উপসম্পাদকীয়
রাশিয়ার পুরোনো একটা কৌতুক আছে। তখনকার প্রেসিডেন্ট ব্রেজনেভ একদিন ফলের দোকানে গেলেন। দোকানে একটামাত্র তরমুজ। তিনি দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার তরমুজের দাম কত?
দোকানদার বলল, কোন তরমুজটা?
ব্রেজনেভ বললেন, দোকানে তো মাত্র একটা তরমুজ। আবার কোন তরমুজটা বলছ কেন?
দোকানদার বলল, জি, এটার দাম ২০০ টাকা।
ব্রেজনেভ টাকা দিলেন।
দোকানদার আবার বলল, কোন ব্রেজনেভকে দেব?
ব্রেজনেভ চটে গিয়ে বললেন, তুমি কতজন ব্রেজনেভকে দেখছ?
দোকানদার শান্তভাবে বলল, একজনকেই দেখছি। কিন্তু আপনিই তো শিখিয়েছেন, আমাদের বেছে নিতে হবে।
এটাকেই বলে নির্বাচন। যেটা একটা, সেটাকেই ‘বেছে নেওয়ার’ অভিনয়। আমাদের দেশেও সেই ব্রেজনেভীয় তরমুজতত্ত্ব চালু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে কি?
দিন কয়েক আগে দেশের দুই মহামান্য প্রধান—একজন প্রধান উপদেষ্টা, আরেকজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার—চুপিসারে একান্তে বৈঠক করেছেন। দেশব্যাপী গুঞ্জন, নিশ্চয়ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বড় কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাংবাদিকেরা ঘাম ঝরিয়ে জানতে চাইলেন, কী কথা হয়েছে?
সিইসি বললেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে তিনি কিছু বলেননি।
হায়! তাহলে কী কথা হলো দুই প্রধানের?
অনেকেই ধারণা করছেন, তাঁরা হয়তো পেঁয়াজের দাম, ডিমের সরবরাহ বা গরমে লুঙ্গির সাইজ ছোট হওয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন। আবার কেউ বলছেন, তাঁরা হয়তো দুই চায়ের কাপের মাঝে এক নিরপেক্ষ বিস্কুট ভাগ করে খেয়েছেন। কারণ, কথাবার্তায় কিছু হয়নি, কিন্তু ‘চা চক্র’ নিশ্চয় হয়েছে।
আমার পরিচিত একজন অবশ্য বললেন, মনে হয় তাঁরা দুজন বসে ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করেছেন। সিইসি হয়তো জিজ্ঞেস করেছেন, আপনি কাকে সাপোর্ট করেন? বাংলাদেশ না পাকিস্তান?
প্রধান উপদেষ্টা মাথা নেড়েছেন, নির্বাচনের প্রশ্নে আমরা নিরপেক্ষ থাকি।
তার মানে কী?
মানে তিনি কেবল দেখে যাবেন—কে বল করবে, কে উইকেট নেবে, আর কে ‘ফের কোর্টে যাবে’।
এটা শুনে একজন রাজনৈতিক তাত্ত্বিক বললেন, এটা তো লোভচোর পাড়ার সেই গল্পের মতো। বউ রান্না করল, স্বামী বলল, খেতে পারবে না।
বউ বলল, তাহলে রান্না করলাম কেন?
স্বামী বলল, তোমার স্বাধীনতা, রান্না করা। আমার স্বাধীনতা, না খাওয়া।
যে দেশে ভোটারদের অংশগ্রহণ প্রশ্নবিদ্ধ, সেই দেশে নির্বাচন কমিশন আর প্রধান উপদেষ্টা একসঙ্গে চা খাচ্ছেন, অথচ নির্বাচনের সময় নিয়ে কোনো কথা হয়নি। এটা কেমন কথা?
এদিকে নির্বাচনে অংশ করা না-করা নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একমত হতে সমস্যা হচ্ছে বলেও খবর শোনা যাচ্ছে। তবে কি দল একটা থাকলেও জনগণকে ‘পছন্দ’ করতে হবে।
এটাই নির্বাচনের সেরা কৌশল। এটা ঠিক যেন ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পরও ফেসবুকে লেখা থাকে: এটা জটিল সমস্যা!
এদিকে নেতা সাহেবদের অনেকেই ব্যস্ত। কেউ কেউ নাকি মনোনয়ন চিঠি নিয়ে একে অপরের বাড়িতে গিয়ে বলছেন, এইটা আমি জমা দিলাম, আপনি রাখেন। সময় হলে টিভিতে বলবেন, জনগণ চায় বলেই প্রার্থী হলেন।
রোডে যদি আপনি একা হাঁটেন, আর কেউ বলে, ভিড় নেই কেন?
আপনি বলবেন, ভিড় আসবে, সময়মতো।
এভাবে একা হাঁটতে হাঁটতেই আপনি পার হয়ে যাবেন নির্বাচনী বৈতরণী।
ভোট একটা নাগরিক অধিকার হলেও এটা নিয়ে অতীতে তামাশাও কম হয়নি। রাতের ভোট, ডামি ভোট, আমি ভোট, তুমি ভোট! আহা রে কতই না ভোটরঙ্গ!
ঠিক তাই।
আপনার ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা আছে। ভোট চাওয়ারও।
আগের সরকার দেশের নির্বাচনীব্যবস্থার বারোটা বাজিয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকার ভালো নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধপরিকর।
নির্বাচন কমিশনও তো নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত। হুইসেল বাজলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে মাঠে– সিইসিও এটাই জানিয়েছেন।
প্রশ্ন হলো, প্রার্থী এবং ভোটাররা কীভাবে পরিবর্তনের হাওয়া টের পাবেন? হাওয়া বইলে টের পেতে অসুবিধা হবে না।
ভোটাররা স্বাধীনভাবেই ভোট দেবেন, কিন্তু কিসের ভিত্তিতে? নিজের পছন্দ অনুযায়ী প্রার্থী বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা সবার আছে—যাকে খুশি বেছে নেবেন। কিন্তু মাঠে যদি একজনই প্রার্থী থাকেন?
তখন মনে রাখবেন, দোকানে তরমুজ একটা থাকলেও কীভাবে বেছে নিতে হয়, সেটা ব্রেজনেভ শিখিয়ে গেছেন।
রাশিয়ার পুরোনো একটা কৌতুক আছে। তখনকার প্রেসিডেন্ট ব্রেজনেভ একদিন ফলের দোকানে গেলেন। দোকানে একটামাত্র তরমুজ। তিনি দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার তরমুজের দাম কত?
দোকানদার বলল, কোন তরমুজটা?
ব্রেজনেভ বললেন, দোকানে তো মাত্র একটা তরমুজ। আবার কোন তরমুজটা বলছ কেন?
দোকানদার বলল, জি, এটার দাম ২০০ টাকা।
ব্রেজনেভ টাকা দিলেন।
দোকানদার আবার বলল, কোন ব্রেজনেভকে দেব?
ব্রেজনেভ চটে গিয়ে বললেন, তুমি কতজন ব্রেজনেভকে দেখছ?
দোকানদার শান্তভাবে বলল, একজনকেই দেখছি। কিন্তু আপনিই তো শিখিয়েছেন, আমাদের বেছে নিতে হবে।
এটাকেই বলে নির্বাচন। যেটা একটা, সেটাকেই ‘বেছে নেওয়ার’ অভিনয়। আমাদের দেশেও সেই ব্রেজনেভীয় তরমুজতত্ত্ব চালু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে কি?
দিন কয়েক আগে দেশের দুই মহামান্য প্রধান—একজন প্রধান উপদেষ্টা, আরেকজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার—চুপিসারে একান্তে বৈঠক করেছেন। দেশব্যাপী গুঞ্জন, নিশ্চয়ই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বড় কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাংবাদিকেরা ঘাম ঝরিয়ে জানতে চাইলেন, কী কথা হয়েছে?
সিইসি বললেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে তিনি কিছু বলেননি।
হায়! তাহলে কী কথা হলো দুই প্রধানের?
অনেকেই ধারণা করছেন, তাঁরা হয়তো পেঁয়াজের দাম, ডিমের সরবরাহ বা গরমে লুঙ্গির সাইজ ছোট হওয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন। আবার কেউ বলছেন, তাঁরা হয়তো দুই চায়ের কাপের মাঝে এক নিরপেক্ষ বিস্কুট ভাগ করে খেয়েছেন। কারণ, কথাবার্তায় কিছু হয়নি, কিন্তু ‘চা চক্র’ নিশ্চয় হয়েছে।
আমার পরিচিত একজন অবশ্য বললেন, মনে হয় তাঁরা দুজন বসে ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করেছেন। সিইসি হয়তো জিজ্ঞেস করেছেন, আপনি কাকে সাপোর্ট করেন? বাংলাদেশ না পাকিস্তান?
প্রধান উপদেষ্টা মাথা নেড়েছেন, নির্বাচনের প্রশ্নে আমরা নিরপেক্ষ থাকি।
তার মানে কী?
মানে তিনি কেবল দেখে যাবেন—কে বল করবে, কে উইকেট নেবে, আর কে ‘ফের কোর্টে যাবে’।
এটা শুনে একজন রাজনৈতিক তাত্ত্বিক বললেন, এটা তো লোভচোর পাড়ার সেই গল্পের মতো। বউ রান্না করল, স্বামী বলল, খেতে পারবে না।
বউ বলল, তাহলে রান্না করলাম কেন?
স্বামী বলল, তোমার স্বাধীনতা, রান্না করা। আমার স্বাধীনতা, না খাওয়া।
যে দেশে ভোটারদের অংশগ্রহণ প্রশ্নবিদ্ধ, সেই দেশে নির্বাচন কমিশন আর প্রধান উপদেষ্টা একসঙ্গে চা খাচ্ছেন, অথচ নির্বাচনের সময় নিয়ে কোনো কথা হয়নি। এটা কেমন কথা?
এদিকে নির্বাচনে অংশ করা না-করা নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একমত হতে সমস্যা হচ্ছে বলেও খবর শোনা যাচ্ছে। তবে কি দল একটা থাকলেও জনগণকে ‘পছন্দ’ করতে হবে।
এটাই নির্বাচনের সেরা কৌশল। এটা ঠিক যেন ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পরও ফেসবুকে লেখা থাকে: এটা জটিল সমস্যা!
এদিকে নেতা সাহেবদের অনেকেই ব্যস্ত। কেউ কেউ নাকি মনোনয়ন চিঠি নিয়ে একে অপরের বাড়িতে গিয়ে বলছেন, এইটা আমি জমা দিলাম, আপনি রাখেন। সময় হলে টিভিতে বলবেন, জনগণ চায় বলেই প্রার্থী হলেন।
রোডে যদি আপনি একা হাঁটেন, আর কেউ বলে, ভিড় নেই কেন?
আপনি বলবেন, ভিড় আসবে, সময়মতো।
এভাবে একা হাঁটতে হাঁটতেই আপনি পার হয়ে যাবেন নির্বাচনী বৈতরণী।
ভোট একটা নাগরিক অধিকার হলেও এটা নিয়ে অতীতে তামাশাও কম হয়নি। রাতের ভোট, ডামি ভোট, আমি ভোট, তুমি ভোট! আহা রে কতই না ভোটরঙ্গ!
ঠিক তাই।
আপনার ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা আছে। ভোট চাওয়ারও।
আগের সরকার দেশের নির্বাচনীব্যবস্থার বারোটা বাজিয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকার ভালো নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধপরিকর।
নির্বাচন কমিশনও তো নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত। হুইসেল বাজলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে মাঠে– সিইসিও এটাই জানিয়েছেন।
প্রশ্ন হলো, প্রার্থী এবং ভোটাররা কীভাবে পরিবর্তনের হাওয়া টের পাবেন? হাওয়া বইলে টের পেতে অসুবিধা হবে না।
ভোটাররা স্বাধীনভাবেই ভোট দেবেন, কিন্তু কিসের ভিত্তিতে? নিজের পছন্দ অনুযায়ী প্রার্থী বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা সবার আছে—যাকে খুশি বেছে নেবেন। কিন্তু মাঠে যদি একজনই প্রার্থী থাকেন?
তখন মনে রাখবেন, দোকানে তরমুজ একটা থাকলেও কীভাবে বেছে নিতে হয়, সেটা ব্রেজনেভ শিখিয়ে গেছেন।
সাতচল্লিশের দেশভাগকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িকতা ক্রমাগত তীব্র হলো। রক্তপাত ঘটল। পরে যখন স্বাধীন হলো ভারতবর্ষ, তখন একটির জায়গায় দুটি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ঘটল। কিন্তু সাম্প্রদায়িকতার সমস্যার সমাধান হলো না; না পাকিস্তানে, না ভারতে। পাকিস্তানের সব ধর্মাবলম্বীকে বলা হলো রাজনৈতিকভাবে নিজ নিজ ধর্মমত ভুলে
৮ ঘণ্টা আগেআয়মান সোবহ, ওমর মিলাদ এবং আসাদ আসাদ আমরা গাজার তিনটি অলাভজনক বিশ্ববিদ্যালয়—আল-আকসা ইউনিভার্সিটি, আল-আজহার ইউনিভার্সিটি-গাজা এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজার সভাপতি।
৮ ঘণ্টা আগেকেউ যদি আপনাকে ৮০ টাকার খুব ভালো চাল রেখে ৮৫ টাকায় পোকা আর পাথরভর্তি চাল নিতে জোর করে, আপনি কি সেই চাল কিনবেন? নিশ্চয়ই না। কিন্তু সেই ব্যক্তি নাছোড়বান্দা, আপনাকে তার কাছ থেকেই পোকা-পাথরমিশ্রিত চাল বেশি দামে নিতে হবে, নয়তো আপনার ‘ক্ষতি’ হবে! ভাবছেন, তুচ্ছ একটা ব্যাপারে কেউ কাউকে হুমকি দিতে পারে?
৮ ঘণ্টা আগেজোসেফ গোয়েবলস ছিলেন হিটলারের নাৎসি জার্মানির তথ্য ও প্রচারবিষয়ক মন্ত্রী। তিনি ছিলেন মিথ্যাকে ‘সত্য’ বানানোর এক ভয়ংকর কৌশলের রূপকার। গোয়েবলস বিশ্বাস করতেন, ‘একটি বড় মিথ্যাকে বারবার বললে মানুষ একসময় সেটিকে সত্য বলে মেনে নেয়।’ তাঁর এই নীতি দিয়েই নাৎসি জার্মানি কোটি মানুষের চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করেছিল...
১ দিন আগে