Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি ও কঠিন শর্তে বাণিজ্যচুক্তিতে পৌঁছাল জাপান

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৩ জুলাই ২০২৫, ১১: ৩৫
বিশাল বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি ও কঠিন শর্ত মানার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে পেরেছে জাপান। প্রতীকী ছবি
বিশাল বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি ও কঠিন শর্ত মানার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে পেরেছে জাপান। প্রতীকী ছবি

জাপানের সঙ্গে বিশাল বাণিজ্যচুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দীর্ঘ কয়েক মাসের বাণিজ্য আলোচনার পর এই চুক্তির ঘোষণা এল। তবে, এই চুক্তির বিনিময়ে ট্রাম্প জাপানের কাছ থেকে তাঁর দেশে ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জাপানের সঙ্গে ‘বিশাল’ বাণিজ্যচুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্প বলেছেন, এই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র জাপানি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। বিনিময়ে জাপান যুক্তরাষ্ট্রে ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। কেবল তাই-ই, এই বিনিয়োগের পর অর্জিত মুনাফার ৯০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রেই রাখতে হবে।

ট্রাম্প জাপানের সঙ্গে আমেরিকার যে ‘বিশাল’ চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন, তা সম্ভবত ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চুক্তি। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর জাপানি গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোর শেয়ারের দাম বেশ ভালোভাবেই বেড়েছে।

ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘আমরা জাপানের সঙ্গে এক বিশাল চুক্তি সম্পন্ন করেছি, সম্ভবত এটি এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় চুক্তি।’ তিনি আরও জানান, ‘আমার নির্দেশনা অনুযায়ী জাপান আমেরিকায় ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে, যার ৯০ শতাংশ মুনাফা আমেরিকাই পাবে।’

ট্রাম্প বলেন, এই চুক্তির ফলে জাপান মার্কিন গাড়ি, চাল এবং নির্দিষ্ট কিছু কৃষি পণ্যের রপ্তানির জন্য তাদের বাজার উন্মুক্ত করবে, যা ‘লাখ লাখ কর্মসংস্থান’ সৃষ্টি করবে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘এমন চুক্তি আগে কখনো হয়নি।’

স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের সঙ্গে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ট্রাম্প আরও জানান, উভয় পক্ষ আলাস্কায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আহরণে এক যৌথ উদ্যোগ গঠনের বিষয়েও একমত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি সবার জন্য একটি দারুণ চুক্তি। আমি সব সময় বলি, এটি সবার জন্য দুর্দান্ত হতে হবে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি আপনাদের বলতে পারি, এটি একটি দারুণ চুক্তি, অতীতের যেকোনো চুক্তিগুলোর থেকে আলাদা।’

এদিকে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা আজ বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি চুক্তির বিস্তারিত ‘সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা’ করবেন। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, এটি জাপানের জাতীয় স্বার্থের অনুকূল। ইশিবা বলেন, জাপানি গাড়ির ওপর মার্কিন শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হবে।

ওয়াশিংটনের হাডসন ইনস্টিটিউটের জাপান চেয়ারের ডেপুটি ডিরেক্টর উইলিয়াম চৌ লিংকডিন পোস্টে লিখেছেন, ‘১৫ শতাংশ নির্ধারিত পাল্টাপাল্টি শুল্ক জাপানের জন্য তুলনামূলকভাবে ভালো খবর, তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে যে—জাপান ইস্পাত এবং সেমিকন্ডাক্টরের মতো মূল ক্ষেত্রগুলোতে ধারা ২৩২ শুল্কের জন্য কোনো ব্যতিক্রম তৈরি করতে পেরেছে কিনা।’

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এই চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক চুক্তি’ হিসেবে প্রশংসা করেছেন। বেসেন্ট এক্সে বলেছেন, ‘আমি এই দীর্ঘস্থায়ী জোটকে আরও গভীর করতে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে একটি নতুন সুবর্ণ যুগে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন-জাপান সহযোগিতার পরবর্তী অধ্যায় গড়ে তোলার আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করতে পেরে খুশি।’

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি জাপান আমেরিকার পঞ্চম বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। মার্কিন আদমশুমারি ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে আমেরিকা ১৪৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের জাপানি পণ্য আমদানি করেছে, এই সময়ে জাপান ৭৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন মূল্যের মার্কিন পণ্য কিনেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত