Ajker Patrika

২০২২ সাল হবে রাজনীতির সংকটকাল: সুলতান মনসুর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
২০২২ সাল হবে রাজনীতির সংকটকাল: সুলতান মনসুর

২০২২ সালকে রাজনীতির সংকটকাল হতে যাচ্ছে বলে আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন গণফোরামের সংসদ সদস্য সুলতান মুহাম্মদ মনসুর আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘২০২২ সাল যেমন ওমিক্রনের জন্য সংকটকাল। আমি মনে করি রাজনীতির জন্যও হবে একটি সংকটকাল।’ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি। 

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধারাবাহিক ক্ষমতায় থাকায় কারণে উন্নয়নের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে সুলতান মনসুর বলেন, এটাকে বাধাগ্রস্ত ও ধ্বংস করার জন্য অনেকজন অনেকভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এ সময় তিনি সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সৎ, জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব বাছাই করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ করেন। 

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এমন নেতৃত্ব সৃষ্টি করেছিলেন বলেই পাকিস্তানের পতাকাকে ছিন্নভিন্ন করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। আপনার নেতৃত্বে সংগ্রাম করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করেছিলাম। তাই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হলে আপনার নেতৃত্বে গ্রামে-গঞ্জে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বকে নিয়ে রাজনৈতিক সংগঠনকে গড়ে তুলতে হবে। 

তাঁকে ইতিহাসের পক্ষেই কথা বলতে হবে জানিয়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক অবস্থান এক রকম, বিশ্বাস এক রকম আর বর্তমান অবস্থান এক রকম। 

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি বলেছেন জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। এটাই যদি আমরা বিশ্বাস করে থাকি, তাহলে সেই জনগণকে নিয়েই আমাদের এগোতে হবে। রাজনীতিবিদদের মাধ্যমেই রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি বলেছেন নতুন প্রজন্মের জন্য একটি সুখী, সমৃদ্ধ দেশ উপহার দেওয়া আমাদের জাতীয় কর্তব্য। কিন্তু পত্রিকা পড়লে পরীমনি, খুকুমণি আর রূপমনিদের কাহিনি পড়লে, দেখলে বাংলাদেশের বর্তমান প্রজন্ম হতাশ হয়। লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে পরীমনি আর খুকুমনিদেরকে। যাতে নেতৃত্ব দূষিত হয়, সমাজ দূষিত হয়। এটি একটি ষড়যন্ত্র।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রসমাজকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। পত্রিকায় দেখলাম ড. জাফর ইকবাল সাহেব হযরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনশন ভাঙিয়েছেন। সেখানে কি আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছিল না। ওই অঞ্চলের কি রাজনৈতিক নেতৃত্ব নেই। তাহলে কি প্রমাণ হলো। জানি আমি। জাফর ইকবাল সাহেব নিজের ইচ্ছায় গিয়েছেন বলে আমি মনে করি না। নিশ্চয়ই আমাদের সংসদ নেত্রী সেই ব্যবস্থাটি করেছেন। 

সুলতান মনসুর বলেন, … সেই ষড়যন্ত্রের সুযোগ কেন আমরা দিলাম। তাহলে কি ওই অঞ্চলে কি রাজনীতিবিদ নাই। দলীয় পদে কি কেউ নাই। তাহলে তাঁরা কি করেছেন? এই বিষয়গুলো আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে সংসদ নেত্রী। 

তিনি বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনকে ঘিরে যে অপবাদ উঠেছে সেটাকে মুক্ত করে, বিশ্ববিদ্যালয় মেধাসম্পন্ন শিক্ষকদের দিয়ে পরিচালনা করলে মেধাসম্পন্ন ছাত্র বেরিয়ে আসবে।’ 
 
বঙ্গবন্ধু তাঁর শাসনকাল যদি আরও বাড়ানোর সুযোগ পেতেন তাহলে ইসি গঠনের বিল সেই আমলেই হতো বলে দাবি করেন ছাত্রলীগের সাবেক এই সভাপতি। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আমলে না পেলেও তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রধান নির্বাচন নিয়োগের এই বিল পাস হয়েছে।’ 

বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নিজের আসনে নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে দাবি করেন ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী এই সাংসদ সদস্য। তিনি বলেন, সংসদ নেত্রীসহ সেই নির্বাচনের যারা আমার নির্বাচনী এলাকায় নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়ার পেছনে যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন এবং শত হুমকির মুখেও যে নির্বাচন হয়েছিল। সেই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে এখানে (সংসদ) আসতে পেরেছি, সেই জন্য সংসদ নেত্রীসহ সেদিনকার নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। 

আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক এই ভিপি সংস্কারপন্থী হওয়ায় ওয়ান ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগ থেকে ছিটকে পড়েন। গত এক যুগ ধরে তিনি সরকারের নানা সমালোচনা করেছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে গণফোরামের মনোনয়ন পেয়ে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কূটনৈতিক পাসপোর্টকে রাতারাতি অর্ডিনারি বানিয়ে দেওয়া পরিচালক বরখাস্ত

এবার সরানো হলো জ্বালানি উপদেষ্টার পিএসকে

৩৫ বছর ভারতে, স্বামী–সন্তান রেখে দেশে ফেরার নোটিশ পেলেন পাকিস্তানি সারদা

সব রুফটপ রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স বাতিল

ঈদ শুভেচ্ছা কার্টুনে কুকুরের ছবি: প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত