Ajker Patrika

ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির খুব কাছাকাছি যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৫ মে ২০২৫, ১৫: ০৭
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির খুব কাছাকাছি এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির খুব কাছাকাছি এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: সংগৃহীত

ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির খুব কাছাকাছি চলে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ বৃহস্পতিবার ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে একটি পরমাণু চুক্তির খুব কাছাকাছি চলে এসেছে এবং তেহরান শর্তাবলিতে ‘এক প্রকার’ রাজি হয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুসারে, উপসাগরীয় অঞ্চল সফররত ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা ইরানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি শান্তির জন্য অত্যন্ত গুরুতর আলোচনায় রয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা হয়তো এটি না করেই একটি চুক্তি করার কাছাকাছি চলে আসছি...এটি করার দুটি ধাপ রয়েছে। একটি খুবই সুন্দর ধাপ এবং আরেকটি সহিংস ধাপ, তবে আমি দ্বিতীয় পদ্ধতিতে যেতে চাই না।’

তবে আলোচনা সম্পর্কে অবগত একটি ইরানি সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় এখনো কিছু ব্যবধান রয়েছে যা পূরণ করতে হবে। তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের নতুন করে শুরু হওয়া আলোচনা ওমানে গত রোববার শেষ হয়েছে এবং আরও আলোচনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। আলোচনা শেষ হলেও তেহরান প্রকাশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দিয়েছে।

যদিও তেহরান এবং ওয়াশিংটন উভয়ই বলেছে যে, তারা কয়েক দশক ধরে চলা পারমাণবিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কূটনীতিই পছন্দ করে, তবুও তারা কয়েকটি ‘রেড লাইন’ বা অলঙ্ঘনীয় বিষয়ে বিভক্তি আছে দুই দেশের মধ্যে। এই বিভেদ নিরসনে আলোচকদের একটি নতুন চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে এবং ভবিষ্যতের সামরিক পদক্ষেপ এড়াতে হবে।

এর আগে, গত মঙ্গলবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তেহরানকে মধ্যপ্রাচ্যের ‘সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক শক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন। মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘ট্রাম্প মনে করেন, তিনি আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং হুমকি দিয়ে মানবাধিকারের কথা বলতে পারেন। সমস্ত অপরাধ এবং আঞ্চলিক অস্থিরতা তাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) কারণে হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তিনি ইরানের অভ্যন্তরে অস্থিরতা তৈরি করতে চান।’

মার্কিন কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে বলেছেন, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ করা উচিত। ইরানি কর্মকর্তারা এই অবস্থানকে একটি ‘রেড লাইন’ বা বিপৎসীমা বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, তারা ইরানের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার তাদের অধিকার ছেড়ে দেবে না। তবে তারা সমৃদ্ধকরণের মাত্রা কমানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

ইরানি কর্মকর্তারা উচ্চমাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত কমাতেও প্রস্তুতি দেখিয়েছেন। এই ইউরেনিয়াম পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের মতো বেসামরিক কাজের জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি সমৃদ্ধ। তবে তারা বলেছেন, ২০১৫ সালে বিশ্বশক্তিগুলোর সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে সম্মত পরিমাণের চেয়ে কম মজুত গ্রহণ করা হবে না। ওই চুক্তি থেকে ট্রাম্প সরে এসেছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইরানি সূত্রটি জানিয়েছে, ইরান ছাড় দিতে প্রস্তুত থাকলেও ‘বিষয়টি হলো আমেরিকা এর বিনিময়ে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলতে রাজি নয়।’ পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ইরানের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

মজুত থাকা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কমানোর বিষয়ে সূত্রটি উল্লেখ করেছে, ‘তেহরান এই মজুত কয়েকটি ধাপে সরিয়ে নিতে চায়, যাতে আবার আমেরিকা রাজি নয়।’ সূত্রটি আরও বলেছে, উচ্চ মাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কোথায় পাঠানো হবে তা নিয়েও মতবিরোধ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত