Ajker Patrika

ভারতে হোয়াটসঅ্যাপে আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমা ব্যবসা, নির্বিকার মেটা

অনলাইন ডেস্ক
হোয়াটসঅ্যাপে প্রকাশ্যে বিজ্ঞাপন দিয়ে অস্ত্র বিক্রি করছে ভারতীয়রা। ছবি: সংগৃহীত
হোয়াটসঅ্যাপে প্রকাশ্যে বিজ্ঞাপন দিয়ে অস্ত্র বিক্রি করছে ভারতীয়রা। ছবি: সংগৃহীত

মেটার মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপে চলছে আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমা ব্যবসা! ভারতীয় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবসায়ীদের জন্য এই মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম যেন এক অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে।

গত মঙ্গলবার (৪ মার্চ) স্বাধীন গণমাধ্যম রেস্ট অব ওয়ার্ল্ড এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক গবেষণা কেন্দ্র ডিজিটাল উইটনেস ল্যাবের গবেষণায় ভারতে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার এই চিত্র উঠে এসেছে। গবেষকেরা বলছেন, গবেষণার জন্য তাঁরা ভারত ভিত্তিক ২৩৪টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটেছেন। এসব গ্রুপে আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত ৮ হাজারটির বেশি বিজ্ঞাপন দেখেছেন তাঁরা।

ডিজিটাল উইটনেস ল্যাবের এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন সূর্য মাত্তু নামের একজন উপাত্ত বিশ্লেষক সাংবাদিক। তিনি জানান, প্রতিটি গ্রুপই উন্মুক্ত। তাঁর ভাষ্যতে, ‘হোয়াটসঅ্যাপ ভারতে অবৈধ বন্দুক বিক্রির বাণিজ্যকে অনন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয়-বিক্রয় আগে এত সহজ ছিল না। এই গ্রুপগুলোর কারণে এখন আঙুলের ডগার এক চাপেই অস্ত্র কিনে ফেলতে পারছে ভারতীয়রা।’

এ গবেষণা সামনে আসার পর মেটার বিরুদ্ধে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবসা সহজ করার অভিযোগ উঠছে। হোয়াটসঅ্যাপের নীতিমালা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। হোয়াটসঅ্যাপকে ভিত্তি করে এ ধরনের একটা বাণিজ্য কীভাবে দাঁড়িয়ে যেতে পারে—তা নিয়ে তৈরি হচ্ছে বিতর্ক। এ বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কিত কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। তবে, প্রতিষ্ঠানটির একজন মুখপাত্র জানান, হোয়াটসঅ্যাপ ভারতের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে। প্রচলিত আইন এবং অ্যাপটির নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানানো হয় বলেই দাবি করেছেন ওই মুখপাত্র।

বিশ্বের যেক’টি দেশে অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবহার নিয়ে কড়াকড়ি আছে, তার মধ্যে অন্যতম ভারত। এ দেশে অস্ত্র উৎপাদন, বিপণন বা কেনার অনুমতি খুব সহজে পাওয়া যায় না। আর তাই এন্ড টু এন্ড এনক্রিপ্টেড বা গোপনীয়তা রক্ষার জন্য সুপরিচিত মেসেজিং অ্যাপকেই এর বিপণনের জন্য উপযুক্ত মনে করছে সংশ্লিষ্টরা—এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে।

সূর্য মাত্তু বলেন, ‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপ্টেড’ হওয়ায় হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের পক্ষেও জানা সম্ভব নয় যে ব্যবহারকারীরা কী নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু গবেষণায় আমরা অন্তত ১২টি গ্রুপ খুঁজে পেয়েছি, যেগুলোর বিবরণেই দেওয়া ছিল অস্ত্র সংক্রান্ত তথ্য, যা সবার জন্য উন্মুক্ত। এটি হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের নজর এড়ানো কথা নয়। এ থেকেই বোঝা যায়, এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে একেবারে মৌলিক পদক্ষেপ নিতেও অনীহা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।’

হোয়াটসঅ্যাপে অস্ত্র বিক্রি করেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথাও বলেছেন গবেষকেরা। তাঁদের কেউ কেউ এক দশক বা তারও বেশি সময় ধরে এই ব্যবসায় যুক্ত। তাঁরা জানান, শুধু হোয়াটসঅ্যাপে অস্ত্র বিক্রি করে তাঁদের মাসিক আয় গড়ে ৪ লাখ রুপি।

ভারতে শুধু অস্ত্র ব্যবসাই নয়, জাতিগত বা ধর্মভিত্তিক বিদ্বেষ ছড়াতেও ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার। অবশ্য, এবারই প্রথম নয়, এর আগেও কয়েকবার হোয়াটসঅ্যাপসহ মেটার বেশ কয়েকটি ই–কমার্স প্ল্যাটফর্মে অস্ত্র ও গোলাবারুদ বিপণনের অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে মোটা অঙ্কের জরিমানাও গুনেছে মেটা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানের সেবা ডিজিটাইজ করার নির্দেশ দিল সরকার

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

একাত্তর ও এক-এগারোর সময় বাংলাদেশ বিষয়ে মার্কিন নীতি ভুল ছিল: ড্যানিলোভিচ

সীতাকুণ্ডে সৈকতে বন্ধুকে বেঁধে রেখে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত