Ajker Patrika

অমানবিক নির্যাতন চলছে ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
অমানবিক নির্যাতন চলছে ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর

ইসরায়েলে হামাসের হামলার পরদিনই দেশটির গিলবোয়া কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর চড়াও হয় ইসরায়েলি বিশেষ বাহিনীর ইউনিটগুলো। সেখানে প্রবেশ করেই ফিলিস্তিনি বন্দীদের অমানবিকভাবে মারধর করে তারা। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। 

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এর পরপরই পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে অভিযান বাড়িয়েছে ইসরায়েল। সংঘাত শুরুর ২৫ দিনের মধ্যে দেশটির কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। আল জাজিরা জানায়, ৭ অক্টোবরের আগে ইসরায়েলি কারাগারে ৫ হাজার ২০০ জন ফিলিস্তিনি বন্দী ছিলেন। তবে এই কয়েক দিনের মধ্যে বন্দীর সংখ্যা বেড়ে ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। 

কারাবন্দী থাকার পাঁচ বছর পর ২৪ অক্টোবর গিলবোয়া কারাগার থেকে মুক্তি পান সালাহ ফাতেন সালাহ (২৩)। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনীর প্রতিশোধমূলক আক্রমণ ওই দিন (৮ অক্টোবর) সকালেই শুরু হয়। তারা (ইসরায়েলি বাহিনী) চিৎকার করে সব বন্দীর কক্ষে ঢুকে মাথায় হাত রেখে হাঁটু গেড়ে বসতে বলে। তারপর তারা কিলঘুষি-লাথির সঙ্গে লাঠি দিয়েও নির্দয়ভাবে পেটাতে শুরু করে আমাদের।’ 

‘এমনকি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীকেও ছাড় দেয়নি তারা। প্রতিদিন তিনবার করে ইনসুলিন নিতে হয়, এমন এক বন্দীর সঙ্গেও পশুর মতো আচরণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রায় দুই ঘণ্টা তাঁকে পেটানো হয়। এতে ওই বন্দী যেভাবে রক্তাক্ত হন, আমরা আশঙ্কা করছিলাম তাঁকে আর বাঁচানো যাবে না!’ 

বন্দীদের এভাবে পেটানোর পর কারাগারে ওই কক্ষের সব জায়গা রক্তাক্ত হয়ে যায় বলে জানান সালাহ। তিনি আরও বলেন, ‘তাদের মধ্যে মানবিকতা বলতে কিছু ছিল না। যারা বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষকে এভাবে পেটাতে পারে তারা মানুষ হয় কী করে? ওই দিন আমাদের সব বন্দীকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় কারাগারটির প্রধান।’ 

৭ অক্টোবরের পর গ্রেপ্তার হওয়া দুই ফিলিস্তিনি নাগরিক ইসরায়েলি কারাগারে নিহত হন। তাঁদের কোনো অভিযোগ ছাড়াই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এমনকি তাঁদের কোনো বিচারের মুখোমুখিও করা হয়নি। এ সময়ে আহত হন আরও ডজনখানেক ফিলিস্তিনি। 

সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মারধর-নির্যাতন, গালাগাল এবং হেনস্তার বেশ কয়েকটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়াচ্ছে। ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর ইসরায়েলের এ নির্যাতনকে ২০০৩ সালে ইরাকের আবু গারিব কারাগারে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের সঙ্গে তুলনা করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে। 

ইসরায়েলের কারাগার থেকে সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি বন্দীদের নিয়ে কাজ করা অধিকার গোষ্ঠী, আইনজীবী এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান সবাই ইসরায়েলি হেফাজতে থাকা ফিলিস্তিনিদের নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলছেন, মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন ওই বন্দীরা। 

ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স সোসাইটির মুখপাত্র আমানি সারাহনেহ বলেন, ‘ইসরায়েলের কারাগারের ভেতরের পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। আমরা বন্দীদের প্রতিদিনই গণপিটুনির তথ্য পাচ্ছি। তারা (ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ) তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে।’ 

এসব অভিযোগের ব্যাপারে ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো জবাব পায়নি আল জাজিরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত