবিকৃত নির্বাচনী প্রতীক শাপলা বরাদ্দ দেওয়া। বিএনপির কাছে সবচেয়ে বড় ইস্যু সময়মতো সুষ্ঠু নির্বাচন। এ ছাড়া এই তিনটি দলের কাছেই (হয়তো আরও অনেক দলের কাছে) সাধারণ ইস্যু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দলঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের সরিয়ে দেওয়া। এর মধ্যে বেশ কিছু বিষয় প্রতিটি দল চায় না। এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সেই ভূমিকা নিরপেক্ষ হিসেবেই প্রতীয়মান হওয়া এক বড় চ্যালেঞ্জই বটে।

না, সব উপদেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ নন। তবে সংখ্যাটা যে নেহাত কম হবে না, তা অনুমান করা যায় যখন প্রধান তিনটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলই আলাদা আলাদাভাবে উপদেষ্টাদের দলঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে, যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কোনো কোনো উপদেষ্টার সেফ এক্সিটের প্রসঙ্গটি তুলেছিলেন। আর এবার তো জানা গেল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে গত বুধবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দৃষ্টিতে দলঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের নামধামের তালিকাই নিয়ে গিয়েছিল। তবে ওই দিন সেই তালিকা তারা প্রধান উপদেষ্টাকে দেয়নি। প্রয়োজন হলে পরে দেবে। এবার শুধু বিষয়টি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং কয়েকজন উপদেষ্টা বিএনপির পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছে।
শুধু উপদেষ্টা নয়, জামায়াত সুনির্দিষ্ট নাম-ঠিকানা নিয়ে গিয়েছিল প্রায় ৪০ জন আমলারও, যাঁরা তাদের দৃষ্টিতে কোনো না কোনো দলের হয়ে, বিশেষত বিএনপির হয়ে কাজ করছেন। আর বৈঠক-পরবর্তী সংবাদ ব্রিফিংয়ে জামায়াতের নেতারা উল্লেখ করেছেন যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসন ও পুলিশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ লোকই বিএনপির। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত বলেছে, নির্বাচনের আগে সরকারকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। এ জন্য সচিবালয়, পুলিশ প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে রদবদল আনতে হবে। বিএনপির বিরুদ্ধে জামায়াতের আরও অভিযোগ, বিএনপি রাজনৈতিক চাপে পড়ে গণভোটে রাজি হলেও এখন জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
ওই দিনই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি প্রতিনিধিদলও পৃথকভাবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন, নির্বাচনের আগে বড় রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসন ও পুলিশে নিজেদের মতো ভাগ-বাঁটোয়ারা শুরু করেছে। ডিসি-এসপিদের তালিকা করে সরকারকে দিচ্ছে এবং সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের মধ্য থেকেও এ ব্যাপারে তারা সহযোগিতা পাচ্ছে।
এনসিপির আরও বড় অভিযোগ নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে। প্রধান উপদেষ্টাকে তারা বলেছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। কোনো কোনো দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। শাপলা প্রতীক পাওয়া প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলামের স্পষ্ট বক্তব্য হলো, যে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন এবং প্রতীকের বিষয়ে এনসিপির সঙ্গে ন্যায়বিচার করে না, তার অধীনে নির্বাচনে গিয়ে ন্যায়বিচার এবং নিরপেক্ষতা বা সঠিক ফলাফল পাওয়ার ব্যাপারে ভরসা করা যায় না। তাই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের যুক্তি হলো, নির্বাচন কমিশনের কারণে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয়, সেই দায়ও সরকারের ওপরই পড়বে।
উপদেষ্টাদের নিয়ে প্রশ্ন আছে বিএনপিরও। জামায়াত ও এনসিপির এক দিন আগে, গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। সেই বৈঠকে তারাও কয়েকজন উপদেষ্টাকে নিয়ে আপত্তি তুলেছে। কারও নাম উল্লেখ না করেই বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছে দলটি। এর আগেও বিএনপির পক্ষ থেকে এমন আহ্বান জানানো হয়েছিল। তখন দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল বলেও খবর বেরিয়েছে। তবে তাঁরা তখনই তাতে রাজি হননি। উপদেষ্টাদের ছাড়াও প্রশাসন নিয়েও অন্য দুই দলের মতোই উদ্বেগ আছে বিএনপিরও। মঙ্গলবারের বৈঠকে তারা এই বলে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যে প্রশাসন, পুলিশ এবং বিচার বিভাগের প্রায় ৫০ ভাগ ফ্যাসিস্টের দোসর।
তিনটি দলের সঙ্গে বৈঠকেই প্রধান উপদেষ্টা সরকারের নিরপেক্ষ অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে আপনারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে আমরা ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি; সামনে আরও অনেক উদ্যোগ আপনারা দেখতে পাবেন।’
তা প্রধান উপদেষ্টা যতই নিশ্চয়তা দিন না কেন, যেখানে সব দলের কাছেই উপদেষ্টাদের (সবার নয়) এবং প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্টতা স্পষ্ট, যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আছে উল্লেখ করে যখন প্রকাশ্যে বারবার অভিযোগ করা হচ্ছে, সেখানে রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে নিশ্চিন্তে নিশ্চিত থাকতে পারে! তা ছাড়া, মাঝেমধ্যেই তো দলগুলোর পরস্পরের প্রতি বৈরী বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। যেমন কিছুদিন আগে এনসিপির আহ্বায়ক তাঁর ফেসবুক পোস্টে বললেন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) নিয়ে জামায়াতের আন্দোলন রাজনৈতিক প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। কিংবা জামায়াত জুলাই অভ্যুত্থানের আগে-পরে কখনোই সংস্কার আলোচনায় যুক্ত হয়নি। তারা কোনো কার্যকর প্রস্তাব দেয়নি। কোনো সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেনি এবং গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের প্রতি কোনো অঙ্গীকারও দেখায়নি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বললেন আরও একটু শক্ত কথা—‘জন্মের পরই বাপের সাথে পাল্লা দিতে যেও না।’ সরকার ভাবতে পারে যে এগুলো তো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেকার বাহাস। এটা নিয়ে তাদের অতটা না ভাবলেও চলবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই বাহাসগুলো তো রাজনৈতিক বাস্তবতা। এগুলো তো রাজনৈতিক অঙ্গনকে অস্থিতিশীল করতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশেও প্রভাব ফেলতে পারে।
তারপর উল্লেখ করা যায় মঙ্গলবারের বৈঠকে বিএনপি যে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, সে সম্পর্কে এনসিপির প্রতিক্রিয়ার কথা। এনসিপি বলল হঠাৎ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শটি দুরভিসন্ধিমূলক। কারণ, অন্তর্বর্তী সরকার গণ-অভ্যুত্থানের সরকার। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিনটি তাদের ম্যান্ডেট। অথচ বিএনপির বক্তব্যটি ছিল—নিরপেক্ষতার নিরিখে এখন অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা নিতে হবে।
এইসব রাজনৈতিক টানাপোড়েন ছাড়াও কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো অমীমাংসিত রয়েছে। যেমন জামায়াতের কাছে অমীমাংসিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি, ওই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে আগামী নভেম্বরে গণভোট। এই দাবিতে জামায়াতসহ আটটি দল আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এনসিপির কাছে অমীমাংসিত বিষয় জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি, নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন এবং তাদের দাবিকৃত নির্বাচনী প্রতীক শাপলা বরাদ্দ দেওয়া। বিএনপির কাছে সবচেয়ে বড় ইস্যু সময়মতো সুষ্ঠু নির্বাচন। এ ছাড়া এই তিনটি দলের কাছেই (হয়তো আরও অনেক দলের কাছে) সাধারণ ইস্যু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দলঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের সরিয়ে দেওয়া। এর মধ্যে বেশ কিছু বিষয় প্রতিটি দল চায় না। এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সেই ভূমিকা নিরপেক্ষ হিসেবেই প্রতীয়মান হওয়া এক বড় চ্যালেঞ্জই বটে।

গত বছর জুলাইয়ের আন্দোলনে একটি স্লোগান শুনে আমি পুলকিত বোধ করেছিলাম। স্লোগানটা ছিল—‘কোটা না মেধা মেধা, মেধা মেধা’। এই স্লোগানের আরেকটি সমার্থক প্রবাদ বাক্য আছে আমাদের সমাজে—‘জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো’। আপনি কার ছেলে বা মেয়ে, কার নাতি বা নাতনি অর্থাৎ পিতা-মাতা বা দাদা-দাদির পরিচয় সূত্রে আপনি...
১৫ জুলাই ২০২৫
মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সে কথা সবাই এখন জানেন। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা জানেন এটা তাঁদের পরিবারের জন্য কত বড় ক্ষতি। নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কি না, তাদের জীবনে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে কী করা দরকার...
১৯ ঘণ্টা আগে
সমাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে, পৃথিবী প্রবেশ করেছে এক নতুন যুগে। এই গতিময় সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা হয়তো অনেক কিছু পাচ্ছি, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আরও বেশি কিছু। আজ আমরা এক অদ্ভুত স্বার্থপর সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিটি সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি।
২০ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এই সুন্দরবনের এক অনন্য প্রজাতির প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
২০ ঘণ্টা আগেহেনা শিকদার

সমাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে, পৃথিবী প্রবেশ করেছে এক নতুন যুগে। এই গতিময় সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা হয়তো অনেক কিছু পাচ্ছি, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আরও বেশি কিছু। আজ আমরা এক অদ্ভুত স্বার্থপর সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিটি সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি। এমন এক পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে যে সম্পর্কটি, মানুষের আত্মার সঙ্গে মিশে থাকে—বন্ধুত্ব।
একসময় বন্ধুত্ব ছিল নিঃস্বার্থ ভালোবাসার এক দারুণ উদাহরণ। সেখানে লেনদেনের কোনো হিসাব ছিল না, ছিল শুধু একে অপরের প্রতি বিশ্বাস, আস্থা এবং নির্ভরতা। শৈশবের সেই দিনগুলোর কথা মনে করলে আজও অনেকের মন আর্দ্র হয়ে ওঠে। টিফিনের খাবার ভাগ করে খাওয়া, বন্ধুর দুঃখে নির্দ্বিধায় পাশে দাঁড়ানো, কিংবা সামান্য কারণে অহেতুক ঝগড়া করে আবার মুহূর্তেই সব ভুলে গিয়ে একে অপরের হাত ধরার মধ্যে যে পবিত্রতা ছিল, আজকের যান্ত্রিক সভ্যতায় তা যেন এক দুর্লভ বস্তু।
বর্তমান সমাজব্যবস্থা আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে সবকিছুকে ব্যক্তিগত লাভের নিরিখে বিচার করতে হয়। আমরা এখন বন্ধু বানানোর আগেও অবচেতন মনে বিচার করে নিই—এই সম্পর্কটি আমার জীবনে কতটা মূল্য যোগ করবে? তার সামাজিক অবস্থান, অর্থনৈতিক সচ্ছলতা, কিংবা তার মাধ্যমে আমার কোনো উপকার হবে কি না—এইসব প্রশ্নই এখন বন্ধুত্বের ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে, একধরনের ‘শর্তাধীন’ বন্ধুত্বের জন্ম হচ্ছে, যেখানে স্বার্থের লেনদেন শেষ হলেই সম্পর্কের সুতো ছিঁড়ে যায়। এই ধরনের বন্ধুত্ব অনেকটা ব্যবসায়িক চুক্তির মতো, যেখানে একে অপরকে ব্যবহার করে নিজের আখের গোছানোই মূল উদ্দেশ্য।
এই স্বার্থপরতার পেছনে অবশ্য বেশ কিছু সামাজিক এবং মনস্তাত্ত্বিক কারণও রয়েছে। প্রথমত, আধুনিক জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান চাপ এবং প্রতিযোগিতা মানুষকে এতটাই আত্মকেন্দ্রিক করে তুলেছে যে, সে নিজের জগৎ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছে না। দ্বিতীয়ত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিস্তার এক মায়াবী জগতের সৃষ্টি করেছে। এখানে মানুষের বন্ধুর সংখ্যা হাজার হাজার, কিন্তু সত্যিকার অর্থে ভরসা করার মতো বন্ধুর সংখ্যা প্রায় শূন্য। লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ারের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এই ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব আসলে একধরনের লোকদেখানো সম্পর্ক, যার গভীরে কোনো প্রাণের ছোঁয়া নেই। এখানে সবাই যেন এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় নেমেছে—কার কত বন্ধু, কে কতটা জনপ্রিয়। এই জাঁকজমকপূর্ণ সংস্কৃতি আমাদের সত্যিকারের আবেগ এবং অনুভূতি থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
তবে এই হতাশাজনক চিত্রের মধ্যেও আশার আলো রয়েছে। স্বার্থের এই ঝোড়ো হাওয়ার বিপরীতে দাঁড়িয়েও কিছু মানুষ এখনো সত্যিকারের বন্ধুত্বের পতাকা উড়িয়ে চলেছেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন, বন্ধুত্ব মানে শুধু দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক নয়, বরং এটি একটি আত্মিক টান, যা কোনো স্বার্থের বিনিময়ে বিক্রি হয় না। একজন সত্যিকারের বন্ধু আয়নার মতো, যে কেবল আমাদের ভালো দিকগুলোই তুলে ধরে না, বরং আমাদের ভুলগুলোও দেখিয়ে দেয়। সে আমাদের বিপদের দিনে ঢাল হয়ে দাঁড়ায় এবং আনন্দের দিনে মন খুলে হাসে।
এই স্বার্থপর সময়ে সত্যিকারের বন্ধু খুঁজে পাওয়া হয়তো কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন নিজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। বন্ধুত্বের সম্পর্ককে যদি আমরা লাভ-ক্ষতির হিসাব থেকে মুক্ত করতে পারি, তবেই এর আসল সৌন্দর্য উপলব্ধি করা সম্ভব। বন্ধুত্ব কোনো পণ্য নয় যে তাকে ব্যবহার করে ফেলে দিতে হবে। এটি একটি চারা গাছের মতো, যাকে যত্ন, বিশ্বাস এবং সময় দিয়ে বড় করে তুলতে হয়। যখন একজন মানুষ সব ধরনের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে আরেকজন মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তখনই জন্ম নেয় এক নির্মল বন্ধুত্ব।
স্বার্থের এই সমাজে বন্ধুত্বের মানে হলো এক নিঃস্বার্থ আশ্রয়। এমন এক সম্পর্ক, যেখানে আপনি কোনো মুখোশ ছাড়াই নিজেকে প্রকাশ করতে পারেন, যেখানে আপনার দুর্বলতাগুলো নিয়ে কেউ উপহাস করবে না, বরং আপনাকে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। এই বন্ধুত্ব আপনাকে শেখাবে যে পৃথিবীতে এখনো এমন কিছু সম্পর্ক আছে, যা অর্থ বা ক্ষমতার বিনিময়ে কেনা যায় না, যা কেবল হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়। তাই এই যান্ত্রিক সভ্যতায় হারিয়ে যাওয়ার আগে আমাদের উচিত জীবনের সেই নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বের সম্পর্কগুলোকে খুঁজে বের করা এবং পরম মমতায় সেগুলো আগলে রাখা। কারণ, দিন শেষে এই সম্পর্কগুলোই আমাদের বেঁচে থাকার আসল প্রেরণা জোগায়।
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

সমাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে, পৃথিবী প্রবেশ করেছে এক নতুন যুগে। এই গতিময় সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা হয়তো অনেক কিছু পাচ্ছি, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আরও বেশি কিছু। আজ আমরা এক অদ্ভুত স্বার্থপর সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিটি সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি। এমন এক পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে যে সম্পর্কটি, মানুষের আত্মার সঙ্গে মিশে থাকে—বন্ধুত্ব।
একসময় বন্ধুত্ব ছিল নিঃস্বার্থ ভালোবাসার এক দারুণ উদাহরণ। সেখানে লেনদেনের কোনো হিসাব ছিল না, ছিল শুধু একে অপরের প্রতি বিশ্বাস, আস্থা এবং নির্ভরতা। শৈশবের সেই দিনগুলোর কথা মনে করলে আজও অনেকের মন আর্দ্র হয়ে ওঠে। টিফিনের খাবার ভাগ করে খাওয়া, বন্ধুর দুঃখে নির্দ্বিধায় পাশে দাঁড়ানো, কিংবা সামান্য কারণে অহেতুক ঝগড়া করে আবার মুহূর্তেই সব ভুলে গিয়ে একে অপরের হাত ধরার মধ্যে যে পবিত্রতা ছিল, আজকের যান্ত্রিক সভ্যতায় তা যেন এক দুর্লভ বস্তু।
বর্তমান সমাজব্যবস্থা আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে সবকিছুকে ব্যক্তিগত লাভের নিরিখে বিচার করতে হয়। আমরা এখন বন্ধু বানানোর আগেও অবচেতন মনে বিচার করে নিই—এই সম্পর্কটি আমার জীবনে কতটা মূল্য যোগ করবে? তার সামাজিক অবস্থান, অর্থনৈতিক সচ্ছলতা, কিংবা তার মাধ্যমে আমার কোনো উপকার হবে কি না—এইসব প্রশ্নই এখন বন্ধুত্বের ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে, একধরনের ‘শর্তাধীন’ বন্ধুত্বের জন্ম হচ্ছে, যেখানে স্বার্থের লেনদেন শেষ হলেই সম্পর্কের সুতো ছিঁড়ে যায়। এই ধরনের বন্ধুত্ব অনেকটা ব্যবসায়িক চুক্তির মতো, যেখানে একে অপরকে ব্যবহার করে নিজের আখের গোছানোই মূল উদ্দেশ্য।
এই স্বার্থপরতার পেছনে অবশ্য বেশ কিছু সামাজিক এবং মনস্তাত্ত্বিক কারণও রয়েছে। প্রথমত, আধুনিক জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান চাপ এবং প্রতিযোগিতা মানুষকে এতটাই আত্মকেন্দ্রিক করে তুলেছে যে, সে নিজের জগৎ ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছে না। দ্বিতীয়ত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিস্তার এক মায়াবী জগতের সৃষ্টি করেছে। এখানে মানুষের বন্ধুর সংখ্যা হাজার হাজার, কিন্তু সত্যিকার অর্থে ভরসা করার মতো বন্ধুর সংখ্যা প্রায় শূন্য। লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ারের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এই ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব আসলে একধরনের লোকদেখানো সম্পর্ক, যার গভীরে কোনো প্রাণের ছোঁয়া নেই। এখানে সবাই যেন এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতায় নেমেছে—কার কত বন্ধু, কে কতটা জনপ্রিয়। এই জাঁকজমকপূর্ণ সংস্কৃতি আমাদের সত্যিকারের আবেগ এবং অনুভূতি থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
তবে এই হতাশাজনক চিত্রের মধ্যেও আশার আলো রয়েছে। স্বার্থের এই ঝোড়ো হাওয়ার বিপরীতে দাঁড়িয়েও কিছু মানুষ এখনো সত্যিকারের বন্ধুত্বের পতাকা উড়িয়ে চলেছেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন, বন্ধুত্ব মানে শুধু দেওয়া-নেওয়ার সম্পর্ক নয়, বরং এটি একটি আত্মিক টান, যা কোনো স্বার্থের বিনিময়ে বিক্রি হয় না। একজন সত্যিকারের বন্ধু আয়নার মতো, যে কেবল আমাদের ভালো দিকগুলোই তুলে ধরে না, বরং আমাদের ভুলগুলোও দেখিয়ে দেয়। সে আমাদের বিপদের দিনে ঢাল হয়ে দাঁড়ায় এবং আনন্দের দিনে মন খুলে হাসে।
এই স্বার্থপর সময়ে সত্যিকারের বন্ধু খুঁজে পাওয়া হয়তো কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন নিজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। বন্ধুত্বের সম্পর্ককে যদি আমরা লাভ-ক্ষতির হিসাব থেকে মুক্ত করতে পারি, তবেই এর আসল সৌন্দর্য উপলব্ধি করা সম্ভব। বন্ধুত্ব কোনো পণ্য নয় যে তাকে ব্যবহার করে ফেলে দিতে হবে। এটি একটি চারা গাছের মতো, যাকে যত্ন, বিশ্বাস এবং সময় দিয়ে বড় করে তুলতে হয়। যখন একজন মানুষ সব ধরনের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে আরেকজন মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তখনই জন্ম নেয় এক নির্মল বন্ধুত্ব।
স্বার্থের এই সমাজে বন্ধুত্বের মানে হলো এক নিঃস্বার্থ আশ্রয়। এমন এক সম্পর্ক, যেখানে আপনি কোনো মুখোশ ছাড়াই নিজেকে প্রকাশ করতে পারেন, যেখানে আপনার দুর্বলতাগুলো নিয়ে কেউ উপহাস করবে না, বরং আপনাকে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। এই বন্ধুত্ব আপনাকে শেখাবে যে পৃথিবীতে এখনো এমন কিছু সম্পর্ক আছে, যা অর্থ বা ক্ষমতার বিনিময়ে কেনা যায় না, যা কেবল হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়। তাই এই যান্ত্রিক সভ্যতায় হারিয়ে যাওয়ার আগে আমাদের উচিত জীবনের সেই নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বের সম্পর্কগুলোকে খুঁজে বের করা এবং পরম মমতায় সেগুলো আগলে রাখা। কারণ, দিন শেষে এই সম্পর্কগুলোই আমাদের বেঁচে থাকার আসল প্রেরণা জোগায়।
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

গত বছর জুলাইয়ের আন্দোলনে একটি স্লোগান শুনে আমি পুলকিত বোধ করেছিলাম। স্লোগানটা ছিল—‘কোটা না মেধা মেধা, মেধা মেধা’। এই স্লোগানের আরেকটি সমার্থক প্রবাদ বাক্য আছে আমাদের সমাজে—‘জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো’। আপনি কার ছেলে বা মেয়ে, কার নাতি বা নাতনি অর্থাৎ পিতা-মাতা বা দাদা-দাদির পরিচয় সূত্রে আপনি...
১৫ জুলাই ২০২৫
মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সে কথা সবাই এখন জানেন। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা জানেন এটা তাঁদের পরিবারের জন্য কত বড় ক্ষতি। নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কি না, তাদের জীবনে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে কী করা দরকার...
১৯ ঘণ্টা আগে
না, সব উপদেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ নন। তবে সংখ্যাটা যে নেহাত কম হবে না, তা অনুমান করা যায় যখন প্রধান তিনটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলই আলাদা আলাদাভাবে উপদেষ্টাদের দলঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে, যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কোনো কোনো উপদেষ্টার সেফ...
১৯ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এই সুন্দরবনের এক অনন্য প্রজাতির প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
২০ ঘণ্টা আগেরিয়াদ হোসেন

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এই সুন্দরবনের এক অনন্য প্রজাতির প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
সাধারণ মানুষের মতো বাঘেরও প্রধান দুটি মৌলিক চাহিদা হলো খাদ্য ও বাসস্থান। বিশেষ করে খাদ্যের জোগান এবং আবাসস্থল নিরাপদ করতে পারলে বাঘ বাঁচিয়ে রাখা কিংবা তাদের প্রজনন বৃদ্ধিতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। এ জন্য সুন্দরবনকে বন্য প্রাণীর অবাধ বিচরণের জায়গা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাহলে বাঘসহ অন্য প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। পৃথিবীর মাত্র ১৩টি দেশে এখন বাঘের অস্তিত্ব আছে। বাঘ বাঁচাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সেসব দেশের সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থান রক্ষায় অন্য প্রজাতির প্রাণী থেকে বাঘ সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে সুন্দরবনে চোরা শিকারি বাঘের প্রধান হুমকি। কিছু অতিলোভী চোরা শিকারি ও বনদস্যুদের জন্য দিন দিন বাঘের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। সবশেষ তথ্যমতে, সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে ১১৪টি। কয়েক বছর আগে বড় বড় বনদস্যু দলের আত্মসমর্পণের ফলে বাঘনিধন কিছুটা কমে এসেছে। দুই বছর আগেও খাদ্যসংকটে বাঘ লোকালয়ে এলে হত্যা করা হতো। এখন সেটিও অনেকটা বন্ধ হয়েছে। বন সংরক্ষণে বন মন্ত্রণালয়ের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে সুন্দরবনসংলগ্ন স্থানীয় মানুষ আগের থেকে অনেক সচেতন হয়ে উঠেছে। এ জন্য বনের ওপর নির্ভরশীল মানুষগুলোর জীবিকায় সরকারকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের জীবন-জীবিকার জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের বিষয়ে আরও বেশি কাজ করতে হবে।
সুন্দরবনকে বাঁচাতে এবং বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে বাঘ সংরক্ষণের বিকল্প নেই। আর এ জন্য বন বিভাগ কিংবা সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে সুন্দরবন বা বাঘ কোনোটাই রক্ষা করা সম্ভব হবে না; যদি আমরা আমাদের নিজেদের জায়গা থেকে সচেতন না হই। পাশাপাশি বাঘনিধন ও হরিণ শিকার বন্ধের জন্য ২০১২ সালে বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। যে আইনের ৩৬ ধারায় বাঘশিকারি বা হত্যাকারী জামিন-অযোগ্য হবেন এবং সর্বোচ্চ সাত বছর সর্বনিম্ন দুই বছর কারাদণ্ড ও ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ আইনটিও অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে সুন্দরবন বাঁচানোর পাশাপাশি বাঘ, হরিণসহ নানা প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
শিক্ষার্থী, সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন এ দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছে। ঝড়-ঝঞ্ঝা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিক্ষয় রোধসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগে সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করে আসছে। এই সুন্দরবনের এক অনন্য প্রজাতির প্রাণী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
সাধারণ মানুষের মতো বাঘেরও প্রধান দুটি মৌলিক চাহিদা হলো খাদ্য ও বাসস্থান। বিশেষ করে খাদ্যের জোগান এবং আবাসস্থল নিরাপদ করতে পারলে বাঘ বাঁচিয়ে রাখা কিংবা তাদের প্রজনন বৃদ্ধিতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। এ জন্য সুন্দরবনকে বন্য প্রাণীর অবাধ বিচরণের জায়গা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাহলে বাঘসহ অন্য প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। পৃথিবীর মাত্র ১৩টি দেশে এখন বাঘের অস্তিত্ব আছে। বাঘ বাঁচাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সেসব দেশের সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থান রক্ষায় অন্য প্রজাতির প্রাণী থেকে বাঘ সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে সুন্দরবনে চোরা শিকারি বাঘের প্রধান হুমকি। কিছু অতিলোভী চোরা শিকারি ও বনদস্যুদের জন্য দিন দিন বাঘের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। সবশেষ তথ্যমতে, সুন্দরবনে বাঘ রয়েছে ১১৪টি। কয়েক বছর আগে বড় বড় বনদস্যু দলের আত্মসমর্পণের ফলে বাঘনিধন কিছুটা কমে এসেছে। দুই বছর আগেও খাদ্যসংকটে বাঘ লোকালয়ে এলে হত্যা করা হতো। এখন সেটিও অনেকটা বন্ধ হয়েছে। বন সংরক্ষণে বন মন্ত্রণালয়ের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে সুন্দরবনসংলগ্ন স্থানীয় মানুষ আগের থেকে অনেক সচেতন হয়ে উঠেছে। এ জন্য বনের ওপর নির্ভরশীল মানুষগুলোর জীবিকায় সরকারকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের জীবন-জীবিকার জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের বিষয়ে আরও বেশি কাজ করতে হবে।
সুন্দরবনকে বাঁচাতে এবং বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে বাঘ সংরক্ষণের বিকল্প নেই। আর এ জন্য বন বিভাগ কিংবা সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে সুন্দরবন বা বাঘ কোনোটাই রক্ষা করা সম্ভব হবে না; যদি আমরা আমাদের নিজেদের জায়গা থেকে সচেতন না হই। পাশাপাশি বাঘনিধন ও হরিণ শিকার বন্ধের জন্য ২০১২ সালে বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। যে আইনের ৩৬ ধারায় বাঘশিকারি বা হত্যাকারী জামিন-অযোগ্য হবেন এবং সর্বোচ্চ সাত বছর সর্বনিম্ন দুই বছর কারাদণ্ড ও ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ আইনটিও অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাহলে সুন্দরবন বাঁচানোর পাশাপাশি বাঘ, হরিণসহ নানা প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
শিক্ষার্থী, সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা

গত বছর জুলাইয়ের আন্দোলনে একটি স্লোগান শুনে আমি পুলকিত বোধ করেছিলাম। স্লোগানটা ছিল—‘কোটা না মেধা মেধা, মেধা মেধা’। এই স্লোগানের আরেকটি সমার্থক প্রবাদ বাক্য আছে আমাদের সমাজে—‘জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো’। আপনি কার ছেলে বা মেয়ে, কার নাতি বা নাতনি অর্থাৎ পিতা-মাতা বা দাদা-দাদির পরিচয় সূত্রে আপনি...
১৫ জুলাই ২০২৫
মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগার পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিল, সে কথা সবাই এখন জানেন। যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা জানেন এটা তাঁদের পরিবারের জন্য কত বড় ক্ষতি। নিহতদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কি না, তাদের জীবনে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে কী করা দরকার...
১৯ ঘণ্টা আগে
না, সব উপদেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ নন। তবে সংখ্যাটা যে নেহাত কম হবে না, তা অনুমান করা যায় যখন প্রধান তিনটি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলই আলাদা আলাদাভাবে উপদেষ্টাদের দলঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলে। অবশ্য এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একই অভিযোগ তোলা হয়েছে, যখন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম কোনো কোনো উপদেষ্টার সেফ...
১৯ ঘণ্টা আগে
সমাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুতগতিতে, পৃথিবী প্রবেশ করেছে এক নতুন যুগে। এই গতিময় সভ্যতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা হয়তো অনেক কিছু পাচ্ছি, কিন্তু হারিয়ে ফেলছি আরও বেশি কিছু। আজ আমরা এক অদ্ভুত স্বার্থপর সময়ে বাস করছি, যেখানে প্রতিটি সম্পর্কের মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত লাভ-ক্ষতি।
২০ ঘণ্টা আগে