ফারুক মেহেদী
শূন্য থেকে শুরু করা বাংলাদেশ কতটা এগোল? আর কত দূর যাবে? কী কী চ্যালেঞ্জ সামনে? এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সদস্য ও সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: আপনার দেখা বাংলাদেশের উন্নয়নচিত্রটা কেমন?
ড. শামসুল আলম: বাংলাদেশ সত্যি এখন উন্নয়নের বিস্ময়। দেশের শুরুটা প্রায় শূন্য হাতে। আমাদের রপ্তানি আর বৈদেশিক রিজার্ভ বলতে কিছু ছিল না। ছিল খাদ্যঘাটতি। খাদ্য উৎপাদন ১ কোটি টন থেকে এখন তা ৪ কোটি টনে উন্নীত হয়েছে ৫০ বছরে। ভারতের খাদ্য উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছিল ৪০ বছরে। আমাদের তা হয়েছিল ২৫ বছরে। মানে আমাদের প্রবৃদ্ধির হারটা ভারতের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। আমাদের প্রথম বাজেট হলো ৭৮৬ কোটি টাকার। সেই বাজেট ৭৬৮ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৬ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা। টাকার অঙ্কে এটি কত বড় হলো, তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে। এটি একটি অবিশ্বাস্য অগ্রগতি। এই দেশকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখে বাস্কেট কেইস বলেছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার। সেই দেশ এত দ্রুত রূপান্তর হলো। এর ভিত্তি আসলে বঙ্গবন্ধুই স্থাপন করে গিয়েছিলেন। কৃষি খাতে তিনি ব্যাপক সংস্কার করেছিলেন। এ খাতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানই তাঁর হাতে গড়া।
আজকের পত্রিকা: জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারের দিক থেকে আপনার মূল্যায়ন কী?
ড. শামসুল আলম: নানা চড়াই-উতরাই পার হয়ে, সামরিক শাসনের–অপশাসনের কাল পেরিয়ে গত এক যুগে আমাদের জিডিপি বেড়েছে সাড়ে ৩ গুণেরও বেশি। ২০০৮-০৯ থেকে এ বৃদ্ধির হার ছিল সবচেয়ে বেশি। একসময় এ বৃদ্ধিতে প্রায় ২৫ বছর লেগেছিল। আর সেটা আমরা ১২ বছরে অর্জন করতে পেরেছি। বাংলাদেশের সাড়ে ৩ শতাংশ জিডিপির সক্ষমতা ছিল নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত। সেটাকে ৮ শতাংশে পৌঁছানো হয়েছে গত দশকে। এখন কোভিডের কারণে কিছুটা মন্থর হয়েছে বিশ্বব্যাপী। আমাদেরও কিছু প্রভাব পড়েছে। তবে বিশ্ব যেভাবে মন্থর হয়েছে, আমাদের মন্থরের গতি অনেক কম। আমরা এটাকে বেশ ভালোভাবেই মোকাবিলা করেছি। যদিও আরেকটু সময় লাগবে।
আজকের পত্রিকা: উন্নয়নে আর কোন কোন খাতকে আপনি এগিয়ে রাখবেন?
ড. শামসুল আলম: শিক্ষায় এখন শতভাগ এনরোলমেন্ট। গড় আয়ু ৪৩-৪৪ বছর থেকে এখন ৭৩ বৎসরে। আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে এগিয়েছি। মাথাপিছু আয়ে ভারত–পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছি। সামাজিক অনেক সূচকেই ভারত-পাকিস্তান এখন আমাদের পেছনে। স্বাধীনতাকালে পশ্চিম পাকিস্তানিরা আমাদের চেয়ে ৭৫ শতাংশ বেশি ধনী ছিল। আর ২০২০-২১ এসে আমরা ৪৫ শতাংশ বেশি ধনী পাকিস্তানের চেয়ে। তো, এই সব তথ্য-উপাত্তই বলে দেয় যে আমাদের কত বড় উল্লম্ফন হয়েছে। ব্লুমবার্গসহ বিশ্ব মিডিয়া, পত্রপত্রিকা, গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এসবের স্বীকৃতি দিয়েছে। যদিও আমাদের স্থানীয় গণমাধ্যম আমাদের সাফল্য তুলে ধরার ব্যাপারে একটু লাজুক। এই যে উন্নয়ন চমক, এটার ব্যাপারে বিদেশিদের কাছে আমাদের সাফল্যের গল্প শুনতে হয়।
যেকটি দেশ এসডিজিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটা। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও আমাদের গ্রিন চিহ্ন আছে। আমরা পরিকল্পিত উন্নয়ন ও পরিকল্পিত ভোগ ব্যয়ে সফল হয়েছি। কয়েক মিলিয়ন বৈদেশিক রিজার্ভকে আমরা নিয়ে গেছি ৪৬ বিলিয়ন ডলারে। এভাবে সর্বক্ষেত্রেই পরিবর্তন হচ্ছে।
আজকের পত্রিকা: উন্নয়নকে টেকসই করতে কী কী চ্যালেঞ্জ দেখছেন?
ড. শামসুল আলম: চ্যালেঞ্জ হলো, আমরা আরও দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের প্রবৃদ্ধির হার সাড়ে ৮ শতাংশে নিতে চাই ২০২৫ সালের মধ্যে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সক্ষম করা দরকার। দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তুলতে হবে। ব্যাপক হারে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সৃষ্টি করতে হবে। রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ব্যবসা বাড়ানোর উপায়-কৌশল, বাজেটে এর প্রতিফলন ঘটানোসহ বেশ কিছু সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হবে। কারণ দেশজ পুঁজিতে হবে না। ঋণের পরিমাণ কমে আসবে ক্রমান্বয়ে। যেহেতু আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে গেছি, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশের দিকে যাচ্ছি, তারা আর আগের মতো ঋণ বা অনুদান দেবে না। সেটা মোকাবিলা করতে দেশজ রাজস্ব বৃদ্ধি এবং প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
শূন্য থেকে শুরু করা বাংলাদেশ কতটা এগোল? আর কত দূর যাবে? কী কী চ্যালেঞ্জ সামনে? এসব বিষয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সদস্য ও সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফারুক মেহেদী।
আজকের পত্রিকা: আপনার দেখা বাংলাদেশের উন্নয়নচিত্রটা কেমন?
ড. শামসুল আলম: বাংলাদেশ সত্যি এখন উন্নয়নের বিস্ময়। দেশের শুরুটা প্রায় শূন্য হাতে। আমাদের রপ্তানি আর বৈদেশিক রিজার্ভ বলতে কিছু ছিল না। ছিল খাদ্যঘাটতি। খাদ্য উৎপাদন ১ কোটি টন থেকে এখন তা ৪ কোটি টনে উন্নীত হয়েছে ৫০ বছরে। ভারতের খাদ্য উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছিল ৪০ বছরে। আমাদের তা হয়েছিল ২৫ বছরে। মানে আমাদের প্রবৃদ্ধির হারটা ভারতের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। আমাদের প্রথম বাজেট হলো ৭৮৬ কোটি টাকার। সেই বাজেট ৭৬৮ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৬ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা। টাকার অঙ্কে এটি কত বড় হলো, তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে। এটি একটি অবিশ্বাস্য অগ্রগতি। এই দেশকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখে বাস্কেট কেইস বলেছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার। সেই দেশ এত দ্রুত রূপান্তর হলো। এর ভিত্তি আসলে বঙ্গবন্ধুই স্থাপন করে গিয়েছিলেন। কৃষি খাতে তিনি ব্যাপক সংস্কার করেছিলেন। এ খাতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানই তাঁর হাতে গড়া।
আজকের পত্রিকা: জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারের দিক থেকে আপনার মূল্যায়ন কী?
ড. শামসুল আলম: নানা চড়াই-উতরাই পার হয়ে, সামরিক শাসনের–অপশাসনের কাল পেরিয়ে গত এক যুগে আমাদের জিডিপি বেড়েছে সাড়ে ৩ গুণেরও বেশি। ২০০৮-০৯ থেকে এ বৃদ্ধির হার ছিল সবচেয়ে বেশি। একসময় এ বৃদ্ধিতে প্রায় ২৫ বছর লেগেছিল। আর সেটা আমরা ১২ বছরে অর্জন করতে পেরেছি। বাংলাদেশের সাড়ে ৩ শতাংশ জিডিপির সক্ষমতা ছিল নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত। সেটাকে ৮ শতাংশে পৌঁছানো হয়েছে গত দশকে। এখন কোভিডের কারণে কিছুটা মন্থর হয়েছে বিশ্বব্যাপী। আমাদেরও কিছু প্রভাব পড়েছে। তবে বিশ্ব যেভাবে মন্থর হয়েছে, আমাদের মন্থরের গতি অনেক কম। আমরা এটাকে বেশ ভালোভাবেই মোকাবিলা করেছি। যদিও আরেকটু সময় লাগবে।
আজকের পত্রিকা: উন্নয়নে আর কোন কোন খাতকে আপনি এগিয়ে রাখবেন?
ড. শামসুল আলম: শিক্ষায় এখন শতভাগ এনরোলমেন্ট। গড় আয়ু ৪৩-৪৪ বছর থেকে এখন ৭৩ বৎসরে। আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে এগিয়েছি। মাথাপিছু আয়ে ভারত–পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছি। সামাজিক অনেক সূচকেই ভারত-পাকিস্তান এখন আমাদের পেছনে। স্বাধীনতাকালে পশ্চিম পাকিস্তানিরা আমাদের চেয়ে ৭৫ শতাংশ বেশি ধনী ছিল। আর ২০২০-২১ এসে আমরা ৪৫ শতাংশ বেশি ধনী পাকিস্তানের চেয়ে। তো, এই সব তথ্য-উপাত্তই বলে দেয় যে আমাদের কত বড় উল্লম্ফন হয়েছে। ব্লুমবার্গসহ বিশ্ব মিডিয়া, পত্রপত্রিকা, গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এসবের স্বীকৃতি দিয়েছে। যদিও আমাদের স্থানীয় গণমাধ্যম আমাদের সাফল্য তুলে ধরার ব্যাপারে একটু লাজুক। এই যে উন্নয়ন চমক, এটার ব্যাপারে বিদেশিদের কাছে আমাদের সাফল্যের গল্প শুনতে হয়।
যেকটি দেশ এসডিজিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটা। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও আমাদের গ্রিন চিহ্ন আছে। আমরা পরিকল্পিত উন্নয়ন ও পরিকল্পিত ভোগ ব্যয়ে সফল হয়েছি। কয়েক মিলিয়ন বৈদেশিক রিজার্ভকে আমরা নিয়ে গেছি ৪৬ বিলিয়ন ডলারে। এভাবে সর্বক্ষেত্রেই পরিবর্তন হচ্ছে।
আজকের পত্রিকা: উন্নয়নকে টেকসই করতে কী কী চ্যালেঞ্জ দেখছেন?
ড. শামসুল আলম: চ্যালেঞ্জ হলো, আমরা আরও দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের প্রবৃদ্ধির হার সাড়ে ৮ শতাংশে নিতে চাই ২০২৫ সালের মধ্যে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সক্ষম করা দরকার। দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তুলতে হবে। ব্যাপক হারে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সৃষ্টি করতে হবে। রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ব্যবসা বাড়ানোর উপায়-কৌশল, বাজেটে এর প্রতিফলন ঘটানোসহ বেশ কিছু সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হবে। কারণ দেশজ পুঁজিতে হবে না। ঋণের পরিমাণ কমে আসবে ক্রমান্বয়ে। যেহেতু আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হয়ে গেছি, উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশের দিকে যাচ্ছি, তারা আর আগের মতো ঋণ বা অনুদান দেবে না। সেটা মোকাবিলা করতে দেশজ রাজস্ব বৃদ্ধি এবং প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ। বর্তমানে তিনি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো এবং বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়ন বিষয়ে বেসরকারি উদ্যোগে গঠিত নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক।
৮ দিন আগে২০২৪ সালে সংঘটিত ‘মনসুন রেভল্যুশন’-এর পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে নেতৃত্বশূন্যতা ও প্রশাসনিক অচলাবস্থা। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ আহমেদ মুশফিক মোবারক তুলে ধরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারণ, আইনশৃঙ্খলা সংকট, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও আন্তর্জাতিক কর্মসংস্থানের উদ্যোগসহ নানা...
২২ দিন আগেবদরুদ্দীন উমর লেখক, গবেষক ও বামপন্থী রাজনীতিক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিপিই ডিগ্রি পান। দেশে ফিরে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে
২৩ দিন আগেএক বছরেরও কম সময়ে অনলাইন ফুড ডেলিভারি সার্ভিসে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে ফুডিবিডি ডট কম। প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজারের বেশি অর্ডার ডেলিভারি করছে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের সঙ্গে কাজ করছে সাত হাজারের বেশি রেস্তোরাঁ। ফুডির উদ্দেশ্য, লক্ষ্য, পরিকল্পনা, অনলাইন ফুড ডেলিভারি সার্ভিস খাতের বর্তমান অবস্থাসহ নানা বিষয়ে আজক
০৬ মে ২০২৫