Ajker Patrika

অচলাবস্থার ঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫: ৫৪
Thumbnail image

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের অনেকগুলো শাখাই অর্থাভাবে স্থবির হয়ে যেতে পারে। কোনো ধরনের আর্থিক প্রণোদনা ছাড়াই চাকরিচ্যুত হতে পারেন কয়েক লাখ কর্মচারী। কেবল যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকলে সরকারি কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে না, তাঁদেরই রাখা হবে, তাও আবার বিনা বেতনে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন কংগ্রেস আগামী ১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অর্থবছরের জন্য বাজেট পাসে ব্যর্থ হলে এই সংকট শুরু হতে পারে। 

নির্ধারিত সময়ের আগে আসন্ন অর্থবছরের জন্য বাজেট বা অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে না পারলে দেশটির ফেডারেল সরকার অচলাবস্থার মুখে পড়বে। দেশটির সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিচার বিভাগ, পরিবহন বিভাগসহ বিভিন্ন খাত সরাসরি প্রভাবিত হবে, যার ফলে সরকারি সেবা অনেকটাই কমে যেতে পারে। 

এরই মধ্যে মার্কিন কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টি ও ডেমোক্রেটিক পার্টি বিষয়টি নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে। বিভাজন রয়েছে খোদ রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেও। তার পরও হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের রুলস কমিটি প্রতিরক্ষা, কৃষি, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র বিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করতে প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। তবে আগামী অর্থবছর শুরু হওয়ার আগে মাত্র সপ্তাহখানেক সময় বাকি থাকায় এবং বিরোধী ও ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে ঐকমত্য না থাকায় বিল পাস হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

হাউস অব রিপ্রজেনটেটিভসে রিপাবলিকান পার্টি ২২১ সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও ২১২টি আসন নিয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটরাও। আবারও কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে এখানে ব্যবধান মাত্র দুটি আসনের। ডেমোক্রেটিক পার্টি ৫১টি আসন নিয়ে এগিয়ে সিনেটে প্রাধান্য ধরে রেখেছে। বিপরীতে ৪৯টি আসন নিয়ে খুব কাছেই অবস্থান করছে রিপাবলিকান পার্টি। 

ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের মধ্যে ব্যবধান কম হওয়ায় এবং হাউসের উভয় কক্ষেই কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ না হওয়ার কারণে কোনো পক্ষই আসলে সেভাবে কোনো বিল পাস বা বাতিল করে দিতে পারছে না। 

এদিকে হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের রুলস কমিটি প্রতিরক্ষা, কৃষি, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র বিভাগের জন্য বাজেট বরাদ্দের বিষয়টি অনুমোদ দিলেও এখনো নিশ্চিত নয় যে, বিল উত্থাপনকারী রিপাবলিকান পার্টির সদস্যরা চূড়ান্তভাবে বিলটিতে সম্মতি দেবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ এই প্রস্তাব উত্থাপন করার আগে রিপাবলিকান পার্টির ফ্লোরে বিষয়টি চূড়ান্তভাবে সম্মতি পেতে হবে। 

তবে পরিস্থিতি যেমনটাই হোক না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থাগুলোর কার্যক্রম ঠিকভাবে পরিচালনা করতে হলে এই অবস্থায় স্বল্পমেয়াদি ব্যয় বিল আনা প্রয়োজন। কিন্তু খোদ রিপাবলিকান পার্টির ভেতরেই একদল আইনপ্রণেতা এই স্বল্পমেয়াদি বিলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁদের মতে, এর মধ্য দিয়ে সরকারকে অনেক খরচ করার সুবিধা দেওয়া হবে। 

সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে আহ্বান জানিয়েছেন, ডেমোক্র্যাটদের সুবিধা না দিতে এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানে ‘শাটডাউন’ বা অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে দেওয়ার পক্ষে উকালতি করেছেন। 

এদিকে সংকট এড়ানোর ক্ষেত্রে আশা দেখছেন সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা চাক শুমার। তিনি বলছেন, ‘সরকারের কার্যক্রম বন্ধ করা কোনোভাবেই অনিবার্য নয়।’ এরই মধ্যে তিনি সিনেটে স্বল্পমেয়াদি সরকারি ব্যয় বিল উত্থাপনের জন্য একটি প্রসিডিউরাল ভোট আহ্বান করেছেন। সিনেটে এই বিল পাস হলে হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসেও বিলটি উত্থাপন করতে হতে পারে স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থিকে। সে ক্ষেত্রে তিনি তাঁর দলের বিরাগভাজন হতে পারেন। এমনকি তাঁর দলীয় সদস্যদের অনাস্থার কারণে তাঁর স্পিকার পদও চলে যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত