Ajker Patrika

ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন, মন্ত্রিসভার সম্মতির অপেক্ষা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২১: ৪৯
Thumbnail image
নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের এই ছবিটি প্রকাশ করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তি সংক্রান্ত চুক্তি অনুমোদনের সুপারিশ করেছে। আজ শুক্রবার পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর চুক্তিটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আগামী রোববার থেকে চুক্তি কার্যকর হওয়ার কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ওই দিন প্রথম ধাপে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে গাজার ধ্বংসযজ্ঞ এবং প্রাণহানি বন্ধ হবে। প্রায় ১৫ মাস আগে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২৩ লাখ।

যুদ্ধবিরতি সফল হলে এটি মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাও কমাতে পারে। বর্তমানে ইরান এবং তার মিত্র লেবাননের হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী, ইরাকের সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতা গাজার পশ্চিম তীরেও ছড়িয়ে পড়েছে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হলে ছয় সপ্তাহে তিন ধাপে বন্দী বিনিময় হবে। প্রথম ধাপে হামাস ৩৩ জন বন্দীকে মুক্তি দেবে। তাঁদের মধ্যে নারী, শিশু এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ রয়েছেন।

ইসরায়েলও চুক্তির আওতায় সমস্ত ফিলিস্তিনি নারী এবং ১৯ বছরের কম বয়সী শিশু বন্দীদের মুক্তি দেবে। প্রথম ধাপে মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৯৯০ থেকে ১ হাজার ৬৫০–এর মধ্যে হতে পারে।

আজ হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তাবলির ক্ষেত্রে যে বাধাগুলো তৈরি হয়েছিল তা সমাধান হয়েছে। তবে ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিষদ এবং সরকার কর্তৃক অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হবে না।

এদিকে নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভার কট্টরপন্থীরা এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিরোধিতা করেছেন। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতমার বেন-গাভির হুমকি দিয়েছেন, চুক্তি অনুমোদন দেওয়া হলে তিনি পদত্যাগ করবেন। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষে গাজায় হামাসকে পরাজিত করা না হলে তিনিও পদত্যাগ করবেন।

তবে যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেও গাজায় বোমা হামলা অব্যাহত রয়েছে। আজ খান ইউনিসের একটি শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি হামলায় দুজন নিহত এবং সাতজন আহত হন। এর আগে গত বুধবার চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার খবর প্রকাশের পর থেকে ৫৮ জন নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ১০১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

সর্বশেষ হামলা নিয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

কাতার, মিসর এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া এই চুক্তি ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার এবং গাজার জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির পথ খুলে দেবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, চুক্তি কার্যকর হলে গাজায় প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক মানবিক সহায়তা পাঠানো সম্ভব হবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে সশস্ত্র ব্যক্তিরা ইসরায়েলের সীমান্ত এলাকায় হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন সেনা ও বেসামরিক মানুষ হত্যা এবং ২৫০ জনকে বন্দী করে। এর পর থেকেই ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। জিম্মিদের অনেককেই মুক্তি দিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গাজায় হামাসের কাছে এখনো ৯৮ জন জিম্মি জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত