অনলাইন ডেস্ক
মেটার মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতির বিজ্ঞাপন প্রচারিত হচ্ছে! শুধু তা–ই নয়, গাজায় মোতায়েন করা ইসরায়েলি সেনাদের জন্য অর্থ সহায়তা সংগ্রহের বিজ্ঞাপনও প্রচার করছে মেটা। কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল–জাজিরার অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
আল–জাজিরার বলছে, ফেসবুকে উগ্র জায়নবাদী শতাধিক বিজ্ঞাপন দেখেছে তারা। যেগুলোর মধ্যে ইসরায়েলি প্রশাসনের প্রতি ফিলিস্তিনিদের অবকাঠামো ভেঙে ফেলারও আহ্বান ছিল। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এসব বিজ্ঞাপনের প্রচার আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল।
বিষয়টি সামনে আসার পর সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টদের ব্যবসায়িক স্বার্থ আন্তর্জাতিক আইনের ঊর্ধ্বে উঠছে কিনা, তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
আল–জাজিরার তথ্য অনুযায়ী, এসব বিজ্ঞাপনের মধ্যে অর্ধশতই ছিল ইসরায়েলি বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট কোম্পানির দেওয়া। এরা মূলত পশ্চিম তীরে দখলকৃত ইসরায়েলি আবাসন বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছে। গত বছরের মার্চে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞাপনগুলো প্রচার শুরু করে ফেসবুক, অথচ সে সময় গাজায় পুরোদমে তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
বিজ্ঞাপনগুলোর টার্গেট অডিয়েন্স ছিল ইসরায়েলিরাই। ইসরায়েলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কিছু ব্যবহারকারীর কাছেও পৌঁছেছে বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনদাতাদের মধ্যে রয়েছে রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান—‘রামাত আদেরেত’, যার বর্তমান বাজারমূল্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার। প্রতিষ্ঠানটিকে অর্থায়ন করে ফার্স্ট ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক নামের ইসরায়েলি একটি ব্যাংক। পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতির অর্থায়ন করার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে বিডিএস—বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট ও স্যাংকশন আন্দোলনের লক্ষ্যবস্তু হয়ে আসছে ফার্স্ট ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক।
রামাত আদেরেতের প্রকল্পটি ফিলিস্তিন–ইসরায়েল সীমানা নির্ধারণকারী গ্রিন লাইনের ২০ কিলোমিটার পূর্বে দখলকৃত পশ্চিম তীরে অবস্থিত। এদের পৃথক দুটি প্রকল্পের আওতায় সেখানে রয়েছে প্রায় ২৭টি বিলাসবহুল ভবন।
ফেসবুকে এদের প্রকল্পের বিজ্ঞাপন ইস্যুতে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে আল–জাজিরা। তবে তারা সাড়া দেয়নি।
গাবাই রিয়েল এস্টেট নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান অবশ্য কথা বলেছে আল–জাজিরার সাংবাদিকদের সঙ্গে। বাজেট স্বল্পতায় বেশি বিজ্ঞাপন দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে দুঃখ প্রকাশ করেছে তারা! প্রতিষ্ঠানটির মালিকদের একজন ইয়ানিভ গাবাই বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে আমরা কেবল ৪৮টি বিজ্ঞাপন দিতে পেরেছি কারণ আমাদের বাজেট সীমিত। তবে যত বেশি ইহুদি পশ্চিম তীরে ফিরবে, আমাদের বাজেট তত বাড়বে এবং আমরা আরও বিজ্ঞাপন দিতে পারব।’
আল–জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব বিজ্ঞাপনের অন্তত ৫০টিই কট্টর ডানপন্থী রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান রেগাভিমের দেওয়া। ২০০৬ সালে কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ এটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ২০২৩ সালে ঘোষণা দিয়েছিলেন—পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণের কোনো রাজনৈতিক বা সামরিক অনুমোদনের আর প্রয়োজন নেই।
এই সংস্থার বেশির ভাগ বিজ্ঞাপনই ফিলিস্তিনি অবকাঠামো ধ্বংসে প্রশাসন ও দখলদারদের উৎসাহিত করে। একটি বিজ্ঞাপন আল–জাজিরার চোখে পড়ে, যেটিতে একটি ফিলিস্তিনি স্কুল ভেঙে ফেলায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি। আরেকটি বিজ্ঞাপন দেখা যায়, পশ্চিম তীরে অবস্থিত একটি ওয়াটার পার্ক ভেঙে ফেলার দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বিজ্ঞাপনটিতে লেখা ছিল—‘আমাদের টাকায় ফুর্তি করছে ফিলিস্তিনিরা।’
স্কুল ধ্বংসের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এই ধ্বংসযজ্ঞকে বৈষম্যমূলক ও শিশুদের শিক্ষার অধিকারের লঙ্ঘন বলে বর্ণনা করেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে, প্রায় ৯০ জন মার্কিন আইনপ্রণেতা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে রেগাভিমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান। তবে রেগাভিম নিজেদের কট্টর ডানপন্থী বা বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠী হিসেবে স্বীকার করে না। তারা নিজেদের ‘মূলধারার পেশাদার জনমত জরিপকারী এবং জাতীয় নীতি নির্ধারণ ও বিতর্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার’ হিসেবে দাবি করে।
সামাজিক মাধ্যমে এ ধরনের বিজ্ঞাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও। ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ব্রায়ান লেইশম্যান বলেছেন, ‘ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো এবং ব্যবসায়িক সংস্থাগুলো এবং এমনকি সক্রিয় ইসরায়েলি সেনারা—আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ হতে পারে এমন বিষয় প্রচার করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কী ধরনের বিষয়বস্তু প্ল্যাটফর্মে প্রচার করতে দিচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টদের এ ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়া উচিত। কেবল লাভের জন্য বিপজ্জনক ও বিভেদমূলক এজেন্ডা প্রচার করা উচিত নয়।’
বিজ্ঞাপন ইস্যুতে মেটার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এটিকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির একটি ‘ত্রুটি’ বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। আল–জাজিরাকে প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘বিজ্ঞাপন পর্যালোচনার জন্য আমাদের একটি শক্তিশালী প্রক্রিয়া ও টিম রয়েছে। আমাদের পর্যালোচনা ব্যবস্থা বিজ্ঞাপনগুলো লাইভ হওয়ার আগে পরীক্ষা করে। তবে, এটি মূলত স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে। যে কারণে সবকিছু ম্যানুয়ালি পর্যালোচনা করা হয় না। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে ম্যানুয়াল পর্যালোচনাও করা হয়।’
তবে যুক্তরাজ্যের নর্থামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ডিজিটাল সিটিজেন–এর প্ল্যাটফর্ম গভর্ন্যান্স গবেষক ক্যারোলিনা আরে আল–জাজিরাকে বলেন, ‘এই বিজ্ঞাপনগুলো সাধারণ রিয়েল এস্টেট বিজ্ঞাপনের মতো উপস্থাপন করা হয়েছে, যে কারণে এটি স্বয়ংক্রিয় পর্যালোচনা ব্যবস্থাকে এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে মডারেটররা আন্তর্জাতিক আইনের সূক্ষ্ম দিকগুলো সম্পর্কে অবগত নাও থাকতে পারেন।’
আল–জাজিরা জানিয়েছে, বিজ্ঞাপনগুলোর মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র মডিফিকেশনের উপকরণের বিজ্ঞাপনও রয়েছে। মেটার বিজ্ঞাপন নীতিমালা অনুযায়ী, ‘বিজ্ঞাপনে অস্ত্র, গোলাবারুদ বা বিস্ফোরকের বিক্রয় বা ব্যবহার প্রচার করা যাবে না। কিন্তু ইসরায়েলি বিজ্ঞাপনগুলোতে সরাসরি সামরিক সরঞ্জামের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে, যা স্পষ্টতই এই নীতিমালার পরিপন্থী বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
যুক্তরাজ্যের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক নেভ গর্ডন বলেন, ‘ফেসবুক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে মুনাফা করছে। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করার ফলে ফেসবুক এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অংশ হয়ে যাচ্ছে। কারণ এই বিজ্ঞাপনগুলো যুদ্ধাপরাধকে স্বাভাবিক, বৈধ এবং গ্রহণযোগ্য করে তুলতে ভূমিকা রাখে।’
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, পশ্চিম তীরের সব ইসরায়েলি বসতি অবৈধ। দখলদার শক্তির নিজ দেশের নাগরিকদের দখলকৃত অঞ্চলে স্থানান্তরিত করা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম সংবিধির অধীনে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত। কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্ট–এর আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আইফ ও’ডোনোহু বলেন, ‘পশ্চিম তীরে ব্যক্তিগতভাবে জমি কেনাবেচা করা সম্ভব। তবে বিক্রেতাদের কাছে সেই জমির বৈধ মালিকানা আদৌ আছে কিনা তা একটি বড় প্রশ্ন। ইসরায়েল সরকারের দায়িত্ব, অবৈধ বসতি নির্মাণ প্রতিরোধ করা। কিন্তু তা না করে তারা যদি ইসরায়েল সরকার এতে সহায়তা করে, তাহলে তা তৃতীয় জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘনের শামিল। আর এ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন প্রচার করায় মেটাও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হতে পারে।’
মেটার মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতির বিজ্ঞাপন প্রচারিত হচ্ছে! শুধু তা–ই নয়, গাজায় মোতায়েন করা ইসরায়েলি সেনাদের জন্য অর্থ সহায়তা সংগ্রহের বিজ্ঞাপনও প্রচার করছে মেটা। কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল–জাজিরার অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
আল–জাজিরার বলছে, ফেসবুকে উগ্র জায়নবাদী শতাধিক বিজ্ঞাপন দেখেছে তারা। যেগুলোর মধ্যে ইসরায়েলি প্রশাসনের প্রতি ফিলিস্তিনিদের অবকাঠামো ভেঙে ফেলারও আহ্বান ছিল। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এসব বিজ্ঞাপনের প্রচার আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল।
বিষয়টি সামনে আসার পর সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টদের ব্যবসায়িক স্বার্থ আন্তর্জাতিক আইনের ঊর্ধ্বে উঠছে কিনা, তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
আল–জাজিরার তথ্য অনুযায়ী, এসব বিজ্ঞাপনের মধ্যে অর্ধশতই ছিল ইসরায়েলি বিভিন্ন রিয়েল এস্টেট কোম্পানির দেওয়া। এরা মূলত পশ্চিম তীরে দখলকৃত ইসরায়েলি আবাসন বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছে। গত বছরের মার্চে প্রথমবারের মতো বিজ্ঞাপনগুলো প্রচার শুরু করে ফেসবুক, অথচ সে সময় গাজায় পুরোদমে তাণ্ডব চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
বিজ্ঞাপনগুলোর টার্গেট অডিয়েন্স ছিল ইসরায়েলিরাই। ইসরায়েলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কিছু ব্যবহারকারীর কাছেও পৌঁছেছে বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনদাতাদের মধ্যে রয়েছে রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান—‘রামাত আদেরেত’, যার বর্তমান বাজারমূল্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার। প্রতিষ্ঠানটিকে অর্থায়ন করে ফার্স্ট ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক নামের ইসরায়েলি একটি ব্যাংক। পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতির অর্থায়ন করার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে বিডিএস—বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট ও স্যাংকশন আন্দোলনের লক্ষ্যবস্তু হয়ে আসছে ফার্স্ট ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক।
রামাত আদেরেতের প্রকল্পটি ফিলিস্তিন–ইসরায়েল সীমানা নির্ধারণকারী গ্রিন লাইনের ২০ কিলোমিটার পূর্বে দখলকৃত পশ্চিম তীরে অবস্থিত। এদের পৃথক দুটি প্রকল্পের আওতায় সেখানে রয়েছে প্রায় ২৭টি বিলাসবহুল ভবন।
ফেসবুকে এদের প্রকল্পের বিজ্ঞাপন ইস্যুতে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে আল–জাজিরা। তবে তারা সাড়া দেয়নি।
গাবাই রিয়েল এস্টেট নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান অবশ্য কথা বলেছে আল–জাজিরার সাংবাদিকদের সঙ্গে। বাজেট স্বল্পতায় বেশি বিজ্ঞাপন দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে দুঃখ প্রকাশ করেছে তারা! প্রতিষ্ঠানটির মালিকদের একজন ইয়ানিভ গাবাই বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে আমরা কেবল ৪৮টি বিজ্ঞাপন দিতে পেরেছি কারণ আমাদের বাজেট সীমিত। তবে যত বেশি ইহুদি পশ্চিম তীরে ফিরবে, আমাদের বাজেট তত বাড়বে এবং আমরা আরও বিজ্ঞাপন দিতে পারব।’
আল–জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব বিজ্ঞাপনের অন্তত ৫০টিই কট্টর ডানপন্থী রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান রেগাভিমের দেওয়া। ২০০৬ সালে কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ এটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ২০২৩ সালে ঘোষণা দিয়েছিলেন—পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণের কোনো রাজনৈতিক বা সামরিক অনুমোদনের আর প্রয়োজন নেই।
এই সংস্থার বেশির ভাগ বিজ্ঞাপনই ফিলিস্তিনি অবকাঠামো ধ্বংসে প্রশাসন ও দখলদারদের উৎসাহিত করে। একটি বিজ্ঞাপন আল–জাজিরার চোখে পড়ে, যেটিতে একটি ফিলিস্তিনি স্কুল ভেঙে ফেলায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি। আরেকটি বিজ্ঞাপন দেখা যায়, পশ্চিম তীরে অবস্থিত একটি ওয়াটার পার্ক ভেঙে ফেলার দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বিজ্ঞাপনটিতে লেখা ছিল—‘আমাদের টাকায় ফুর্তি করছে ফিলিস্তিনিরা।’
স্কুল ধ্বংসের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এই ধ্বংসযজ্ঞকে বৈষম্যমূলক ও শিশুদের শিক্ষার অধিকারের লঙ্ঘন বলে বর্ণনা করেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে, প্রায় ৯০ জন মার্কিন আইনপ্রণেতা তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে রেগাভিমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান। তবে রেগাভিম নিজেদের কট্টর ডানপন্থী বা বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠী হিসেবে স্বীকার করে না। তারা নিজেদের ‘মূলধারার পেশাদার জনমত জরিপকারী এবং জাতীয় নীতি নির্ধারণ ও বিতর্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার’ হিসেবে দাবি করে।
সামাজিক মাধ্যমে এ ধরনের বিজ্ঞাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও। ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ব্রায়ান লেইশম্যান বলেছেন, ‘ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো এবং ব্যবসায়িক সংস্থাগুলো এবং এমনকি সক্রিয় ইসরায়েলি সেনারা—আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ হতে পারে এমন বিষয় প্রচার করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কী ধরনের বিষয়বস্তু প্ল্যাটফর্মে প্রচার করতে দিচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টদের এ ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়া উচিত। কেবল লাভের জন্য বিপজ্জনক ও বিভেদমূলক এজেন্ডা প্রচার করা উচিত নয়।’
বিজ্ঞাপন ইস্যুতে মেটার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এটিকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির একটি ‘ত্রুটি’ বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। আল–জাজিরাকে প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘বিজ্ঞাপন পর্যালোচনার জন্য আমাদের একটি শক্তিশালী প্রক্রিয়া ও টিম রয়েছে। আমাদের পর্যালোচনা ব্যবস্থা বিজ্ঞাপনগুলো লাইভ হওয়ার আগে পরীক্ষা করে। তবে, এটি মূলত স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে। যে কারণে সবকিছু ম্যানুয়ালি পর্যালোচনা করা হয় না। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে ম্যানুয়াল পর্যালোচনাও করা হয়।’
তবে যুক্তরাজ্যের নর্থামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ডিজিটাল সিটিজেন–এর প্ল্যাটফর্ম গভর্ন্যান্স গবেষক ক্যারোলিনা আরে আল–জাজিরাকে বলেন, ‘এই বিজ্ঞাপনগুলো সাধারণ রিয়েল এস্টেট বিজ্ঞাপনের মতো উপস্থাপন করা হয়েছে, যে কারণে এটি স্বয়ংক্রিয় পর্যালোচনা ব্যবস্থাকে এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে মডারেটররা আন্তর্জাতিক আইনের সূক্ষ্ম দিকগুলো সম্পর্কে অবগত নাও থাকতে পারেন।’
আল–জাজিরা জানিয়েছে, বিজ্ঞাপনগুলোর মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র মডিফিকেশনের উপকরণের বিজ্ঞাপনও রয়েছে। মেটার বিজ্ঞাপন নীতিমালা অনুযায়ী, ‘বিজ্ঞাপনে অস্ত্র, গোলাবারুদ বা বিস্ফোরকের বিক্রয় বা ব্যবহার প্রচার করা যাবে না। কিন্তু ইসরায়েলি বিজ্ঞাপনগুলোতে সরাসরি সামরিক সরঞ্জামের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে, যা স্পষ্টতই এই নীতিমালার পরিপন্থী বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
যুক্তরাজ্যের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক নেভ গর্ডন বলেন, ‘ফেসবুক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে মুনাফা করছে। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করার ফলে ফেসবুক এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অংশ হয়ে যাচ্ছে। কারণ এই বিজ্ঞাপনগুলো যুদ্ধাপরাধকে স্বাভাবিক, বৈধ এবং গ্রহণযোগ্য করে তুলতে ভূমিকা রাখে।’
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, পশ্চিম তীরের সব ইসরায়েলি বসতি অবৈধ। দখলদার শক্তির নিজ দেশের নাগরিকদের দখলকৃত অঞ্চলে স্থানান্তরিত করা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম সংবিধির অধীনে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত। কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্ট–এর আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আইফ ও’ডোনোহু বলেন, ‘পশ্চিম তীরে ব্যক্তিগতভাবে জমি কেনাবেচা করা সম্ভব। তবে বিক্রেতাদের কাছে সেই জমির বৈধ মালিকানা আদৌ আছে কিনা তা একটি বড় প্রশ্ন। ইসরায়েল সরকারের দায়িত্ব, অবৈধ বসতি নির্মাণ প্রতিরোধ করা। কিন্তু তা না করে তারা যদি ইসরায়েল সরকার এতে সহায়তা করে, তাহলে তা তৃতীয় জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘনের শামিল। আর এ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন প্রচার করায় মেটাও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হতে পারে।’
ভারতের ওডিশা রাজ্যের রাজধানী ভুবনেশ্বরের এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত হয়েছেন। ভুবনেশ্বরের উত্তরা চকের সিফা এলাকার কাছে এই মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ১৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। বাসে থাকা যাত্রীদের মধ্যে ৭০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি পর্যটক।
৩৯ মিনিট আগেমার্কিন ফেডারেল রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি ও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে হাজার হাজার মানুষ ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভে জমায়েত হয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১ হাজার ২০০টি স্থানে এই বিক্ষোভ হয়েছে। মূলত এই জমায়েত ছিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর বিলিয়নিয়ার মিত্র ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে বৃহত্তম...
১ ঘণ্টা আগেগাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন চলছে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে। এরপর দুই দফায় মোটামুটি ৫০ দিনের মতো বন্ধ ছিল আগ্রাসন। এই সময়ের মধ্যে অঞ্চলটিতে ১৭ হাজারের বেশি শিশুকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আর ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হত্যাকাণ্ডে অনাথ হয়েছে ৩৯ হাজারের বেশ শিশু।
২ ঘণ্টা আগেভারতে ওয়াক্ফ আইন সংশোধন বিল পাস হওয়ায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। মোদি সরকার বলছে, এই সংস্কার দুর্নীতি রোধ ও কার্যকর ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয়। কিন্তু মুসলিম সংগঠন ও বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, এর আড়ালে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অধিকার খর্ব এবং ঐতিহাসিক সম্পত্তির দখল নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
১২ ঘণ্টা আগে