Ajker Patrika

মাদকগ্রহণ নিয়ে বোনের বক্তব্যে বেকায়দায় ফিলিপিনো প্রেসিডেন্ট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বোন আইমি মার্কোসের সঙ্গে ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বা বংবং মার্কোস। ছবি: সংগৃহীত
বোন আইমি মার্কোসের সঙ্গে ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বা বংবং মার্কোস। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের বিচ্ছিন্ন সম্পর্কের বড় বোন ও সিনেটর আইমি মার্কোসের একটি প্রকাশ্য অভিযোগ ঘিরে দেশটির রাজনীতিতে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আইমির বক্তব্যের পর প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা তাঁর অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘দায়িত্বহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, সোমবার রাতে ম্যানিলার একটি জনসমাবেশে আইমি মার্কোস দাবি করেন, ছোটবেলা থেকেই তাঁর ভাই মাদক ব্যবহার করছেন এবং বিয়ের পর এই আসক্তি নাকি আরও বেড়েছে। বংবং নামে পরিচিত মার্কোস জুনিয়রের বর্তমান শাসনামলে দুর্নীতি, নীতিনির্ধারণে বিশৃঙ্খলা, জবাবদিহির অভাব—এসবের পেছনে তাঁর কোকেন আসক্তিকেই দায়ী করেছেন আইমি।

আইমি ও বংবং—দুজনই ফিলিপাইনের প্রয়াত স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসের সন্তান।

সমাবেশটি আয়োজিত হয়েছিল একটি প্রভাবশালী চার্চ গ্রুপের নেতৃত্বে এবং একটি বন্যা–নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগের প্রতিবাদে। সেখানে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বক্তৃতায় আইমি বলেন, ‘বাবা জীবিত থাকাকালে ওকে দেখভালের দায়িত্ব আমার ছিল না। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা ভয়াবহ হয়েছে। আমি জানতাম, সে মাদক নিচ্ছে।’

তিনি তাঁর ভাইকে চিকিৎসা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি আমার ভাইকে হারাতে চাই না। মাদকমুক্ত হওয়া এখন খুবই জরুরি।’

এদিকে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের যোগাযোগ–বিষয়ক উপসচিব ক্লেয়ার কাস্ত্রো আইমির অভিযোগকে সরাসরি নাকচ করে বলেছেন—এগুলো ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ এবং সম্ভবত সিনেটে দুর্নীতি নিয়ে চলমান তদন্ত থেকে মনোযোগ সরানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। তিনি আইমিকে অনুরোধ করেন তদন্তে সহযোগিতা করতে এবং দুর্নীতিবাজদের পক্ষ না নিতে।

এবারই প্রথম নয়, বংবং মার্কোসের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ এর আগেও উঠেছে। তবে ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার আগে তাঁর পক্ষ থেকে দুটি মেডিকেল রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়, যেখানে কোকেন ও মেথামফেটামিন–নেশার জন্য নমুনা পরীক্ষায় তিনি নেগেটিভ বলে উল্লেখ ছিল।

এবারের অভিযোগে নাম এসেছে প্রেসিডেন্টের স্ত্রী এবং তাঁর ছেলে ও প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলনেতা সান্দ্রো মার্কোসেরও। সান্দ্রো অভিযোগগুলোকে ‘বিপজ্জনকভাবে দায়িত্বহীন’ এবং ‘এক মিথ্যার জাল’ বলে উল্লেখ করেছেন।

ফিলিপিনো প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগের এই ঢেউ উঠেছে এমন সময়, যখন মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে অন্তত ৭৬টি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রায়ে কারাবন্দী আছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে। স্বচ্ছতার স্বার্থে প্রেসিডেন্ট বংবং মার্কোসকে চুলের ফলিকল পরীক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন দুতার্তের ছেলে ও দাভাও সিটির প্রতিনিধি পাওলো দুতার্তে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ