Ajker Patrika

ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ায় নিশ্বাসের ব্যায়াম

অধ্যাপক সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব
ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ায় নিশ্বাসের ব্যায়াম

ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে ব্রিদিং এক্সারসাইজ বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বেশ ভালো। কারণ, ব্রিদিং এক্সারসাইজ বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম মূলত রিল্যাক্সিয়েশন এক্সারসাইজের একটি অংশ। যখন আমরা গভীরভাবে শ্বাস নিই, তখন শরীর গুরুত্বপূর্ণ নিউরোকেমিক্যাল নিঃসরণ করে। ফলে উদ্বেগ কমে ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ে বলে মানসিক চাপ কমে। উদ্বেগ, রাগ, দুশ্চিন্তা, ভয় কাজ করলে খুব স্বাভাবিকভাবেই আমাদের পেশি শক্ত হয়ে পড়ে ও স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যাহত হয়। এ সময় শান্ত হতে গভীরভাবে দম নেওয়া ও ধীরে ধীরে দম ছাড়া জরুরি। যখন আমরা গভীরভাবে শ্বাস নিই, তখন শরীরে এন্ডোরফিন হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যায়। এন্ডোরফিনকে বলা হয় ভালো হরমোন, যা প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে শরীর নিজেই তৈরি করে। একই সঙ্গে গভীরভাবে দম নেওয়া ও ধীরে ধীরে দম ছাড়লে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে যায় ও রক্ত চলাচল বাড়ে।

ধীরে ধীরে লম্বা দম নিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়লে শরীর খুব সহজে বিষাক্ত পদার্থমুক্ত হয় ও দ্রুত শিথিল হয়। যাঁরা ইনসমনিয়ায় ভুগছেন, তাঁদের ঘুমানোর আগে নিশ্বাসের ব্যায়াম করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

শরীর চাপমুক্ত করার জন্য প্রতিদিন ৫-১০ মিনিট শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা যেতে পারে। মেঝেতে সোজা হয়ে বসে ডান হাতের তালু বুকের ওপর ও বাম হাতের তালু পেটের মাঝামাঝি রেখে গভীর শ্বাস নিতে নিতে ১-৫ পর্যন্ত গুনুন। এরপর মনে মনে ১-৩ গুনতে যত সময় লাগে ততক্ষণ শ্বাস ধরে রেখে ১-৬ গুনতে গুনতে শ্বাস ছাড়ুন। দম ছাড়ার সময়টা বেশি হবে।

শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম হজমের পক্ষে সহায়ক।শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম একবার অভ্যাস হয়ে গেলে পরবর্তী সময়ে যেকোনো জায়গায় যেকোনো পরিস্থিতিতে আপনা-আপনি সে ব্যায়াম করতে সক্ষম হয়।
 ডিপ ব্রেথ বা গভীরভাবে দম নেওয়ার ফলে ফুসফুসে পর্যাপ্ত অক্সিজেন প্রবেশ করে এবং নিশ্বাস ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থ ও কার্বন ডাই-অক্সাইড বেরিয়ে যায়। রক্তে পর্যাপ্ত অক্সিজেন থাকলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে ও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারে। রক্ত পরিষ্কার ও বিষাক্ত পদার্থমুক্ত থাকলে সংক্রমিত রোগ প্রতিরোধ করা সহজ হয়। তা ছাড়া, শরীর খুব ভালোভাবে খাবারের ভিটামিন ও খনিজ শুষে নিতে পারে। ফলে আরোগ্য লাভ করা যায় দ্রুত।
এ ছাড়া ব্রিদিং এক্সারসাইজ আমাদের পাচনতন্ত্রসহ শরীরের সব অংশে প্রচুর অক্সিজেন সরবরাহ করে বলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্ত্রের ক্রিয়াও ঠিকভাবে চলতে থাকে, যা হজমের পক্ষে সহায়ক।

  • যোগব্যায়ামের আগে-পরে
  • যোগব্যায়ামের সর্বোচ্চ উপকার পাওয়ার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে পারেন
  • যোগব্যায়ামের অন্তত তিন ঘণ্টা আগে ভারী খাবার খেতে হবে। ভরা পেটে ইয়োগা করা যাবে না। অনেক বেশি পানি পান করা যাবে না।  
  • চুল বেঁধে নিতে হবে। অলংকার বা ঢিলা কাপড় পরা যাবে না। ব্যায়াম করার সময় ফোন হাতে নেবেন না।
  • শরীরে ব্যথা থাকলে বা ক্লান্ত থাকলে যোগব্যায়াম করবেন না। ব্লাড প্রেশার বা হার্টের সমস্যা থাকলে প্রশিক্ষককে জানাতে হবে।
  • যোগব্যায়ামের ৩০ মিনিট পর গোসল করতে হবে। খেতে হবে পুষ্টিকর খাবার। ডাবের পানি খেলে ভালো ফল পাবেন।
  • ইয়োগা ম্যাট, পানির বোতল ও টাওয়েল সঙ্গে নিতে হবে।
     
    লেখক: অধ্যাপক, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত