Ajker Patrika

সামনে বিপদ! সিনিয়র মিলেনিয়ালদের পরামর্শগুলো মাথায় রাখো জেন-জি

পরাগ মাঝি
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ২০: ৫৫
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

জীবনে অনেক চড়াই-উতরাই পার করেছে বর্তমান ‘জেন-জি’ তথা জেড-জেনারেশনের আগের মিলেনিয়াল জেনারেশন। তাঁদের অনেকেই তরুণ অবস্থায় ২০০৮ সালের ভয়াবহ আর্থিক মন্দার সম্মুখীন হয়েছেন। আজকের দিনেও তাঁরা বাড়ি কেনা কিংবা শিক্ষাঋণ শোধের মতো বিষয়গুলো নিয়ে সংগ্রাম করছেন।

সেই অভিজ্ঞ মিলেনিয়ালেরা এবার টিকটকে জেনারেশন জেড-এর জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন—কীভাবে সম্ভাব্য একটি বড় মন্দার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায়। নতুন প্রজন্মকে কী কী খরচ কমাতে হবে, তা নিয়েও দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন তাঁরা।

এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে মার্কিন অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েল থেকে শুরু করে গ্লোবাল বিশ্লেষকদের সবাই শঙ্কিত। ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য যুদ্ধ এই বছর যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্ব জুড়ে মন্দা ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছে জেপি মর্গান। ইতিমধ্যেই স্বল্প আয় এবং বেশি ঋণের বোঝা নিয়ে করোনা মহামারি ও মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় বিপর্যস্ত তরুণ প্রজন্মের সামনে তাই আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে!

যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো মন্দায় পড়েনি। তবে তরুণ কর্মজীবীরা উদ্বিগ্ন এবং বড় ভাই-বোনদের কাছ থেকে পরামর্শ খুঁজছেন। বিষয়টি নজর এড়ায়নি মিলেনিয়াল জেনারেশনের ৩৭ বছর বয়সী সাশা হুইটনির। সম্প্রতি তিনি টিকটক স্ক্রল করতে গিয়ে খেয়াল করেছেন, জেনারেশন জেড-এর সদস্যরা ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশ, ক্লান্ত এবং নিরাশ। তিনি বলেন, ‘আমাদের সময় সোশ্যাল মিডিয়ার এই ভয়াবহ চাপ ছিল না। আমরা চাকচিক্য বজায় রাখা নয়, বরং শুধু বেঁচে থাকার চেষ্টা করতাম।’

মন্দার অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু মিলেনিয়াল টিকটকে মজার ছলে বলেছেন—সেই সময় সস্তা পানীয়, সাধারণ পোশাক আর ‘ফিল-গুড’ পপ মিউজিকই ছিল আমাদের সান্ত্বনা। অনেকে আবার বাস্তব অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেছেন—কীভাবে চাকরি পেতে তাঁদের হিমশিম খেতে হয়েছে, কীভাবে ২০ ডলারে পুরো সপ্তাহের খাবার কিনতে হয়েছে।

সাশা হুইটনি এক ভিডিওতে জেনারেশন জেডকে যে কোনো চাকরির সুযোগ কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এ ছাড়া ব্যয়ের মাত্রা কমানো এবং ক্রেডিট ভিত্তিক অ্যাপগুলো ডিলিট করারও টিপস দিয়েছেন তিনি।

অনেক মিলেনিয়ালই জরুরি সঞ্চয় গড়ে তোলার পরামর্শ দিচ্ছেন। মিলেনিয়াল ও জেড জেনারেশনের সন্ধিক্ষণে থাকা ২৯ বছর বয়সী ইমানি স্মিথ জানিয়েছেন, তিনি খরচ কমাতে বন্ধুদের সঙ্গে সাবস্ক্রিপশন শেয়ার করছেন এবং বাইরে খাওয়া কমিয়েছেন। সৌন্দর্য চর্চার খরচ কমাতে সেলুনের পরিবর্তে তিনি অনলাইনে কিছু কাজ সেরে নিচ্ছেন।

একই সঙ্গে এখন অনেকেই ছোটখাটো বিলাসিতা, যেমন—দামি লিপ বাম বা মোমবাতি কেনার মতো অভ্যাস বাদ দিতে শুরু করেছেন। ইমানি স্মিথ বলেছেন, ‘আমি চাই আগে থেকেই সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে, যাতে পরে প্রয়োজনীয়তার চাপে পড়তে না হয়।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংকটে মানুষ সাধারণত খরচের এক বা একাধিক ক্যাটাগরি পুরোপুরি বাদ দেয়, যেন প্রতিটি খাতে সামান্য করে কাটছাঁট করতে না হয়। তাই প্রথমে বিলাসী খরচই বাদ পড়ে।

সিনিয়র মিলেনিয়ালেরা সহজভাবে বেঁচে থাকতে উৎসাহ দিলেও জেনারেশন জেড সদস্যদের মধ্যে উদ্বেগ স্পষ্ট। ইমানি স্মিথ বলেন, ২০০৮ সালে চাকরি হারালেও মানুষ সস্তা জীবনে কোনো না কোনোভাবে টিকে থাকতে পারত। কিন্তু এখন চাকরির বাজার এবং জীবনযাত্রার খরচ—দুটোই ভয়াবহভাবে কঠিন।

করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট ক্ষতি আজও তরুণ প্রজন্মের মনোবলে প্রভাব ফেলছে। স্মিথের মতে, করোনা আমাদের শিখিয়েছে, জীবন যখন-তখন বদলে যেতে পারে। তাই প্রস্তুত থাকা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত