Ajker Patrika

শিশুদের ভাইরাসজনিত জ্বর হলে কী করবেন

ডা. অদিতি সরকার
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শিশুরা ভাইরাস সংক্রমণের প্রতি খুব সংবেদনশীল, বিশেষত মৌসুম পরিবর্তনের সময়। ভাইরাসজনিত জ্বর শিশুদের জন্য সাধারণ বিষয় হলেও কখনো কখনো তা গুরুতর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। যথাসময়ে টিকা দেওয়া হলে ভাইরাস জ্বরসহ নানা সংক্রামক রোগ থেকে শিশুরা সুরক্ষিত থাকে।

ভাইরাল ফিভারের কারণ

ভাইরাল ফিভার মূলত ভাইরাস সংক্রমণের কারণে হয়। এটি শ্বাসযন্ত্র, পরিপাকতন্ত্র কিংবা পুরো শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে। সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, অ্যাডেনোভাইরাস এবং করোনাভাইরাসের মতো ভাইরাসের সংক্রমণে শিশুদের জ্বর হতে পারে।

লক্ষণ

» জ্বর ১০০ ডিগ্রি থেকে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে

» গলাব্যথা ও সর্দি-কাশি

» শরীরে ব্যথা ও দুর্বলতা

» অরুচি ও বমিভাব

» চোখ লাল হওয়া বা পানি পড়া

» কিছু ক্ষেত্রে ডায়রিয়া হওয়া

চিকিৎসকের কাছে কখন যেতে হবে

» ৩ থেকে ৫ দিন পরও জ্বর না কমলে

» শিশু খুব বেশি নিস্তেজ হয়ে পড়লে

» শ্বাসকষ্ট বা কাশি তীব্র হলে

» শরীরে র‍্যাশ দেখা দিলে

» পর্যাপ্ত পানি পান না করলে

» ডিহাইড্রেশন দেখা দিলে

প্রাথমিক চিকিৎসা

জ্বর নিয়ন্ত্রণ: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল খাওয়ানো

পর্যাপ্ত বিশ্রাম: শিশুকে শারীরিকভাবে বিশ্রামে রাখতে হবে

ডিহাইড্রেশন: স্যালাইন, পানি, ফলের রস বা দুধ খাওয়ানো

পুষ্টিকর খাবার: রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: হাত ধোয়া, কাপড়চোপড় পরিষ্কার রাখা

বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা: গরমের দিনে বেশি গরম এবং শীতের দিনে অতিরিক্ত ঠান্ডা যেন শিশুদের না লাগে।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

» নিয়মিত হাত ধোয়া এবং শিশুদের ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা

» ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধে শিশুকে জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া, প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করা

» শিশুদের খাবার ও পানীয় স্বাস্থ্যসম্মত রাখা

শিশুদের টিকাকরণ কেন গুরুত্বপূর্ণ

» টিকাকরণ ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর উপায়। হাম, পোলিও, হেপাটাইটিস বি, রুবেলা ইত্যাদির মতো অনেক ভাইরাসজনিত রোগ টিকা দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়।

বাংলাদেশে শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় টিকা

১. বিসিজি: যক্ষ্মা প্রতিরোধে

২. পোলিও টিকা বা ওপিভি, আইপিভি: পোলিও ভাইরাস প্রতিরোধে

৩. হেপাটাইটিস বি: যকৃতের সংক্রমণ প্রতিরোধে

৪. ডিপথেরিয়া, পারটুসিস ও টিটেনাস বা ডিপিটি: ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে

৫. হাম-রুবেলা এমআর: হাম ও রুবেলা প্রতিরোধে

৬. রোটা ভাইরাস: শিশুদের ডায়রিয়া প্রতিরোধে

৭. ইনফ্লুয়েঞ্জা: মৌসুমি ভাইরাসজনিত জ্বর এবং নিউমোনিয়া প্রতিরোধে

টিকা গ্রহণের সুবিধা

» মারাত্মক সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা

» ভাইরাল ফিভারের তীব্রতা কমানো

» জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখা

» শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি।

ভাইরাল ফিভার শিশুদের জন্য অস্বস্তিকর এবং কখনো কখনো ঝুঁকিপূর্ণ। তবে যথাযথ পরিচর্যা ও টিকাকরণের মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ সম্ভব। তাই শিশুদের সুস্থ রাখতে, সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা নেওয়া এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

এনসিপির কর্মীদের ঢাকায় আনতে সরকারের বাস রিকুইজিশন, সমালোচনার ঝড়

সিরিয়ায় রাশিয়ার ঘাঁটি রাখতে যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের তদবির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত