অজয় দাশগুপ্ত
আমি যখন সিডনি আসি, তখন বাংলা ভাষাভাষী মানুষ বিশেষত বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। একসময় যে আমাদের একটি বা একাধিক বইমেলার প্রয়োজন পড়তে পারে, সেটা দূরদর্শী ব্যতীত কারও মাথায় আসেনি। কিন্তু বাংলা, বাঙালি মানেই বিদ্রোহ আর দ্রোহের ভেতর দিয়ে নতুন কোনো ইতিহাস রচনা। সে ইতিহাস যে শুধু দেশের মাটিতে রচিত হবে, এমন কিন্তু নয়; বরং বলা উচিত, দেশের মাটি আমাদের বীজতলা। সেখানে যে চারাগাছ বা বীজের রোপণ করা হয়, কালক্রমে সেটাই মহিরুহ হয়ে দূর আকাশে সপ্তসিন্ধু দশদিগন্তে পাখা মেলে। তার বড় প্রমাণ বহুজাতিক সিডনি সমাজে আমাদের আজকের অবস্থান।
যে কথা বলছিলাম; বাঙালি যখন থেকে দেশের বাইরে পা রাখছে, তখন থেকে তার সঙ্গে দুটি বিষয় দেশান্তরী হয়ে গেছে। একটি তার জিয়ানো ধর্ম; অন্যটি ইতিহাস ও সংস্কৃতি। সে সংস্কৃতির অনিবার্য নাম আমাদের ভাষা। মনে রাখতে হবে, আমরা সেই জাতি যাঁরা রক্ত দিয়ে ভাষার সংগ্রাম করেছি। সে ভাষাকে আন্তর্জাতিক বলয়ে প্রতিষ্ঠা করেছি। প্রতিষ্ঠার কাজটি সহজ কিছু নয়। এ জন্য বাংলাদেশের বাইরে বসবাসরত বাঙালিদের সংগ্রাম করতে হয়েছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের কয়েক যুগ পর কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাদের যে উপহার দিয়েছেন, তা আজ অহংকার। এর আগে ইংল্যান্ডসহ নানা দেশে শহীদ মিনার এবং ভাষাসৌধ নির্মিত হয়েছিল। সব মিলিয়ে আমাদের মাতৃভাষার অহংকার আজ বিশ্বজনীন।
কোথায় অবস্থান করছে আমাদের এই ভাষা? বিশ্বের বহুল ব্যবহৃত ভাষাগুলোর মধ্যে বাংলা সপ্তম। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের বসবাস বাংলাদেশে এবং এরপর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে। এথনোলগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান পৃথিবীতে বাংলা ভাষাভাষীর সংখ্যা ২৭ কোটির বেশি।
১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ ভাগের আগে থেকেই ভাষা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। ১৯৪৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার নির্দেশ দেয় এবং পাকিস্তান সরকারের এমন ঘোষণার বিরোধিতা করে বর্তমান বাংলাদেশের জনগণ। তৎকালীন পূর্ব বাংলা তথা বাংলাদেশে এই নিয়ে আন্দোলন চলতে থাকে। সেটি সংঘাতে রূপ নেয় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীরা মিলে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ এবং বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। কিন্তু সেই মিছিল যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি যায়, তখন পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। সেই গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ অনেকে শহীদ হন। তবে ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর কারণে সেদিন সারা দেশে বিদ্রোহ শুরু হয়।
ক্রমবর্ধমান আন্দোলনের চাপে শেষ পর্যন্ত ১৯৫৪ সালের ৭ মে পাকিস্তান গণপরিষদে তৎকালীন পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গৃহীত হয় বাংলা। পরবর্তীকালে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করার পর বাংলাকে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করা হয়। সর্বশেষ, বাংলা ভাষা রক্ষার জন্য আন্দোলন এবং ভাষার অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেসকো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
এখন এর ধারাবাহিকতায় আমাদের করণীয় কী
কী? আমি মনে করি, দেশের বাইরের বাঙালিদের দায়িত্ব ঘরে-বাইরে ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। একটা বিষয় বলা উচিত, যে প্রজন্মকে আমরা বাংলা ভাষা জানে না বা বলতে-লিখতে পারে না মনে করি, তাদের কিন্তু শিখিয়ে দিলে বা ধরিয়ে দিলেই তরতর করে এগিয়ে যায়। সে উদাহরণ চোখে পড়বেই। কাজেই তাদের আরও বেশি বেশি যুক্ত করার দরকার আছে। এমন নয় যে, তাদের কেবল বাংলা পড়তে বা লিখতে জানতে হবে। আন্তর্জাতিক যেকোনো ভাষাতেই তারা বাংলা, বাঙালির ভাষার গৌরব জানতে পারে এবং তা প্রচার করতে পারে। সে দিকটাতে নজর দেওয়া এখন জরুরি।
বলছিলাম সিডনির কথা। এখানে এখন হাজার হাজার বাঙালির বসবাস। ইংরেজিতে যাকে বলে ভাইব্রেন্ট, তেমনি এক স্পন্দনমুখর সমাজ আমাদের। বছরে সব মাসেই কোনো না কোনো অনুষ্ঠান, দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য মানুষের আনাগোনা আর কর্মকাণ্ড লেগেই আছে। এগুলোর ব্যবহারিক মূল্য এবং প্রভাব আছে। কিন্তু আত্মাকে শুদ্ধ করে, বিবেককে জাগ্রত করে বা চিন্তাকে উসকে দিতে পারে, এমন কাজ কম। এমন কাজের জন্য যে হাতিয়ার অমোঘ ও অব্যর্থ, তার নাম পুস্তক। জ্ঞানের বাহন এই বই মানেই আমাদের অগ্রযাত্রার সূচনা। বাঙালি বই পড়ে, পড়তে ভালোবাসে। ডিজিটাল জগতে তার মনের বেশির ভাগ টিভি, ইউটিউব বা ফেসবুক কেড়ে নিলেও ঘুরেফিরে পুস্তকই তার শেষ আশ্রয়। আপনি গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন, বুঝবেন ‘মাদার’ বা ‘মা’ হচ্ছে লেখালেখি। একটি নাটক লিখা হলে তারপর তার শুটিং হয়। একটি গান লেখা হয়ে গেলে সুর আর কণ্ঠ যোগ হয়। অর্থাৎ লেখা বা বইপত্রই আমাদের মূল সূত্র। দেশে-বিদেশে লাইব্রেরি কিংবা বাজারে গিয়ে বইয়ের দোকান থেকে বই কেনা বা পড়ার পাশাপাশি আর একটা বিষয় চলমান; এই জনপ্রিয় বিষয়টির নাম বইমেলা।
এত দিন ধরে আমাদের সে তৃষ্ণা মিটিয়ে এসেছে একটি বইমেলা। দীর্ঘ সময় ধরে সিডনির অ্যাশফিল্ড পার্কে চলমান সেই মেলা ইতিহাস। কিন্তু যে হারে বাঙালি বাড়ছে, তাতে আরও বইমেলা হবে বা হতে পারে, এটাই স্বাভাবিক। এই যৌক্তিক ধারণা
এবার সত্য করতে চলেছে আরেকটি বইমেলা। এবার ক্যাম্বেলটাউন বইমেলা কেমন হবে, কতটা আশা পূরণ করতে পারবে বা কত দিন চলবে, সেসব প্রশ্নের উত্তর দেবে সময়। কিন্তু আমি বলব, এই যাত্রা আমাদের আরেকটি মাইলফলক। অঞ্চলভিত্তিক বাঙালি জনগোষ্ঠীর এক বিশাল অংশ এই এলাকার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাদের জন্য বা সবার জন্য আরেকটি বইমেলার প্রয়োজন ছিল; যা সময়ের হাত ধরে আজ বাস্তব হতে চলেছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের বায়ান্ন আর ভাষা আন্দোলন এক সূত্রে গাঁথা। এর কোনো ব্যতিক্রম বা অন্যথা হতে পারে না। আমি মনে করি, জাতীয় আদর্শ আর ঐতিহ্যের পাশাপাশি বহুজাতিকতাকে ধারণ করে এগিয়ে চললে এই বইমেলা নতুন কোনো পালক গুঁজতে পারে বাঙালির মুকুটে।
বইপ্রেমী বাঙালির এই মেলা সবার অংশগ্রহণে জয়ী হবে, এটাই কামনা করি।
আমি যখন সিডনি আসি, তখন বাংলা ভাষাভাষী মানুষ বিশেষত বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। একসময় যে আমাদের একটি বা একাধিক বইমেলার প্রয়োজন পড়তে পারে, সেটা দূরদর্শী ব্যতীত কারও মাথায় আসেনি। কিন্তু বাংলা, বাঙালি মানেই বিদ্রোহ আর দ্রোহের ভেতর দিয়ে নতুন কোনো ইতিহাস রচনা। সে ইতিহাস যে শুধু দেশের মাটিতে রচিত হবে, এমন কিন্তু নয়; বরং বলা উচিত, দেশের মাটি আমাদের বীজতলা। সেখানে যে চারাগাছ বা বীজের রোপণ করা হয়, কালক্রমে সেটাই মহিরুহ হয়ে দূর আকাশে সপ্তসিন্ধু দশদিগন্তে পাখা মেলে। তার বড় প্রমাণ বহুজাতিক সিডনি সমাজে আমাদের আজকের অবস্থান।
যে কথা বলছিলাম; বাঙালি যখন থেকে দেশের বাইরে পা রাখছে, তখন থেকে তার সঙ্গে দুটি বিষয় দেশান্তরী হয়ে গেছে। একটি তার জিয়ানো ধর্ম; অন্যটি ইতিহাস ও সংস্কৃতি। সে সংস্কৃতির অনিবার্য নাম আমাদের ভাষা। মনে রাখতে হবে, আমরা সেই জাতি যাঁরা রক্ত দিয়ে ভাষার সংগ্রাম করেছি। সে ভাষাকে আন্তর্জাতিক বলয়ে প্রতিষ্ঠা করেছি। প্রতিষ্ঠার কাজটি সহজ কিছু নয়। এ জন্য বাংলাদেশের বাইরে বসবাসরত বাঙালিদের সংগ্রাম করতে হয়েছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের কয়েক যুগ পর কানাডাপ্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাদের যে উপহার দিয়েছেন, তা আজ অহংকার। এর আগে ইংল্যান্ডসহ নানা দেশে শহীদ মিনার এবং ভাষাসৌধ নির্মিত হয়েছিল। সব মিলিয়ে আমাদের মাতৃভাষার অহংকার আজ বিশ্বজনীন।
কোথায় অবস্থান করছে আমাদের এই ভাষা? বিশ্বের বহুল ব্যবহৃত ভাষাগুলোর মধ্যে বাংলা সপ্তম। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের বসবাস বাংলাদেশে এবং এরপর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে। এথনোলগের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান পৃথিবীতে বাংলা ভাষাভাষীর সংখ্যা ২৭ কোটির বেশি।
১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ ভাগের আগে থেকেই ভাষা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। ১৯৪৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার নির্দেশ দেয় এবং পাকিস্তান সরকারের এমন ঘোষণার বিরোধিতা করে বর্তমান বাংলাদেশের জনগণ। তৎকালীন পূর্ব বাংলা তথা বাংলাদেশে এই নিয়ে আন্দোলন চলতে থাকে। সেটি সংঘাতে রূপ নেয় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীরা মিলে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ এবং বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। কিন্তু সেই মিছিল যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি যায়, তখন পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। সেই গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ অনেকে শহীদ হন। তবে ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর কারণে সেদিন সারা দেশে বিদ্রোহ শুরু হয়।
ক্রমবর্ধমান আন্দোলনের চাপে শেষ পর্যন্ত ১৯৫৪ সালের ৭ মে পাকিস্তান গণপরিষদে তৎকালীন পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গৃহীত হয় বাংলা। পরবর্তীকালে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করার পর বাংলাকে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করা হয়। সর্বশেষ, বাংলা ভাষা রক্ষার জন্য আন্দোলন এবং ভাষার অধিকারের প্রতি সম্মান জানিয়ে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেসকো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
এখন এর ধারাবাহিকতায় আমাদের করণীয় কী
কী? আমি মনে করি, দেশের বাইরের বাঙালিদের দায়িত্ব ঘরে-বাইরে ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। একটা বিষয় বলা উচিত, যে প্রজন্মকে আমরা বাংলা ভাষা জানে না বা বলতে-লিখতে পারে না মনে করি, তাদের কিন্তু শিখিয়ে দিলে বা ধরিয়ে দিলেই তরতর করে এগিয়ে যায়। সে উদাহরণ চোখে পড়বেই। কাজেই তাদের আরও বেশি বেশি যুক্ত করার দরকার আছে। এমন নয় যে, তাদের কেবল বাংলা পড়তে বা লিখতে জানতে হবে। আন্তর্জাতিক যেকোনো ভাষাতেই তারা বাংলা, বাঙালির ভাষার গৌরব জানতে পারে এবং তা প্রচার করতে পারে। সে দিকটাতে নজর দেওয়া এখন জরুরি।
বলছিলাম সিডনির কথা। এখানে এখন হাজার হাজার বাঙালির বসবাস। ইংরেজিতে যাকে বলে ভাইব্রেন্ট, তেমনি এক স্পন্দনমুখর সমাজ আমাদের। বছরে সব মাসেই কোনো না কোনো অনুষ্ঠান, দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য মানুষের আনাগোনা আর কর্মকাণ্ড লেগেই আছে। এগুলোর ব্যবহারিক মূল্য এবং প্রভাব আছে। কিন্তু আত্মাকে শুদ্ধ করে, বিবেককে জাগ্রত করে বা চিন্তাকে উসকে দিতে পারে, এমন কাজ কম। এমন কাজের জন্য যে হাতিয়ার অমোঘ ও অব্যর্থ, তার নাম পুস্তক। জ্ঞানের বাহন এই বই মানেই আমাদের অগ্রযাত্রার সূচনা। বাঙালি বই পড়ে, পড়তে ভালোবাসে। ডিজিটাল জগতে তার মনের বেশির ভাগ টিভি, ইউটিউব বা ফেসবুক কেড়ে নিলেও ঘুরেফিরে পুস্তকই তার শেষ আশ্রয়। আপনি গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন, বুঝবেন ‘মাদার’ বা ‘মা’ হচ্ছে লেখালেখি। একটি নাটক লিখা হলে তারপর তার শুটিং হয়। একটি গান লেখা হয়ে গেলে সুর আর কণ্ঠ যোগ হয়। অর্থাৎ লেখা বা বইপত্রই আমাদের মূল সূত্র। দেশে-বিদেশে লাইব্রেরি কিংবা বাজারে গিয়ে বইয়ের দোকান থেকে বই কেনা বা পড়ার পাশাপাশি আর একটা বিষয় চলমান; এই জনপ্রিয় বিষয়টির নাম বইমেলা।
এত দিন ধরে আমাদের সে তৃষ্ণা মিটিয়ে এসেছে একটি বইমেলা। দীর্ঘ সময় ধরে সিডনির অ্যাশফিল্ড পার্কে চলমান সেই মেলা ইতিহাস। কিন্তু যে হারে বাঙালি বাড়ছে, তাতে আরও বইমেলা হবে বা হতে পারে, এটাই স্বাভাবিক। এই যৌক্তিক ধারণা
এবার সত্য করতে চলেছে আরেকটি বইমেলা। এবার ক্যাম্বেলটাউন বইমেলা কেমন হবে, কতটা আশা পূরণ করতে পারবে বা কত দিন চলবে, সেসব প্রশ্নের উত্তর দেবে সময়। কিন্তু আমি বলব, এই যাত্রা আমাদের আরেকটি মাইলফলক। অঞ্চলভিত্তিক বাঙালি জনগোষ্ঠীর এক বিশাল অংশ এই এলাকার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাদের জন্য বা সবার জন্য আরেকটি বইমেলার প্রয়োজন ছিল; যা সময়ের হাত ধরে আজ বাস্তব হতে চলেছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের বায়ান্ন আর ভাষা আন্দোলন এক সূত্রে গাঁথা। এর কোনো ব্যতিক্রম বা অন্যথা হতে পারে না। আমি মনে করি, জাতীয় আদর্শ আর ঐতিহ্যের পাশাপাশি বহুজাতিকতাকে ধারণ করে এগিয়ে চললে এই বইমেলা নতুন কোনো পালক গুঁজতে পারে বাঙালির মুকুটে।
বইপ্রেমী বাঙালির এই মেলা সবার অংশগ্রহণে জয়ী হবে, এটাই কামনা করি।
মুঘল বাদশাহ আওরঙ্গজেব ১৭০০ খ্রিষ্টাব্দে মুর্শিদকুলি খাঁকে সুবা বাংলার দেওয়ান করেছিলেন। নতুন দেওয়ান দেখলেন, বাংলার জমিদারেরা ঠিকভাবে খাজনা পরিশোধ করেন না। কী করে কর আদায় করা যায়, তা ভাবতে লাগলেন তিনি। প্রশাসনিক প্রধান ছিলেন বাংলার সুবাদার বাদশাহের দৌহিত্র আজিমুশ্শান। তবে রাজস্ব আদায়ে সর্বেসর্বা ছিলেন
৩ ঘণ্টা আগেশিল্পভিত্তিক অর্থনীতি রচনা করতে গিয়ে আমরা নষ্ট করে চলেছি মাটির উর্বরতা শক্তি, নদীপ্রবাহ ও পানি, পরিবেশ ও প্রতিবেশ। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা সংস্থার এক হিসাব অনুযায়ী, ১৯৭৭ সালে দেশে কৃষিজমি ছিল মোট জমির প্রায় ৮৫ শতাংশ। কিন্তু ২০১০ সালে তা নেমে হয় ৭৫ শতাংশে। আর এ ১৫ বছরে তা নিশ্চয়ই আরও অনেকখানি কমে এসেছে।
৩ ঘণ্টা আগেগত বছরের জুলাইয়ের পর থেকেই ছাত্রসমাজকে দেখছি বিভিন্ন অসংগতির বিরুদ্ধে সোচ্চার। পৃথিবীর সব দেশেই ছাত্র বা তরুণসমাজ কোনো অন্যায়-অবিচার বা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়, এটাই স্বাভাবিক। কোটা সংস্কারের দাবি ছিল যৌক্তিক। এই যৌক্তিক দাবির পক্ষে জুলাই মাসে দেশের ছাত্রসমাজ যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল, সেই আন্দো
৩ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর জনগণের প্রত্যাশা যেমন বাড়ছে, তেমনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও গভীর পর্যবেক্ষণ রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে স্পষ্ট হয়েছে যে, এই সরকার প্রতিশ্রুত সংস্কার বাস্তবায়নে ক্রমবর্ধমান চাপে রয়েছে। ৩১ জ
৩ ঘণ্টা আগে