নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পাল্টা শুল্ক বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পুনর্মূল্যায়ন হবে– এমনটাই আশা করছে সরকার। তবে তার জন্য নিজেদের করণীয় নির্ধারণেও দেরি করতে চায় না অন্তর্বর্তী সরকার। সে জন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গতকাল শনিবার জরুরি বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে তাঁর নির্দেশে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও (বিডা) জরুরি বৈঠক করেছে। সেখানে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদেরা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে বেশ কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করেছেন। এতে ২০টির মতো মার্কিন পণ্যের শুল্ক-কর পুনর্বিবেচনার কথা বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রম্পের নতুন শুল্কনীতি ঘোষণার পরপরই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) করণীয় ঠিক করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি ছুটির মধ্যেই গত দুই দিনে এনবিআর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সংস্থার বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের আলোচনা ও পর্যালোচনা থেকে এনবিআরও একটি মত দিয়েছে। সংস্থাটির এই পর্যালোচনা থেকে প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হয়– এমন ৩০ থেকে ৩৫টি পণ্যের শুল্ক-করহার কমানো বা পুনর্বিন্যাস করা যেতে পারে বলে মত দেওয়া হয়েছে।
গতকাল এনবিআর ও বিডা কার্যালয়ে দিনভর বৈঠকের পর যেসব সিদ্ধান্ত সুপারিশ আকারে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে, তা পুনরায় পর্যালোচনার জন্য সন্ধ্যায় আবার জরুরি বৈঠকে বসে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে অংশ নেন অর্থ উপদেষ্টা সালাহউদ্দিন আহমেদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া। আরও অংশ নেন বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ সত্তার, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা।প্রেস সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার খুবই ব্যবসাবান্ধব। আমরা এমন কিছু করব, যার ফলে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের যে রপ্তানি আছে, তা আরও বাড়বে।’
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্ক বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা নিজে কথা বলবেন। এ ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ আছে। দু-এক দিনের মধ্যে অগ্রগতি জানা যাবে। তবে শুল্ক বাড়ানোর বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য আতঙ্কের নয়, সম্ভাবনার। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি নিয়ে সরকার গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই কাজ করছে, তাই এটি আকস্মিক কিছু নয়।
ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে আমি মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে ট্যারিফ, শুল্ক বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছি। এই আলোচনা আরও দু-এক দিন চলবে। এ সময়ের মধ্যে আমরা সব পক্ষের আলোচনা নিয়ে কংক্রিট একটা সিদ্ধান্ত নেব।’
মার্কিন পণ্যের শুল্ক-কর পর্যালোচনার উদ্যোগ
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা অনেক পণ্যের শুল্ক-কর হার কমানো বা পুনর্বিন্যাস করতে পারে সরকার। বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপের পর এমন সিদ্ধান্তের পথে হাঁটছে সরকার। এ লক্ষ্যে ১০ থেকে ১২টি পণ্যের সুপারিশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আর ২০টির মতো পণ্যের শুল্ক-কর পুনর্বিবেচনার জন্য সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিড)।
এনবিআরের সুপারিশ করা পণ্যতালিকায় রয়েছে ভাল্ভ, ইলেকট্রিক কিছু পণ্য, মাংস, জেনারেটর, স্ট্র্যাপ ইত্যাদি। শুধু আমদানি শুল্ক পর্যালোচনা নয়; ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, অগ্রিম কর—এসব শুল্ক-কর পর্যালোচনার প্রস্তাব রয়েছে এনবিআরের পক্ষ থেকে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা লিজের পণ্যেও শুল্ক-কর সুবিধা বাড়ানো যায় কি না, তা-ও দেখছে এনবিআর।
তবে প্রস্তাবিত এসব পণ্যে কী পরিমাণ শুল্ক-কর কমানো হবে বা নির্ধারণ করা হবে, সেই বিষয়ে কোনো সুপারিশ করা হয়নি এনবিআরের পক্ষ থেকে। এনবিআর কর্মকর্তাদের প্রস্তুত করা খসড়া সুপারিশ গতকাল সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে উত্থাপন করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর সূত্র।
এনবিআরের কাস্টমস বিভাগের এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা হিসাব করে দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানিতে ৭৪ শতাংশ করারোপ করা হয় না। আমরা করারোপ করি ৫ শতাংশের মতো। গত তিন-চার বছরে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়েছে, তাতে মোট করারোপ করা হয়েছে ৫ শতাংশের কম।’
ট্রাম্প প্রশাসনকে আলোচনার টেবিলে আনা এবং বোঝানোর জন্য তাদের পণ্যে শুল্ক-কর কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, এখানেই শেষ নয়, আরও কী করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা করছে এনবিআর। এ লক্ষ্যে রোববার অভ্যন্তরীণ বৈঠকও করবে সংস্থাটি। এর সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাকা বৈঠকেও অংশ নেবে এনবিআর।
ট্যারিফ যেন প্রতিযোগী দেশের চেয়ে বেশি না হয়
প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে গতকাল বিডার সম্মেলনকক্ষে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যে ট্যারিফ আরোপ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তা বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশের তুলনায় যাতে বেশি না হয়, সরকারের প্রতি সেই আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর অর্থনীতিবিদদের পক্ষ থেকে সংকট উত্তরণে সরকারকে তাৎক্ষণিকভাবে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তার কিছু সুপারিশ ও পরামর্শ রাখা হয়েছে।
পরে বিডা চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের মতামত এবং এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করে ২০টি শুল্ক-করসম্পর্কিত পদক্ষেপ পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে উপস্থাপন করেন। এই বৈঠকে ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান, বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ জাহেদী সত্তার, ব্যবসায়ী নাসিম মঞ্জুর, আহসান খান চৌধুরী, তপন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছে। এখন সরকারের উচিত দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে শুল্ক কমানো। ইতিমধ্যে ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।
বাংলাদেশ লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের বাজার ৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের। অন্যান্য পণ্যের বাজার ৬০০ মিলিয়ন ডলারের। বৃহৎ এই বাজারের বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভারতের জন্য শুল্ক নির্ধারণ করেছে ২৬ শতাংশ আর পাকিস্তানের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতিযোগী দেশের চেয়ে ১১-১২ শতাংশের ব্যবধান রয়েছে। এই ধাক্কা ব্যবসায়ীরা কাটিয়ে উঠতে পারবেন না।
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, ‘সরকারের তাৎক্ষণিকভাবে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, সে বিষয়ে আমরা বিডার শীর্ষ নির্বাহীকে পরামর্শ দিয়েছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা পাল্টা শুল্ক বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পুনর্মূল্যায়ন হবে– এমনটাই আশা করছে সরকার। তবে তার জন্য নিজেদের করণীয় নির্ধারণেও দেরি করতে চায় না অন্তর্বর্তী সরকার। সে জন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গতকাল শনিবার জরুরি বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে তাঁর নির্দেশে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও (বিডা) জরুরি বৈঠক করেছে। সেখানে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদেরা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে বেশ কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করেছেন। এতে ২০টির মতো মার্কিন পণ্যের শুল্ক-কর পুনর্বিবেচনার কথা বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রম্পের নতুন শুল্কনীতি ঘোষণার পরপরই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) করণীয় ঠিক করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি ছুটির মধ্যেই গত দুই দিনে এনবিআর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সংস্থার বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের আলোচনা ও পর্যালোচনা থেকে এনবিআরও একটি মত দিয়েছে। সংস্থাটির এই পর্যালোচনা থেকে প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হয়– এমন ৩০ থেকে ৩৫টি পণ্যের শুল্ক-করহার কমানো বা পুনর্বিন্যাস করা যেতে পারে বলে মত দেওয়া হয়েছে।
গতকাল এনবিআর ও বিডা কার্যালয়ে দিনভর বৈঠকের পর যেসব সিদ্ধান্ত সুপারিশ আকারে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে, তা পুনরায় পর্যালোচনার জন্য সন্ধ্যায় আবার জরুরি বৈঠকে বসে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে অংশ নেন অর্থ উপদেষ্টা সালাহউদ্দিন আহমেদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া। আরও অংশ নেন বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ সত্তার, প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা।প্রেস সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার খুবই ব্যবসাবান্ধব। আমরা এমন কিছু করব, যার ফলে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের যে রপ্তানি আছে, তা আরও বাড়বে।’
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্ক বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা নিজে কথা বলবেন। এ ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ আছে। দু-এক দিনের মধ্যে অগ্রগতি জানা যাবে। তবে শুল্ক বাড়ানোর বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য আতঙ্কের নয়, সম্ভাবনার। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি নিয়ে সরকার গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই কাজ করছে, তাই এটি আকস্মিক কিছু নয়।
ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে আমি মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে ট্যারিফ, শুল্ক বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছি। এই আলোচনা আরও দু-এক দিন চলবে। এ সময়ের মধ্যে আমরা সব পক্ষের আলোচনা নিয়ে কংক্রিট একটা সিদ্ধান্ত নেব।’
মার্কিন পণ্যের শুল্ক-কর পর্যালোচনার উদ্যোগ
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা অনেক পণ্যের শুল্ক-কর হার কমানো বা পুনর্বিন্যাস করতে পারে সরকার। বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপের পর এমন সিদ্ধান্তের পথে হাঁটছে সরকার। এ লক্ষ্যে ১০ থেকে ১২টি পণ্যের সুপারিশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আর ২০টির মতো পণ্যের শুল্ক-কর পুনর্বিবেচনার জন্য সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিড)।
এনবিআরের সুপারিশ করা পণ্যতালিকায় রয়েছে ভাল্ভ, ইলেকট্রিক কিছু পণ্য, মাংস, জেনারেটর, স্ট্র্যাপ ইত্যাদি। শুধু আমদানি শুল্ক পর্যালোচনা নয়; ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, অগ্রিম কর—এসব শুল্ক-কর পর্যালোচনার প্রস্তাব রয়েছে এনবিআরের পক্ষ থেকে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা লিজের পণ্যেও শুল্ক-কর সুবিধা বাড়ানো যায় কি না, তা-ও দেখছে এনবিআর।
তবে প্রস্তাবিত এসব পণ্যে কী পরিমাণ শুল্ক-কর কমানো হবে বা নির্ধারণ করা হবে, সেই বিষয়ে কোনো সুপারিশ করা হয়নি এনবিআরের পক্ষ থেকে। এনবিআর কর্মকর্তাদের প্রস্তুত করা খসড়া সুপারিশ গতকাল সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে উত্থাপন করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর সূত্র।
এনবিআরের কাস্টমস বিভাগের এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা হিসাব করে দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানিতে ৭৪ শতাংশ করারোপ করা হয় না। আমরা করারোপ করি ৫ শতাংশের মতো। গত তিন-চার বছরে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়েছে, তাতে মোট করারোপ করা হয়েছে ৫ শতাংশের কম।’
ট্রাম্প প্রশাসনকে আলোচনার টেবিলে আনা এবং বোঝানোর জন্য তাদের পণ্যে শুল্ক-কর কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, এখানেই শেষ নয়, আরও কী করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা করছে এনবিআর। এ লক্ষ্যে রোববার অভ্যন্তরীণ বৈঠকও করবে সংস্থাটি। এর সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডাকা বৈঠকেও অংশ নেবে এনবিআর।
ট্যারিফ যেন প্রতিযোগী দেশের চেয়ে বেশি না হয়
প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে গতকাল বিডার সম্মেলনকক্ষে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যে ট্যারিফ আরোপ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তা বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশের তুলনায় যাতে বেশি না হয়, সরকারের প্রতি সেই আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর অর্থনীতিবিদদের পক্ষ থেকে সংকট উত্তরণে সরকারকে তাৎক্ষণিকভাবে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তার কিছু সুপারিশ ও পরামর্শ রাখা হয়েছে।
পরে বিডা চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের মতামত এবং এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করে ২০টি শুল্ক-করসম্পর্কিত পদক্ষেপ পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে উপস্থাপন করেন। এই বৈঠকে ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান, বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ জাহেদী সত্তার, ব্যবসায়ী নাসিম মঞ্জুর, আহসান খান চৌধুরী, তপন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছে। এখন সরকারের উচিত দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে শুল্ক কমানো। ইতিমধ্যে ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে।
বাংলাদেশ লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর আজকের পত্রিকাকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের বাজার ৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের। অন্যান্য পণ্যের বাজার ৬০০ মিলিয়ন ডলারের। বৃহৎ এই বাজারের বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভারতের জন্য শুল্ক নির্ধারণ করেছে ২৬ শতাংশ আর পাকিস্তানের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতিযোগী দেশের চেয়ে ১১-১২ শতাংশের ব্যবধান রয়েছে। এই ধাক্কা ব্যবসায়ীরা কাটিয়ে উঠতে পারবেন না।
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, ‘সরকারের তাৎক্ষণিকভাবে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, সে বিষয়ে আমরা বিডার শীর্ষ নির্বাহীকে পরামর্শ দিয়েছি।’
বিদেশে ভালো কাজের লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশের তরুণদের এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা বানাচ্ছে মানব পাচারকারীরা। জনপ্রতি মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তাঁদের সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ হয়ে নেওয়া হচ্ছে রাশিয়ায়। সেখানে জোর করে চুক্তিনামায় সই করিয়ে যোদ্ধা হিসেবে পাঠানো হচ্ছে যুদ্ধে। এ পর্যন্ত অন্তত
৬ ঘণ্টা আগেসব নিয়মকানুন মেনে বৈধভাবেই কর্মী ভিসায় মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন নাজমুল ইসলাম। কিন্তু গিয়ে দেখেন নিয়োগকর্তা যে কাজের জন্য তাঁকে নিয়ে যান, সে রকম কোনো কাজই তাঁর কাছে নেই, মিলছে না কোনো বেতনও। ফলে বাধ্য হয়ে কুয়ালালামপুরে অন্য একজনের অধীনে নির্মাণ খাতে কাজ করছেন এই কর্মী। মালয়েশিয়ার আইনে এটি অবৈধ।
৬ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কভার লাঘবে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত
৯ ঘণ্টা আগেমিয়ানমারে সাম্প্রতিক বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে পরিচালিত উদ্ধার, চিকিৎসা ও ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম টানা দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করেছে। দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে পাঠানো এই বিশেষ দল উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রমে নিবেদিতভাবে অংশগ্রহণ করছে...
১২ ঘণ্টা আগে