Ajker Patrika

ইরানে ফের বোমা ফেলতে পারেন ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল শুক্রবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেছেন, ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা তিনি বাতিল করেছেন এবং যদি তেহরান উদ্বেগজনক মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা অব্যাহত রাখে, তাহলে আবারও ইরানের ওপর বোমা হামলার কথা বিবেচনা করবেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিন ধরে চলা সংঘর্ষের পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রথম বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প এসব কথা বলেন। সংঘর্ষের অবসান ঘটে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বিমান হামলা চালানোর পর।

আলী খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাতারে থাকা একটি বড় ঘাঁটিতে ইরান হামলা চালিয়ে আমেরিকাকে ‘চড় মেরেছে।’ তিনি আরও বলেন, ইরান কখনো আত্মসমর্পণ করবে না।

ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি ইচ্ছা করেই খামেনিকে হত্যা করেননি। গত ১৫ জুন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েল খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল, কিন্তু ট্রাম্প সেটিতে ভেটো দেন।

ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘তাঁর (খামেনি) দেশ ধ্বংস হয়েছে, তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্র গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি জানতাম, সে কোথায় আশ্রয় নিয়েছিল। তবুও আমি ইসরায়েল কিংবা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মার্কিন বাহিনীকে তার জীবন শেষ করতে দিইনি। আমি তাঁকে একটি অত্যন্ত অপমানজনক ও কুৎসিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছি।’

এদিকে, ইরান বলছে, সম্ভাব্য পারমাণবিক চুক্তি নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অসম্মানজনক আচরণ’ বন্ধ করার ওপর। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, ‘ট্রাম্প যদি সত্যিই কোনো চুক্তি চান, তাহলে তাঁকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে লক্ষ্য করে অসম্মানজনক ভাষা ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং তাঁর কোটি কোটি অনুসারীর অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে।’

ট্রাম্প জানান, গত কয়েক দিন তিনি ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছিলেন। কিন্তু খামেনির বক্তব্যের তিনি সেই উদ্যোগ বাদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ক্ষোভ, ঘৃণা আর তীব্র অবজ্ঞার বক্তব্য শুনেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ সব ধরনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’

হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, পরিস্থিতি খারাপ হলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ফের বোমা হামলা চালানোর বিষয়টি তিনি উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই, যদি প্রয়োজন হয়, তা হলে হামলা হবে।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) বা অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য সংস্থাকে পরিদর্শনের সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে ইরান এসব স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কম দেখানোর অভিযোগ নাকচ করেছে ট্রাম্প।

আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, ইসরায়েল ১৩ জুন থেকে বোমা হামলা শুরু করার পর ওইসব স্থাপনা পরিদর্শনের সুযোগ আর নেই। এটি ফের চালু করা তাঁর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। কিন্তু ইরানের সংসদ বুধবার আইএইএ-এর পরিদর্শন স্থগিতের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আরাঘচি শুক্রবার জানান, ইরান ওইসব স্থাপনা পরিদর্শনের আইএইএ প্রধানের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।

ট্রাম্প দাবি করেন, ইরান এখনো আলোচনায় বসতে চায়। যদিও হোয়াইট হাউস বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে কোনো বৈঠকের সময়সূচি চূড়ান্ত হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত