বাসব রায়
ইতিহাসে অনেক কিছুই স্থান পায় না। হয়তো ইতিহাস পর্যন্ত সেসব খবর পৌঁছায় না৷ দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার ৫ নং ভাবকী ইউনিয়নের গুলিয়াড়া গ্রামের প্রয়াত মদনমোহন বর্মন ইংরেজ সরকারের সিভিল বিভাগে কর্মরত ছিলেন। পাশাপাশি এ পরিবারটি একটি সম্ভ্রান্ত বা অভিজাত পরিবার হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিল ৷ জঙ্গিগোষ্ঠী কর্তৃক নিহত ব্লগার অভিজিত রায়ের ঠাকুরদা প্রয়াত অ্যাডভোকেট অতুল রায়ও এই গুলিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ৷
মদনমোহন বর্মন নিজ এলাকার তৎকালীন সময়ের শিক্ষিত ছেলে অতুল রায়কে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন বলে জানা যায় ৷ পরবর্তী সময়ে অতুল রায়ের ছেলে ড. অজয় রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ এবং বিজ্ঞানী হিসেবে সুনাম অর্জন করেছিলেন। ড. অজয় রায় অধ্যাপনার পাশাপাশি নানা ধরনের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ‘মুক্তন্বেষা’ নামে একটি চিন্তাশীল পত্রিকা সম্পাদনা করতেন।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ভয়াবহ পঁচিশে মার্চের সেই কালোরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে পাকবাহিনীর হাতে অন্যদের সঙ্গে গুলিয়াড়া গ্রামের মদনমোহন বাবুর মেজো ছেলে উপেন্দ্র নাথ রায় (ডাকনাম ‘বাবু’) অন্য সতীর্থদের সঙ্গে শহীদ হয়েছিলেন ৷ উপেন্দ্র নাথ রায় সেই সময়ে পদার্থবিজ্ঞানের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে অপরাজেয় বাংলার পাশে শহীদদের তালিকায় তাঁর নামটি ‘ইউ এন রয়’ নামে লেখা আছে। জগন্নাথ হল প্রতিবছর নিহতদের স্মরণে স্মরণিকা প্রকাশ করে।
বিস্মিত হই এই ভেবে যে সেই সময়ে অজপাড়াগাঁয়ের কিছু প্রতিভাবান মানুষ এভাবে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষকতা বা লেখাপড়া করতেন এবং সত্যিই এসব আমাদের গর্বের ইতিহাস ৷ প্রয়াত উপেনবাবুর মা একাত্তরে বড় ছেলেকেও হারিয়েছেন ৷ বড় ছেলের নাম ছিল চারুগোপাল রায় ৷ শরণার্থী হিসেবে ভারতে যাওয়ার প্রক্কালে দিনাজপুরের মোহনপুর ব্রিজের কাছে খান সেনাদের হাতে নিহত হন তিনি ৷ দুঃখজনক হলো এই যে দুই পুত্রসন্তানের শবদেহের অস্তিত্ব সম্পর্কে কখনোই কিছু জানতে পারেননি মাসহ পরিবারের সদস্যরা।
শহীদ দুই ভাইয়ের বাবা মদনমোহন বাবু স্বাধীনতাযুদ্ধের অনেক আগেই মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু হতভাগিনী মা শেষ জীবন পর্যন্ত নিদারুণ এই শোকযন্ত্রণা একটি দিনের জন্যও ভুলতে পারেননি ৷ মদনমোহন বাবুর বড় মেয়ে এবং ছোট ছেলে বর্তমানে বেঁচে আছেন ৷ বড় মেয়ের ছেলে ডা. মৃণাল কান্তি রায় এবং ছোট ছেলে ছত্রনাথ রায় (শিবু) কাচিনীয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথিতযশা গণিতের শিক্ষক ছিলেন। তাঁদের মা বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারটির কোনো খোঁজখবর রাখেনি গত আওয়ামী লীগ সরকারের কেউ। যদিও তারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলে দাবি করত। আরও আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, এ পরিবারটিও কখনোই কারও কাছে তাদের যন্ত্রণার কথা প্রকাশ করেনি। নীরব কষ্ট বুকে নিয়ে এখনো তাদের জীবন চলছে। মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক মানুষ বা পরিবার রাষ্ট্রীয় অনেক সম্মান বা সহযোগিতা পেয়েছেন, কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে এই পরিবারটি এসবের আড়ালেই থেকে গেছে স্বাধীনতার এত বছর পরেও।
হয়তো ভবিষ্যতে কখনো পরিবারটি কোনো প্রকার স্বীকৃতি যদি না পেয়ে থাকে, তাহলে তার দায়ভার আমাদের সবার ৷ নির্মোহ ও নির্লোভ এমন একটি পরিবারের প্রতি সম্মান জানানোর দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এখনো সে সময় চলে যায়নি কিন্তু।
ইতিহাসে অনেক কিছুই স্থান পায় না। হয়তো ইতিহাস পর্যন্ত সেসব খবর পৌঁছায় না৷ দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার ৫ নং ভাবকী ইউনিয়নের গুলিয়াড়া গ্রামের প্রয়াত মদনমোহন বর্মন ইংরেজ সরকারের সিভিল বিভাগে কর্মরত ছিলেন। পাশাপাশি এ পরিবারটি একটি সম্ভ্রান্ত বা অভিজাত পরিবার হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিল ৷ জঙ্গিগোষ্ঠী কর্তৃক নিহত ব্লগার অভিজিত রায়ের ঠাকুরদা প্রয়াত অ্যাডভোকেট অতুল রায়ও এই গুলিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ৷
মদনমোহন বর্মন নিজ এলাকার তৎকালীন সময়ের শিক্ষিত ছেলে অতুল রায়কে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন বলে জানা যায় ৷ পরবর্তী সময়ে অতুল রায়ের ছেলে ড. অজয় রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ এবং বিজ্ঞানী হিসেবে সুনাম অর্জন করেছিলেন। ড. অজয় রায় অধ্যাপনার পাশাপাশি নানা ধরনের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ‘মুক্তন্বেষা’ নামে একটি চিন্তাশীল পত্রিকা সম্পাদনা করতেন।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ভয়াবহ পঁচিশে মার্চের সেই কালোরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে পাকবাহিনীর হাতে অন্যদের সঙ্গে গুলিয়াড়া গ্রামের মদনমোহন বাবুর মেজো ছেলে উপেন্দ্র নাথ রায় (ডাকনাম ‘বাবু’) অন্য সতীর্থদের সঙ্গে শহীদ হয়েছিলেন ৷ উপেন্দ্র নাথ রায় সেই সময়ে পদার্থবিজ্ঞানের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে অপরাজেয় বাংলার পাশে শহীদদের তালিকায় তাঁর নামটি ‘ইউ এন রয়’ নামে লেখা আছে। জগন্নাথ হল প্রতিবছর নিহতদের স্মরণে স্মরণিকা প্রকাশ করে।
বিস্মিত হই এই ভেবে যে সেই সময়ে অজপাড়াগাঁয়ের কিছু প্রতিভাবান মানুষ এভাবে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষকতা বা লেখাপড়া করতেন এবং সত্যিই এসব আমাদের গর্বের ইতিহাস ৷ প্রয়াত উপেনবাবুর মা একাত্তরে বড় ছেলেকেও হারিয়েছেন ৷ বড় ছেলের নাম ছিল চারুগোপাল রায় ৷ শরণার্থী হিসেবে ভারতে যাওয়ার প্রক্কালে দিনাজপুরের মোহনপুর ব্রিজের কাছে খান সেনাদের হাতে নিহত হন তিনি ৷ দুঃখজনক হলো এই যে দুই পুত্রসন্তানের শবদেহের অস্তিত্ব সম্পর্কে কখনোই কিছু জানতে পারেননি মাসহ পরিবারের সদস্যরা।
শহীদ দুই ভাইয়ের বাবা মদনমোহন বাবু স্বাধীনতাযুদ্ধের অনেক আগেই মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু হতভাগিনী মা শেষ জীবন পর্যন্ত নিদারুণ এই শোকযন্ত্রণা একটি দিনের জন্যও ভুলতে পারেননি ৷ মদনমোহন বাবুর বড় মেয়ে এবং ছোট ছেলে বর্তমানে বেঁচে আছেন ৷ বড় মেয়ের ছেলে ডা. মৃণাল কান্তি রায় এবং ছোট ছেলে ছত্রনাথ রায় (শিবু) কাচিনীয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথিতযশা গণিতের শিক্ষক ছিলেন। তাঁদের মা বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারটির কোনো খোঁজখবর রাখেনি গত আওয়ামী লীগ সরকারের কেউ। যদিও তারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলে দাবি করত। আরও আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, এ পরিবারটিও কখনোই কারও কাছে তাদের যন্ত্রণার কথা প্রকাশ করেনি। নীরব কষ্ট বুকে নিয়ে এখনো তাদের জীবন চলছে। মুক্তিযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক মানুষ বা পরিবার রাষ্ট্রীয় অনেক সম্মান বা সহযোগিতা পেয়েছেন, কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে এই পরিবারটি এসবের আড়ালেই থেকে গেছে স্বাধীনতার এত বছর পরেও।
হয়তো ভবিষ্যতে কখনো পরিবারটি কোনো প্রকার স্বীকৃতি যদি না পেয়ে থাকে, তাহলে তার দায়ভার আমাদের সবার ৷ নির্মোহ ও নির্লোভ এমন একটি পরিবারের প্রতি সম্মান জানানোর দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এখনো সে সময় চলে যায়নি কিন্তু।
মনজিল মোরসেদ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র অ্যাডভোকেট। তিনি ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ’ (এইচআরপিবি)-এর প্রেসিডেন্ট। জনস্বার্থে এ পর্যন্ত তিনি ২২৫টির বেশি মামলা করে মানবাধিকার ও পরিবেশ সংরক্ষণে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন।
৮ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকেই দ্রুত নির্বাচন এবং অন্তর্বর্তী সরকার যাতে বেশি দিন ক্ষমতায় না থাকে, সে বিষয়ে সোচ্চার বিএনপি। এমনকি সরকার যেসব প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, সেগুলোও নির্বাচিত সরকার ছাড়া বাস্তবায়ন করা যাবে না বলে দলটি মনে করে।
৮ ঘণ্টা আগেজয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলায় যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে, সে ঘটনায় আর যাই হোক আক্কেলের কোনো পরিচয় দেখা যাচ্ছে না। সোজা কথায়, এটা বেআক্কেলি কর্মকাণ্ড। জয়পুরহাট ও রংপুরের নারী ফুটবল দলের মধ্যে ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়েছিল ২৯ জানুয়ারি।
৮ ঘণ্টা আগেজুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) যে তদন্ত করেছে, ২৭ জানুয়ারি সে তদন্তের ৫৫ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এইচআরডব্লিউর একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে...
১ দিন আগে