আহমেদ শমসের, সাংবাদিক
দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি জটিল ও অস্থির হয়ে ওঠার লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের কর্মকাণ্ড, এই সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার ঘিরে সহিংস বিক্ষোভ এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন-সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে একধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এসব ঘটনা শুধু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির দিকেই ইঙ্গিত করছে না; বরং এটি রাষ্ট্রের নীতি ও কার্যক্রমের সুসংহত ধারাবাহিকতার অভাবও তুলে ধরছে।
চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে সহিংসতা এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকাণ্ড দেশের বিচারব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। আদালত, যা একটি নিরাপদ ও সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে বিবেচিত হওয়ার কথা, সেখানে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা ও তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে জনজীবন আরও বিপর্যস্ত হয়েছে। এর পাশাপাশি চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনের শাসনের প্রতি সাধারণ জনগণের আস্থার ঘাটতি প্রকটভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার এবং তাঁর জামিন বাতিলকে কেন্দ্র করে যে বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে, তা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষেত্রে এক নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্বেগ ও প্রতিবাদ থেকে স্পষ্ট যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
ভারত সরকার এ ঘটনার ওপর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, যা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাল্টা বিবৃতিতে উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলমান আন্দোলন ও বিক্ষোভ জনজীবনে অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের আন্দোলন থেকে শুরু করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ—প্রতিটি ঘটনা বর্তমান প্রশাসনের সংকট মোকাবিলার দক্ষতার অভাবকে তুলে ধরছে।
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে গিয়ে সরকারের নীতিগত অদূরদর্শিতা এবং বিকল্প ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং তা দমনে প্রশাসনের ব্যর্থতা শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলেছে।
এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা অনেককেই হতাশ করেছে। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সরকারের যেখানে কঠোর হওয়ার প্রয়োজন, সেখানে নীরব অবস্থান কখনোই একটি কার্যকর ও সুসংগঠিত নীতির প্রতিফলন বলে মনে হয় না। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক দুর্বলতা এবং বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে আস্থার অভাব এই অস্থিরতার জন্য অনেকাংশে দায়ী।
এই সংকট মোকাবিলার জন্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নিচে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হলো:
■ বিচারাধীন বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষ ও দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
■ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে তাঁদের দাবিগুলো বোঝা এবং সেগুলো সমাধানের উপায় খোঁজার মাধ্যমে সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
■ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং আন্তঃসম্প্রদায় সংহতি বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে।
■ আন্দোলনের সময় জনজীবনে যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়, তা রোধ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
■ ব্যাটারিচালিত রিকশার মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে সংশ্লিষ্টদের মতামত এবং সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ করা দরকার।
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার জন্য ক্ষতিকর। তবে দ্রুত এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এই সংকটগুলো থেকে উত্তরণ সম্ভব। জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সরকারের একটি সুচিন্তিত ও মানবিক নীতিমালা প্রয়োজন। একটি নিরাপদ, স্থিতিশীল এবং সামগ্রিকভাবে উন্নত বাংলাদেশের জন্য এসব সংকট থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।
দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি জটিল ও অস্থির হয়ে ওঠার লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের কর্মকাণ্ড, এই সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার ঘিরে সহিংস বিক্ষোভ এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন-সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে একধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এসব ঘটনা শুধু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির দিকেই ইঙ্গিত করছে না; বরং এটি রাষ্ট্রের নীতি ও কার্যক্রমের সুসংহত ধারাবাহিকতার অভাবও তুলে ধরছে।
চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে সহিংসতা এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকাণ্ড দেশের বিচারব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। আদালত, যা একটি নিরাপদ ও সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে বিবেচিত হওয়ার কথা, সেখানে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা ও তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে জনজীবন আরও বিপর্যস্ত হয়েছে। এর পাশাপাশি চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনের শাসনের প্রতি সাধারণ জনগণের আস্থার ঘাটতি প্রকটভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার এবং তাঁর জামিন বাতিলকে কেন্দ্র করে যে বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে, তা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষেত্রে এক নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্বেগ ও প্রতিবাদ থেকে স্পষ্ট যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
ভারত সরকার এ ঘটনার ওপর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, যা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাল্টা বিবৃতিতে উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলমান আন্দোলন ও বিক্ষোভ জনজীবনে অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের আন্দোলন থেকে শুরু করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ—প্রতিটি ঘটনা বর্তমান প্রশাসনের সংকট মোকাবিলার দক্ষতার অভাবকে তুলে ধরছে।
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে গিয়ে সরকারের নীতিগত অদূরদর্শিতা এবং বিকল্প ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং তা দমনে প্রশাসনের ব্যর্থতা শিক্ষাঙ্গনে নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলেছে।
এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা অনেককেই হতাশ করেছে। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সরকারের যেখানে কঠোর হওয়ার প্রয়োজন, সেখানে নীরব অবস্থান কখনোই একটি কার্যকর ও সুসংগঠিত নীতির প্রতিফলন বলে মনে হয় না। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক দুর্বলতা এবং বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে আস্থার অভাব এই অস্থিরতার জন্য অনেকাংশে দায়ী।
এই সংকট মোকাবিলার জন্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নিচে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হলো:
■ বিচারাধীন বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষ ও দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
■ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে তাঁদের দাবিগুলো বোঝা এবং সেগুলো সমাধানের উপায় খোঁজার মাধ্যমে সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
■ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং আন্তঃসম্প্রদায় সংহতি বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে।
■ আন্দোলনের সময় জনজীবনে যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়, তা রোধ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
■ ব্যাটারিচালিত রিকশার মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে সংশ্লিষ্টদের মতামত এবং সমস্যাগুলো বিশ্লেষণ করা দরকার।
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার জন্য ক্ষতিকর। তবে দ্রুত এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এই সংকটগুলো থেকে উত্তরণ সম্ভব। জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সরকারের একটি সুচিন্তিত ও মানবিক নীতিমালা প্রয়োজন। একটি নিরাপদ, স্থিতিশীল এবং সামগ্রিকভাবে উন্নত বাংলাদেশের জন্য এসব সংকট থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।
মনজিল মোরসেদ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র অ্যাডভোকেট। তিনি ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ’ (এইচআরপিবি)-এর প্রেসিডেন্ট। জনস্বার্থে এ পর্যন্ত তিনি ২২৫টির বেশি মামলা করে মানবাধিকার ও পরিবেশ সংরক্ষণে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন।
১১ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকেই দ্রুত নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তী সরকার যাতে বেশি দিন ক্ষমতায় না থাকে, সে বিষয়ে সোচ্চার বিএনপি। এমনকি সরকার যেসব প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, সেগুলোও নির্বাচিত সরকার ছাড়া বাস্তবায়ন করা যাবে না বলে দলটি মনে করে।
১২ ঘণ্টা আগেজয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলায় যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে, সে ঘটনায় আর যাই হোক আক্কেলের কোনো পরিচয় দেখা যাচ্ছে না। সোজা কথায়, এটা বেআক্কেলি কর্মকাণ্ড। জয়পুরহাট ও রংপুরের নারী ফুটবল দলের মধ্যে ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়েছিল ২৯ জানুয়ারি।
১২ ঘণ্টা আগেজুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) যে তদন্ত করেছে, ২৭ জানুয়ারি সে তদন্তের ৫৫ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এইচআরডব্লিউর একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে...
১ দিন আগে