সম্পাদকীয়
জুলাই অভ্যুত্থানের নায়কেরা নতুন দল গঠনের মাধ্যমে নবযাত্রার ঘোষণা দেওয়ার আগমুহূর্তে একটি খবর পুরোনো আলোচনাকেই আবার সামনে এনেছে। খবরটি হলো: বাংলাদেশ গণতন্ত্রের সূচকে এক বছরে ২৫ ধাপ পিছিয়েছে। এটা বিশ্বে সর্বাধিক অবনমনের নজির। ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ১৬৫টি দেশ ও দুটি অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১০০তম, যা গত বছরের তুলনায় এক লাফে ২৫ ধাপ নিচে নেমে গেছে। গণতন্ত্রের এমন ধস নিশ্চয়ই কোনো সুখবর নয়।
ইআইইউর প্রতিবেদনের মূল সূচকগুলোর দিকে তাকালে স্পষ্ট হয়, সরকারের কার্যকারিতা এবং নাগরিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে কম স্কোর করেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব রয়েছে এবং নাগরিক অধিকারগুলো ক্রমাগত সংকুচিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ দেড় দশক ধরে ‘হাইব্রিড শাসনব্যবস্থার’ তকমা বহন করছে। এই ব্যবস্থার মূল বৈশিষ্ট্য হলো—নির্বাচনব্যবস্থায় অনিয়ম, বিরোধী দল ও সমালোচকদের দমন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার অভাব, দুর্নীতি এবং গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ। ইআইইউর সংজ্ঞা অনুযায়ী, এমন শাসনব্যবস্থা কার্যত গণতন্ত্রের খোলসে কর্তৃত্ববাদী শাসনের মতো আচরণ করে।
গণতন্ত্র সূচকের পতনের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো গত এক দশকের রাজনৈতিক সংকট ও নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, যেখানে বিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণ সীমিত ছিল। ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর দমন-পীড়ন, গণগ্রেপ্তার, সভা-সমাবেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং প্রশাসনের একচোখা ভূমিকা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
সরকার পরিবর্তনের পরও মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার উন্নতি ঘটছে বলে দাবি করা যাবে কি? বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম যেন শেষ হওয়ার নয়। গণতন্ত্রের মানদণ্ডকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন কর্মকাণ্ড থেকে আমরা যেন বের হতেই পারছি না। এ বছর নাগরিক স্বাধীনতা সূচকে সবচেয়ে কম স্কোর পাওয়ার মূল কারণ সম্ভবত এটিই।
গণতন্ত্রের মানোন্নয়ন কোনো তাৎক্ষণিক অর্জন নয়, বরং এটি দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে সম্ভব। সবাইকে এটা বুঝতে হবে, একটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের ভিত্তি হলো অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শক্তিশালী বিরোধী দল এবং আইনের শাসন। প্রয়োজন এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা, যেখানে সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা থাকবে, গণমাধ্যম মুক্তভাবে কাজ করতে পারবে এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত থাকবে। কেবল ক্ষমতার জন্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, নির্বাচন বর্জন বা আন্দোলনের নামে সহিংসতা গণতন্ত্রের জন্য কখনোই মঙ্গলজনক নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত একে অপরকে শত্রু মনে না করে, গণতান্ত্রিক চর্চাকে শক্তিশালী করা।
সরকার, বিরোধী দল এবং নাগরিক সমাজ—সবাইকে এখন এই বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সঠিক দিকনির্দেশনা গ্রহণ করতে হবে। গণতন্ত্র কেবল একটি তকমা নয়, এটি জনগণের অধিকার ও রাষ্ট্রের ভিত্তি। তাই, একে রক্ষা করা এবং এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব সবার।
জুলাই অভ্যুত্থানের নায়কেরা নতুন দল গঠনের মাধ্যমে নবযাত্রার ঘোষণা দেওয়ার আগমুহূর্তে একটি খবর পুরোনো আলোচনাকেই আবার সামনে এনেছে। খবরটি হলো: বাংলাদেশ গণতন্ত্রের সূচকে এক বছরে ২৫ ধাপ পিছিয়েছে। এটা বিশ্বে সর্বাধিক অবনমনের নজির। ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ১৬৫টি দেশ ও দুটি অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১০০তম, যা গত বছরের তুলনায় এক লাফে ২৫ ধাপ নিচে নেমে গেছে। গণতন্ত্রের এমন ধস নিশ্চয়ই কোনো সুখবর নয়।
ইআইইউর প্রতিবেদনের মূল সূচকগুলোর দিকে তাকালে স্পষ্ট হয়, সরকারের কার্যকারিতা এবং নাগরিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে কম স্কোর করেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব রয়েছে এবং নাগরিক অধিকারগুলো ক্রমাগত সংকুচিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ দেড় দশক ধরে ‘হাইব্রিড শাসনব্যবস্থার’ তকমা বহন করছে। এই ব্যবস্থার মূল বৈশিষ্ট্য হলো—নির্বাচনব্যবস্থায় অনিয়ম, বিরোধী দল ও সমালোচকদের দমন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার অভাব, দুর্নীতি এবং গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ। ইআইইউর সংজ্ঞা অনুযায়ী, এমন শাসনব্যবস্থা কার্যত গণতন্ত্রের খোলসে কর্তৃত্ববাদী শাসনের মতো আচরণ করে।
গণতন্ত্র সূচকের পতনের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো গত এক দশকের রাজনৈতিক সংকট ও নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, যেখানে বিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণ সীমিত ছিল। ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর দমন-পীড়ন, গণগ্রেপ্তার, সভা-সমাবেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং প্রশাসনের একচোখা ভূমিকা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
সরকার পরিবর্তনের পরও মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার উন্নতি ঘটছে বলে দাবি করা যাবে কি? বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম যেন শেষ হওয়ার নয়। গণতন্ত্রের মানদণ্ডকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন কর্মকাণ্ড থেকে আমরা যেন বের হতেই পারছি না। এ বছর নাগরিক স্বাধীনতা সূচকে সবচেয়ে কম স্কোর পাওয়ার মূল কারণ সম্ভবত এটিই।
গণতন্ত্রের মানোন্নয়ন কোনো তাৎক্ষণিক অর্জন নয়, বরং এটি দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সংস্কারের মাধ্যমে সম্ভব। সবাইকে এটা বুঝতে হবে, একটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের ভিত্তি হলো অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শক্তিশালী বিরোধী দল এবং আইনের শাসন। প্রয়োজন এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা, যেখানে সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা থাকবে, গণমাধ্যম মুক্তভাবে কাজ করতে পারবে এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত থাকবে। কেবল ক্ষমতার জন্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, নির্বাচন বর্জন বা আন্দোলনের নামে সহিংসতা গণতন্ত্রের জন্য কখনোই মঙ্গলজনক নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত একে অপরকে শত্রু মনে না করে, গণতান্ত্রিক চর্চাকে শক্তিশালী করা।
সরকার, বিরোধী দল এবং নাগরিক সমাজ—সবাইকে এখন এই বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সঠিক দিকনির্দেশনা গ্রহণ করতে হবে। গণতন্ত্র কেবল একটি তকমা নয়, এটি জনগণের অধিকার ও রাষ্ট্রের ভিত্তি। তাই, একে রক্ষা করা এবং এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব সবার।
রুমিন ফারহানা বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, আইনজীবী ও রাজনীতি বিশ্লেষক। তিনি সংরক্ষিত নারী আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। তিনি বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
১ ঘণ্টা আগেদেশে প্রতিবছর বহু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। বাস্তবায়নের সময় মাঝে মাঝে সংবাদ চোখে পড়ে যে প্রকল্পের ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে গাছ কাটা পড়ছে, বনভূমি উজাড় হচ্ছে, খাল ও জলাভূমি ভরাট হচ্ছে, নির্মাণস্থলে নির্মাণকাজের ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, এমনকি কোনো কোনো প্রকল্প গ্রহণের ফলে পরিবেশের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব...
১ ঘণ্টা আগেপাহাড় রক্ষা করা যখন খুবই জরুরি, তখন সে পাহাড় কেটে গোটা অঞ্চলের জন্য বিপদ ডেকে আনছে একদল দুর্বৃত্ত। খাগড়াছড়ির পানছড়ি এলাকায় অবাধে পাহাড় কাটা হচ্ছে, অথচ সরকারি কর্মকর্তারা এ বিষয়ে দায়সারা বক্তব্য দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতাকে ঢাকার চেষ্টা করছেন।
১ ঘণ্টা আগে১৯৪৯ সালের ২৩ জুন মওলানা ভাসানীকে সভাপতি এবং শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয়েছিল আওয়ামী লীগ। তখন শেখ মুজিবুর রহমান জেলে ছিলেন, তাঁকে করা হয়েছিল দলের যুগ্ম সম্পাদক। পরবর্তী সময়ে শামসুল হক অপ্রকৃতিস্থ হয়ে যাওয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানকে দলের সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
১ দিন আগে