Ajker Patrika

দায়িত্ব গ্রহণের আগেই যুদ্ধবিরতি দেখতে চান ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। ছবি: এএফপি
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি সম্পন্ন দেখতে চান। সাউথ ক্যারোলাইনা থেকে নির্বাচিত রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন।

বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মেয়াদ আছে দুই মাসেরও কম। এই অবস্থায় তিনি গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি ও হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করতে একটি চুক্তি করে যেতে চান। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় এটি ট্রাম্পের হাতেও চলে যেতে পারে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসন গাজার বিষয়ে ভিন্ন নীতি গ্রহণ করতে পারে, বিশেষ করে যুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতি কেমন হবে তা নিয়ে। তবে ট্রাম্পের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখা সিনেটর গ্রাহাম জানিয়েছেন ট্রাম্প চান জিম্মি মুক্তি এবং যুদ্ধের অবসান দ্রুত হোক। সম্ভব হলে দায়িত্ব গ্রহণের আগেই। লিন্ডসে গ্রাহাম ট্রাম্পকে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

হামাসের হাতে গাজায় এখনো ১০১ জন জিম্মি আছেন, যাদের মধ্যে সাতজন মার্কিন নাগরিক। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার ধারণা, এদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক এখনো জীবিত। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ৪৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গ্রাহাম বলেছেন, ‘জিম্মি মুক্তির জন্য এবং যুদ্ধবিরতির চুক্তি সম্পন্ন করতে ট্রাম্প এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি চান এটি এখনই হোক।’

গ্রাহাম আরও বলেন, ‘আমি চাই ইসরায়েল এবং এই অঞ্চলের মানুষ জানুক, ট্রাম্প জিম্মি ইস্যু নিয়ে সম্পূর্ণ মনোযোগী। তিনি চান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হোক এবং যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটুক।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমি আশা করি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতা হস্তান্তরকালীন সময়ে একসঙ্গে কাজ করবে, যেন জিম্মি মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়।’

গত নভেম্বরে মধ্যপ্রাচ্যে দ্বিতীয়বারের মতো সফর করেন লিন্ডসে গ্রাহাম। সফরে তিনি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। গ্রাহাম মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসন গাজা ইস্যুতে সমঝোতা না করলে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে তাঁর মূল পররাষ্ট্রনীতি, যেমন ইসরায়েল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ এবং ইরানের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক জোট গঠন—এগিয়ে নিতে পারবেন না।

ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচের মতো কট্টরপন্থী নেতারা গাজায় অনির্দিষ্টকাল ইসরায়েলি দখলদারত্ব বজায় রাখতে চান। তবে লিন্ডসে গ্রাহাম গাজায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ইসরায়েলি দখলদারির প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছেন। গত সপ্তাহের শুরুতে স্মতরিচ বলেছিলেন, ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে ইসরায়েলের সামনে একটি সুযোগ থাকবে স্বেচ্ছা অভিবাসনকে উৎসাহিত করার। যা গাজার ফিলিস্তিনি জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেবে।

এ বিষয়ে গ্রাহাম বলেন, ‘আমি মনে করি, স্মতরিচের ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলা উচিত এবং তিনি কী চান তা শোনা উচিত। যদি তাঁর সঙ্গে কথা না বলে থাকেন, তাহলে তাঁর হয়ে কথা বলবেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সৌদি-ইসরায়েল শান্তি চুক্তিতে অবশ্যই ফিলিস্তিনি একটি উপাদান থাকতে হবে। গাজার পুনর্দখল নয় বরং ফিলিস্তিনি সমাজের সংস্কারই হামাসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভালো নিরাপত্তা বিমা। আরব দেশগুলোই কেবল এটি করতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত