Ajker Patrika

পুরো গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবে ইসরায়েল: নেতানিয়াহু

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৯ মে ২০২৫, ১৮: ১৬
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: এএফপি

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, গাজা উপত্যকার পুরো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেবে ইসরায়েল। গত বৃহস্পতিবার থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে ‘অপারেশন গিদিয়নস চ্যারিয়ট’ নামে ভয়ংকর স্থল অভিযান শুরু করেছে। ঠিক এমন সময়ে নেতানিয়াহু এ ঘোষণা দিলেন। এর আগে গাজায় সীমিত পরিমাণে খাদ্যসহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেন নেতানিয়াহু। তবে তিনি বলেন, ‘কূটনৈতিক কারণে’ দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১৪৮ জন নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা হামাসের বিরুদ্ধে ‘ব্যাপক স্থল অভিযান’ শুরু করেছে। আইডিএফ দক্ষিণ গাজার প্রধান শহর খান ইউনিস ও বানি সুওহেইলা এবং এর আশপাশের বাসিন্দাদের ‘অবিলম্বে সরে যেতে’ বলেছে। আইডিএফের আরবিভাষী মুখপাত্র আভিচে আদ্রি টেলিগ্রামে বলেন, ‘এই এলাকায় সন্ত্রাসীদের আস্তানা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হবে। আপনারা অবিলম্বে পশ্চিম দিকের মাওয়াসি এলাকায় সরে যান। এখন থেকে খান ইউনিস ভয়াবহ যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হবে।’

এদিকে ইসরায়েল দুই মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় পূর্ণ অবরোধ জারি রেখেছে, তা তুলে নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহল, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র থেকেও ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তবে নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘গাজার জনগণকে দুর্ভিক্ষে পড়তে দেওয়া যাবে না—ব্যবহারিক ও কূটনৈতিক—দুই কারণেই। আমাদের মিত্ররাও গণ-অনাহারের ছবি সহ্য করবে না।’

চলতি মাসে জাতিসংঘ ও ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্ল্যাসিফিকেশনের (আইপিসি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় দুর্ভিক্ষের ‘গুরুতর ঝুঁকি’ রয়েছে। সেখানে ২২ শতাংশ মানুষ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে।

ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের কাছ থেকে কিছু দাবি আদায়ের জন্য গত ২ মার্চ থেকে তারা অবরোধ কঠোর করে। তবে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা বলছে, এর ফলে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও ওষুধের চরম সংকট চলছে গাজায়। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও স্বীকার করেছেন, ‘গাজায় অনেক মানুষ না খেয়ে আছে। আমরা এই সমস্যার একটা সমাধান করব।’

তবে খাদ্যসহায়তা প্রবেশের অনুমতি নিয়ে ইসরায়েলের সরকারের মধ্যেই চরম দ্বিমত দেখা গেছে। ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গাভির ত্রাণ সরবরাহ পুনরায় শুরু করার বিরোধিতা করে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের জিম্মিরা কোনো মানবিক সহায়তা পাচ্ছে না। তাহলে আমরা এই সহায়তা দেব কেন?’

ইতামার আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী গুরুতর ভুল করছেন, তাঁর এই সিদ্ধান্তে কোনো সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। হামাসকে কেবল ধ্বংস করা উচিত, কোনোভাবেই তাকে বাঁচিয়ে রাখার সুযোগ দেওয়া ঠিক হবে না।

নেতানিয়াহু এক ভিডিওবার্তায় বলেছেন, ‘লড়াই চলছে এবং আমাদের অগ্রগতি হচ্ছে। গাজার পুরো ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ আমরা নেব। আমরা হাল ছাড়ব না। তবে সফল হতে হলে এমনভাবে এগোতে হবে, যাতে কেউ আমাদের থামাতে না পারে।’

এদিকে নেতানিয়াহুর কার্যালয় দোহায় চলমান আলোচনার কথা উল্লেখ করে বলেছে, আলোচকেরা উইটকফ ফ্রেমওয়ার্ক অনুসারে যুদ্ধ বন্ধের অংশ হিসেবে চুক্তির প্রতিটি সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার কাজ করছেন। স্টিভ উইটকফ হলেন মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত, যিনি শুরু থেকে এই আলোচনায় জড়িত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত মার্চে গাজায় ইসরায়েলের অভিযান আবার শুরু হলে দুই মাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যায়। এরপর থেকে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একাধিক আলোচনা হলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের অফিসে আগুন নেভাতে গিয়ে কোরআন শরিফ দেখেননি, দাবি ফায়ার সার্ভিসের

দিনাজপুরে নিহত মাইক্রোবাস-আরোহীদের সবাই সরকারি কর্মকর্তা

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স: রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আসন নেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর

ফরিদপুরে গাড়ির চাকায় ছিন্নভিন্ন অজ্ঞাত ব্যক্তি, অক্ষত শুধু পায়ের জুতা

নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর: উপদেষ্টা ফারুকী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত