Ajker Patrika

গাজার ‘পুরোপুরি বিধ্বস্ত’ অর্থনীতি যুদ্ধ-পূর্ব অবস্থায় ফিরতে লাগবে ৩৫০ বছর

আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯: ৫৫
গাজার ‘পুরোপুরি বিধ্বস্ত’ অর্থনীতি যুদ্ধ-পূর্ব অবস্থায় ফিরতে লাগবে ৩৫০ বছর

ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড অবকাঠামোগত ও অর্থনৈতিক উভয় দিক থেকেই ‘পুরোপুরি বিধ্বস্ত’ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় অঞ্চলটির অর্থনীতি যুদ্ধ-পূর্ব অবস্থায় ফিরতে সময় লাগবে ৩৫০ বছর। এমনটাই উঠে এসেছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নসংক্রান্ত শাখা আঙ্কটাডের এক প্রতিবেদন থেকে। 

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন শাখা আঙ্কটাডের তৈরি করা প্রতিবেদনে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের অর্থনৈতিক খরচ সম্পর্কে বলা হয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে ইসরায়েলে ১ হাজার ১৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর থেকে চলমান আগ্রাসন গাজার অর্থনীতি ও অবকাঠামোকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। 

গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উপস্থাপিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের আগে থেকেই দুর্বল অবস্থায় থাকা গাজার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোপুরি থমকে গেছে এই আগ্রাসনের কারণে। কেবল ন্যূনতম মানবিক স্বাস্থ্য ও খাদ্য পরিষেবাগুলো চলছে। তা-ও এর মধ্যে সুপেয় পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুতের সংকট তীব্রতর এবং এসব পরিষেবা বাইরে থেকেও খুব একটা দেওয়া যাচ্ছে না। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের ফলে অভূতপূর্ব মানবিক, পরিবেশগত ও সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে এবং গাজাকে পুনঃ উন্নয়নের পথ থেকে সম্পূর্ণ ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব কয়েক বছর ধরে বজায় থাকবে এবং গাজাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কয়েক দশক সময় লাগতে পারে।’ এতে আরও বলা হয়েছে, ‘একবার যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হলে ২০০৭-২০২২ সময়কালে গাজায় যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা ছিল, সেই অবস্থায় ফিরতে প্রায় ৩৫০ বছর সময় লাগবে।’ 

আঙ্কটাড বলেছে, চলতি বছরের প্রথম চতুর্থাংশে (জানুয়ারি–মার্চ মাস) গাজার ৯৬ শতাংশ নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে গেছে, কৃষি উৎপাদন নেমে গেছে ৯৩ শতাংশ, সামগ্রিক উৎপাদন কমেছে ৯২ শতাংশ, সেবা খাতের উৎপাদন কমেছে ৭৬ শতাংশ। এ ছাড়া বেকারত্বের হার পৌঁছেছে ৮১ দশমিক ৭ শতাংশে। ইসরায়েলের সামরিক অভিযান চলতে থাকায় গাজার এই পরিস্থিতি এখনো বিদ্যমান আছে কিংবা আরও খারাপ হয়েছে বলে মনে করে জাতিসংঘ। 

এই প্রতিবেদনে দেওয়া হিসাব বলছে, উল্লিখিত সীমাবদ্ধতাগুলো না থাকলে ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ গাজার মোট দেশজ উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ৭৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি হতো। এর অর্থ হলো, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে ক্ষতি হয়েছে ৩৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালে গাজার মোট জিডিপির ১৭ গুণ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভাঙা হচ্ছে হোয়াইট হাউসের একাংশ, ট্রাম্পের শখের বলরুম নির্মাণ শুরু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৫১
ট্রাম্পের শখের বলরুম নির্মাণে হোয়াইট হাউসের একাংশ ভাঙা হচ্ছে। ছবি: এএফপি
ট্রাম্পের শখের বলরুম নির্মাণে হোয়াইট হাউসের একাংশ ভাঙা হচ্ছে। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনায় নতুন বলরুম নির্মাণের জন্য হোয়াইট হাউসের পূর্ব দিকের অংশ (ইস্ট উইং) ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগ ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক এক মার্কিন আইনপ্রণেতা তো এটিকে ‘স্রেফ ধ্বংসযজ্ঞ’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসের ইস্ট উইংয়ের একটি অংশ ভাঙার কাজ শুরু হয়। পত্রিকাটি ভাঙচুরের কিছু ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে ভবনের বাইরের অংশে নির্মাণকাজের চিহ্ন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। নিউইয়র্ক পোস্টেও অনুরূপ কিছু ছবি প্রকাশিত হয়েছে।

সোমবার নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেন, ‘হোয়াইট হাউসে নতুন বলরুম নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আমি গর্বিত যে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বহু প্রতীক্ষিত এ প্রকল্পটি শুরু করতে পারলাম—করদাতাদের একটা পয়সা অপচয় ছাড়াই! এটি সম্পূর্ণভাবে অর্থায়ন করছে কিছু দেশপ্রেমিক, বড় আমেরিকান কোম্পানি এবং আমিও।’

সেদিনই ওয়াশিংটন ডিসিতে এনসিএএ চ্যাম্পিয়ন লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির বেসবল দলকে সংবর্ধনা দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সুন্দর বলরুম তৈরি করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানতাম না যে এখন আমি এখানে দাঁড়িয়ে থাকব। কারণ, ঠিক পাশেই নির্মাণকাজ চলছে—আপনারা হয়তো মাঝেমধ্যে শব্দ শুনতে পাবেন।’

হোয়াইট হাউসে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলারের বিশাল বলরুম তৈরির পরিকল্পনা গত জুলাইয়ে সামনে। এটি হবে শতাব্দীর মধ্যে হোয়াইট হাউসের অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছিলেন, ৯০ হাজার বর্গফুট আয়তনের এই বলরুমে একসঙ্গে ৬৫০ জন অতিথি বসতে পারবেন। কর্মকর্তারা বলেন, প্রকল্পটির অর্থায়ন করবেন ট্রাম্প ও কিছু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দাতা।

তখন ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘গত ১৫০ বছর ধরে হোয়াইট হাউসে বলরুম চাওয়া হয়েছে। কোনো প্রেসিডেন্টই বলরুম তৈরিতে ভালো ছিলেন না। আমি নির্মাণে পারদর্শী। সুন্দর, সময়মতো ও মানসম্মতভাবে কাজটি শেষ করব।’

ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ট্রাম্প দাবি করেছেন, নতুন কাঠামোটি বর্তমান ভবনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হবে না। তিনি বলেন, ‘এটি কাছেই থাকবে, কিন্তু ছুঁয়ে যাবে না। বর্তমান ভবনের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই নির্মাণ করা হবে। এটি আমার প্রিয় জায়গা, সবচেয়ে ভালো লাগে হোয়াইট হাউসকেই।’ ২০২৯ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কাজটি শেষ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে নতুন বলরুমের দাতাদের জন্য এক ডিনার আয়োজন করেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি অতিথিদের জানান, নতুন বলরুমে থাকবে বুলেটপ্রুফ কাচ, ১ হাজার অতিথির ধারণক্ষমতা এবং প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজনের উপযোগী অবকাঠামো। সেই ডিনারে আমাজন, অ্যাপল, মেটা, গুগল, মাইক্রোসফট, প্যালান্টির ও লকহিড মার্টিনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।

এদিকে ট্রাম্পের এই উদ্যোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এবং রাজনৈতিক মহলে সমালোচনা চলছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান মার্ক তাকানো একটি বিল প্রস্তাব করেছেন, যাতে বলা হয়েছে—সরকারি কার্যক্রম বন্ধ থাকলে (শাটডাউন পরিস্থিতিতে) হোয়াইট হাউসে কোনো নির্মাণ বা সংস্কারকাজে ফেডারেল তহবিল ব্যবহার করা যাবে না, যদি না তা স্বাস্থ্য বা নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত হয়। সোমবার ছিল সরকার শাটডাউনে থাকার ২০তম দিন।

সাবেক রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জো ওয়ালশ এক্সে লিখেছেন, ‘এটি জনগণের বাড়ির এক ভয়াবহ বিকৃতি। আমি যদি ২০২৮ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হই, প্রথম প্রতিশ্রুতিই হবে ওই বলরুম বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া।’ তিনি আরও লেখেন, ‘আমেরিকানদের আমন্ত্রণ জানাব, যেন তারা সাপ্তাহিক ছুটিতে নিজ নিজ হাতুড়ি আর ক্রোবার নিয়ে এসে এই বিকৃত স্থাপনাটি ভেঙে ফেলেন।’

মানবাধিকার আইনজীবী কাসিম রশিদ এক্সে লিখেছেন, ‘আমেরিকায় আয় ও সম্পদের বৈষম্য এখন রেকর্ড পর্যায়ে, কিন্তু আমরা ২৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করছি একটি অহংকারমূলক প্রকল্পে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চীনের চাহিদায় ভাগ বসাল যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বিরল খনিজ চুক্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ১২
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও অ্যান্থনি আলবানিজ যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে একটি বিরল খনিজ চুক্তি করেছেন। ছবি: এএফপি
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও অ্যান্থনি আলবানিজ যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে একটি বিরল খনিজ চুক্তি করেছেন। ছবি: এএফপি

বিরল মৃত্তিকা ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ বাড়াতে নতুন এক চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। বিরল খনিজের বাজারে চীনের একক নিয়ন্ত্রণ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তাদের কৌশলের অংশ হিসেবেই এই চুক্তি করেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে—অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ জানিয়েছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ‘রেডি-টু-গো’ প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের পথ খুলবে, যা অস্ট্রেলিয়ার খনন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ সক্ষমতা আরও বাড়াবে।

চুক্তির আওতায় আগামী ছয় মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া যৌথভাবে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বলে ফ্রেমওয়ার্কে উল্লেখ করা হয়েছে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ থেকেই দেশ দুটি এই খনিজ সহযোগিতা নিয়ে কাজ করে আসছে। তবে আলবানিজ বলেছেন, এই নতুন চুক্তি সম্পর্ক ‘আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত রোববার ‘অকাস’ নামে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার যৌথ সাবমেরিন প্রকল্প নিয়েও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘এটা পুরো গতিতেই এগোচ্ছে।’ এর আগে চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন এই প্রকল্প পর্যালোচনার ঘোষণা দিয়েছিল, যাতে দেখা হয় যে—এটি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না। এতে আশঙ্কা দেখা দেয়, অস্ট্রেলিয়া হয়তো পুরোনো সাবমেরিন বহর প্রতিস্থাপনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবমেরিন পাবে না। তবে ট্রাম্প বলেছেন, ‘না, তারা সাবমেরিনগুলো পাচ্ছে।’

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বিরল ধাতু আহরণের ৭০ শতাংশ এবং এসব ধাতুর প্রক্রিয়াজাতকরণের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে চীন। এই ধাতুগুলো প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে কম্পিউটার চিপ ও গাড়িতেও ব্যবহৃত হয়। চীনের এই প্রভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো অনেকাংশে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এদিকে চীন যখন নতুন মার্কিন শুল্কের জবাবে সরবরাহ সীমিত করার পদক্ষেপ নিচ্ছে, তখন এই নির্ভরতা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই ঘোষণার পর মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার বিরল ধাতু খনন কোম্পানিগুলোর শেয়ারমূল্য বেড়ে যায়। পার্থভিত্তিক আরাফুরা রেয়ার আর্থসের শেয়ার প্রায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। অপর একটি বড় প্রতিষ্ঠান ইলুকা রিসোর্সেসের শেয়ার বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি।

আলবানিজ বলেছেন, চুক্তির লক্ষ্য তিন ধরনের প্রকল্পে বিনিয়োগ দ্রুত করা, যার মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় প্রক্রিয়াজাতকরণ স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগও থাকবে। দুটি দেশ মূল্য নির্ধারণ, অনুমোদন প্রক্রিয়া এবং খনিজ খাতে কোম্পানি ও প্রকল্প বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারি পর্যালোচনার নিয়ম নিয়েও একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।

এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র আলাদাভাবে জানিয়েছে, তারা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় বছরে ১০০ টন ক্ষমতার উন্নত গ্যালিয়াম রিফাইনারি নির্মাণে বিনিয়োগ করবে এবং এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করবে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ প্রকল্পগুলোতে।

সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের এমপি ম্যাটেরিয়ালস, কানাডার ট্রিলজি মেটালস ও লিথিয়াম আমেরিকাসের মতো কোম্পানিতে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে, যেগুলোর প্রকল্প যুক্তরাষ্ট্রেই চলছে। এই বিনিয়োগের বিনিময়ে প্রশাসন ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশীদারত্বও অর্জন করেছে।

এই বৈঠকের আগেই অস্ট্রেলিয়ার লাইনাস রেয়ার আর্থসসহ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারমূল্য বেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর কয়েক বছর আগে লাইনাসকে একটি চুক্তি দিয়েছিল, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি টেক্সাসে একটি প্রকল্পে কাজ করছে।

হোয়াইট হাউস প্রকাশিত ফ্রেমওয়ার্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি, যা ইঙ্গিত দেয় আলোচনাটি বেশ সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে। অস্ট্রেলিয়া গুরুত্বপূর্ণ খনিজের বড় উৎস হলেও দেশটি এখনো চীনের ওপর নির্ভরশীল, কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো মূলত চীনের হাতেই রয়েছে—যেমনটা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও দেখা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তেলাপোকা মারতে গিয়ে অ্যাপার্টমেন্ট জ্বালিয়ে দিলেন তরুণী, প্রতিবেশীর মৃত্যু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ৪৬
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দক্ষিণ কোরিয়ার এক তরুণী তেলাপোকা মারতে গিয়ে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে আগুন লাগিয়ে ফেলেছেন। ভয়ংকর এই আগুনে প্রাণ গেছে তাঁরই এক প্রতিবেশীর। ঘটনাটি ঘটেছে দেশটির উত্তরাঞ্চলের ওসান শহরে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ওই তরুণী গত সোমবার বিকেলে লাইটার আর দাহ্য স্প্রে একসঙ্গে ব্যবহার করে তেলাপোকা পোড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। অর্থাৎ তিনি নিজের ঘরেই বানিয়েছিলেন একধরনের অস্থায়ী ফ্লেমথ্রোয়ার। আগেও নাকি এমনভাবে তেলাপোকা মারার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার ভাগ্য সহায় হয়নি। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ধরে যায় তাঁর ঘরের আসবাবে, তারপর তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো অ্যাপার্টমেন্টে।

দমকল বিভাগ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। তবে ততক্ষণে আগুনের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে। আতঙ্কে বাসিন্দারা ছোটাছুটি শুরু করেন। ভবনের পঞ্চম তলায় থাকা এক চীনা দম্পতি প্রথমে জানালা খুলে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। তাঁরা তাদের দুই মাস বয়সী শিশুটিকে পাশের ভবনের এক প্রতিবেশীর হাতে জানালা দিয়ে তুলে দিতে সক্ষম হন। এরপর নিজেরাও পালানোর চেষ্টা করেন।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ধোঁয়ায় ভরে যাওয়ায় সিঁড়ি দিয়ে নামার পথ বন্ধ হয়ে যায়। তাই তাঁরা জানালা দিয়েই পাশের ভবনে যাওয়ার চেষ্টা করেন। স্বামী কোনোভাবে পাশের ভবনের দেয়াল ধরে উঠতে সক্ষম হলেও তাঁর স্ত্রী হাত ফসকে নিচে পড়ে যান। দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মারা যান ওই নারী।

মারা যাওয়া ওই নারী ছিলেন ৩০ বছর বয়সী চীনা নাগরিক। তিনি স্বামী ও নবজাতক শিশুসহ ওসান শহরের ওই ভবনে বসবাস করতেন। ওসান পুলিশ জানিয়েছে, আগুন লাগানোর ঘটনায় ২০ বছরের বেশি বয়সী ওই তরুণীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে অসাবধানতাবশত আগুন লাগানো এবং তাতে মৃত্যুর কারণ হওয়ার অভিযোগ আনা হতে পারে।

আগুন লাগার পর ভবনের নিচতলায় থাকা দোকানগুলোতেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিচতলায় বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক দোকান এবং ওপরের তলাগুলোতে ৩২টি ফ্ল্যাট রয়েছে। দমকলের সাতটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় নেয়। ততক্ষণে ভবনের ভেতরের অন্তত আটজন বাসিন্দা ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়।

পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ওই তরুণী লাইটার ও স্প্রে একসঙ্গে ব্যবহার করে তেলাপোকা মারার চেষ্টায় এই আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে লাইটার, স্প্রে এবং দাহ্য পদার্থের বেশ কিছু অবশিষ্ট অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ফ্লেমথ্রোয়ার’ বা আগুন নিক্ষেপ যন্ত্র দিয়ে তেলাপোকা মারার ভিডিও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই এই ভিডিও দেখে একইভাবে পোকামাকড় মারার চেষ্টা করছেন। অথচ এই কায়দায় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায়ও এক ব্যক্তি কীটনাশক স্প্রে ও আগুনের মিশ্রণে বানানো ফ্লেমথ্রোয়ার দিয়ে তেলাপোকা মারতে গিয়ে নিজের রান্নাঘর জ্বালিয়ে ফেলেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসরায়েল থেকে ফেরত আসা ১৩৫ ফিলিস্তিনির মরদেহে অঙ্গচ্ছেদ-নির্যাতনের চিহ্ন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৫৮
সরায়েলের কারাগারগুলোতে এমন অমানবিক অবস্থায় বিনা বিচারে বছরের পর বছর বন্দী করে রাখা হয় ফিলিস্তিনিদের। ছবি: সংগৃহীত
সরায়েলের কারাগারগুলোতে এমন অমানবিক অবস্থায় বিনা বিচারে বছরের পর বছর বন্দী করে রাখা হয় ফিলিস্তিনিদের। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল থেকে ফেরত আসা অন্তত ১৩৫ ফিলিস্তিনির মরদেহে ভয়াবহ নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মরদেহগুলো ইসরায়েলের একটি কুখ্যাত আটককেন্দ্র ‘স্‌দে তেইমান’-এ রাখা হয়েছিল। যেখানে আগে থেকেই বন্দীদের ওপর নির্যাতন ও মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বুরশ জানান, প্রতিটি মরদেহের ব্যাগে থাকা নথিতে লেখা আছে যে এগুলো স্‌দে তেইমান ঘাঁটি থেকেই এসেছে। ওই ট্যাগগুলো হিব্রু ভাষায় লেখা এবং কিছু মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষা সেখানেই করা হয়েছিল।

নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত স্‌দে তেইমান আটককেন্দ্রের বিরুদ্ধে গত বছরও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ফিলিস্তিনি বন্দীদের খাঁচায় আটকে রাখা, চোখ বেঁধে হাত-পা শৃঙ্খলিত করে রাখা ও হাসপাতালের খাটে বেঁধে রাখার মতো অমানবিক আচরণ করা হতো।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ফেরত পাওয়া মরদেহগুলো পরীক্ষা করে দেখা গেছে, অনেকের চোখ বাঁধা, হাত পেছনে বাঁধা এবং শরীরে গুলির দাগ রয়েছে। কিছু মরদেহে ট্যাংকের চাকায় পিষ্ট হওয়ার চিহ্নও পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, এসব প্রমাণে স্পষ্ট যে ইসরায়েল বন্দীদের ওপর হত্যা ও নির্যাতন চালিয়েছে।

নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের পরিচালক আইয়াদ বারহুম বলেন, ‘মরদেহগুলোর নাম নেই, শুধু কোড নম্বর দেওয়া আছে। শনাক্তকরণের কাজ চলছে।’

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, তদন্তের মাধ্যমে বের করতে হবে মরদেহগুলোর কেউ আটক অবস্থায় নিহত হয়েছে কি না এবং হলে কতজন।

উত্তর গাজার বাসিন্দা মাহমুদ ইসমাইল শাবাতের মরদেহেও নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাঁর ভাই রামি জানান, মাথার পুরোনো অস্ত্রোপচারের দাগ দেখে ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন তিনি। রামি বলেন, ‘তাঁর হাত বাঁধা ছিল, শরীরে নির্যাতনের দাগ ছিল। এটা দেখা খুব কষ্টের।’

মাহমুদের মা বলেন, ‘বিশ্ব কোথায়? আমাদের সন্তানদের সবাইকে নির্যাতিত অবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত