ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
শাশ্বত জীবনব্যবস্থা ইসলামে মানবজীবনের সব সমস্যার বাস্তব সমাধান দেওয়া হয়েছে। ফলে ইসলামের প্রতিটি বাণীতে সুখ ও শান্তির প্রতিফলন ঘটেছে। কিন্তু সারা বিশ্বে এমন একটি জনগোষ্ঠী তৈরি হয়েছে, যারা ইসলামের নাম ব্যবহার করে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে নানা রকম ভিত্তিহীন কথাবার্তা প্রচার করে। তাদের প্রচারের ফলে যে দুটি পরিভাষা সবার মাঝে পরিচিতি লাভ করেছে, তা হলো–উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ।
উগ্রবাদ বাংলা ভাষার একটি যৌগিক শব্দ। উগ্র শব্দের অর্থ অসহিষ্ণু, তীব্র, ভয়ানক প্রভৃতি। উগ্রবাদ অর্থ অসহিষ্ণু মতবাদ। অর্থাৎ এমন কিছু নির্দেশনা, যা ব্যক্তিকে অসহিষ্ণু ও ভয়ানক করে তোলে। জঙ্গিবাদ ফারসি ভাষার একটি যৌগিক শব্দ। জঙ্গ অর্থ যুদ্ধ, আর জঙ্গি অর্থ যোদ্ধা। তাই জঙ্গিবাদ অর্থ যোদ্ধাদের মতবাদ।
ধর্ম ও দেশরক্ষার জন্য ইসলাম যুদ্ধ করার নির্দেশ দিলেও সে ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশও দিয়েছে। মহানবী (সা.) যুদ্ধের প্রাক্কালে সব যোদ্ধার প্রতি নির্দেশ দিতেন, তাঁরা যেন শত্রুবাহিনীর নারী, অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান ও বৃদ্ধদের নিকটবর্তী না হন এবং তাঁদের ঘরবাড়ি, গাছপালা ও বাগান নষ্ট না করেন। ইসলামের প্রতিটি যুদ্ধই ছিল প্রতিরোধমূলক। কোনো যুদ্ধই আক্রমণাত্মক ছিল না। যখন ইসলাম ও মুসলমানদের ওপর কোনো বাহিনী আক্রমণ করত, তখন মহানবী (সা.) সাহাবিদের যুদ্ধ করার জন্য নির্দেশ দিতেন।
কিন্তু বর্তমানে এ পরিভাষাকে পরিবর্তন করে একশ্রেণির লোক ইসলামকে ব্যবহার করে এ মতবাদ প্রদান করছে যে, যাঁরা মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত অনৈসলামিক কার্যকলাপ করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করতে হবে। যার ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি আক্রমণ ও উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এ মতটি ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অসহিষ্ণু ও বাড়াবাড়ি করার সুযোগ ইসলামে নেই। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা সুরা বাকারার ২৫৬ নম্বর আয়াতে এরশাদ করেন, ‘দীন গ্রহণের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। নিশ্চয়ই হেদায়াত স্পষ্ট হয়েছে ভ্রষ্টতা থেকে। অতএব যে ব্যক্তি তাগুতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহর প্রতি ইমান আনে, অবশ্যই সে মজবুত রশি আঁকড়ে ধরে, যা ছিন্ন হওয়ার নয়।’
উগ্রবাদীরা ইসলামের প্রকৃত ব্যাখ্যা না করে তার অপব্যাখ্যা করে। ফলে শান্তির ধর্ম ইসলামের অনুসারীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে যেমন অশান্তি তৈরি হয়, তেমনি পরকালে রয়েছে তাঁদের জন্য ভয়াবহ পরিণাম। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমি যে কথা বলিনি, তা যদি কেউ আমার কথা হিসেবে চালিয়ে দেয়, তবে সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে তৈরি করে নেয়।’
মুসলিম নামধারী এসব দালাল চক্র শুধু ইসলামের মর্মবাণীর অপব্যাখ্যা করেই বসে নেই; বরং উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদী কার্যক্রম সম্পন্ন করে তার দায়ভার চাপায় শান্তি ও কল্যাণকামী ধর্ম ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর ওপর। তারা মানবতার ধর্ম ইসলামকে বিশ্ববাসীর কাছে চিত্রায়িত করছে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদ ও চরমপন্থার ধর্মরূপে। অথচ ইসলাম এসব কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। এ প্রসঙ্গে সুরা আল-মায়িদার ৩২ নম্বর আয়াতে বলা আছে, ‘কাউকে হত্যা কিংবা জমিনে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে কারও প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’
ইসলামে উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও যুদ্ধনীতি সম্পর্কে যে পরিষ্কার বক্তব্য রয়েছে, তা জানা সবার জন্য আবশ্যক। এই জ্ঞান ছাড়া ব্যাখ্যা দিলে তা অপব্যাখ্যাই হবে। আর অপব্যাখ্যার পরিণাম দেশ ও জাতির ধ্বংস বয়ে আনতে পারে।
তাই আমরা উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ বর্জন করে ইসলামের অপব্যাখ্যা ত্যাগ করি এবং সুন্দর ও সঠিকভাবে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাগুলো অনুসরণ করি।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
শাশ্বত জীবনব্যবস্থা ইসলামে মানবজীবনের সব সমস্যার বাস্তব সমাধান দেওয়া হয়েছে। ফলে ইসলামের প্রতিটি বাণীতে সুখ ও শান্তির প্রতিফলন ঘটেছে। কিন্তু সারা বিশ্বে এমন একটি জনগোষ্ঠী তৈরি হয়েছে, যারা ইসলামের নাম ব্যবহার করে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে নানা রকম ভিত্তিহীন কথাবার্তা প্রচার করে। তাদের প্রচারের ফলে যে দুটি পরিভাষা সবার মাঝে পরিচিতি লাভ করেছে, তা হলো–উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ।
উগ্রবাদ বাংলা ভাষার একটি যৌগিক শব্দ। উগ্র শব্দের অর্থ অসহিষ্ণু, তীব্র, ভয়ানক প্রভৃতি। উগ্রবাদ অর্থ অসহিষ্ণু মতবাদ। অর্থাৎ এমন কিছু নির্দেশনা, যা ব্যক্তিকে অসহিষ্ণু ও ভয়ানক করে তোলে। জঙ্গিবাদ ফারসি ভাষার একটি যৌগিক শব্দ। জঙ্গ অর্থ যুদ্ধ, আর জঙ্গি অর্থ যোদ্ধা। তাই জঙ্গিবাদ অর্থ যোদ্ধাদের মতবাদ।
ধর্ম ও দেশরক্ষার জন্য ইসলাম যুদ্ধ করার নির্দেশ দিলেও সে ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশও দিয়েছে। মহানবী (সা.) যুদ্ধের প্রাক্কালে সব যোদ্ধার প্রতি নির্দেশ দিতেন, তাঁরা যেন শত্রুবাহিনীর নারী, অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান ও বৃদ্ধদের নিকটবর্তী না হন এবং তাঁদের ঘরবাড়ি, গাছপালা ও বাগান নষ্ট না করেন। ইসলামের প্রতিটি যুদ্ধই ছিল প্রতিরোধমূলক। কোনো যুদ্ধই আক্রমণাত্মক ছিল না। যখন ইসলাম ও মুসলমানদের ওপর কোনো বাহিনী আক্রমণ করত, তখন মহানবী (সা.) সাহাবিদের যুদ্ধ করার জন্য নির্দেশ দিতেন।
কিন্তু বর্তমানে এ পরিভাষাকে পরিবর্তন করে একশ্রেণির লোক ইসলামকে ব্যবহার করে এ মতবাদ প্রদান করছে যে, যাঁরা মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত অনৈসলামিক কার্যকলাপ করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করতে হবে। যার ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি আক্রমণ ও উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এ মতটি ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অসহিষ্ণু ও বাড়াবাড়ি করার সুযোগ ইসলামে নেই। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা সুরা বাকারার ২৫৬ নম্বর আয়াতে এরশাদ করেন, ‘দীন গ্রহণের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। নিশ্চয়ই হেদায়াত স্পষ্ট হয়েছে ভ্রষ্টতা থেকে। অতএব যে ব্যক্তি তাগুতকে অস্বীকার করে এবং আল্লাহর প্রতি ইমান আনে, অবশ্যই সে মজবুত রশি আঁকড়ে ধরে, যা ছিন্ন হওয়ার নয়।’
উগ্রবাদীরা ইসলামের প্রকৃত ব্যাখ্যা না করে তার অপব্যাখ্যা করে। ফলে শান্তির ধর্ম ইসলামের অনুসারীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে যেমন অশান্তি তৈরি হয়, তেমনি পরকালে রয়েছে তাঁদের জন্য ভয়াবহ পরিণাম। এ প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আমি যে কথা বলিনি, তা যদি কেউ আমার কথা হিসেবে চালিয়ে দেয়, তবে সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে তৈরি করে নেয়।’
মুসলিম নামধারী এসব দালাল চক্র শুধু ইসলামের মর্মবাণীর অপব্যাখ্যা করেই বসে নেই; বরং উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদী কার্যক্রম সম্পন্ন করে তার দায়ভার চাপায় শান্তি ও কল্যাণকামী ধর্ম ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর ওপর। তারা মানবতার ধর্ম ইসলামকে বিশ্ববাসীর কাছে চিত্রায়িত করছে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদ ও চরমপন্থার ধর্মরূপে। অথচ ইসলাম এসব কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। এ প্রসঙ্গে সুরা আল-মায়িদার ৩২ নম্বর আয়াতে বলা আছে, ‘কাউকে হত্যা কিংবা জমিনে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে কারও প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’
ইসলামে উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও যুদ্ধনীতি সম্পর্কে যে পরিষ্কার বক্তব্য রয়েছে, তা জানা সবার জন্য আবশ্যক। এই জ্ঞান ছাড়া ব্যাখ্যা দিলে তা অপব্যাখ্যাই হবে। আর অপব্যাখ্যার পরিণাম দেশ ও জাতির ধ্বংস বয়ে আনতে পারে।
তাই আমরা উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ বর্জন করে ইসলামের অপব্যাখ্যা ত্যাগ করি এবং সুন্দর ও সঠিকভাবে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাগুলো অনুসরণ করি।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
দায়ী আমরা সবাই। তেজগাঁও ও কুর্মিটোলার বিমানবন্দর দুটি ১৯৪৫ সালে তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান যখন হলো, তখন তেজগাঁওয়ে বিমানবন্দর করা হলো বেশ বড় আকারে। এরপর ১৯৬৪ সালে নগরায়ণ ও জনসংখ্যা বাড়ার কারণে তেজগাঁওয়ের বদলে কুর্মিটোলার বিমানবন্দর বড় পরিসরে চালু করার পরিকল্পনা করা হয়।
১৩ ঘণ্টা আগেউত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনা গোটা জাতিকে গভীর বেদনায় নিমজ্জিত করেছে। শিশুর কান্না, অভিভাবকের আর্তনাদ কেবল কারও ব্যক্তিগত ক্ষত বা ক্ষতি নয়, বরং একটি রাষ্ট্রের অবকাঠামোগত দুর্বলতার দিকটিকে সামনে এনেছে। প্রশিক্ষণ বিমান কোথায় চালানো উচিত,
১৩ ঘণ্টা আগেএনজিওর নাট্যকলা ও ডোনার ড্রামা ‘আপনার এনজিও কী করে?’ ‘আমরা “জলবায়ু সচেতনতা” নিয়ে কাজ করি।’ ‘অবশ্যই! নিজে এসি রুমে বসে চা খেয়ে বোঝাই, কীভাবে গরিবকে বৃষ্টি থেকে বাঁচতে হয়!’ ‘আমরা প্রচারণা চালাই—“পৃথিবী বাঁচাও”, আর তাতে ৫০ লাখ টাকার প্রজেক্ট ফান্ড পাই।’
১৩ ঘণ্টা আগেগণ-অভ্যুত্থানের এক বছরের মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের এ রকম লেজেগোবরে অবস্থা কেন হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সরকারের ব্যর্থতার কড়া সমালোচনা করেছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, উদ্ভূত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ফ্যাসিবাদী শক্তি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
১৩ ঘণ্টা আগে