ইসলাম ডেস্ক

আমাদের সমাজে অনেক কথা হাদিস হিসেবে প্রচলিত আছে, যা আসলে হাদিস নয়। এর মধ্যে অনেক কথার সঙ্গে হাদিসের দূরতম সম্পর্কও নেই। তবে কিছু কিছু কথা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের মর্মের কাছাকাছি পাওয়া যায়। উভয় ধরনের কথাই হাদিস হিসেবে চালিয়ে দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ।
মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছে করে আমার নামে মিথ্যা বলে, সে যেন জাহান্নামে নিজের ঠিকানা বানিয়ে নেয়।’ (বুখারি: ১১০; মুসলিম: ০৩)
তাই মিথ্যা, বানোয়াট ও জাল হাদিস বলা থেকে বিরত থাকা সবার কর্তব্য। বহুল প্রচলিত ১০টি জাল হাদিস নিয়ে একটি আলোচনা তুলে ধরা হলো—
১. দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ
জন্মভূমিকে ভালোবাসা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। এটি মানুষের মহৎ গুণ। নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসা, মায়া-মমতা এবং আন্তরিক টান থাকা ইসলামবিরোধী নয়। বরং মহানবী (সা.)-এর জীবনেও দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে আমাদের সমাজে প্রচলিত ‘দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ’ কথাটি মহানবী (সা.)-এর হাদিস নয়। হাদিস বিশারদ আল্লামা সাগানি একে জাল হাদিস বলেছেন। (রিসালাতুল মাওযুআত: ৭) মোল্লা আলি কারি বলেছেন, ‘হাফেজে হাদিসদের কাছে এর কোনো ভিত্তি নেই।’ (আল-মাসনু: ৯১)
২. দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞানার্জন করো
জ্ঞান অর্জন করা ইসলামে ফরজ। কখনো তা ফরজে আইন, কখনো ফরজে কিফায়া। কোরআন-হাদিসে বিভিন্নভাবে জ্ঞানচর্চায় উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। জ্ঞানার্জনের কোনো শেষ নেই। শেখার কোনো বয়স নেই। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জ্ঞান আহরণ করে যাওয়াই বিবেকের দাবি। তবে সমাজে প্রচলিত ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান অন্বেষণ করো’ কথাটি হাদিস নয়; বরং এটি প্রবাদ ও উপদেশবাণী। হাদিস বিশারদ শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ বলেন, ‘এটি হাদিস নয়। বরং এটি প্রবাদ।’ (কিমাতুজ জামান ইনদাল উলামা: ৩০)
৩. যার পীর নেই তার পীর শয়তান
ধার্মিক ও মুত্তাকি ব্যক্তিদের পরামর্শে জীবনযাপন করতে উদ্বুদ্ধ করে ইসলাম। পবিত্র কোরআনেও নেককারদের সান্নিধ্য গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তবে এ সম্পর্কিত কথা ‘যার পীর নেই তার পীর শয়তান’—এটি হাদিস নয়। হাফেজ বাদায়ুনি নিজামুদ্দিন আউলিয়াকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘যার পীর নেই তার পীর শয়তান—এটি কি রাসুল (রা.)-এর হাদিস?’ তিনি বললেন, ‘না, এটি বুজুর্গদের কথা।’ (ফাওয়ায়িদুল ফুয়াদ: ৫৯)
তাই এ কথার ওপর ভিত্তি করে পীরের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করা ফরজে আইন দাবি করা ভুল। তবে ধর্মীয় বিষয়ের পণ্ডিত ও নেককার বান্দাদের সান্নিধ্যের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করাও মারাত্মক ভ্রান্তি। (ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৫ / ২৩৬-২৩৮)
৪. পৃথিবী ষাঁড়ের শিঙের ওপর
অনেকেই হাদিস হিসেবে বলেন, ‘পৃথিবী একটি পাথরের ওপর। পাথরটি একটি ষাঁড়ের শিংয়ের ওপর। যখন ষাঁড় শিং হেলায়, তখন পাথর নড়ে ওঠে, সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীও কেঁপে ওঠে। আর এটিই ভূমিকম্প।’ এটি হাদিস নয়। মহানবী (সা.) এ কথা বলেছেন, এমন কোনো প্রমাণ নেই। ইবনুল কাইয়িম ও আবু হাইয়ানসহ অনেক মুহাদ্দিস একে জাল ও অবান্তর বলেছেন। (আলমানারুল মুনিফ: ৭৮; আল-ইসরাইলিয়াত ওয়াল-মাওযুআত: ৩০৫)
৫. মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা
লোকমুখে প্রচলিত আছে, ‘যে ব্যক্তি মসজিদে দুনিয়াবি কথাবার্তা বলবে, আল্লাহ তাআলা তার ৪০ বছরের নেক আমল বরবাদ করে দেবেন।’ হাদিস হিসেবে মানুষের কাছে প্রসিদ্ধ হলেও এটি হাদিস নয়। আল্লামা সাগানি ও আল্লামা কাউকাজি একে জাল হাদিস বলেছেন। মোল্লা আলি কারি, আজলুনি ও শাওকানি এই মতে সমর্থন দিয়েছেন। (আল-মাসনু: ১৮২; আল-মাওজুআতুল কুবরা: ১১৭) এ বিষয়ে প্রায় কাছাকাছি অর্থের আরও কিছু জাল হাদিস সমাজে প্রচলিত রয়েছে।
এর অর্থ এই নয় যে মসজিদে দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা যাবে; বরং তা ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ। তবে কোনো ধর্মীয় কাজে অথবা অপারগতার কারণে বিশ্রাম নিতে মসজিদে গেলে প্রয়োজনে দুনিয়াবি কথা বলা যাবে। মহানবী (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের আমল থেকে বিষয়টি প্রমাণিত। (সহিহ্ বুখারি: ১ / ৬৩-৬৫; রদ্দুল মুহতার: ১ / ৬৬২)
৬. মুমিনের উচ্ছিষ্ট ওষুধ
‘মুমিনের উচ্ছিষ্ট ওষুধ’—এ কথা মানুষের মুখে হাদিসে হিসেবে প্রচলিত। অথচ এটি হাদিস নয়। মোল্লা আলি কারি বলেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসে এর কোনো ভিত্তি নেই।’ (আল-মাসনু: ১০৬) আল্লামা নাজমুদ্দিন গাযযি বলেছেন, ‘এটি হাদিস নয়।’ (কাশফুল খাফা: ১ / ৪৫৮)
তবে মানুষের উচ্ছিষ্ট পবিত্র। তা খাওয়া জায়েজই নয়; বরং প্রশংসনীয়ও। হাদিসে এসেছে, ইবনে আব্বাস বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে আমি ও খালিদ ইবনে ওয়ালিদ মাইমুনা (রা.)-এর কাছে গেলে তিনি পাত্রে করে আমাদের জন্য দুধ নিয়ে এলেন। রাসুল (সা.) দুধ পান করলেন। আমি তাঁর ডান দিকে ছিলাম এবং খালিদ বাম দিকে। তিনি আমাকে বললেন, ‘আগে পান করার অধিকার তোমারই, তবে তুমি ইচ্ছা করলে খালিদকে আগে দিতে পারো।’ আমি বললাম, ‘আপনার উচ্ছিষ্ট পানে আমি কাউকে প্রাধান্য দিতে পারি না।’ (তিরমিজি: ৩৬৮৪)
৭. নখ কাটার বিশেষ নিয়ম
প্রচলিত আছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ডান হাতের তর্জনী থেকে নখ কাটা শুরু করে বৃদ্ধাঙ্গুলে শেষ করতেন। বাম হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুল থেকে শুরু করে বৃদ্ধাঙ্গুলে শেষ করতেন।’ এটি মহানবী (সা.)-এর হাদিস নয়। নখ কাটার নির্দিষ্ট নিয়ম ও দিনের ব্যাপারে তাঁর কোনো হাদিস পাওয়া যায় না। ইবনে হাজার আসকালানি বলেন, ‘নখ কাটার নিয়ম সম্পর্কে কোনো প্রমাণিত হাদিস নেই।’ (ফাতহুল বারি: ১০ / ৩৫৭) আল্লামা সাখাবি ও হাফেজ ইরাকিও একই মত দিয়েছেন। (মাকাসিদুল হাসানা: ৩৬২; ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকিন: ২ / ৪১১)
তবে মহানবী (সা.) যেহেতু সব ভালো কাজই ডান দিক থেকে শুরু করতেন, তাই নখ কাটার ক্ষেত্রেও ডান দিক থেকে শুরু করা মুস্তাহাব। এর বাইরে অন্য কোনো নিয়ম হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়।
৮. আলেমগণ বনি ইসরায়েলের নবীর সমতুল্য
প্রচলিত আছে, ‘আমার উম্মতের আলেমগণ বনি ইসরায়েলের নবীর মতো।’ এ কথাটি হাদিস হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। যারকাশি, দারেমি, ইবনে হাজার, সুয়ুতি, মোল্লা আলি কারি, শাওকানিসহ অসংখ্য মুহাদ্দিস একে ভিত্তিহীন বলেছেন। (আত-তাযকিরা: ১৬৭; আ-মাকাসিদুল হাসানা: ৩৪০; আ-দুরাদুর মুনতাসিরা: ১৪৩)
তবে এই হাদিসের মর্মের কাছাকাছি কয়েকটি সহিহ্ হাদিস পাওয়া যায়। যেমন মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আলেমগণ নবীদের ওয়ারিশ।’ (আবু দাউদ: ৩১৫৭; তিরমিজি: ২৬০৬)
৯. আজানের সময় কথা বললে ইমান থাকবে না
আজানের সময় মুমিনের করণীয় হলো, মনোযোগ দিয়ে আজান শোনা এবং আজানের জবাব দিয়ে দোয়া পড়া। এ কথা সহিহ্ হাদিস থেকে প্রমাণিত। তবে সমাজে প্রচলিত, ‘যে ব্যক্তি আজানের সময় কথা বলবে, তার ইমান চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে’ বা ‘যে ব্যক্তি আজানের সময় কথা বলবে, তার ৪০ বছরের ইবাদত নষ্ট হয়ে যাবে’— এই জাতীয় কথা হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়। আল্লামা সাগানি এগুলোকে জাল হাদিস বলেছেন। (রিসালাতুল মাওযুআত: ১২)
১০. আজান-ইকামতে আঙুলে চুমো খাওয়া
আজান-ইকামতের সময় রাসুল (সা.)-এর নাম উচ্চারিত হলে অনেককে তর্জনীতে চুমো খেয়ে তা চোখে বুলিয়ে দিতে দেখা যায়। এ আমলটি মূলত মুসনাদে দায়লামির একটি জাল হাদিসের ওপর ভিত্তি করে মানুষ চর্চা করে। আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতি বলেছেন, ‘মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে রাসুল (সা.)-এর নাম শুনে আঙুলে চুমো খাওয়া এবং তা চোখে মুছে দেওয়া সম্পর্কিত যত বর্ণনাই আছে, সবই জাল ও বানোয়াট।’ (তাইসিরুল মাকাল: ১২৩) হাদিসগুলো শুধু জালই নয়; অন্য কোনো সহিহ্ হাদিস থেকেও আমলটি প্রমাণিত নয়। তাই এই কাজ পরিহার করা উচিত।
সূত্র: মাওলানা মুতীউর রহমান রচিত ‘এসব হাদিস নয়’ প্রথম খণ্ড

আমাদের সমাজে অনেক কথা হাদিস হিসেবে প্রচলিত আছে, যা আসলে হাদিস নয়। এর মধ্যে অনেক কথার সঙ্গে হাদিসের দূরতম সম্পর্কও নেই। তবে কিছু কিছু কথা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের মর্মের কাছাকাছি পাওয়া যায়। উভয় ধরনের কথাই হাদিস হিসেবে চালিয়ে দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ।
মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছে করে আমার নামে মিথ্যা বলে, সে যেন জাহান্নামে নিজের ঠিকানা বানিয়ে নেয়।’ (বুখারি: ১১০; মুসলিম: ০৩)
তাই মিথ্যা, বানোয়াট ও জাল হাদিস বলা থেকে বিরত থাকা সবার কর্তব্য। বহুল প্রচলিত ১০টি জাল হাদিস নিয়ে একটি আলোচনা তুলে ধরা হলো—
১. দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ
জন্মভূমিকে ভালোবাসা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। এটি মানুষের মহৎ গুণ। নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসা, মায়া-মমতা এবং আন্তরিক টান থাকা ইসলামবিরোধী নয়। বরং মহানবী (সা.)-এর জীবনেও দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে আমাদের সমাজে প্রচলিত ‘দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ’ কথাটি মহানবী (সা.)-এর হাদিস নয়। হাদিস বিশারদ আল্লামা সাগানি একে জাল হাদিস বলেছেন। (রিসালাতুল মাওযুআত: ৭) মোল্লা আলি কারি বলেছেন, ‘হাফেজে হাদিসদের কাছে এর কোনো ভিত্তি নেই।’ (আল-মাসনু: ৯১)
২. দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞানার্জন করো
জ্ঞান অর্জন করা ইসলামে ফরজ। কখনো তা ফরজে আইন, কখনো ফরজে কিফায়া। কোরআন-হাদিসে বিভিন্নভাবে জ্ঞানচর্চায় উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। জ্ঞানার্জনের কোনো শেষ নেই। শেখার কোনো বয়স নেই। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জ্ঞান আহরণ করে যাওয়াই বিবেকের দাবি। তবে সমাজে প্রচলিত ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান অন্বেষণ করো’ কথাটি হাদিস নয়; বরং এটি প্রবাদ ও উপদেশবাণী। হাদিস বিশারদ শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ বলেন, ‘এটি হাদিস নয়। বরং এটি প্রবাদ।’ (কিমাতুজ জামান ইনদাল উলামা: ৩০)
৩. যার পীর নেই তার পীর শয়তান
ধার্মিক ও মুত্তাকি ব্যক্তিদের পরামর্শে জীবনযাপন করতে উদ্বুদ্ধ করে ইসলাম। পবিত্র কোরআনেও নেককারদের সান্নিধ্য গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তবে এ সম্পর্কিত কথা ‘যার পীর নেই তার পীর শয়তান’—এটি হাদিস নয়। হাফেজ বাদায়ুনি নিজামুদ্দিন আউলিয়াকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘যার পীর নেই তার পীর শয়তান—এটি কি রাসুল (রা.)-এর হাদিস?’ তিনি বললেন, ‘না, এটি বুজুর্গদের কথা।’ (ফাওয়ায়িদুল ফুয়াদ: ৫৯)
তাই এ কথার ওপর ভিত্তি করে পীরের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করা ফরজে আইন দাবি করা ভুল। তবে ধর্মীয় বিষয়ের পণ্ডিত ও নেককার বান্দাদের সান্নিধ্যের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করাও মারাত্মক ভ্রান্তি। (ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৫ / ২৩৬-২৩৮)
৪. পৃথিবী ষাঁড়ের শিঙের ওপর
অনেকেই হাদিস হিসেবে বলেন, ‘পৃথিবী একটি পাথরের ওপর। পাথরটি একটি ষাঁড়ের শিংয়ের ওপর। যখন ষাঁড় শিং হেলায়, তখন পাথর নড়ে ওঠে, সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীও কেঁপে ওঠে। আর এটিই ভূমিকম্প।’ এটি হাদিস নয়। মহানবী (সা.) এ কথা বলেছেন, এমন কোনো প্রমাণ নেই। ইবনুল কাইয়িম ও আবু হাইয়ানসহ অনেক মুহাদ্দিস একে জাল ও অবান্তর বলেছেন। (আলমানারুল মুনিফ: ৭৮; আল-ইসরাইলিয়াত ওয়াল-মাওযুআত: ৩০৫)
৫. মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা
লোকমুখে প্রচলিত আছে, ‘যে ব্যক্তি মসজিদে দুনিয়াবি কথাবার্তা বলবে, আল্লাহ তাআলা তার ৪০ বছরের নেক আমল বরবাদ করে দেবেন।’ হাদিস হিসেবে মানুষের কাছে প্রসিদ্ধ হলেও এটি হাদিস নয়। আল্লামা সাগানি ও আল্লামা কাউকাজি একে জাল হাদিস বলেছেন। মোল্লা আলি কারি, আজলুনি ও শাওকানি এই মতে সমর্থন দিয়েছেন। (আল-মাসনু: ১৮২; আল-মাওজুআতুল কুবরা: ১১৭) এ বিষয়ে প্রায় কাছাকাছি অর্থের আরও কিছু জাল হাদিস সমাজে প্রচলিত রয়েছে।
এর অর্থ এই নয় যে মসজিদে দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা যাবে; বরং তা ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ। তবে কোনো ধর্মীয় কাজে অথবা অপারগতার কারণে বিশ্রাম নিতে মসজিদে গেলে প্রয়োজনে দুনিয়াবি কথা বলা যাবে। মহানবী (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের আমল থেকে বিষয়টি প্রমাণিত। (সহিহ্ বুখারি: ১ / ৬৩-৬৫; রদ্দুল মুহতার: ১ / ৬৬২)
৬. মুমিনের উচ্ছিষ্ট ওষুধ
‘মুমিনের উচ্ছিষ্ট ওষুধ’—এ কথা মানুষের মুখে হাদিসে হিসেবে প্রচলিত। অথচ এটি হাদিস নয়। মোল্লা আলি কারি বলেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসে এর কোনো ভিত্তি নেই।’ (আল-মাসনু: ১০৬) আল্লামা নাজমুদ্দিন গাযযি বলেছেন, ‘এটি হাদিস নয়।’ (কাশফুল খাফা: ১ / ৪৫৮)
তবে মানুষের উচ্ছিষ্ট পবিত্র। তা খাওয়া জায়েজই নয়; বরং প্রশংসনীয়ও। হাদিসে এসেছে, ইবনে আব্বাস বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে আমি ও খালিদ ইবনে ওয়ালিদ মাইমুনা (রা.)-এর কাছে গেলে তিনি পাত্রে করে আমাদের জন্য দুধ নিয়ে এলেন। রাসুল (সা.) দুধ পান করলেন। আমি তাঁর ডান দিকে ছিলাম এবং খালিদ বাম দিকে। তিনি আমাকে বললেন, ‘আগে পান করার অধিকার তোমারই, তবে তুমি ইচ্ছা করলে খালিদকে আগে দিতে পারো।’ আমি বললাম, ‘আপনার উচ্ছিষ্ট পানে আমি কাউকে প্রাধান্য দিতে পারি না।’ (তিরমিজি: ৩৬৮৪)
৭. নখ কাটার বিশেষ নিয়ম
প্রচলিত আছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ডান হাতের তর্জনী থেকে নখ কাটা শুরু করে বৃদ্ধাঙ্গুলে শেষ করতেন। বাম হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুল থেকে শুরু করে বৃদ্ধাঙ্গুলে শেষ করতেন।’ এটি মহানবী (সা.)-এর হাদিস নয়। নখ কাটার নির্দিষ্ট নিয়ম ও দিনের ব্যাপারে তাঁর কোনো হাদিস পাওয়া যায় না। ইবনে হাজার আসকালানি বলেন, ‘নখ কাটার নিয়ম সম্পর্কে কোনো প্রমাণিত হাদিস নেই।’ (ফাতহুল বারি: ১০ / ৩৫৭) আল্লামা সাখাবি ও হাফেজ ইরাকিও একই মত দিয়েছেন। (মাকাসিদুল হাসানা: ৩৬২; ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকিন: ২ / ৪১১)
তবে মহানবী (সা.) যেহেতু সব ভালো কাজই ডান দিক থেকে শুরু করতেন, তাই নখ কাটার ক্ষেত্রেও ডান দিক থেকে শুরু করা মুস্তাহাব। এর বাইরে অন্য কোনো নিয়ম হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়।
৮. আলেমগণ বনি ইসরায়েলের নবীর সমতুল্য
প্রচলিত আছে, ‘আমার উম্মতের আলেমগণ বনি ইসরায়েলের নবীর মতো।’ এ কথাটি হাদিস হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। যারকাশি, দারেমি, ইবনে হাজার, সুয়ুতি, মোল্লা আলি কারি, শাওকানিসহ অসংখ্য মুহাদ্দিস একে ভিত্তিহীন বলেছেন। (আত-তাযকিরা: ১৬৭; আ-মাকাসিদুল হাসানা: ৩৪০; আ-দুরাদুর মুনতাসিরা: ১৪৩)
তবে এই হাদিসের মর্মের কাছাকাছি কয়েকটি সহিহ্ হাদিস পাওয়া যায়। যেমন মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আলেমগণ নবীদের ওয়ারিশ।’ (আবু দাউদ: ৩১৫৭; তিরমিজি: ২৬০৬)
৯. আজানের সময় কথা বললে ইমান থাকবে না
আজানের সময় মুমিনের করণীয় হলো, মনোযোগ দিয়ে আজান শোনা এবং আজানের জবাব দিয়ে দোয়া পড়া। এ কথা সহিহ্ হাদিস থেকে প্রমাণিত। তবে সমাজে প্রচলিত, ‘যে ব্যক্তি আজানের সময় কথা বলবে, তার ইমান চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে’ বা ‘যে ব্যক্তি আজানের সময় কথা বলবে, তার ৪০ বছরের ইবাদত নষ্ট হয়ে যাবে’— এই জাতীয় কথা হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়। আল্লামা সাগানি এগুলোকে জাল হাদিস বলেছেন। (রিসালাতুল মাওযুআত: ১২)
১০. আজান-ইকামতে আঙুলে চুমো খাওয়া
আজান-ইকামতের সময় রাসুল (সা.)-এর নাম উচ্চারিত হলে অনেককে তর্জনীতে চুমো খেয়ে তা চোখে বুলিয়ে দিতে দেখা যায়। এ আমলটি মূলত মুসনাদে দায়লামির একটি জাল হাদিসের ওপর ভিত্তি করে মানুষ চর্চা করে। আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতি বলেছেন, ‘মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে রাসুল (সা.)-এর নাম শুনে আঙুলে চুমো খাওয়া এবং তা চোখে মুছে দেওয়া সম্পর্কিত যত বর্ণনাই আছে, সবই জাল ও বানোয়াট।’ (তাইসিরুল মাকাল: ১২৩) হাদিসগুলো শুধু জালই নয়; অন্য কোনো সহিহ্ হাদিস থেকেও আমলটি প্রমাণিত নয়। তাই এই কাজ পরিহার করা উচিত।
সূত্র: মাওলানা মুতীউর রহমান রচিত ‘এসব হাদিস নয়’ প্রথম খণ্ড
ইসলাম ডেস্ক

আমাদের সমাজে অনেক কথা হাদিস হিসেবে প্রচলিত আছে, যা আসলে হাদিস নয়। এর মধ্যে অনেক কথার সঙ্গে হাদিসের দূরতম সম্পর্কও নেই। তবে কিছু কিছু কথা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের মর্মের কাছাকাছি পাওয়া যায়। উভয় ধরনের কথাই হাদিস হিসেবে চালিয়ে দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ।
মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছে করে আমার নামে মিথ্যা বলে, সে যেন জাহান্নামে নিজের ঠিকানা বানিয়ে নেয়।’ (বুখারি: ১১০; মুসলিম: ০৩)
তাই মিথ্যা, বানোয়াট ও জাল হাদিস বলা থেকে বিরত থাকা সবার কর্তব্য। বহুল প্রচলিত ১০টি জাল হাদিস নিয়ে একটি আলোচনা তুলে ধরা হলো—
১. দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ
জন্মভূমিকে ভালোবাসা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। এটি মানুষের মহৎ গুণ। নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসা, মায়া-মমতা এবং আন্তরিক টান থাকা ইসলামবিরোধী নয়। বরং মহানবী (সা.)-এর জীবনেও দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে আমাদের সমাজে প্রচলিত ‘দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ’ কথাটি মহানবী (সা.)-এর হাদিস নয়। হাদিস বিশারদ আল্লামা সাগানি একে জাল হাদিস বলেছেন। (রিসালাতুল মাওযুআত: ৭) মোল্লা আলি কারি বলেছেন, ‘হাফেজে হাদিসদের কাছে এর কোনো ভিত্তি নেই।’ (আল-মাসনু: ৯১)
২. দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞানার্জন করো
জ্ঞান অর্জন করা ইসলামে ফরজ। কখনো তা ফরজে আইন, কখনো ফরজে কিফায়া। কোরআন-হাদিসে বিভিন্নভাবে জ্ঞানচর্চায় উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। জ্ঞানার্জনের কোনো শেষ নেই। শেখার কোনো বয়স নেই। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জ্ঞান আহরণ করে যাওয়াই বিবেকের দাবি। তবে সমাজে প্রচলিত ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান অন্বেষণ করো’ কথাটি হাদিস নয়; বরং এটি প্রবাদ ও উপদেশবাণী। হাদিস বিশারদ শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ বলেন, ‘এটি হাদিস নয়। বরং এটি প্রবাদ।’ (কিমাতুজ জামান ইনদাল উলামা: ৩০)
৩. যার পীর নেই তার পীর শয়তান
ধার্মিক ও মুত্তাকি ব্যক্তিদের পরামর্শে জীবনযাপন করতে উদ্বুদ্ধ করে ইসলাম। পবিত্র কোরআনেও নেককারদের সান্নিধ্য গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তবে এ সম্পর্কিত কথা ‘যার পীর নেই তার পীর শয়তান’—এটি হাদিস নয়। হাফেজ বাদায়ুনি নিজামুদ্দিন আউলিয়াকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘যার পীর নেই তার পীর শয়তান—এটি কি রাসুল (রা.)-এর হাদিস?’ তিনি বললেন, ‘না, এটি বুজুর্গদের কথা।’ (ফাওয়ায়িদুল ফুয়াদ: ৫৯)
তাই এ কথার ওপর ভিত্তি করে পীরের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করা ফরজে আইন দাবি করা ভুল। তবে ধর্মীয় বিষয়ের পণ্ডিত ও নেককার বান্দাদের সান্নিধ্যের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করাও মারাত্মক ভ্রান্তি। (ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৫ / ২৩৬-২৩৮)
৪. পৃথিবী ষাঁড়ের শিঙের ওপর
অনেকেই হাদিস হিসেবে বলেন, ‘পৃথিবী একটি পাথরের ওপর। পাথরটি একটি ষাঁড়ের শিংয়ের ওপর। যখন ষাঁড় শিং হেলায়, তখন পাথর নড়ে ওঠে, সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীও কেঁপে ওঠে। আর এটিই ভূমিকম্প।’ এটি হাদিস নয়। মহানবী (সা.) এ কথা বলেছেন, এমন কোনো প্রমাণ নেই। ইবনুল কাইয়িম ও আবু হাইয়ানসহ অনেক মুহাদ্দিস একে জাল ও অবান্তর বলেছেন। (আলমানারুল মুনিফ: ৭৮; আল-ইসরাইলিয়াত ওয়াল-মাওযুআত: ৩০৫)
৫. মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা
লোকমুখে প্রচলিত আছে, ‘যে ব্যক্তি মসজিদে দুনিয়াবি কথাবার্তা বলবে, আল্লাহ তাআলা তার ৪০ বছরের নেক আমল বরবাদ করে দেবেন।’ হাদিস হিসেবে মানুষের কাছে প্রসিদ্ধ হলেও এটি হাদিস নয়। আল্লামা সাগানি ও আল্লামা কাউকাজি একে জাল হাদিস বলেছেন। মোল্লা আলি কারি, আজলুনি ও শাওকানি এই মতে সমর্থন দিয়েছেন। (আল-মাসনু: ১৮২; আল-মাওজুআতুল কুবরা: ১১৭) এ বিষয়ে প্রায় কাছাকাছি অর্থের আরও কিছু জাল হাদিস সমাজে প্রচলিত রয়েছে।
এর অর্থ এই নয় যে মসজিদে দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা যাবে; বরং তা ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ। তবে কোনো ধর্মীয় কাজে অথবা অপারগতার কারণে বিশ্রাম নিতে মসজিদে গেলে প্রয়োজনে দুনিয়াবি কথা বলা যাবে। মহানবী (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের আমল থেকে বিষয়টি প্রমাণিত। (সহিহ্ বুখারি: ১ / ৬৩-৬৫; রদ্দুল মুহতার: ১ / ৬৬২)
৬. মুমিনের উচ্ছিষ্ট ওষুধ
‘মুমিনের উচ্ছিষ্ট ওষুধ’—এ কথা মানুষের মুখে হাদিসে হিসেবে প্রচলিত। অথচ এটি হাদিস নয়। মোল্লা আলি কারি বলেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসে এর কোনো ভিত্তি নেই।’ (আল-মাসনু: ১০৬) আল্লামা নাজমুদ্দিন গাযযি বলেছেন, ‘এটি হাদিস নয়।’ (কাশফুল খাফা: ১ / ৪৫৮)
তবে মানুষের উচ্ছিষ্ট পবিত্র। তা খাওয়া জায়েজই নয়; বরং প্রশংসনীয়ও। হাদিসে এসেছে, ইবনে আব্বাস বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে আমি ও খালিদ ইবনে ওয়ালিদ মাইমুনা (রা.)-এর কাছে গেলে তিনি পাত্রে করে আমাদের জন্য দুধ নিয়ে এলেন। রাসুল (সা.) দুধ পান করলেন। আমি তাঁর ডান দিকে ছিলাম এবং খালিদ বাম দিকে। তিনি আমাকে বললেন, ‘আগে পান করার অধিকার তোমারই, তবে তুমি ইচ্ছা করলে খালিদকে আগে দিতে পারো।’ আমি বললাম, ‘আপনার উচ্ছিষ্ট পানে আমি কাউকে প্রাধান্য দিতে পারি না।’ (তিরমিজি: ৩৬৮৪)
৭. নখ কাটার বিশেষ নিয়ম
প্রচলিত আছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ডান হাতের তর্জনী থেকে নখ কাটা শুরু করে বৃদ্ধাঙ্গুলে শেষ করতেন। বাম হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুল থেকে শুরু করে বৃদ্ধাঙ্গুলে শেষ করতেন।’ এটি মহানবী (সা.)-এর হাদিস নয়। নখ কাটার নির্দিষ্ট নিয়ম ও দিনের ব্যাপারে তাঁর কোনো হাদিস পাওয়া যায় না। ইবনে হাজার আসকালানি বলেন, ‘নখ কাটার নিয়ম সম্পর্কে কোনো প্রমাণিত হাদিস নেই।’ (ফাতহুল বারি: ১০ / ৩৫৭) আল্লামা সাখাবি ও হাফেজ ইরাকিও একই মত দিয়েছেন। (মাকাসিদুল হাসানা: ৩৬২; ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকিন: ২ / ৪১১)
তবে মহানবী (সা.) যেহেতু সব ভালো কাজই ডান দিক থেকে শুরু করতেন, তাই নখ কাটার ক্ষেত্রেও ডান দিক থেকে শুরু করা মুস্তাহাব। এর বাইরে অন্য কোনো নিয়ম হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়।
৮. আলেমগণ বনি ইসরায়েলের নবীর সমতুল্য
প্রচলিত আছে, ‘আমার উম্মতের আলেমগণ বনি ইসরায়েলের নবীর মতো।’ এ কথাটি হাদিস হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। যারকাশি, দারেমি, ইবনে হাজার, সুয়ুতি, মোল্লা আলি কারি, শাওকানিসহ অসংখ্য মুহাদ্দিস একে ভিত্তিহীন বলেছেন। (আত-তাযকিরা: ১৬৭; আ-মাকাসিদুল হাসানা: ৩৪০; আ-দুরাদুর মুনতাসিরা: ১৪৩)
তবে এই হাদিসের মর্মের কাছাকাছি কয়েকটি সহিহ্ হাদিস পাওয়া যায়। যেমন মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আলেমগণ নবীদের ওয়ারিশ।’ (আবু দাউদ: ৩১৫৭; তিরমিজি: ২৬০৬)
৯. আজানের সময় কথা বললে ইমান থাকবে না
আজানের সময় মুমিনের করণীয় হলো, মনোযোগ দিয়ে আজান শোনা এবং আজানের জবাব দিয়ে দোয়া পড়া। এ কথা সহিহ্ হাদিস থেকে প্রমাণিত। তবে সমাজে প্রচলিত, ‘যে ব্যক্তি আজানের সময় কথা বলবে, তার ইমান চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে’ বা ‘যে ব্যক্তি আজানের সময় কথা বলবে, তার ৪০ বছরের ইবাদত নষ্ট হয়ে যাবে’— এই জাতীয় কথা হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়। আল্লামা সাগানি এগুলোকে জাল হাদিস বলেছেন। (রিসালাতুল মাওযুআত: ১২)
১০. আজান-ইকামতে আঙুলে চুমো খাওয়া
আজান-ইকামতের সময় রাসুল (সা.)-এর নাম উচ্চারিত হলে অনেককে তর্জনীতে চুমো খেয়ে তা চোখে বুলিয়ে দিতে দেখা যায়। এ আমলটি মূলত মুসনাদে দায়লামির একটি জাল হাদিসের ওপর ভিত্তি করে মানুষ চর্চা করে। আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতি বলেছেন, ‘মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে রাসুল (সা.)-এর নাম শুনে আঙুলে চুমো খাওয়া এবং তা চোখে মুছে দেওয়া সম্পর্কিত যত বর্ণনাই আছে, সবই জাল ও বানোয়াট।’ (তাইসিরুল মাকাল: ১২৩) হাদিসগুলো শুধু জালই নয়; অন্য কোনো সহিহ্ হাদিস থেকেও আমলটি প্রমাণিত নয়। তাই এই কাজ পরিহার করা উচিত।
সূত্র: মাওলানা মুতীউর রহমান রচিত ‘এসব হাদিস নয়’ প্রথম খণ্ড

আমাদের সমাজে অনেক কথা হাদিস হিসেবে প্রচলিত আছে, যা আসলে হাদিস নয়। এর মধ্যে অনেক কথার সঙ্গে হাদিসের দূরতম সম্পর্কও নেই। তবে কিছু কিছু কথা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের মর্মের কাছাকাছি পাওয়া যায়। উভয় ধরনের কথাই হাদিস হিসেবে চালিয়ে দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ।
মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছে করে আমার নামে মিথ্যা বলে, সে যেন জাহান্নামে নিজের ঠিকানা বানিয়ে নেয়।’ (বুখারি: ১১০; মুসলিম: ০৩)
তাই মিথ্যা, বানোয়াট ও জাল হাদিস বলা থেকে বিরত থাকা সবার কর্তব্য। বহুল প্রচলিত ১০টি জাল হাদিস নিয়ে একটি আলোচনা তুলে ধরা হলো—
১. দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ
জন্মভূমিকে ভালোবাসা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। এটি মানুষের মহৎ গুণ। নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসা, মায়া-মমতা এবং আন্তরিক টান থাকা ইসলামবিরোধী নয়। বরং মহানবী (সা.)-এর জীবনেও দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে আমাদের সমাজে প্রচলিত ‘দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ’ কথাটি মহানবী (সা.)-এর হাদিস নয়। হাদিস বিশারদ আল্লামা সাগানি একে জাল হাদিস বলেছেন। (রিসালাতুল মাওযুআত: ৭) মোল্লা আলি কারি বলেছেন, ‘হাফেজে হাদিসদের কাছে এর কোনো ভিত্তি নেই।’ (আল-মাসনু: ৯১)
২. দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞানার্জন করো
জ্ঞান অর্জন করা ইসলামে ফরজ। কখনো তা ফরজে আইন, কখনো ফরজে কিফায়া। কোরআন-হাদিসে বিভিন্নভাবে জ্ঞানচর্চায় উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। জ্ঞানার্জনের কোনো শেষ নেই। শেখার কোনো বয়স নেই। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জ্ঞান আহরণ করে যাওয়াই বিবেকের দাবি। তবে সমাজে প্রচলিত ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত জ্ঞান অন্বেষণ করো’ কথাটি হাদিস নয়; বরং এটি প্রবাদ ও উপদেশবাণী। হাদিস বিশারদ শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ বলেন, ‘এটি হাদিস নয়। বরং এটি প্রবাদ।’ (কিমাতুজ জামান ইনদাল উলামা: ৩০)
৩. যার পীর নেই তার পীর শয়তান
ধার্মিক ও মুত্তাকি ব্যক্তিদের পরামর্শে জীবনযাপন করতে উদ্বুদ্ধ করে ইসলাম। পবিত্র কোরআনেও নেককারদের সান্নিধ্য গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তবে এ সম্পর্কিত কথা ‘যার পীর নেই তার পীর শয়তান’—এটি হাদিস নয়। হাফেজ বাদায়ুনি নিজামুদ্দিন আউলিয়াকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘যার পীর নেই তার পীর শয়তান—এটি কি রাসুল (রা.)-এর হাদিস?’ তিনি বললেন, ‘না, এটি বুজুর্গদের কথা।’ (ফাওয়ায়িদুল ফুয়াদ: ৫৯)
তাই এ কথার ওপর ভিত্তি করে পীরের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করা ফরজে আইন দাবি করা ভুল। তবে ধর্মীয় বিষয়ের পণ্ডিত ও নেককার বান্দাদের সান্নিধ্যের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করাও মারাত্মক ভ্রান্তি। (ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৫ / ২৩৬-২৩৮)
৪. পৃথিবী ষাঁড়ের শিঙের ওপর
অনেকেই হাদিস হিসেবে বলেন, ‘পৃথিবী একটি পাথরের ওপর। পাথরটি একটি ষাঁড়ের শিংয়ের ওপর। যখন ষাঁড় শিং হেলায়, তখন পাথর নড়ে ওঠে, সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীও কেঁপে ওঠে। আর এটিই ভূমিকম্প।’ এটি হাদিস নয়। মহানবী (সা.) এ কথা বলেছেন, এমন কোনো প্রমাণ নেই। ইবনুল কাইয়িম ও আবু হাইয়ানসহ অনেক মুহাদ্দিস একে জাল ও অবান্তর বলেছেন। (আলমানারুল মুনিফ: ৭৮; আল-ইসরাইলিয়াত ওয়াল-মাওযুআত: ৩০৫)
৫. মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা
লোকমুখে প্রচলিত আছে, ‘যে ব্যক্তি মসজিদে দুনিয়াবি কথাবার্তা বলবে, আল্লাহ তাআলা তার ৪০ বছরের নেক আমল বরবাদ করে দেবেন।’ হাদিস হিসেবে মানুষের কাছে প্রসিদ্ধ হলেও এটি হাদিস নয়। আল্লামা সাগানি ও আল্লামা কাউকাজি একে জাল হাদিস বলেছেন। মোল্লা আলি কারি, আজলুনি ও শাওকানি এই মতে সমর্থন দিয়েছেন। (আল-মাসনু: ১৮২; আল-মাওজুআতুল কুবরা: ১১৭) এ বিষয়ে প্রায় কাছাকাছি অর্থের আরও কিছু জাল হাদিস সমাজে প্রচলিত রয়েছে।
এর অর্থ এই নয় যে মসজিদে দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা যাবে; বরং তা ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ। তবে কোনো ধর্মীয় কাজে অথবা অপারগতার কারণে বিশ্রাম নিতে মসজিদে গেলে প্রয়োজনে দুনিয়াবি কথা বলা যাবে। মহানবী (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের আমল থেকে বিষয়টি প্রমাণিত। (সহিহ্ বুখারি: ১ / ৬৩-৬৫; রদ্দুল মুহতার: ১ / ৬৬২)
৬. মুমিনের উচ্ছিষ্ট ওষুধ
‘মুমিনের উচ্ছিষ্ট ওষুধ’—এ কথা মানুষের মুখে হাদিসে হিসেবে প্রচলিত। অথচ এটি হাদিস নয়। মোল্লা আলি কারি বলেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসে এর কোনো ভিত্তি নেই।’ (আল-মাসনু: ১০৬) আল্লামা নাজমুদ্দিন গাযযি বলেছেন, ‘এটি হাদিস নয়।’ (কাশফুল খাফা: ১ / ৪৫৮)
তবে মানুষের উচ্ছিষ্ট পবিত্র। তা খাওয়া জায়েজই নয়; বরং প্রশংসনীয়ও। হাদিসে এসেছে, ইবনে আব্বাস বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে আমি ও খালিদ ইবনে ওয়ালিদ মাইমুনা (রা.)-এর কাছে গেলে তিনি পাত্রে করে আমাদের জন্য দুধ নিয়ে এলেন। রাসুল (সা.) দুধ পান করলেন। আমি তাঁর ডান দিকে ছিলাম এবং খালিদ বাম দিকে। তিনি আমাকে বললেন, ‘আগে পান করার অধিকার তোমারই, তবে তুমি ইচ্ছা করলে খালিদকে আগে দিতে পারো।’ আমি বললাম, ‘আপনার উচ্ছিষ্ট পানে আমি কাউকে প্রাধান্য দিতে পারি না।’ (তিরমিজি: ৩৬৮৪)
৭. নখ কাটার বিশেষ নিয়ম
প্রচলিত আছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ডান হাতের তর্জনী থেকে নখ কাটা শুরু করে বৃদ্ধাঙ্গুলে শেষ করতেন। বাম হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুল থেকে শুরু করে বৃদ্ধাঙ্গুলে শেষ করতেন।’ এটি মহানবী (সা.)-এর হাদিস নয়। নখ কাটার নির্দিষ্ট নিয়ম ও দিনের ব্যাপারে তাঁর কোনো হাদিস পাওয়া যায় না। ইবনে হাজার আসকালানি বলেন, ‘নখ কাটার নিয়ম সম্পর্কে কোনো প্রমাণিত হাদিস নেই।’ (ফাতহুল বারি: ১০ / ৩৫৭) আল্লামা সাখাবি ও হাফেজ ইরাকিও একই মত দিয়েছেন। (মাকাসিদুল হাসানা: ৩৬২; ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকিন: ২ / ৪১১)
তবে মহানবী (সা.) যেহেতু সব ভালো কাজই ডান দিক থেকে শুরু করতেন, তাই নখ কাটার ক্ষেত্রেও ডান দিক থেকে শুরু করা মুস্তাহাব। এর বাইরে অন্য কোনো নিয়ম হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়।
৮. আলেমগণ বনি ইসরায়েলের নবীর সমতুল্য
প্রচলিত আছে, ‘আমার উম্মতের আলেমগণ বনি ইসরায়েলের নবীর মতো।’ এ কথাটি হাদিস হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। যারকাশি, দারেমি, ইবনে হাজার, সুয়ুতি, মোল্লা আলি কারি, শাওকানিসহ অসংখ্য মুহাদ্দিস একে ভিত্তিহীন বলেছেন। (আত-তাযকিরা: ১৬৭; আ-মাকাসিদুল হাসানা: ৩৪০; আ-দুরাদুর মুনতাসিরা: ১৪৩)
তবে এই হাদিসের মর্মের কাছাকাছি কয়েকটি সহিহ্ হাদিস পাওয়া যায়। যেমন মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আলেমগণ নবীদের ওয়ারিশ।’ (আবু দাউদ: ৩১৫৭; তিরমিজি: ২৬০৬)
৯. আজানের সময় কথা বললে ইমান থাকবে না
আজানের সময় মুমিনের করণীয় হলো, মনোযোগ দিয়ে আজান শোনা এবং আজানের জবাব দিয়ে দোয়া পড়া। এ কথা সহিহ্ হাদিস থেকে প্রমাণিত। তবে সমাজে প্রচলিত, ‘যে ব্যক্তি আজানের সময় কথা বলবে, তার ইমান চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে’ বা ‘যে ব্যক্তি আজানের সময় কথা বলবে, তার ৪০ বছরের ইবাদত নষ্ট হয়ে যাবে’— এই জাতীয় কথা হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়। আল্লামা সাগানি এগুলোকে জাল হাদিস বলেছেন। (রিসালাতুল মাওযুআত: ১২)
১০. আজান-ইকামতে আঙুলে চুমো খাওয়া
আজান-ইকামতের সময় রাসুল (সা.)-এর নাম উচ্চারিত হলে অনেককে তর্জনীতে চুমো খেয়ে তা চোখে বুলিয়ে দিতে দেখা যায়। এ আমলটি মূলত মুসনাদে দায়লামির একটি জাল হাদিসের ওপর ভিত্তি করে মানুষ চর্চা করে। আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতি বলেছেন, ‘মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে রাসুল (সা.)-এর নাম শুনে আঙুলে চুমো খাওয়া এবং তা চোখে মুছে দেওয়া সম্পর্কিত যত বর্ণনাই আছে, সবই জাল ও বানোয়াট।’ (তাইসিরুল মাকাল: ১২৩) হাদিসগুলো শুধু জালই নয়; অন্য কোনো সহিহ্ হাদিস থেকেও আমলটি প্রমাণিত নয়। তাই এই কাজ পরিহার করা উচিত।
সূত্র: মাওলানা মুতীউর রহমান রচিত ‘এসব হাদিস নয়’ প্রথম খণ্ড

মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
৬ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। আর এই মাসের প্রথম জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় একটি দিন। ইসলাম ধর্মে জুমা বা শুক্রবার এমনিতেই বরকতময় দিন হিসেবে স্বীকৃত। তাই যখন এই পবিত্র জুমা নতুন একটি মাসের সূচনায় আসে, তখন তা আত্মসমালোচনা, তওবা ও নতুন করে ইমানকে নবায়নের এক...
৯ ঘণ্টা আগে
মানবসমাজে ধর্ষণ একটি জঘন্য, ঘৃণিত ও ভয়াবহ অপরাধ। ধর্ষণ যেভাবে নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তেমনি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং নারীর সম্মানহানি বা ইভ টিজিংকে...
৯ ঘণ্টা আগে
আমাদের মাঝে এসে হাজির হয়েছে ‘জমাদিউল আউয়াল’—এটি আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস। আরবি এই মাসের বাংলা অর্থ নানাভাবে হতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এভাবে করা যায়, জুমাদা শব্দের অর্থ—স্থির, অবিচল, দৃঢ়, শীতল।
৯ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

আরবি শব্দ তহারাত-এর আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা। আর শরয়ি দৃষ্টিতে তহারাত হলো বিশেষ পদ্ধতিতে অপবিত্রতা থেকে শুদ্ধ হওয়া।
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
পবিত্রতা মানুষকে করে তোলে ফেরেশতার অনুরূপ। তার হৃদয় হয়ে ওঠে নির্মল। আত্মা হয় প্রেরণার আধার। অন্যদিকে, অপবিত্রতা মানুষকে ঠেলে দেয় শয়তানের কুমন্ত্রণার দরজায়।
যে ব্যক্তি সর্বদা পবিত্রতায় যত্নবান, তার অন্তরে জন্ম নেয় আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার যোগ্যতা। সে দেখে সততা ও আলোয় ভরা স্বপ্ন। তার চরিত্রে ফুটে ওঠে অভূতপূর্ব আত্মিক সৌন্দর্য।
পবিত্রতা শুধু শরীরের পরিচ্ছন্নতা নয়, এটি আত্মার পরিশুদ্ধতার প্রতীক। এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পবিত্রতা রক্ষা করার একটি মহৎ উপায়। তাই পবিত্রতার মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ ও পরিপূর্ণ রাখা প্রতিটি মুসলিমের নৈতিক দায়িত্ব এবং সফল জীবনের মূল চাবিকাঠি।
লেখক: মুফতি আবু রায়হান আল মাহমুদ, প্রিন্সিপাল, গাঙ্গাটিয়া দারুল কুরআন মাদ্রাসা বাখরাবাদ, কুমিল্লা।

আরবি শব্দ তহারাত-এর আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা। আর শরয়ি দৃষ্টিতে তহারাত হলো বিশেষ পদ্ধতিতে অপবিত্রতা থেকে শুদ্ধ হওয়া।
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
পবিত্রতা মানুষকে করে তোলে ফেরেশতার অনুরূপ। তার হৃদয় হয়ে ওঠে নির্মল। আত্মা হয় প্রেরণার আধার। অন্যদিকে, অপবিত্রতা মানুষকে ঠেলে দেয় শয়তানের কুমন্ত্রণার দরজায়।
যে ব্যক্তি সর্বদা পবিত্রতায় যত্নবান, তার অন্তরে জন্ম নেয় আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার যোগ্যতা। সে দেখে সততা ও আলোয় ভরা স্বপ্ন। তার চরিত্রে ফুটে ওঠে অভূতপূর্ব আত্মিক সৌন্দর্য।
পবিত্রতা শুধু শরীরের পরিচ্ছন্নতা নয়, এটি আত্মার পরিশুদ্ধতার প্রতীক। এটি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পবিত্রতা রক্ষা করার একটি মহৎ উপায়। তাই পবিত্রতার মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ ও পরিপূর্ণ রাখা প্রতিটি মুসলিমের নৈতিক দায়িত্ব এবং সফল জীবনের মূল চাবিকাঠি।
লেখক: মুফতি আবু রায়হান আল মাহমুদ, প্রিন্সিপাল, গাঙ্গাটিয়া দারুল কুরআন মাদ্রাসা বাখরাবাদ, কুমিল্লা।

আমাদের সমাজে অনেক কথা হাদিস হিসেবে প্রচলিত আছে, যা আসলে হাদিস নয়। এর মধ্যে অনেক কথার সঙ্গে হাদিসের দূরতম সম্পর্কও নেই। তবে কিছু কিছু কথা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের মর্মের কাছাকাছি পাওয়া যায়। উভয় ধরনের কথাই হাদিস হিসেবে চালিয়ে দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ।
২৩ জানুয়ারি ২০২৩
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। আর এই মাসের প্রথম জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় একটি দিন। ইসলাম ধর্মে জুমা বা শুক্রবার এমনিতেই বরকতময় দিন হিসেবে স্বীকৃত। তাই যখন এই পবিত্র জুমা নতুন একটি মাসের সূচনায় আসে, তখন তা আত্মসমালোচনা, তওবা ও নতুন করে ইমানকে নবায়নের এক...
৯ ঘণ্টা আগে
মানবসমাজে ধর্ষণ একটি জঘন্য, ঘৃণিত ও ভয়াবহ অপরাধ। ধর্ষণ যেভাবে নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তেমনি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং নারীর সম্মানহানি বা ইভ টিজিংকে...
৯ ঘণ্টা আগে
আমাদের মাঝে এসে হাজির হয়েছে ‘জমাদিউল আউয়াল’—এটি আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস। আরবি এই মাসের বাংলা অর্থ নানাভাবে হতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এভাবে করা যায়, জুমাদা শব্দের অর্থ—স্থির, অবিচল, দৃঢ়, শীতল।
৯ ঘণ্টা আগেডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। আর এই মাসের প্রথম জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় একটি দিন। ইসলাম ধর্মে জুমা বা শুক্রবার এমনিতেই বরকতময় দিন হিসেবে স্বীকৃত। তাই যখন এই পবিত্র জুমা নতুন একটি মাসের সূচনায় আসে, তখন তা আত্মসমালোচনা, তওবা ও নতুন করে ইমানকে নবায়নের এক মহামুহূর্ত তৈরি করে।
জমাদিউল আউয়াল মাস হিজরি বর্ষপঞ্জির মধ্যবর্তী এক শান্ত সময়। ইসলামি ইতিহাসে এই মাসে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে—বিশেষত নবী করিম (সা.)-এর সাহাবিদের কিছু যুদ্ধ এবং ইসলামি সমাজের পুনর্গঠনের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। এটি এমন এক মাস, যা আমাদের আল্লাহর পথে অবিচল থাকার, আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য ধারণের শিক্ষা দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন যারা তাঁর পথে দৃঢ় থাকে।’ (সুরা সাফ: ৪)
জুমা শ্রেষ্ঠতম দিন
নবী করিম (সা.) বলেন, ‘সূর্য উদিত হয়, এমন দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম দিন হলো শুক্রবার। এই দিনেই আদম সৃষ্টি হয়েছেন, এই দিনেই জান্নাতে প্রবেশ করেছেন এবং এই দিনেই জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। কিয়ামতও এই দিনেই সংঘটিত হবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)
জুমার দিন মুসলমানদের জন্য বিশেষ ইবাদতের দিন। এদিনে গোসল করা, সুন্দর পোশাক পরা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা ও সালাত আদায় করা—এসব আমল অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ছুটে যাও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমুআ: ৯)
এই জুমা ও পুরো মাসে কিছু আমল করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত পাওয়ার আশা করা যায়:
১. আত্মশুদ্ধি ও তওবা: অতীতের ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
২. সুরা কাহফ তিলাওয়াত: নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শুক্রবারে সুরা কাহফ তিলাওয়াত করে, আল্লাহ তাআলা তাকে এক শুক্রবার থেকে পরের শুক্রবার পর্যন্ত নুর দান করেন।’ (মুস্তাদরাকে হাকেম: ৩৩৯২)
৩. দরুদ শরিফ বেশি পরিমাণে পড়া: নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার প্রতি বেশি দরুদ পাঠ করো—কারণ, তোমাদের দরুদ আমাকে পৌঁছে দেওয়া হয়।’ (সুনান আবু দাউদ: ১৫৩১)
৪. দরিদ্র ও অভাবীদের সহায়তা: মাসের শুরুতে দান-সদকা করলে পুরো মাসে বরকত আসে।
৫. দোয়া কবুলের সময়: শুক্রবারে আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়টি বিশেষ দোয়া কবুলের সময়।
এই জুমা হোক জীবনের নতুন দিকনির্দেশনা
জমাদিউল আউয়ালের প্রথম জুমা কেবল একটি তারিখ নয়; এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবন ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু নেক আমল চিরস্থায়ী। নতুন মাসের শুরু যেন নতুন প্রেরণা হয়ে আসে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের পরিবর্তন করে।’ (সুরা রাদ: ১১)। তাই আসুন, এই পবিত্র জুমায় নিজেদের পরিবর্তনের প্রতিজ্ঞা করি—নামাজে মনোযোগ দিই, কোরআন পাঠে নিয়মিত হই, মনের গ্লানি দূর করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে জীবন উৎসর্গ করি।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। আর এই মাসের প্রথম জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় একটি দিন। ইসলাম ধর্মে জুমা বা শুক্রবার এমনিতেই বরকতময় দিন হিসেবে স্বীকৃত। তাই যখন এই পবিত্র জুমা নতুন একটি মাসের সূচনায় আসে, তখন তা আত্মসমালোচনা, তওবা ও নতুন করে ইমানকে নবায়নের এক মহামুহূর্ত তৈরি করে।
জমাদিউল আউয়াল মাস হিজরি বর্ষপঞ্জির মধ্যবর্তী এক শান্ত সময়। ইসলামি ইতিহাসে এই মাসে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে—বিশেষত নবী করিম (সা.)-এর সাহাবিদের কিছু যুদ্ধ এবং ইসলামি সমাজের পুনর্গঠনের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। এটি এমন এক মাস, যা আমাদের আল্লাহর পথে অবিচল থাকার, আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্য ধারণের শিক্ষা দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন যারা তাঁর পথে দৃঢ় থাকে।’ (সুরা সাফ: ৪)
জুমা শ্রেষ্ঠতম দিন
নবী করিম (সা.) বলেন, ‘সূর্য উদিত হয়, এমন দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্তম দিন হলো শুক্রবার। এই দিনেই আদম সৃষ্টি হয়েছেন, এই দিনেই জান্নাতে প্রবেশ করেছেন এবং এই দিনেই জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। কিয়ামতও এই দিনেই সংঘটিত হবে।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৪)
জুমার দিন মুসলমানদের জন্য বিশেষ ইবাদতের দিন। এদিনে গোসল করা, সুন্দর পোশাক পরা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা ও সালাত আদায় করা—এসব আমল অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ছুটে যাও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমুআ: ৯)
এই জুমা ও পুরো মাসে কিছু আমল করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত পাওয়ার আশা করা যায়:
১. আত্মশুদ্ধি ও তওবা: অতীতের ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
২. সুরা কাহফ তিলাওয়াত: নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শুক্রবারে সুরা কাহফ তিলাওয়াত করে, আল্লাহ তাআলা তাকে এক শুক্রবার থেকে পরের শুক্রবার পর্যন্ত নুর দান করেন।’ (মুস্তাদরাকে হাকেম: ৩৩৯২)
৩. দরুদ শরিফ বেশি পরিমাণে পড়া: নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার প্রতি বেশি দরুদ পাঠ করো—কারণ, তোমাদের দরুদ আমাকে পৌঁছে দেওয়া হয়।’ (সুনান আবু দাউদ: ১৫৩১)
৪. দরিদ্র ও অভাবীদের সহায়তা: মাসের শুরুতে দান-সদকা করলে পুরো মাসে বরকত আসে।
৫. দোয়া কবুলের সময়: শুক্রবারে আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়টি বিশেষ দোয়া কবুলের সময়।
এই জুমা হোক জীবনের নতুন দিকনির্দেশনা
জমাদিউল আউয়ালের প্রথম জুমা কেবল একটি তারিখ নয়; এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবন ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু নেক আমল চিরস্থায়ী। নতুন মাসের শুরু যেন নতুন প্রেরণা হয়ে আসে।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের পরিবর্তন করে।’ (সুরা রাদ: ১১)। তাই আসুন, এই পবিত্র জুমায় নিজেদের পরিবর্তনের প্রতিজ্ঞা করি—নামাজে মনোযোগ দিই, কোরআন পাঠে নিয়মিত হই, মনের গ্লানি দূর করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে জীবন উৎসর্গ করি।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি।

আমাদের সমাজে অনেক কথা হাদিস হিসেবে প্রচলিত আছে, যা আসলে হাদিস নয়। এর মধ্যে অনেক কথার সঙ্গে হাদিসের দূরতম সম্পর্কও নেই। তবে কিছু কিছু কথা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের মর্মের কাছাকাছি পাওয়া যায়। উভয় ধরনের কথাই হাদিস হিসেবে চালিয়ে দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ।
২৩ জানুয়ারি ২০২৩
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
৬ ঘণ্টা আগে
মানবসমাজে ধর্ষণ একটি জঘন্য, ঘৃণিত ও ভয়াবহ অপরাধ। ধর্ষণ যেভাবে নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তেমনি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং নারীর সম্মানহানি বা ইভ টিজিংকে...
৯ ঘণ্টা আগে
আমাদের মাঝে এসে হাজির হয়েছে ‘জমাদিউল আউয়াল’—এটি আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস। আরবি এই মাসের বাংলা অর্থ নানাভাবে হতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এভাবে করা যায়, জুমাদা শব্দের অর্থ—স্থির, অবিচল, দৃঢ়, শীতল।
৯ ঘণ্টা আগেকাউসার লাবীব

মানবসমাজে ধর্ষণ একটি জঘন্য, ঘৃণিত ও ভয়াবহ অপরাধ। ধর্ষণ যেভাবে নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তেমনি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং নারীর সম্মানহানি বা ইভ টিজিংকে সম্পূর্ণরূপে হারাম ঘোষণা করেছে। ধর্ষণকে ইসলামে ব্যভিচারের (জিনা) চেয়েও ভয়ংকর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি প্রতিরোধে ইসলাম ব্যক্তিগত আত্মশুদ্ধি থেকে শুরু করে সামাজিক প্রতিরোধ এবং অপরাধীর জন্য কঠোর শাস্তির সমন্বিত ব্যবস্থা দিয়েছে।
ধর্ষণ বা ব্যভিচার এক দিনে সংঘটিত হয় না; বরং এটি ধাপে ধাপে অশ্লীলতার পথ ধরে আসে। তাই ইসলাম অপরাধের উৎসমুখেই লাগাম টেনে ধরার জন্য নারী-পুরুষ উভয়কে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে।
কঠোরভাবে পর্দার বিধান ও অবাধ মেলামেশা বন্ধ: পর্দার বিধান নারী-পুরুষের মধ্যে দূরত্ব ও নিরাপদ সম্পর্ক বজায় রাখে। নারীদের তাদের রূপ-সৌন্দর্য স্বামী ও মাহরাম (যাদের সঙ্গে বিয়ে বৈধ নয়) ব্যতীত অন্য কারও সামনে প্রকাশ না করতে এবং বাইরে যাওয়ার সময় শালীন পোশাক পরিধান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, পরিবার ও শিক্ষাব্যবস্থায় তাকওয়াভিত্তিক (খোদাভীতি) নৈতিক শিক্ষা দেওয়া অপরিহার্য, যা আত্মশুদ্ধি ও অপরাধ থেকে দূরে থাকতে সহায়ক।
ধর্ষকের কঠোরতম শাস্তির নিশ্চয়তা
ইসলামে ব্যভিচার, বলপ্রয়োগ এবং সম্ভ্রম লুণ্ঠনের সমন্বয়ে গঠিত একটি মারাত্মক অপরাধ হলো ধর্ষণ। তাই ধর্ষকের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর এবং তাতে কোনো প্রকার দয়া-মায়া প্রদর্শনের সুযোগ নেই।

মানবসমাজে ধর্ষণ একটি জঘন্য, ঘৃণিত ও ভয়াবহ অপরাধ। ধর্ষণ যেভাবে নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তেমনি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং নারীর সম্মানহানি বা ইভ টিজিংকে সম্পূর্ণরূপে হারাম ঘোষণা করেছে। ধর্ষণকে ইসলামে ব্যভিচারের (জিনা) চেয়েও ভয়ংকর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি প্রতিরোধে ইসলাম ব্যক্তিগত আত্মশুদ্ধি থেকে শুরু করে সামাজিক প্রতিরোধ এবং অপরাধীর জন্য কঠোর শাস্তির সমন্বিত ব্যবস্থা দিয়েছে।
ধর্ষণ বা ব্যভিচার এক দিনে সংঘটিত হয় না; বরং এটি ধাপে ধাপে অশ্লীলতার পথ ধরে আসে। তাই ইসলাম অপরাধের উৎসমুখেই লাগাম টেনে ধরার জন্য নারী-পুরুষ উভয়কে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে।
কঠোরভাবে পর্দার বিধান ও অবাধ মেলামেশা বন্ধ: পর্দার বিধান নারী-পুরুষের মধ্যে দূরত্ব ও নিরাপদ সম্পর্ক বজায় রাখে। নারীদের তাদের রূপ-সৌন্দর্য স্বামী ও মাহরাম (যাদের সঙ্গে বিয়ে বৈধ নয়) ব্যতীত অন্য কারও সামনে প্রকাশ না করতে এবং বাইরে যাওয়ার সময় শালীন পোশাক পরিধান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, পরিবার ও শিক্ষাব্যবস্থায় তাকওয়াভিত্তিক (খোদাভীতি) নৈতিক শিক্ষা দেওয়া অপরিহার্য, যা আত্মশুদ্ধি ও অপরাধ থেকে দূরে থাকতে সহায়ক।
ধর্ষকের কঠোরতম শাস্তির নিশ্চয়তা
ইসলামে ব্যভিচার, বলপ্রয়োগ এবং সম্ভ্রম লুণ্ঠনের সমন্বয়ে গঠিত একটি মারাত্মক অপরাধ হলো ধর্ষণ। তাই ধর্ষকের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর এবং তাতে কোনো প্রকার দয়া-মায়া প্রদর্শনের সুযোগ নেই।

আমাদের সমাজে অনেক কথা হাদিস হিসেবে প্রচলিত আছে, যা আসলে হাদিস নয়। এর মধ্যে অনেক কথার সঙ্গে হাদিসের দূরতম সম্পর্কও নেই। তবে কিছু কিছু কথা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের মর্মের কাছাকাছি পাওয়া যায়। উভয় ধরনের কথাই হাদিস হিসেবে চালিয়ে দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ।
২৩ জানুয়ারি ২০২৩
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
৬ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। আর এই মাসের প্রথম জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় একটি দিন। ইসলাম ধর্মে জুমা বা শুক্রবার এমনিতেই বরকতময় দিন হিসেবে স্বীকৃত। তাই যখন এই পবিত্র জুমা নতুন একটি মাসের সূচনায় আসে, তখন তা আত্মসমালোচনা, তওবা ও নতুন করে ইমানকে নবায়নের এক...
৯ ঘণ্টা আগে
আমাদের মাঝে এসে হাজির হয়েছে ‘জমাদিউল আউয়াল’—এটি আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস। আরবি এই মাসের বাংলা অর্থ নানাভাবে হতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এভাবে করা যায়, জুমাদা শব্দের অর্থ—স্থির, অবিচল, দৃঢ়, শীতল।
৯ ঘণ্টা আগেমুফতি এনায়েতুল্লাহ ফাহাদ

আমাদের মাঝে এসে হাজির হয়েছে ‘জমাদিউল আউয়াল’—এটি আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস। আরবি এই মাসের বাংলা অর্থ নানাভাবে হতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এভাবে করা যায়, জুমাদা শব্দের অর্থ—স্থির, অবিচল, দৃঢ়, শীতল। আর আউয়াল মানে প্রথম। তথা প্রথম জুমাদা বা প্রথম শীত। মূলত এই মাসটিতে আরবে ঠান্ডা নেমে আসত—প্রচণ্ড শীতে কিংবা প্রবল শৈত্যপ্রবাহে সবকিছু প্রায় জমে স্থির হয়ে যায়। তাই এ মাসের নাম জমাদিউল আউয়াল বা শীতকালের প্রথম মাস।
আসন্ন ‘শীতকাল’ বাংলা বছরের ছয়টি ঋতুর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঋতু। এটি প্রকৃতির মাঝে এক শীতল ও মনোরম রূপ নিয়ে আসে, যা মানুষের ইবাদত-বন্দেগিতে এক বিশেষ প্রভাব ফেলে। আসলে শীত ও গ্রীষ্ম সবই আল্লাহপ্রদত্ত প্রকৃতির অবদান। এর প্রতিটিতে রয়েছে কুদরতের নিদর্শন ও নিগূঢ় রহস্য। কোরআন করিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যেহেতু কুরাইশদের অনুরাগ রয়েছে! তাদের আগ্রহ আছে শীত ও গ্রীষ্মে ভ্রমণের। অতএব তাদের ইবাদত করা উচিত এই (কাবা) গৃহের রবের। যিনি তাদের ক্ষুধায় অন্ন দান করেন এবং শঙ্কায় নিরাপত্তা দান করেন।’ (সুরা কুরাইশ: ১-৪)
জুমাদাল উলা মাস—নতুন ঋতু হিসেবেও মুমিনের কাছে এর গুরুত্ব অপরিসীম। মুসলিমরা নতুন বছর ও মাসের চাঁদ দেখে আনন্দিত হয়, পাশাপাশি নতুন ঋতু পেয়েও তাদের মন হয় পুলকিত। কারণ প্রত্যেক মানুষ দুনিয়ায় আগমন করেছে নির্দিষ্ট কিছু সময় নিয়ে। নির্দিষ্ট সময়ের পর কোনো প্রাণী বা সৃষ্টির বেঁচে থাকার সুযোগ নেই। তাই তো প্রতিটি মুমিনের কাছে প্রতি মুহূর্তের দাম সোনার চেয়েও দামি। সময়-কাল-মুহূর্তের আগমন হলেই মুমিন দোয়া পড়বে। সাহাবি তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) যখন নতুন চাঁদ বা আবহ পরিবর্তন লক্ষ করতেন, তখন এই দোয়া পড়তেন—‘আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ইমানি ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলাম, রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।’ (সুনানে দারিমি: ১৭২৫)
প্রসঙ্গত, রমজান ও মহররমের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিবস আর ফজিলতের কথা এই মাসে না থাকলেও রাসুল (সা.)-এর প্রতি মাসের নির্দিষ্ট একটি আমলের কথা হাদিসে এসেছে—তিনি প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজা রাখতেন। (সহিহ বুখারি: ১৯৭৫)। এ জন্যই আমাদের উচিত যেসব দিনের ও যেসব মাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, সেসব দিনে ও মাসে ইবাদত করা। আর যেসব দিন ও মাসের বিশেষ ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য কোরআন ও হাদিসে উল্লেখ করা হয়নি, সেসব দিন ও মাসে বেশি করে নেক আমল করা। ফলে আখিরাতের ময়দানে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে যাওয়া যাবে ইনশা আল্লাহ।
আমরা পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সময় বিবেচনা করলে দেখতে পাব জমাদিউল আউয়াল মাস ইবাদতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নফল রোজা, নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দরুদ শরিফ, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-কালাম, দান-সদকাহ খয়রাত, ওমরাহ, হজ ইত্যাদির মাধ্যমে এই মাসকে সার্থক ও সাফল্যময় করা যায়। সুতরাং আমাদের উচিত এই মাস ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করা।
লেখক: মুহাদ্দিস ও খতিব

আমাদের মাঝে এসে হাজির হয়েছে ‘জমাদিউল আউয়াল’—এটি আরবি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের পঞ্চম মাস। আরবি এই মাসের বাংলা অর্থ নানাভাবে হতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ এভাবে করা যায়, জুমাদা শব্দের অর্থ—স্থির, অবিচল, দৃঢ়, শীতল। আর আউয়াল মানে প্রথম। তথা প্রথম জুমাদা বা প্রথম শীত। মূলত এই মাসটিতে আরবে ঠান্ডা নেমে আসত—প্রচণ্ড শীতে কিংবা প্রবল শৈত্যপ্রবাহে সবকিছু প্রায় জমে স্থির হয়ে যায়। তাই এ মাসের নাম জমাদিউল আউয়াল বা শীতকালের প্রথম মাস।
আসন্ন ‘শীতকাল’ বাংলা বছরের ছয়টি ঋতুর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঋতু। এটি প্রকৃতির মাঝে এক শীতল ও মনোরম রূপ নিয়ে আসে, যা মানুষের ইবাদত-বন্দেগিতে এক বিশেষ প্রভাব ফেলে। আসলে শীত ও গ্রীষ্ম সবই আল্লাহপ্রদত্ত প্রকৃতির অবদান। এর প্রতিটিতে রয়েছে কুদরতের নিদর্শন ও নিগূঢ় রহস্য। কোরআন করিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যেহেতু কুরাইশদের অনুরাগ রয়েছে! তাদের আগ্রহ আছে শীত ও গ্রীষ্মে ভ্রমণের। অতএব তাদের ইবাদত করা উচিত এই (কাবা) গৃহের রবের। যিনি তাদের ক্ষুধায় অন্ন দান করেন এবং শঙ্কায় নিরাপত্তা দান করেন।’ (সুরা কুরাইশ: ১-৪)
জুমাদাল উলা মাস—নতুন ঋতু হিসেবেও মুমিনের কাছে এর গুরুত্ব অপরিসীম। মুসলিমরা নতুন বছর ও মাসের চাঁদ দেখে আনন্দিত হয়, পাশাপাশি নতুন ঋতু পেয়েও তাদের মন হয় পুলকিত। কারণ প্রত্যেক মানুষ দুনিয়ায় আগমন করেছে নির্দিষ্ট কিছু সময় নিয়ে। নির্দিষ্ট সময়ের পর কোনো প্রাণী বা সৃষ্টির বেঁচে থাকার সুযোগ নেই। তাই তো প্রতিটি মুমিনের কাছে প্রতি মুহূর্তের দাম সোনার চেয়েও দামি। সময়-কাল-মুহূর্তের আগমন হলেই মুমিন দোয়া পড়বে। সাহাবি তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) যখন নতুন চাঁদ বা আবহ পরিবর্তন লক্ষ করতেন, তখন এই দোয়া পড়তেন—‘আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ইমানি ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলাম, রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।’ (সুনানে দারিমি: ১৭২৫)
প্রসঙ্গত, রমজান ও মহররমের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিবস আর ফজিলতের কথা এই মাসে না থাকলেও রাসুল (সা.)-এর প্রতি মাসের নির্দিষ্ট একটি আমলের কথা হাদিসে এসেছে—তিনি প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোজা রাখতেন। (সহিহ বুখারি: ১৯৭৫)। এ জন্যই আমাদের উচিত যেসব দিনের ও যেসব মাসের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ফজিলত কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, সেসব দিনে ও মাসে ইবাদত করা। আর যেসব দিন ও মাসের বিশেষ ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য কোরআন ও হাদিসে উল্লেখ করা হয়নি, সেসব দিন ও মাসে বেশি করে নেক আমল করা। ফলে আখিরাতের ময়দানে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে যাওয়া যাবে ইনশা আল্লাহ।
আমরা পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সময় বিবেচনা করলে দেখতে পাব জমাদিউল আউয়াল মাস ইবাদতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নফল রোজা, নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দরুদ শরিফ, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-কালাম, দান-সদকাহ খয়রাত, ওমরাহ, হজ ইত্যাদির মাধ্যমে এই মাসকে সার্থক ও সাফল্যময় করা যায়। সুতরাং আমাদের উচিত এই মাস ইবাদত-বন্দেগিতে অতিবাহিত করা।
লেখক: মুহাদ্দিস ও খতিব

আমাদের সমাজে অনেক কথা হাদিস হিসেবে প্রচলিত আছে, যা আসলে হাদিস নয়। এর মধ্যে অনেক কথার সঙ্গে হাদিসের দূরতম সম্পর্কও নেই। তবে কিছু কিছু কথা অন্যান্য সহিহ্ হাদিসের মর্মের কাছাকাছি পাওয়া যায়। উভয় ধরনের কথাই হাদিস হিসেবে চালিয়ে দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়েজ।
২৩ জানুয়ারি ২০২৩
মানবজীবনের প্রতিটি পর্যায়—জাগতিক হোক বা পরলৌকিক, পবিত্রতা এক অনন্য গুরুত্ব বহন করে। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলভি (রহ.) তাঁর অমর গ্রন্থ ‘হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ’ (১ / ৫৪)-তে চারটি সৌভাগ্যের স্বভাবের কথা বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পবিত্রতা অর্জনের অভ্যাস।
৬ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস হলো জমাদিউল আউয়াল। আর এই মাসের প্রথম জুমা (শুক্রবার) মুসলমানদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যময় একটি দিন। ইসলাম ধর্মে জুমা বা শুক্রবার এমনিতেই বরকতময় দিন হিসেবে স্বীকৃত। তাই যখন এই পবিত্র জুমা নতুন একটি মাসের সূচনায় আসে, তখন তা আত্মসমালোচনা, তওবা ও নতুন করে ইমানকে নবায়নের এক...
৯ ঘণ্টা আগে
মানবসমাজে ধর্ষণ একটি জঘন্য, ঘৃণিত ও ভয়াবহ অপরাধ। ধর্ষণ যেভাবে নারীর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে, তেমনি সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা ও নৈতিক কাঠামো ভেঙে দেয়। ইসলাম, একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে নারী জাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে এবং নারীর সম্মানহানি বা ইভ টিজিংকে...
৯ ঘণ্টা আগে