Ajker Patrika

যুদ্ধবিরতি হওয়ায় পাল্টাপাল্টি জয়ের দাবি ইসরায়েল ও হামাসের

যুদ্ধবিরতি হওয়ায় পাল্টাপাল্টি জয়ের দাবি ইসরায়েল ও হামাসের

ঢাকা: স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মিসরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি হওয়ায় পাল্টাপাল্টি জয়ের দাবি করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী গাজায় তাঁদের ১১ দিনের সামরিক অভিযানে সাফল্যের দাবি করেছেন। নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা এই অভিযানে আমাদের লক্ষ্য অর্জন করেছি।’

এদিকে হামাস প্রধান হানিয়াহ বলেন, জেরুজালেম, আল-কুদস ও আল-আকসা মসজিদ রক্ষা করার লক্ষ্যে গাজা উপত্যকা প্রতিরোধ শুরু করেছিল এবং এর মাধ্যমে ইহুদিবাদী শত্রুকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পরপরই গাজা, পূর্ব জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন শহরের হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁরা ‘আল্লাহু আকবর’, ‘আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া’ স্লোগান দেন। ১১ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাত থেমে যাওয়ায় খুশির আতশবাজিতে আলোকিত হয়ে ওঠে ফিলিস্তিনের আকাশ।

ফিলিস্তিন ইস্যু বহু বছর ধরেই গোটা বিশ্বে বড় সমস্যা হয়ে থাকলেও গত বেশ কয়েক বছরের মধ্যে অঞ্চলটিতে এমন সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। গত ১০মে অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমে কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদের উদ্যোগকে কেন্দ্র করে মসজিদ আল আকসায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ফিলিস্তিনি নাগরিক ও ইসরায়েলের পুলিশ। আল আকসা থেকে পুলিশ প্রত্যাহারের আলটিমেটাম দেয় হামাস। তাতে সাড়া না দেওয়ায় হামাসের পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে রকেট ছোড়া হলে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের এ হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৫ শিশু ও ৩৯ নারীসহ ২৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজা কর্তৃপক্ষ। আহত হয়েছেন ১ হাজার ৯০০'র বেশি ফিলিস্তিনি। হামাসের হামলায় নিহত হয়েছে ২ শিশুসহ ১২ ইসরায়েলি।

ইসরায়লের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাঁদের হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ১৬০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। তবে হামাসের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি। এদিকে হামাসের রকেট হামলায় ইসরায়েলের এ পর্যন্ত ১২ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। হামাসের ছোড়া রকেটে অঞ্চলটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বহু লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও জানায় অঞ্চলটির কর্তৃপক্ষ।

গত ১০ মে এই সংঘাত শুরুর পর থেকেই বিশ্ব নেতৃবৃন্দ উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা উভয়পক্ষকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকও ডাকে জাতিসংঘ। শুরু থেকেই উভয় পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতায় এগিয়ে আসে মিসর, কাতার ও জাতিসংঘ। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না।

বিশেষ দূত পাঠানোর পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় শেষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানালে আশা দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার গাজা পরিস্থিতি নিয়ে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে আলোচনা করেন বাইডেন। পরে হোয়াইট হউসের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে আশা প্রকাশ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত