Ajker Patrika

কেন ফিলিস্তিনের সংগ্রাম আমাদের সবার

সুমাইয়া ঘান্নুশি
Thumbnail image
ফিলিস্তিনিদের ওপর নৃশংসতার পক্ষে রাজনৈতিক সুরক্ষা দেওয়া হয় ওয়াশিংটন, লন্ডন ও বার্লিন থেকে। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ক্যাপিটলে ফিরে আসেন। অবজ্ঞা ও ক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে তাঁর পুনরুত্থান মঞ্চস্থ হয়। নাটকীয়তা ও জাঁকজমকে মোড়ানো শপথ অনুষ্ঠানে ট্রাম্প আমেরিকার ‘পরিকল্পিত নিয়তি’র পুনর্জন্মের কথা বলেছিলেন। এবার, প্রতিশ্রুতিটি পৃথিবী ছাড়িয়ে তারার রাজ্য পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপন—তিনি ঘোষণা করলেন, আমেরিকার বিজয়ের পৌরাণিক কাহিনির পরবর্তী মহান অধ্যায়।

তবে তাঁর সম্প্রসারণের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ইতিমধ্যেই পৃথিবীতে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি গ্রিনল্যান্ড কেনার ধারণা উত্থাপন করেছেন, কানাডাকে যুক্ত করার বিষয়ে ভাবনা প্রকাশ করেছেন এবং পানামা খালকে মার্কিন আধিপত্যের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ভূমি, বাণিজ্যপথ বা গ্রহ যা-ই হোক না কেন, ট্রাম্পের সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ছিল নিয়ন্ত্রণের প্রতি একাগ্রতায় ভরা, যা অসাধারণত্বের ভাষায় আবৃত।

‘মেনিফেস্টো ডেসটিনি’ রক্তে লেখা একটি মতবাদ। এটি লাখ লাখ নেটিভ আমেরিকানের গণহত্যা, তাঁদের ভূমি দখল এবং তাঁদের সংস্কৃতি ধ্বংস করাকে ন্যায়সংগত করেছিল। এটি সেই ধ্বংসলীলাকে প্রগতির রূপ দিয়েছিল—একটি সাম্রাজ্যবাদী অস্ত্র, যা অবশ্যম্ভাবিতার ছদ্মবেশে ব্যবহৃত হয়েছে। আর এখন ট্রাম্প সেই একই নীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন। আধুনিক যুগের জন্য আপডেট করা হয়েছে এটি, যা কেবল নক্ষত্রের দিকেই নয়, প্রতিটি সীমান্তের দিকে লক্ষ করেছে, যেগুলোকে তিনি আধিপত্যের উপযুক্ত মনে করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রদর্শনী নিজস্ব একটি অদ্বিতীয় প্রতীকী বার্তা বহন করেছিল। সামনের সারিতে স্থান পেয়েছিলেন সেই প্রযুক্তি-বিলিয়নিয়াররা, যাঁদের প্রভাব কেবল সিলিকন ভ্যালি নয়, আধুনিক বিশ্বের প্রতিটি কোনায় বিস্তৃত। ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস এবং মার্ক জাকারবার্গ কেবল বৈশ্বিক ক্ষমতার দর্শক নন; তাঁরা এর নকশাকারী। তাঁদের সম্পদ এক অভূতপূর্ব গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অপ্রতিহত প্রযুক্তি-পুঁজিবাদের এক বিস্ময়কর প্রতিফলন।

২০১২ সালে ইলন মাস্কের সম্পদের পরিমাণ ছিল ২ বিলিয়ন ডলার; আজ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪৯ বিলিয়ন ডলারে। জেফ বেজোসের সম্পদ ১৮ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ২৪৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, আর মার্ক জাকারবার্গের সম্পদ ৪৪ বিলিয়ন ডলার থেকে ২২৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এই সংখ্যা শুধু ব্যক্তিগত সম্পদই নির্দেশ করে না, এটি একটি বৈশ্বিক ব্যবস্থার প্রতিফলন, যেখানে কয়েকজনের হাতে সম্পদ কেন্দ্রীভূত হচ্ছে, আর লাখ লাখ মানুষ এর পরিণাম ভোগ করছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে ন্যূনতম মজুরি ২০০৯ সাল থেকে অপরিবর্তিত রয়ে গেছে, যা প্রতি ঘণ্টায় মাত্র ৭ দশমিক ২৫ ডলার।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁদের উপস্থিতি এক কঠিন স্মারক হিসেবে দেখা দেয় যে প্রযুক্তি, নজরদারি এবং সম্পদ কতটা ঘনিষ্ঠভাবে রাষ্ট্রীয় সহিংসতার সঙ্গে জড়িত। এই বিলিয়নিয়াররা, যাঁরা শোষণমূলক ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত, তাঁরা যুদ্ধ ও নিয়ন্ত্রণের উপকরণ সরবরাহ করে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন। গুগল, অ্যামাজন এবং মাইক্রোসফট ইসরায়েলের সামরিক ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরঞ্জাম এবং তথ্য সরবরাহ করেছে। মেটা নিয়মিতভাবে ফিলিস্তিনিদের কণ্ঠরোধ করেছে, আর মাস্কের এক্স (পূর্বে টুইটার) ইসরায়েলের যুদ্ধের সাফাই প্রচার করেছে।

ট্রাম্পের দুনিয়া

বিজয়ের প্রতিধ্বনি শুধু রূপকেই সীমাবদ্ধ ছিল না। ট্রাম্পের ভাষণের সূক্ষ্মভাবে সাজানো প্রতীকী পরিবেশ এর উদ্দেশ্য প্রকাশ করেছিল। তাঁর পেছনে দাঁড়িয়েছিল ইসরায়েলি বন্দীদের পরিবার, তাদের দুঃখ-কষ্ট এই প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। গাজার সংঘাতে নিহত এক ইসরায়েলি মায়ের প্রতি ট্রাম্প ফিরে তাকিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি যদি তিন মাস আগে ক্ষমতায় থাকতাম, আপনার ছেলে মারা যেত না। আমরা জুলাই মাসে একটি চুক্তি করেছিলাম।’

শ্রোতারা করতালিতে মেতে উঠেছিল, কিন্তু মঞ্চে এক গভীর শূন্যতা ছিল। সেখানে কোনো ফিলিস্তিনি মা ছিলেন না, ছিলেন না কোনো শোকাহত কণ্ঠ, যা ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যুকে উপস্থাপন করত, যারা কেবল জুলাইয়ের পর নিহত হয়েছে। অথবা সেই ৫০ হাজারের বেশি প্রাণ, যারা ১৫ মাসে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছে। তাদের মৃত্যু, তাদের নাম, তাদের গল্প, তাদের মানবতা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত রয়ে গেছে।

এই নীরবতা ইচ্ছাকৃত। ট্রাম্পের দুনিয়ায় ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্ব নেই। তাদের জীবন মূল্যহীন, মুছে ফেলা হয়েছে সেই একই ‘মেনিফেস্টো ডেসটিনি’ নীতিতে, যা মানুষকে অবমাননা করে যখন তাদের অবহেলার যোগ্য মনে করা হয়। তাদের কষ্ট অদৃশ্য করে তোলা হয়েছে, তাদের মৃত্যুকে অর্থহীন করে ফেলা হয়েছে। এই উদাসীনতা শুধু ট্রাম্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি কাঠামোগত সমস্যা, যা বৈশ্বিক আধিপত্যের বুননে জড়ানো।

ট্রাম্প এখন গাজায় জাতিগত নিধনের প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে চকচকে, সমুদ্র-ভিউ সম্পত্তি গড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটি যতটা নিন্দনীয়, ততটাই অনুমেয়। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমি চাই মিসর লোকজন নিক। আমি চাই জর্ডান লোকজন নিক। আপনি হয়তো দেড় মিলিয়ন লোকের কথা বলছেন এবং আমরা পুরো ব্যাপারটা সাফ করে দিয়ে বলি, আপনারা জানেন, এটা শেষ।’

ফিলিস্তিনি জীবনের প্রতি এমন চূড়ান্ত অবজ্ঞা কেবল ট্রাম্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সম্প্রতি এমএসএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্বীকার করেছেন যে তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছিলেন গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ‘কার্পেট বম্বিং’ না চালানোর জন্য।

নেতানিয়াহুর শীতল প্রতিক্রিয়া কী ছিল? যুক্তরাষ্ট্রের বেপরোয়া ধ্বংসযজ্ঞের ইতিহাসের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছিলেন, ‘আপনারাই তো এটা করেছেন’। নেতানিয়াহু যে ধ্বংসাত্মক অভিযান চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, তা জানার পরও বাইডেন ইসরায়েলের কাছে ৫০ হাজার টনের বেশি বোমা সরবরাহ অনুমোদন দেন। এসব অস্ত্র গাজার অবকাঠামো ধ্বংস করেছে এবং তার জনগণকে চরম বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।

পশ্চিমা আধিপত্য

এটাই পশ্চিমা আধিপত্যের যন্ত্র। গাজায় যে বোমাগুলো পড়ছে, সেগুলো তৈরি যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানিতে। যে গোয়েন্দা তথ্য এসব বোমা নিক্ষেপে নির্দেশনা দেয়, তা সরবরাহ করে যুক্তরাজ্য। এসব নৃশংসতার পক্ষে রাজনৈতিক সুরক্ষা প্রদান করা হয় ওয়াশিংটন, লন্ডন ও বার্লিন থেকে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মতো নেতারা ইসরায়েলের সামষ্টিক শাস্তিকে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘খাদ্য, পানি এবং জ্বালানি বন্ধ করা বৈধ’ একটি অবরুদ্ধ জনগোষ্ঠীর জন্য। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক ইসরায়েলি প্রচারণা পুনরাবৃত্তি করে হাসপাতালে বোমা হামলার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন, যেখানে নারী ও শিশুরা জীবন্ত পুড়ে মারা গেছেন।

গণমাধ্যমও এই সহযোগিতার চক্রে তাদের ভূমিকা পালন করে। পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম ইসরায়েলি বর্ণনাকে জোরদার করে, অথচ ফিলিস্তিনি কণ্ঠগুলোকে নীরব করে দেয়। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস হামাসের কথিত নৃশংসতার মিথ্যা বিবরণ ছড়িয়েছে। সিএনএন অভ্যন্তরীণ প্রতিবাদের পরও বারবার ইসরায়েলের সমালোচনামূলক প্রতিবেদন দমন করেছে। বিবিসির মধ্যপ্রাচ্যসংক্রান্ত প্রতিবেদনের তত্ত্বাবধানে এমন ব্যক্তিদের নাম উঠে এসেছে, যাঁদের সঙ্গে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার যোগসূত্র রয়েছে।

এই প্রতিষ্ঠানগুলো এমন এক সুচারুভাবে পরিচালিত যন্ত্রের অংশ হয়ে উঠেছে, যা জনমত গঠনে কাজ করে, ইসরায়েলকে ভুক্তভোগী হিসেবে উপস্থাপন করে এবং ফিলিস্তিনিদের মানবিকতাবোধকে অবমাননা করে। এর ফলে একটি বিকৃত বাস্তবতা তৈরি হয়, যেখানে দমনকারীকে নিপীড়িত হিসেবে চিত্রিত করা হয় এবং পদ্ধতিগত সহিংসতাকে আত্মরক্ষার নামে ন্যায্যতা দেওয়া হয়।

ফিলিস্তিনিদের মুক্তির সংগ্রাম আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে অসম যুদ্ধ। একপাশে রয়েছে ইসরায়েল, যা পশ্চিমা শক্তির পূর্ণ সমর্থনে সজ্জিত, তার সরকার, গণমাধ্যম এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর অকুণ্ঠ সমর্থন নিয়ে। ইসরায়েল কেবল একটি রাষ্ট্র নয়; এটি মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা আধিপত্যের সম্প্রসারণ, এক উপনিবেশবাদী প্রকল্প, যা বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশগুলো লালন-পালন করেছে এবং রক্ষা করে চলেছে।

ইসরায়েলকে অস্ত্র, নজরদারিব্যবস্থা, রাজনৈতিক সুরক্ষা, বহুজাতিক করপোরেশন এবং এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় শক্তিশালী করা হয়েছে—এগুলো এমন আধিপত্য বজায় রাখার সরঞ্জাম, যা ফিলিস্তিনি ভূমির ওপর তাদের উপনিবেশবাদী দখল নিশ্চিত করে।

অন্যদিকে রয়েছেন ফিলিস্তিনিরা—বিচ্ছিন্ন, অবরুদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক শাসনব্যবস্থার দ্বারা পরিত্যক্ত। তাঁদের পাশে কোনো পরাশক্তি নেই, যারা তাঁদের অস্ত্র দেবে; নেই কোনো গণমাধ্যম, যারা তাঁদের পক্ষে কথা বলবে; নেই এমন কোনো প্রতিষ্ঠান, যা তাঁদের রক্ষা করবে। তাঁদের সংগ্রাম কেবল স্বাধীনতার জন্য নয়; এটি সেই পুরো পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী কাঠামোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ, যা ইসরায়েলি উপনিবেশবাদকে টিকিয়ে রাখে। তাঁদের প্রতিরোধ, অসম্ভব প্রতিকূলতার মধ্যেও মানব আত্মার অবিনাশী সত্তার সাক্ষ্য বহন করে। তবু এই বিপুল অসমতার বিপরীতে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশকারী একটি বৈশ্বিক প্রতিরোধ আন্দোলন ক্রমবর্ধমানভাবে জেগে উঠছে।

বৈশ্বিক প্রতিরোধ

বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনের জন্য সমর্থন ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। লন্ডন, প্যারিস ও নিউইয়র্কের রাস্তায় প্রতিবাদকারীরা গাজার অবরোধ শেষ করার দাবিতে জড়ো হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো প্রতিবাদের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা বসে থাকার আন্দোলন, কর্মবিরতি এবং আলোচনা সভার মাধ্যমে নিজেদের মত প্রকাশ করছেন, যদিও প্রতিষ্ঠানগত বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে।

অ্যাকটিভিস্টরা গ্রেপ্তার, বহিষ্কার এবং অপরাধীকরণের শিকার হচ্ছেন, তবু তাঁদের প্রতিবাদে ভাটা পড়েনি। বয়কট, বিনিয়োগ প্রত্যাহার এবং নিষেধাজ্ঞা (বিডিএস) আন্দোলন অব্যাহতভাবে অগ্রসর হচ্ছে, করপোরেশন এবং সরকারগুলোকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য করছে।

ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ তদন্তের জন্য আইনি প্রয়াস এগিয়ে চলেছে—আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি), আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এবং প্রধান মানবাধিকার সংস্থাগুলো জবাবদিহি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে, যদিও পশ্চিমা সরকারগুলোর নিরন্তর বাধা রয়েছে।

এই বৈশ্বিক ফ্রন্ট কেবল সংহতির একটি কাজ নয়; এটি মুক্তির সংগ্রামের প্রাণশক্তি, একটি অপরিহার্য শক্তি, যা ছাড়া এই বিশাল ক্ষমতার ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করা অসম্ভব এবং প্রকৃত ন্যায়বিচার একটি দুরাশা হয়ে থাকবে। এই আন্দোলনকে কেবল টিকে থাকতে হবে না, বরং এমন একটি শক্তিতে পরিণত হতে হবে, যা গভীরভাবে প্রোথিত ক্ষমতার কাঠামো ভেঙে ফেলতে পারে এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। কারণ এটি কেবল একটি জাতির জন্য সংগ্রাম নয়; এটি মানবতার আত্মার জন্য যুদ্ধ। এটি সাধারণ মানুষকে শক্তিশালী, নির্লজ্জ বৈশ্বিক অভিজাতদের বিরুদ্ধে দাঁড় করায়—একদিকে মর্যাদা, ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতার শক্তি এবং অন্যদিকে আধিপত্য, বৈষম্য ও উপনিবেশবাদের শক্তি।

এই সংগ্রামের কেন্দ্রে রয়েছে ফিলিস্তিন—প্রতিরোধ, প্রতিবাদ ও সর্বজনীন মুক্তির লড়াইয়ের একটি প্রতীক। ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানো মানে দমনযন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো, সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্য বজায় রাখার কাঠামোগুলোকে প্রত্যাখ্যান করা এবং মানবতার পবিত্র মূল্যবোধগুলোকে স্বীকার করা।

ফিলিস্তিনের জন্য যুদ্ধ, আমাদের সবার জন্য যুদ্ধ। এটি এখনো শেষ হয়নি।

(মিডল ইস্ট আইতে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত এবং ঈষৎ সংক্ষেপিত)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত