Ajker Patrika

বৈরুতে হামলার পরিকল্পনা ইসরায়েলের, ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতিয়ালি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৪, ১১: ১৯
Thumbnail image

ইসরায়েল অধিকৃত সিরিয়ার ভূখণ্ড গোলান মালভূমিতে হিজবুল্লাহর হামলার প্রতিবাদে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে হামলার পরিকল্পনা করেছিল তেল আবিব। তবে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সেই পরিকল্পনায় কড়াভাবে বাদ সেধেছে। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত পাঁচটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে। 

গত সপ্তাহের শেষ দিকে গোলান মালভূমিতে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে অন্তত ১২ জন ইসরায়েলি তরুণ নিহত হয়। এই হামলার প্রতিবাদে ইসরায়েল বৈরুতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র চায় না, ইসরায়েলের বৈরুত হামলার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হয়ে যাক। 

লেবানন, ইরান, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের পাঁচটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল গোলান মালভূমিতে হামলার জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ী করলেও গোষ্ঠীটি তা অস্বীকার করেছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েল মূলত হিজবুল্লাহর ঘাঁটি বলে পরিচিত দক্ষিণ বৈরুতের ঘনবসতিপূর্ণ হামলা চালাতে চেয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের এই সম্ভাব্য হামলা রুখতে ত্বরিত কূটনীতি চালিয়ে যাচ্ছে। 

লেবাননের পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার ইলিয়াস বাউ সাব বলেছেন, তিনি শনিবার গোলান মালভূমিতে হামলার পর থেকেই মার্কিন মধ্যস্থতাকারী আমোস হোখস্টেইনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, যাতে ইসরায়েল বৈরুতে কোনো হামলা না চালায়। তিনি বলেন, ‘তারা (ইসরায়েল) যদি বৈরুত ও শহরতলির বেসামরিক নাগরিকদের এড়িয়ে হামলা চালাতে পারে, সে ক্ষেত্রে তাদের আক্রমণকে ইতিবাচকভাবে দেখা যেতে পারে।’ 

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের দেশ হিজবুল্লাহর ওপর আঘাত হানতে চায়, তবে এই অঞ্চলকে সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলতে চায় না। তবে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপীয় কূটনীতিকেরা বলেছেন, ইসরায়েল বৈরুত বা এর শহরতলিতে নাগরিক অবকাঠামোতে হামলা চালাবে না এমন কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি। 

এদিকে, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, তারা এই কূটনৈতিক কথোপকথনের সুনির্দিষ্ট বিষয়ে মন্তব্য করবে না। তবে তারা মধ্যপ্রাচ্য আন্তসীমান্ত সংঘাত অবসানে একটি ‘টেকসই সমাধান’ খুঁজছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, ‘ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমাদের সমর্থন হিজবুল্লাহসহ ইরান সমর্থিত সব হুমকির বিরুদ্ধে ইস্পাতদৃঢ় ও অটল।’ হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘গোলান মালভূমিতে হামলার জবাব দেওয়ার অধিকার ইসরায়েলের আছে, কিন্তু কেউই বৃহত্তর যুদ্ধ চায় না।’ 

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এই বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করেনি এবং হিজবুল্লাহও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। তবে এক ইরানি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, গোলান মালভূমিতে শনিবারের হামলার পর থেকে অন্তত তিনবার তেহরানের কাছে বার্তা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে বলা হয়েছে, ‘পরিস্থিতি বিগড়ে গেলে তা সব পক্ষের জন্য ক্ষতিকর হবে।’ 

উল্লেখ্য, হিজবুল্লাহ হলো ইরানের আঞ্চলিক প্রক্সি গ্রুপগুলোর নেটওয়ার্ক ‘প্রতিরোধ অক্ষের’ সবচেয়ে শক্তিশালী গোষ্ঠী। এটি একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মিত্রও। গত অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গোষ্ঠীটি লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত জুড়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত