Ajker Patrika

আপনার জিজ্ঞাসা

জোহরের জামাত চলা অবস্থায় সুন্নতের বিধান

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রশ্ন: জোহরের নামাজের সুন্নতের নিয়ত করছি। একজন এসে বাধা দিয়ে বললেন, সুন্নতের সময় নেই। আমি বলি, সমস্যা নেই। এবং সুন্নত আদায় করে জামাতের দ্বিতীয় রাকাতে শামিল হই। নামাজ শেষে তিনি আমাকে বলেন, এটা জামাতের প্রতি অবজ্ঞা। কিন্তু কোনো এক প্রশ্নোত্তরে পড়েছিলাম, জামাতের জন্য তাড়াহুড়োর দরকার নেই। যেকোনো রাকাতের যেকোনো স্থানে অংশ নিলেই জামাতের পূর্ণ ফজিলত পাওয়া যাবে। এ ব্যাপারে দলিলসহ বিশ্লেষণ জানতে চাই।

মোহাম্মদ ইবরাহীম খলীলুল্লাহ, মীরসরাই, চট্টগ্রাম।

উত্তর: জোহরের নামাজের সময় মসজিদে যাওয়ার পর যদি দেখা যায়, একামত হচ্ছে বা জামাতের একেবারে অল্প সময় বাকি আছে, সুন্নত আদায় শেষ হওয়ার আগেই জামাত শুরু হয়ে যেতে পারে, তাহলে সুন্নতে না দাঁড়িয়ে তাকবিরে উলার সঙ্গে জামাতে অংশ নেওয়া উচিত। জোহরের ফরজ শেষে দুই রাকাত সুন্নত আদায় করে এরপর ফরজের আগের সেই চার রাকাত সুন্নত আদায় করে নিতে হবে। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) জোহরের আগের চার রাকাত সুন্নত কখনো আগে আদায় করতে না পারলে ফরজের পরে তা আদায় করে নিতেন। (জামে তিরমিজি: ২ / ২৯১)

এ ছাড়া জোহরের আগের সুন্নত আদায় করা অবস্থায় জামাত শুরু হয়ে গেলে দুই রাকাত আদায় করে সালাম ফিরিয়ে জামাতে শরিক হয়ে যাবে। তবে যদি দুই রাকাত আদায় করার পরে তৃতীয় রাকাত শুরু করে দেয়, তাহলে চার রাকাত পূর্ণ করে তারপর জামাতে শরিক হবে।

জামাতের জন্য তাড়াহুড়ো না করার অর্থ কী

হাদিসে জামাতের জন্য তাড়াহুড়োর বিষয়ে বলা হয়েছে, মসজিদে নামাজের জামাত ধরতে গিয়ে অনেককে বেশ তাড়াহুড়ো করতে এবং ইমাম সাহেব রুকুতে চলে গেলে তাতে শামিল হওয়ার জন্য দৌড়াতে দেখা যায়। এসব উচিত নয়। মহানবী (সা.) এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘জামাত শুরু হয়ে গেলে তোমরা তাড়াহুড়ো করে এসো না। বরং স্বাভাবিকভাবে হেঁটে এসো এবং শান্ত থাকো। এরপর যত রাকাত পাবে, তা আদায় করে নেবে। আর যা ছুটে যাবে, তা পূর্ণ করে দেবে।’ (সহিহ্ বুখারি: ৯০৮)। তাই জামাতের জন্য তাড়াহুড়ো না করা এবং আগে সুন্নত আদায় করতে গিয়ে জামাত শুরু থেকে না পাওয়া; দুটি ভিন্ন বিষয়।

নবী করিম (সা.) প্রথম কাতারে এবং তাকবিরে উলার সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। (জামে তিরমিজি: ২৪১, সহিহ্ মুসলিম: ৪৩৮, সুনানে আবু দাউদ: ৬৭৯)। তাই নামাজের জন্য মোটামুটি আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত—যেন ধীর-স্থিরতার সঙ্গে সুন্নত আদায় করা যায় এবং তাকবিরে উলার সঙ্গে প্রথম কাতারে জামাতে নামাজ আদায় করা যায়।

তথ্যসূত্র: আল মুহিতুল বুরহানি: ২ / ২৪৫, ফাতহুল কাদির: ১ / ৪১৫, আদ্দুররুল মুখতার: ২ / ১২-১৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ১ / ১২০, রদ্দুল মুহতার: ২ / ৫৬-৫৮, মারাকিল ফালাহ: ১৭৫, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত: ৩ / ৫৪৩

উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত