মো. ইকবাল হোসেন
দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। এই ঈদ নিয়ে আমাদের অনেক পরিকল্পনা থাকে। বাড়িতে চলে বাহারি রান্নার ধুম। ঈদ-পরবর্তী দিনগুলোতেও আমরা কোরবানির মাংসের বিভিন্ন পদের আয়োজন করে থাকি। এই সময়ে খাবারের প্রকারভেদ ও পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই আমরা না চাইলেও মনের অজান্তে হয়তো কিছু খাবার বেশি খেয়ে ফেলি; বিশেষ করে মাংস এবং মাংস দিয়ে তৈরি খাবারগুলো, যা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
এক দিনে কতটুকু মাংস খাওয়া যাবে
সুস্থ স্বাভাবিক ৭০ কেজির একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি সারা দিনে ২৫০-৩০০ গ্রাম মাংস খেতে পারেন। তবে অন্য কোনো প্রোটিনের উৎস থাকলে মাংসের পরিমাণ কমাতে হবে। যদি সারা দিনে একটা ডিম এবং ২-৩ কাপ মাঝারি ঘন ডাল খান, তাহলে প্রায় ২০০ গ্রাম মাংস খাওয়া যাবে। সেটা একবারে না খেয়ে সারা দিনে দুই-তিনবারে ভাগ করে খেতে হবে। সঙ্গে প্রতি বেলায় কিছু শাকসবজি বা সালাদ অবশ্যই রাখতে হবে।
অতিরিক্ত মাংস খেলে কী ক্ষতি
শরীরের চাহিদার চেয়ে বেশি মাছ বা মাংস কিংবা প্রোটিনজাতীয় খাবার খেলে কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন কনস্টিপেশন, রক্তের কোলেস্টেরল বেশি, উচ্চ রক্তচাপ, পাইলস, ফিসার, ইউরিক অ্যাসিড ইত্যাদির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
কিডনি রোগীর ক্ষেত্রে
কিডনি রোগীদের ফার্স্ট ক্লাস প্রোটিনের ৩০-৫০ শতাংশ কমাতে হবে। রেড মিটে সোডিয়ামের পরিমাণ কিছুটা বেশি থাকে। তাই গরু ও খাসি না খেয়ে মুরগির মাংস খাওয়া ভালো। বিচিজাতীয় খাবার; যেমন ডাল, ডালের তৈরি খাবার, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটি, বাদাম অথবা এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার বন্ধ করে দিতে হবে। লবণ কম খাবেন এবং লবণাক্ত খাবার বন্ধ করতে হবে।
হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল
হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য গরু ও খাসির মাংস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। চামড়া ছাড়া মুরগি
বা হাঁসের মাংস খাওয়া যাবে। তবে গরু বা খাসির মাংসের গায়ে যে সাদা চর্বি লেগে থাকে, সেটা বাদ দিয়ে রান্না করে ঝোল ছাড়া পরিমিত খাওয়া যাবে। কলিজা, মগজ, মাছের ডিম, দুধের সর, চিংড়ি মাছের মাথা, মেয়োনিজ, ডালডা, মার্জারিন কিংবা এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার খাবেন না।
ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা মিষ্টি এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। খেতে পারেন সরল কার্বোহাইড্রেটের পরিবর্তে জটিল কার্বোহাইড্রেট। সেই সঙ্গে তৈলাক্ত ও চর্বিজাতীয় খাবার খুব কম খেতে হবে। ডায়াবেটিসের রোগীরা গরু-খাসির চর্বিবিহীন মাংস পরিমিত খাবেন, কিন্তু মাংসের ঝোল না খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
ইউরিক অ্যাসিড
যাঁদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি, তাঁরা হাঁস, গরু, খাসির মাংস খাবেন না। সব ধরনের অর্গান মিট; যেমন কলিজা, মগজ, মাছের ডিম ও ভুঁড়ি খাওয়া যাবে না। সামুদ্রিক মাছ, বুটের ডাল, মটর ডাল খাবেন না। অন্যান্য ডালও কম খেতে হবে। তবে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে নিষিদ্ধ খাবারগুলো পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে।
ফ্যাটি লিভার
ফ্যাটি লিভারের সমস্যা থাকলে তেল-চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। আপনার জন্য খুব কম তেলে বা তেলছাড়া আলাদা মিক্স সবজি রান্না করবেন। মাছ-মাংস তেল দিয়ে রান্না হবে, কিন্তু আপনাকে ঝোল বাদ দিয়ে খেতে হবে। ভাত, রুটি বা অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট মেপে খেতে হবে।
আইবিএস
আইবিএসের রোগীরা দুধ এবং দুধের তৈরি খাবার খাবেন না। তবে ল্যাকটোজ ফ্রি দুধ দিয়ে রান্না করলে খাওয়া যাবে। শাক খাবেন না। আপনি শাক, দুধ এবং দুধের তৈরি খাবার খেলে পেটের পীড়া বেড়ে গিয়ে আপনার ঈদ আনন্দ বেদনায় রূপান্তরিত হতে পারে।
শিশু-কিশোর
শিশু-কিশোরদের খাবারে সব ধরনের খাদ্য উপাদান রাখতে হবে। এটা তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের উপযুক্ত সময়। তবে অধিক স্বাস্থ্যবান শিশু-কিশোরের ক্ষেত্রে তৈলাক্ত ও মিষ্টিজাতীয় খাবার কম দিতে হবে। শিশু-কিশোরদের প্রোটিনজাতীয় খাবার কিছুটা বেশি দিতে হবে। রান্নার ক্ষেত্রে গুড ফ্যাটসমৃদ্ধ তেল ব্যবহার করতে হবে।
দই-মিষ্টি কখন খাবেন
দই-মিষ্টি ক্যালরিবহুল খাবার। এতে ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই এসব খাবার কখনোই মূল খাবারের সঙ্গে খাবেন না। এগুলো স্ন্যাকস হিসেবে খাবেন এবং বিকেলের পরে এসব খাবার না খাওয়া ভালো।
পরামর্শ দিয়েছেন: জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম
দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। এই ঈদ নিয়ে আমাদের অনেক পরিকল্পনা থাকে। বাড়িতে চলে বাহারি রান্নার ধুম। ঈদ-পরবর্তী দিনগুলোতেও আমরা কোরবানির মাংসের বিভিন্ন পদের আয়োজন করে থাকি। এই সময়ে খাবারের প্রকারভেদ ও পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই আমরা না চাইলেও মনের অজান্তে হয়তো কিছু খাবার বেশি খেয়ে ফেলি; বিশেষ করে মাংস এবং মাংস দিয়ে তৈরি খাবারগুলো, যা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
এক দিনে কতটুকু মাংস খাওয়া যাবে
সুস্থ স্বাভাবিক ৭০ কেজির একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি সারা দিনে ২৫০-৩০০ গ্রাম মাংস খেতে পারেন। তবে অন্য কোনো প্রোটিনের উৎস থাকলে মাংসের পরিমাণ কমাতে হবে। যদি সারা দিনে একটা ডিম এবং ২-৩ কাপ মাঝারি ঘন ডাল খান, তাহলে প্রায় ২০০ গ্রাম মাংস খাওয়া যাবে। সেটা একবারে না খেয়ে সারা দিনে দুই-তিনবারে ভাগ করে খেতে হবে। সঙ্গে প্রতি বেলায় কিছু শাকসবজি বা সালাদ অবশ্যই রাখতে হবে।
অতিরিক্ত মাংস খেলে কী ক্ষতি
শরীরের চাহিদার চেয়ে বেশি মাছ বা মাংস কিংবা প্রোটিনজাতীয় খাবার খেলে কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন কনস্টিপেশন, রক্তের কোলেস্টেরল বেশি, উচ্চ রক্তচাপ, পাইলস, ফিসার, ইউরিক অ্যাসিড ইত্যাদির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
কিডনি রোগীর ক্ষেত্রে
কিডনি রোগীদের ফার্স্ট ক্লাস প্রোটিনের ৩০-৫০ শতাংশ কমাতে হবে। রেড মিটে সোডিয়ামের পরিমাণ কিছুটা বেশি থাকে। তাই গরু ও খাসি না খেয়ে মুরগির মাংস খাওয়া ভালো। বিচিজাতীয় খাবার; যেমন ডাল, ডালের তৈরি খাবার, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটি, বাদাম অথবা এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার বন্ধ করে দিতে হবে। লবণ কম খাবেন এবং লবণাক্ত খাবার বন্ধ করতে হবে।
হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল
হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য গরু ও খাসির মাংস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। চামড়া ছাড়া মুরগি
বা হাঁসের মাংস খাওয়া যাবে। তবে গরু বা খাসির মাংসের গায়ে যে সাদা চর্বি লেগে থাকে, সেটা বাদ দিয়ে রান্না করে ঝোল ছাড়া পরিমিত খাওয়া যাবে। কলিজা, মগজ, মাছের ডিম, দুধের সর, চিংড়ি মাছের মাথা, মেয়োনিজ, ডালডা, মার্জারিন কিংবা এগুলো দিয়ে তৈরি খাবার খাবেন না।
ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা মিষ্টি এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। খেতে পারেন সরল কার্বোহাইড্রেটের পরিবর্তে জটিল কার্বোহাইড্রেট। সেই সঙ্গে তৈলাক্ত ও চর্বিজাতীয় খাবার খুব কম খেতে হবে। ডায়াবেটিসের রোগীরা গরু-খাসির চর্বিবিহীন মাংস পরিমিত খাবেন, কিন্তু মাংসের ঝোল না খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
ইউরিক অ্যাসিড
যাঁদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি, তাঁরা হাঁস, গরু, খাসির মাংস খাবেন না। সব ধরনের অর্গান মিট; যেমন কলিজা, মগজ, মাছের ডিম ও ভুঁড়ি খাওয়া যাবে না। সামুদ্রিক মাছ, বুটের ডাল, মটর ডাল খাবেন না। অন্যান্য ডালও কম খেতে হবে। তবে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে নিষিদ্ধ খাবারগুলো পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে।
ফ্যাটি লিভার
ফ্যাটি লিভারের সমস্যা থাকলে তেল-চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। আপনার জন্য খুব কম তেলে বা তেলছাড়া আলাদা মিক্স সবজি রান্না করবেন। মাছ-মাংস তেল দিয়ে রান্না হবে, কিন্তু আপনাকে ঝোল বাদ দিয়ে খেতে হবে। ভাত, রুটি বা অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট মেপে খেতে হবে।
আইবিএস
আইবিএসের রোগীরা দুধ এবং দুধের তৈরি খাবার খাবেন না। তবে ল্যাকটোজ ফ্রি দুধ দিয়ে রান্না করলে খাওয়া যাবে। শাক খাবেন না। আপনি শাক, দুধ এবং দুধের তৈরি খাবার খেলে পেটের পীড়া বেড়ে গিয়ে আপনার ঈদ আনন্দ বেদনায় রূপান্তরিত হতে পারে।
শিশু-কিশোর
শিশু-কিশোরদের খাবারে সব ধরনের খাদ্য উপাদান রাখতে হবে। এটা তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের উপযুক্ত সময়। তবে অধিক স্বাস্থ্যবান শিশু-কিশোরের ক্ষেত্রে তৈলাক্ত ও মিষ্টিজাতীয় খাবার কম দিতে হবে। শিশু-কিশোরদের প্রোটিনজাতীয় খাবার কিছুটা বেশি দিতে হবে। রান্নার ক্ষেত্রে গুড ফ্যাটসমৃদ্ধ তেল ব্যবহার করতে হবে।
দই-মিষ্টি কখন খাবেন
দই-মিষ্টি ক্যালরিবহুল খাবার। এতে ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই এসব খাবার কখনোই মূল খাবারের সঙ্গে খাবেন না। এগুলো স্ন্যাকস হিসেবে খাবেন এবং বিকেলের পরে এসব খাবার না খাওয়া ভালো।
পরামর্শ দিয়েছেন: জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম
মাইগ্রেনের ভোগান্তি বিশ্বজুড়ে। শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যেই ১ কোটিরও বেশি মানুষ মাইগ্রেনে ভোগেন। এই অসুখ কর্মজীবন শেষ করে দিতে পারে, ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারে, এমনকি জীবনকেও ছোট করে দিতে পারে। তাই এর থেকে পরিত্রাণের জন্য যখন কোনো সহজ সমাধান সামনে আসে তখন অনেকেই সেটি চেষ্টা করে দেখেন।
২১ ঘণ্টা আগেনারীর শারীরিক শক্তি নিয়ে প্রচলিত ধারণা বদলে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা পুরুষদের ছাপিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি একাধিক নারী ক্রীড়াবিদ এমন নজির স্থাপন করেছেন, যা কেবল ক্রীড়াঙ্গনের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়। বরং এসব সাফল্য আমাদের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে বহু পুরোনো ধ্যানধারণার ভিতে নাড়া দিচ্ছে।
১ দিন আগেপ্রায় দেড় লাখেরও বেশি মুখ ও গলার ক্যানসার রোগী নতুন ইমিউনোথেরাপি ওষুধের মাধ্যমে দীর্ঘ সময় ক্যানসার মুক্ত থাকতে পারবেন। আন্তর্জাতিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল থেকে জানা গেছে, এই ওষুধ ক্যানসার ফিরে আসার ঝুঁকি কমিয়ে রোগীদের রোগমুক্ত থাকার সময় দ্বিগুণ করতে পারে।
২ দিন আগেমানেন আর না-ই মানেন, কোরবানির ঈদ মানেই মাংস খাওয়ার ধুম। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গরুই কোরবানি দেওয়া হয়। ফলে ঘরে ঘরে গরুর মাংসের নানান পদ তৈরি হতে থাকে ঈদের দিন থেকে। গরুর মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে, যদি তা সঠিক নিয়মে, পরিমিত এবং স্বাস্থ্যকর রান্নার পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা হয়...
২ দিন আগে