Ajker Patrika

ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন স্থগিত চেয়ে করা মামলার শুনানি শুরু

গুঞ্জন রহমান 
ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন স্থগিত চেয়ে করা মামলার শুনানি শুরু

ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সিএএর ওপর স্থগিতাদেশসহ মোট ২৩৬টি আবেদনের ওপর শুনানি দেশটির সুপ্রিম কোর্টে শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার শুনানির পর আদালত মামলা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আগামী ৮ই এপ্রিলের মধ্যে জবাব দিতে বলেছে। একই সঙ্গে পরবর্তী শুনানির দিন আগামী ৯ই এপ্রিল ধার্য করা হয়েছে। 

মামলায় আবেদনকারীদের বক্তব্য ছিল, এই সময়ের মধ্যে যাতে কোনো নাগরিকত্বের আবেদন গ্রহণ না করা হয়, সে বিষয়ে নির্দেশ দিক আদালত। কিন্তু আদালত এ বিষয়ে কোনো স্থগিতাদেশ জারি করেননি। 

এর আগে গত ১১ই মার্চ সোমবার ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সিএএ কার্যকর হওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিজ্ঞপ্তি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রকাশ পাওয়ার পরই গোটা দেশজুড়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হন দেশের সব প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন রাজ্য। 

সর্বোপরি গোটা দেশের মধ্যে একমাত্র দক্ষিণ ভারতের কেরল রাজ্যেই সর্বপ্রথম এই আইনের বিরোধিতায় অর্থাৎ এই আইন বাতিলের জন্য দেশের শীর্ষ আদালতে আবেদন জানায়। সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলা জমা পড়ার পর আজই প্রথম এই মামলার শুনানি ছিল দেশের শীর্ষ আদালতে এবং প্রথম দিনের শুনানিতেই কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের সরকারের কাছে সংশ্লিষ্ট আইন বিষয়ে তাদের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিল। 

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই কেন্দ্রের নেতৃত্বাধীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সিএএ পাশ করিয়েছিল। এই সংশোধনী আইনের উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে সংখ্যালঘুদের আশ্রয় ও নাগরিকত্ব দেবে ভারত। 

ভারতীয় সংশোধনী আইন কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার পর সিএএ বলবৎ করা নিয়ে একাধিক বিজেপি নেতা নানান দাবি করলেও অতি সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সফরে এই বিষয়ে মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 

যদিও কিছুদিন আগেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর হচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেছিলেন, ‘ভোটের আগে সিএএ কার্যকর হচ্ছেই। ভোট ঘোষণার এক-দুদিন বা তিন দিন আগে হলেও সিএএ কার্যকর হবে। এমনকি, নির্বাচনী বিধি চালু হওয়ার এক ঘণ্টা আগেও সিএএ কার্যকর হতে পারে।’

পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বিষয়টিকে ‘উদ্বাস্তু মানুষদের ভাঁওতা দেওয়ার চেষ্টা’ বলে কটাক্ষ করে। রাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য সিএএ ঘোষণা বিজেপির রাজনৈতিক চমক। সেই কারণেই তা লোকসভা ভোটের আগে ঘোষণা করা হয়েছে। 

অপরদিকে এক্স হ্যান্ডেলে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ লিখেছেন, চার বছর তিন মাস লেগে গেল সিএএ বলবৎ করতে। যে আইন সংসদে পাশ হয়েছিল ২০১৯ সালে। 

কংগ্রেস নেতার কথায় ‘প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, তাঁর সরকার করপোরেট সংস্থার মতো সময় মেনে কাজ করে। সিএএ লাগু করতে এতখানি সময় নেওয়াতে বোঝা গেল, প্রধানমন্ত্রী কত বড় মিথ্যুক। কংগ্রেস নেতা আরও দাবি করেন, গেরুয়া শিবির আসলে সঠিক সময়ে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ প্রয়োগের জন্য অপেক্ষা করছিল।’

ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে যে কথা বলা হয়েছে, হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পারসি এবং খ্রিষ্টান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা। কিন্তু সেক্ষেত্রে কোথাও কিন্তু মুসলিম সম্প্রদায়ের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত