Ajker Patrika

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় পরবর্তী চ্যালেঞ্জ কলেরা মোকাবিলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৩, ১০: ০০
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় পরবর্তী চ্যালেঞ্জ কলেরা মোকাবিলা

উত্তর গাজা সিটির বাসিন্দা ওয়াসিম মোশতাহারের চার সন্তান। ইসরায়েলের হামলার কারণে দুই সপ্তাহ ধরে তাদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ। গণিত বা ভূগোল পাঠের বদলে তাদের এখন শিখতে হচ্ছে কীভাবে পানি সাশ্রয় করতে হয়। শুধু ওয়াসিমের সন্তানদের নয়, গাজার হাজারো শিশু কিংবা পরিবারের চিত্র এমন।

খান ইউনিস থেকে ওয়াসিম আল জাজিরাকে বলেন, ‘প্রতিদিন প্রত্যেকের জন্য এক বোতল পানি ভরি এবং এই পানি দিয়ে সারা দিনের কাজকর্ম সারতে পরামর্শ দিই। প্রথম দিকে তাদের খুব কষ্ট হতো। তবে এখন বেশ মানিয়ে নিচ্ছেন।’

১৩ অক্টোবর গাজার উত্তরাংশ থেকে ১১ লাখ ফিলিস্তিনিকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েল। সেদিনই ওয়াসিম স্ত্রী এবং ৮-১৫ বছরের সন্তানদের খান ইউনিসে অবস্থিত তাঁর চাচির বাসায় পাঠিয়ে দেন। তবে ইসরায়েলের অব্যাহত বোমা হামলার মুখেও সেখানকার বাসিন্দারা তাদের বাসার দরজা বন্ধু-স্বজনদের জন্য খুলে দিয়েছে। এটা কিছুটা স্বস্তিকর।

অক্সফামের পানি ও স্যানিটেশন কর্মকর্তা হিসেবে ওয়াসিম সামনে গাজায় জনস্বাস্থ্যের বড় বিপর্যয় দেখছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষ মসজিদে, দোকানে, রাস্তায় কিংবা গাড়িতে ঘুমাচ্ছে। তাঁর পরিবারের সদস্যরা ২০০ বর্গমিটারের একটা অ্যাপার্টমেন্টে আরও ১০০ জনের সঙ্গে বাস করছে। সেখানে পর্যাপ্ত পানি নেই, খাবার নেই, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনের সুযোগ নেই।’

ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যবিধি পণ্যগুলো সচল থাকা কয়েকটি সুপারমার্কেট থেকে উধাও হয়ে গেছে এবং ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের পরিচালিত সৌরবিদ্যুৎভিত্তিক লবণ বিমুক্তকরণ স্থাপনাগুলো থেকে বিক্রি করা পানির দাম ৭ অক্টোবর থেকে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ওই দিন হামাসের হামলার আগে এ পানির দাম ছিল ৩০ শেকেল (৭ দশমিক ৪০ ডলার), কিন্তু এখন দাম ৬০ শেকেলে (১৫ ডলার) উন্নীত হয়েছে।

ওয়াসিম হিসাব করে দেখেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম পানিটুকু নিঃশেষ হয়ে যাবে। এরপর কী ঘটবে, তা তিনি জানেন না। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমরা বাজারে যাব এবং যেটুকু পানি পাওয়া যায়, তা-ই কিনব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অন্ধকার চোখে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছি।’

হামাসের হামলার পর ফিলিস্তিন ছিটমহলে সম্পূর্ণ অবরোধ ঘোষণা করার পর ইসরায়েল গাজায় পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

এর প্রেক্ষাপটে অক্সফাম ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ায় কলেরাসহ পানিবাহিত অন্য মারাত্মক সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ছে সেখানে। দ্রুত জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া না হলে গাজায় জনস্বাস্থ্যে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত