আজকের পত্রিকা ডেস্ক

অ্যান্ড্রু হ্যারিসন। যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ডের একটি যুব কেন্দ্রে পুরুষদের স্বাস্থ্য ক্লিনিক পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। একদিন ক্লিনিকের দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখেন সেখানে কেউ নেই। পরে আবার শুনলেন, কেউ তার নাম ডাকছে। চারদিকে তাকিয়ে পরে একটি জানালার পাশে এক যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। অবাক হয়ে কারণ জানতে চাইলে শোনেন ওই যুবক কনডম নিতে এসেছে।
কয়েক বছর আগের এই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে হ্যারিসন বলেন, ‘আমি প্রথম তলায় ছিলাম। ছেলেটা ভবনের বাইরের দিকের ড্রেনের পাইপ বেয়ে উপরে উঠে এসেছিল। সে সরাসরি রিসেপশনে এসে কনডম চাইতে লজ্জা পাচ্ছিল।’
এই ঘটনাটি তুলে ধরে যুক্তরাজ্যের পুরুষদের স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ভাবনার চিত্র। তাদের সমস্যাগুলোর পেছনে কারণ হিসেবে উঠে এসেছে—ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ এবং স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যোগাযোগ করার আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতার অভাব।
বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ধূমপান, অ্যালকোহল পান ও মাদক গ্রহণের কারণে যুক্তরাজ্যের পুরুষেরা উচ্চ কোলেস্টেরল ও রক্তচাপের সমস্যায় বেশি ভোগে। ৭৫ বছর বয়সের আগেই হৃদ্রোগ, ফুসফুসের ক্যানসার, লিভারের রোগ এবং দুর্ঘটনায় প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি হারে মৃত্যু হয়। এসব কারণে পুরুষদের গড় আয়ু নারীদের তুলনায় চার বছর কম।
পুরুষ স্বাস্থ্যে এই অবস্থা দেখে যুক্তরাজ্য কৌশল খুঁজছে কীভাবে পুরুষদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল। কারণ পুরুষেরা নারীদের তুলনায় কম বয়সে মারা যায়। কিন্তু পুরুষদের স্বাস্থ্যের অবস্থা এত খারাপ কেন এবং এ সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়ে এতকাল কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
দাতব্য সংস্থা মেনস হেলথ ফোরামের সহপ্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অ্যালান হোয়াইট লিডস বেকেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরুষদের জন্য একটি বিশেষ স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেন, পুরুষ স্বাস্থ্যের বিষয়টি আরও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা দরকার। উদাহরণ হিসেবে কোভিড মহামারির সময়কার কথা তুলে ধরেন তিনি।
হোয়াইট বলেন, কোভিডে নারীদের তুলনায় পুরুষ মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৯ হাজারেরও বেশি। সে সময় বিষয়টি নিয়ে কেউ ক্ষোভ দেখায়নি, যে কারণে বিষয়টি গুরুত্বও পায়নি।
হোয়াইট মনে করেন, শুধু জীবনধারার দোষ দিয়ে পুরুষদের খারাপ স্বাস্থ্যের ব্যাখ্যা দেওয়া খুব সহজ, কিন্তু ব্যাপারটি আসলে অনেক জটিল। এর পেছনে জৈবিক কারণও আছে। পুরুষদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে দুর্বল, যার ফলে সংক্রমণ সহজে প্রতিরোধ করতে পারে না। তবে অনেক পুরুষের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার দক্ষতাও কম থাকে।
অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘পুরুষেরা স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিষয়ে কম সচেতন। তারা কীভাবে নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলবে, কোন লক্ষণগুলো গুরুত্বপূর্ণ—তা চিনতে ও ব্যবস্থা নিতে শেখে না। সাধারণভাবে, কিশোর বয়স থেকে শুরু করে ৪০ বছর পর্যন্ত পুরুষদের স্বাস্থ্য প্রায় একই রকম থাকে। তারা অনেক সময় ধরে চিকিৎসকের কাছে যায় না।’
হোয়াইট বলেন, ‘নারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ, জরায়ু পরীক্ষা এবং পরে সন্তান জন্মদানের কারণে তারা নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যুক্ত থাকে, যেটা পুরুষদের ক্ষেত্রে হয় না।’
পুরুষ ও ছেলেদের বিষয়ে কাজ করে থাকে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ। তারা সরকারকে পুরুষদের জন্য একটি স্বাস্থ্য কৌশল তৈরি করতে উৎসাহিত করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই গ্রুপটির নীতিগত উপদেষ্টা মার্ক ব্রুকস মনে করেন এ অবস্থার পেছনে পুরুষের পুরুষত্ব জাহিরের চেষ্টাও একটা বড় কারণ।
তিনি বলেন, “আমাদের সমাজে পুরুষদের থেকে আলাদা রকমের প্রত্যাশা থাকে। তাদের বলা হয়, ‘পুরুষ হও’, শক্ত হও, সবকিছু চুপচাপ সহ্য করো।”
ব্রুকস মনে করেন, পুরুষদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে দারিদ্র্যের প্রভাবকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। সবচেয়ে দরিদ্র ১০ শতাংশ এলাকার মানুষের গড় আয়ু সবচেয়ে ধনী এলাকার তুলনায় ১০ বছর কম। এই পার্থক্য নারীদের চেয়ে পুরুষদের ক্ষেত্রে আরও বেশি। সবচেয়ে দরিদ্র এলাকাগুলোতে একজন পুরুষের ৭৫ বছর বয়সের আগেই মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ৩ দশমিক ৫ গুণ বেশি।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা এনএইচএস প্রতি ৪০ থেকে ৭৪ বছর বয়সীদের প্রতি পাঁচ বছর অন্তর একটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সুযোগ দেয়। এটি এমন অনেক রোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যেগুলোতে অবহেলার কারণে পুরুষদের অকালে মৃত্যু হয়ে থাকে। কিন্তু দেখা যায়, দশজন পুরুষের মধ্যে চারজনেরও কম এই সুযোগ গ্রহণ করেন।
ব্রুকস বলেন, “স্বাস্থ্যসেবার যেভাবে নকশা করা হয়েছে, তা পুরুষদের জন্য কার্যকরভাবে কাজ করছে না। আপনি পিছিয়ে পড়া সমাজ ও নির্মাণ বা কারখানার মতো ‘ব্লু-কলার’ পেশার শ্রমিকদের অবস্থা উপেক্ষা করতে পারেন না। নির্মাণকাজ বা কোনো ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় কাজ করা একজন লোকের পক্ষে স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা জিপির কাছে যাওয়ার জন্য ছুটি নেওয়া খুব কঠিন। ”
তিনি আশা করেন, কর্মীদের দুই ঘণ্টা বেতনসহ ছুটি দেওয়া হবে যাতে তাঁরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যেতে পারে। পাশাপাশি, এই স্বাস্থ্যসেবাগুলো যেন শিল্প এলাকা বা কারখানার কর্মীদের কর্মস্থলেই দেওয়া হয়।
তবে মার্ক ব্রুকস এটাও বলেন, শুধু স্বাস্থ্যসেবা নয়, বিষয়টি কর্মসংস্থানের সঙ্গেও জড়িত। পুরুষদের ৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে যেসব শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে, তাদের অনেকে এই সমস্যা প্রকাশ করতে ভয় পান। অনেকে প্রাথমিক লক্ষণগুলো উপেক্ষা করেন বা অসুস্থতা বসের কাছ থেকে গোপন রাখেন। তারা ভাবেন এতে তাদের চাকরি বা আয়ের ক্ষতি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘চাকরি নিয়ে উদ্বেগ, আর্থিক দুশ্চিন্তা ও সম্পর্কজনিত সমস্যাগুলোই পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যার উচ্চহারের অন্যতম কারণ। আত্মহত্যা করা ব্যক্তিদের চার ভাগের তিন ভাগই পুরুষ।’
মেনস হেলথ ফোরামের সহপ্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অ্যালান হোয়াইট বলেন, বর্তমানে চলমান কাউন্সেলিংয়ের ধরনগুলো পুরুষদের মানসিক অবসাদ বা উদ্বেগের লক্ষণগুলো সহজে ধরতে পারে না। সেগুলোর পরিষেবাগুলো পুরুষদের প্রকাশভঙ্গির সঙ্গে মেলে না। পুরুষেরা সাধারণত রাগ দেখায়, অতিরিক্ত অ্যালকোহল খায় অথবা চুপচাপ হয়ে যায় ও মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়।
এসব ক্ষেত্রে জাতিগত পার্থক্যগুলোও গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন হোয়াইট। তিনি বলেন, ইংল্যান্ডে কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ আর ভারত বা বাংলাদেশ থেকে আসা পুরুষদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি।
তবে এসব তথ্যের মানে এটা নয় যে, পুরুষেরা তাদের নিজের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন হতে আগ্রহী নয়। ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরুষ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পল গ্যালডাস বলেন, ‘পুরুষেরা নিজেদের কথা বলতে চায়, যুক্ত হতে চায় কিন্তু সেটা করতে হলে কার্যকর কাজ ও কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সুযোগ তৈরি করতে হবে।’
গ্যালডাস পুরুষ স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা সংস্থা ‘মোভেম্বার’-এর সঙ্গে একটি ছয় সপ্তাহের মানসিক ফিটনেস প্রোগ্রাম তৈরি করতে কাজ করেছেন। কোভিডের পর এনএইচএসের ফ্রন্টলাইন কর্মীদের ওপর এটি পরীক্ষা করা হয়েছিল। এখন এটি লিডস ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব তাদের যুব খেলোয়াড়দের জন্য ব্যবহার করছে।
এই প্রোগ্রামে পুরুষদের নিজেদের আচরণ কীভাবে মনের অবস্থাকে প্রভাবিত করে তা বুঝতে সাহায্য করা হয়। নিজেদের অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করতে ও স্বাস্থ্যকর কাজের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে তাদের উৎসাহ দেওয়া হয়।
গ্যালডাস বলেন, ‘এটা হতে পারে হাঁটতে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, গলফ খেলা কিংবা সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তৈরি করা। এসব কাজ মানসিক স্বাস্থ্যকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ভালো মানসিক স্বাস্থ্য থেকে আসে ভালো শারীরিক স্বাস্থ্য।’
বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা স্থানীয় পর্যায়ে স্থানীয় পরিষদ এবং পুরুষদের বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে মিলে পুরুষ স্বাস্থ্যের জন্য এ ধরনের প্রোগ্রাম তৈরির চেষ্টা করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় উদ্যোগগুলোর একটি হলো—মেনস শেডস মুভমেন্ট। এখানে পুরুষদের একত্রিত হওয়ার সুযোগ মেলে। তাঁরা একসঙ্গে বসে ব্যবহারিক প্রকল্পের কাজ করতে করতে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে এবং একে অপরকে মানসিকভাবে সহায়তা করে।
অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, এই ইতিবাচক উদ্যোগগুলোকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এখনই সময়। এ জন্য একটি জাতীয় পুরুষ স্বাস্থ্য কৌশল তৈরি করা খুবই জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
হোয়াইট বলেন, যুক্তরাজ্যে ২০২২ সালে নারীদের স্বাস্থ্য কৌশল তৈরি হয়েছিল। জাতীয় পুরুষ স্বাস্থ্য কৌশলটি তেমনই পুরুষদের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে কাজ করবে। তিনি আশা করেন, এই কৌশলটি পুরুষদের জন্য একটি ‘জেগে ওঠার বার্তা’ হিসেবে কাজ করবে।
পুরুষদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘আপনার কোমরের মাপ দেখুন। যদি বেশি ওজন থাকে, যদি পেট বড় হয়ে যায়, তাহলে এর পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। শরীরচর্চা করুন, বাইরে যান, মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। সুযোগ পেলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং করান। আর শরীরে কোনো পরিবর্তন দেখলে বা সমস্যা দেখা দিলে সাহায্য নিন।’

অ্যান্ড্রু হ্যারিসন। যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ডের একটি যুব কেন্দ্রে পুরুষদের স্বাস্থ্য ক্লিনিক পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। একদিন ক্লিনিকের দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখেন সেখানে কেউ নেই। পরে আবার শুনলেন, কেউ তার নাম ডাকছে। চারদিকে তাকিয়ে পরে একটি জানালার পাশে এক যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। অবাক হয়ে কারণ জানতে চাইলে শোনেন ওই যুবক কনডম নিতে এসেছে।
কয়েক বছর আগের এই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে হ্যারিসন বলেন, ‘আমি প্রথম তলায় ছিলাম। ছেলেটা ভবনের বাইরের দিকের ড্রেনের পাইপ বেয়ে উপরে উঠে এসেছিল। সে সরাসরি রিসেপশনে এসে কনডম চাইতে লজ্জা পাচ্ছিল।’
এই ঘটনাটি তুলে ধরে যুক্তরাজ্যের পুরুষদের স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ভাবনার চিত্র। তাদের সমস্যাগুলোর পেছনে কারণ হিসেবে উঠে এসেছে—ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ এবং স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যোগাযোগ করার আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতার অভাব।
বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ধূমপান, অ্যালকোহল পান ও মাদক গ্রহণের কারণে যুক্তরাজ্যের পুরুষেরা উচ্চ কোলেস্টেরল ও রক্তচাপের সমস্যায় বেশি ভোগে। ৭৫ বছর বয়সের আগেই হৃদ্রোগ, ফুসফুসের ক্যানসার, লিভারের রোগ এবং দুর্ঘটনায় প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি হারে মৃত্যু হয়। এসব কারণে পুরুষদের গড় আয়ু নারীদের তুলনায় চার বছর কম।
পুরুষ স্বাস্থ্যে এই অবস্থা দেখে যুক্তরাজ্য কৌশল খুঁজছে কীভাবে পুরুষদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল। কারণ পুরুষেরা নারীদের তুলনায় কম বয়সে মারা যায়। কিন্তু পুরুষদের স্বাস্থ্যের অবস্থা এত খারাপ কেন এবং এ সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়ে এতকাল কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
দাতব্য সংস্থা মেনস হেলথ ফোরামের সহপ্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অ্যালান হোয়াইট লিডস বেকেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরুষদের জন্য একটি বিশেষ স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেন, পুরুষ স্বাস্থ্যের বিষয়টি আরও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা দরকার। উদাহরণ হিসেবে কোভিড মহামারির সময়কার কথা তুলে ধরেন তিনি।
হোয়াইট বলেন, কোভিডে নারীদের তুলনায় পুরুষ মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৯ হাজারেরও বেশি। সে সময় বিষয়টি নিয়ে কেউ ক্ষোভ দেখায়নি, যে কারণে বিষয়টি গুরুত্বও পায়নি।
হোয়াইট মনে করেন, শুধু জীবনধারার দোষ দিয়ে পুরুষদের খারাপ স্বাস্থ্যের ব্যাখ্যা দেওয়া খুব সহজ, কিন্তু ব্যাপারটি আসলে অনেক জটিল। এর পেছনে জৈবিক কারণও আছে। পুরুষদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে দুর্বল, যার ফলে সংক্রমণ সহজে প্রতিরোধ করতে পারে না। তবে অনেক পুরুষের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার দক্ষতাও কম থাকে।
অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘পুরুষেরা স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিষয়ে কম সচেতন। তারা কীভাবে নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলবে, কোন লক্ষণগুলো গুরুত্বপূর্ণ—তা চিনতে ও ব্যবস্থা নিতে শেখে না। সাধারণভাবে, কিশোর বয়স থেকে শুরু করে ৪০ বছর পর্যন্ত পুরুষদের স্বাস্থ্য প্রায় একই রকম থাকে। তারা অনেক সময় ধরে চিকিৎসকের কাছে যায় না।’
হোয়াইট বলেন, ‘নারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ, জরায়ু পরীক্ষা এবং পরে সন্তান জন্মদানের কারণে তারা নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যুক্ত থাকে, যেটা পুরুষদের ক্ষেত্রে হয় না।’
পুরুষ ও ছেলেদের বিষয়ে কাজ করে থাকে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ। তারা সরকারকে পুরুষদের জন্য একটি স্বাস্থ্য কৌশল তৈরি করতে উৎসাহিত করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই গ্রুপটির নীতিগত উপদেষ্টা মার্ক ব্রুকস মনে করেন এ অবস্থার পেছনে পুরুষের পুরুষত্ব জাহিরের চেষ্টাও একটা বড় কারণ।
তিনি বলেন, “আমাদের সমাজে পুরুষদের থেকে আলাদা রকমের প্রত্যাশা থাকে। তাদের বলা হয়, ‘পুরুষ হও’, শক্ত হও, সবকিছু চুপচাপ সহ্য করো।”
ব্রুকস মনে করেন, পুরুষদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে দারিদ্র্যের প্রভাবকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। সবচেয়ে দরিদ্র ১০ শতাংশ এলাকার মানুষের গড় আয়ু সবচেয়ে ধনী এলাকার তুলনায় ১০ বছর কম। এই পার্থক্য নারীদের চেয়ে পুরুষদের ক্ষেত্রে আরও বেশি। সবচেয়ে দরিদ্র এলাকাগুলোতে একজন পুরুষের ৭৫ বছর বয়সের আগেই মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ৩ দশমিক ৫ গুণ বেশি।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা এনএইচএস প্রতি ৪০ থেকে ৭৪ বছর বয়সীদের প্রতি পাঁচ বছর অন্তর একটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সুযোগ দেয়। এটি এমন অনেক রোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যেগুলোতে অবহেলার কারণে পুরুষদের অকালে মৃত্যু হয়ে থাকে। কিন্তু দেখা যায়, দশজন পুরুষের মধ্যে চারজনেরও কম এই সুযোগ গ্রহণ করেন।
ব্রুকস বলেন, “স্বাস্থ্যসেবার যেভাবে নকশা করা হয়েছে, তা পুরুষদের জন্য কার্যকরভাবে কাজ করছে না। আপনি পিছিয়ে পড়া সমাজ ও নির্মাণ বা কারখানার মতো ‘ব্লু-কলার’ পেশার শ্রমিকদের অবস্থা উপেক্ষা করতে পারেন না। নির্মাণকাজ বা কোনো ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় কাজ করা একজন লোকের পক্ষে স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা জিপির কাছে যাওয়ার জন্য ছুটি নেওয়া খুব কঠিন। ”
তিনি আশা করেন, কর্মীদের দুই ঘণ্টা বেতনসহ ছুটি দেওয়া হবে যাতে তাঁরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যেতে পারে। পাশাপাশি, এই স্বাস্থ্যসেবাগুলো যেন শিল্প এলাকা বা কারখানার কর্মীদের কর্মস্থলেই দেওয়া হয়।
তবে মার্ক ব্রুকস এটাও বলেন, শুধু স্বাস্থ্যসেবা নয়, বিষয়টি কর্মসংস্থানের সঙ্গেও জড়িত। পুরুষদের ৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে যেসব শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে, তাদের অনেকে এই সমস্যা প্রকাশ করতে ভয় পান। অনেকে প্রাথমিক লক্ষণগুলো উপেক্ষা করেন বা অসুস্থতা বসের কাছ থেকে গোপন রাখেন। তারা ভাবেন এতে তাদের চাকরি বা আয়ের ক্ষতি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘চাকরি নিয়ে উদ্বেগ, আর্থিক দুশ্চিন্তা ও সম্পর্কজনিত সমস্যাগুলোই পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যার উচ্চহারের অন্যতম কারণ। আত্মহত্যা করা ব্যক্তিদের চার ভাগের তিন ভাগই পুরুষ।’
মেনস হেলথ ফোরামের সহপ্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অ্যালান হোয়াইট বলেন, বর্তমানে চলমান কাউন্সেলিংয়ের ধরনগুলো পুরুষদের মানসিক অবসাদ বা উদ্বেগের লক্ষণগুলো সহজে ধরতে পারে না। সেগুলোর পরিষেবাগুলো পুরুষদের প্রকাশভঙ্গির সঙ্গে মেলে না। পুরুষেরা সাধারণত রাগ দেখায়, অতিরিক্ত অ্যালকোহল খায় অথবা চুপচাপ হয়ে যায় ও মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়।
এসব ক্ষেত্রে জাতিগত পার্থক্যগুলোও গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন হোয়াইট। তিনি বলেন, ইংল্যান্ডে কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ আর ভারত বা বাংলাদেশ থেকে আসা পুরুষদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি।
তবে এসব তথ্যের মানে এটা নয় যে, পুরুষেরা তাদের নিজের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন হতে আগ্রহী নয়। ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরুষ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পল গ্যালডাস বলেন, ‘পুরুষেরা নিজেদের কথা বলতে চায়, যুক্ত হতে চায় কিন্তু সেটা করতে হলে কার্যকর কাজ ও কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সুযোগ তৈরি করতে হবে।’
গ্যালডাস পুরুষ স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা সংস্থা ‘মোভেম্বার’-এর সঙ্গে একটি ছয় সপ্তাহের মানসিক ফিটনেস প্রোগ্রাম তৈরি করতে কাজ করেছেন। কোভিডের পর এনএইচএসের ফ্রন্টলাইন কর্মীদের ওপর এটি পরীক্ষা করা হয়েছিল। এখন এটি লিডস ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব তাদের যুব খেলোয়াড়দের জন্য ব্যবহার করছে।
এই প্রোগ্রামে পুরুষদের নিজেদের আচরণ কীভাবে মনের অবস্থাকে প্রভাবিত করে তা বুঝতে সাহায্য করা হয়। নিজেদের অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করতে ও স্বাস্থ্যকর কাজের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে তাদের উৎসাহ দেওয়া হয়।
গ্যালডাস বলেন, ‘এটা হতে পারে হাঁটতে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, গলফ খেলা কিংবা সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তৈরি করা। এসব কাজ মানসিক স্বাস্থ্যকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ভালো মানসিক স্বাস্থ্য থেকে আসে ভালো শারীরিক স্বাস্থ্য।’
বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা স্থানীয় পর্যায়ে স্থানীয় পরিষদ এবং পুরুষদের বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে মিলে পুরুষ স্বাস্থ্যের জন্য এ ধরনের প্রোগ্রাম তৈরির চেষ্টা করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় উদ্যোগগুলোর একটি হলো—মেনস শেডস মুভমেন্ট। এখানে পুরুষদের একত্রিত হওয়ার সুযোগ মেলে। তাঁরা একসঙ্গে বসে ব্যবহারিক প্রকল্পের কাজ করতে করতে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে এবং একে অপরকে মানসিকভাবে সহায়তা করে।
অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, এই ইতিবাচক উদ্যোগগুলোকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এখনই সময়। এ জন্য একটি জাতীয় পুরুষ স্বাস্থ্য কৌশল তৈরি করা খুবই জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
হোয়াইট বলেন, যুক্তরাজ্যে ২০২২ সালে নারীদের স্বাস্থ্য কৌশল তৈরি হয়েছিল। জাতীয় পুরুষ স্বাস্থ্য কৌশলটি তেমনই পুরুষদের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে কাজ করবে। তিনি আশা করেন, এই কৌশলটি পুরুষদের জন্য একটি ‘জেগে ওঠার বার্তা’ হিসেবে কাজ করবে।
পুরুষদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘আপনার কোমরের মাপ দেখুন। যদি বেশি ওজন থাকে, যদি পেট বড় হয়ে যায়, তাহলে এর পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। শরীরচর্চা করুন, বাইরে যান, মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। সুযোগ পেলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং করান। আর শরীরে কোনো পরিবর্তন দেখলে বা সমস্যা দেখা দিলে সাহায্য নিন।’
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

অ্যান্ড্রু হ্যারিসন। যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ডের একটি যুব কেন্দ্রে পুরুষদের স্বাস্থ্য ক্লিনিক পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। একদিন ক্লিনিকের দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখেন সেখানে কেউ নেই। পরে আবার শুনলেন, কেউ তার নাম ডাকছে। চারদিকে তাকিয়ে পরে একটি জানালার পাশে এক যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। অবাক হয়ে কারণ জানতে চাইলে শোনেন ওই যুবক কনডম নিতে এসেছে।
কয়েক বছর আগের এই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে হ্যারিসন বলেন, ‘আমি প্রথম তলায় ছিলাম। ছেলেটা ভবনের বাইরের দিকের ড্রেনের পাইপ বেয়ে উপরে উঠে এসেছিল। সে সরাসরি রিসেপশনে এসে কনডম চাইতে লজ্জা পাচ্ছিল।’
এই ঘটনাটি তুলে ধরে যুক্তরাজ্যের পুরুষদের স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ভাবনার চিত্র। তাদের সমস্যাগুলোর পেছনে কারণ হিসেবে উঠে এসেছে—ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ এবং স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যোগাযোগ করার আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতার অভাব।
বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ধূমপান, অ্যালকোহল পান ও মাদক গ্রহণের কারণে যুক্তরাজ্যের পুরুষেরা উচ্চ কোলেস্টেরল ও রক্তচাপের সমস্যায় বেশি ভোগে। ৭৫ বছর বয়সের আগেই হৃদ্রোগ, ফুসফুসের ক্যানসার, লিভারের রোগ এবং দুর্ঘটনায় প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি হারে মৃত্যু হয়। এসব কারণে পুরুষদের গড় আয়ু নারীদের তুলনায় চার বছর কম।
পুরুষ স্বাস্থ্যে এই অবস্থা দেখে যুক্তরাজ্য কৌশল খুঁজছে কীভাবে পুরুষদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল। কারণ পুরুষেরা নারীদের তুলনায় কম বয়সে মারা যায়। কিন্তু পুরুষদের স্বাস্থ্যের অবস্থা এত খারাপ কেন এবং এ সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়ে এতকাল কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
দাতব্য সংস্থা মেনস হেলথ ফোরামের সহপ্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অ্যালান হোয়াইট লিডস বেকেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরুষদের জন্য একটি বিশেষ স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেন, পুরুষ স্বাস্থ্যের বিষয়টি আরও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা দরকার। উদাহরণ হিসেবে কোভিড মহামারির সময়কার কথা তুলে ধরেন তিনি।
হোয়াইট বলেন, কোভিডে নারীদের তুলনায় পুরুষ মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৯ হাজারেরও বেশি। সে সময় বিষয়টি নিয়ে কেউ ক্ষোভ দেখায়নি, যে কারণে বিষয়টি গুরুত্বও পায়নি।
হোয়াইট মনে করেন, শুধু জীবনধারার দোষ দিয়ে পুরুষদের খারাপ স্বাস্থ্যের ব্যাখ্যা দেওয়া খুব সহজ, কিন্তু ব্যাপারটি আসলে অনেক জটিল। এর পেছনে জৈবিক কারণও আছে। পুরুষদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে দুর্বল, যার ফলে সংক্রমণ সহজে প্রতিরোধ করতে পারে না। তবে অনেক পুরুষের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার দক্ষতাও কম থাকে।
অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘পুরুষেরা স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিষয়ে কম সচেতন। তারা কীভাবে নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলবে, কোন লক্ষণগুলো গুরুত্বপূর্ণ—তা চিনতে ও ব্যবস্থা নিতে শেখে না। সাধারণভাবে, কিশোর বয়স থেকে শুরু করে ৪০ বছর পর্যন্ত পুরুষদের স্বাস্থ্য প্রায় একই রকম থাকে। তারা অনেক সময় ধরে চিকিৎসকের কাছে যায় না।’
হোয়াইট বলেন, ‘নারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ, জরায়ু পরীক্ষা এবং পরে সন্তান জন্মদানের কারণে তারা নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যুক্ত থাকে, যেটা পুরুষদের ক্ষেত্রে হয় না।’
পুরুষ ও ছেলেদের বিষয়ে কাজ করে থাকে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ। তারা সরকারকে পুরুষদের জন্য একটি স্বাস্থ্য কৌশল তৈরি করতে উৎসাহিত করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই গ্রুপটির নীতিগত উপদেষ্টা মার্ক ব্রুকস মনে করেন এ অবস্থার পেছনে পুরুষের পুরুষত্ব জাহিরের চেষ্টাও একটা বড় কারণ।
তিনি বলেন, “আমাদের সমাজে পুরুষদের থেকে আলাদা রকমের প্রত্যাশা থাকে। তাদের বলা হয়, ‘পুরুষ হও’, শক্ত হও, সবকিছু চুপচাপ সহ্য করো।”
ব্রুকস মনে করেন, পুরুষদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে দারিদ্র্যের প্রভাবকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। সবচেয়ে দরিদ্র ১০ শতাংশ এলাকার মানুষের গড় আয়ু সবচেয়ে ধনী এলাকার তুলনায় ১০ বছর কম। এই পার্থক্য নারীদের চেয়ে পুরুষদের ক্ষেত্রে আরও বেশি। সবচেয়ে দরিদ্র এলাকাগুলোতে একজন পুরুষের ৭৫ বছর বয়সের আগেই মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ৩ দশমিক ৫ গুণ বেশি।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা এনএইচএস প্রতি ৪০ থেকে ৭৪ বছর বয়সীদের প্রতি পাঁচ বছর অন্তর একটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সুযোগ দেয়। এটি এমন অনেক রোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যেগুলোতে অবহেলার কারণে পুরুষদের অকালে মৃত্যু হয়ে থাকে। কিন্তু দেখা যায়, দশজন পুরুষের মধ্যে চারজনেরও কম এই সুযোগ গ্রহণ করেন।
ব্রুকস বলেন, “স্বাস্থ্যসেবার যেভাবে নকশা করা হয়েছে, তা পুরুষদের জন্য কার্যকরভাবে কাজ করছে না। আপনি পিছিয়ে পড়া সমাজ ও নির্মাণ বা কারখানার মতো ‘ব্লু-কলার’ পেশার শ্রমিকদের অবস্থা উপেক্ষা করতে পারেন না। নির্মাণকাজ বা কোনো ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় কাজ করা একজন লোকের পক্ষে স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা জিপির কাছে যাওয়ার জন্য ছুটি নেওয়া খুব কঠিন। ”
তিনি আশা করেন, কর্মীদের দুই ঘণ্টা বেতনসহ ছুটি দেওয়া হবে যাতে তাঁরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যেতে পারে। পাশাপাশি, এই স্বাস্থ্যসেবাগুলো যেন শিল্প এলাকা বা কারখানার কর্মীদের কর্মস্থলেই দেওয়া হয়।
তবে মার্ক ব্রুকস এটাও বলেন, শুধু স্বাস্থ্যসেবা নয়, বিষয়টি কর্মসংস্থানের সঙ্গেও জড়িত। পুরুষদের ৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে যেসব শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে, তাদের অনেকে এই সমস্যা প্রকাশ করতে ভয় পান। অনেকে প্রাথমিক লক্ষণগুলো উপেক্ষা করেন বা অসুস্থতা বসের কাছ থেকে গোপন রাখেন। তারা ভাবেন এতে তাদের চাকরি বা আয়ের ক্ষতি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘চাকরি নিয়ে উদ্বেগ, আর্থিক দুশ্চিন্তা ও সম্পর্কজনিত সমস্যাগুলোই পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যার উচ্চহারের অন্যতম কারণ। আত্মহত্যা করা ব্যক্তিদের চার ভাগের তিন ভাগই পুরুষ।’
মেনস হেলথ ফোরামের সহপ্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অ্যালান হোয়াইট বলেন, বর্তমানে চলমান কাউন্সেলিংয়ের ধরনগুলো পুরুষদের মানসিক অবসাদ বা উদ্বেগের লক্ষণগুলো সহজে ধরতে পারে না। সেগুলোর পরিষেবাগুলো পুরুষদের প্রকাশভঙ্গির সঙ্গে মেলে না। পুরুষেরা সাধারণত রাগ দেখায়, অতিরিক্ত অ্যালকোহল খায় অথবা চুপচাপ হয়ে যায় ও মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়।
এসব ক্ষেত্রে জাতিগত পার্থক্যগুলোও গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন হোয়াইট। তিনি বলেন, ইংল্যান্ডে কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ আর ভারত বা বাংলাদেশ থেকে আসা পুরুষদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি।
তবে এসব তথ্যের মানে এটা নয় যে, পুরুষেরা তাদের নিজের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন হতে আগ্রহী নয়। ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরুষ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পল গ্যালডাস বলেন, ‘পুরুষেরা নিজেদের কথা বলতে চায়, যুক্ত হতে চায় কিন্তু সেটা করতে হলে কার্যকর কাজ ও কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সুযোগ তৈরি করতে হবে।’
গ্যালডাস পুরুষ স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা সংস্থা ‘মোভেম্বার’-এর সঙ্গে একটি ছয় সপ্তাহের মানসিক ফিটনেস প্রোগ্রাম তৈরি করতে কাজ করেছেন। কোভিডের পর এনএইচএসের ফ্রন্টলাইন কর্মীদের ওপর এটি পরীক্ষা করা হয়েছিল। এখন এটি লিডস ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব তাদের যুব খেলোয়াড়দের জন্য ব্যবহার করছে।
এই প্রোগ্রামে পুরুষদের নিজেদের আচরণ কীভাবে মনের অবস্থাকে প্রভাবিত করে তা বুঝতে সাহায্য করা হয়। নিজেদের অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করতে ও স্বাস্থ্যকর কাজের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে তাদের উৎসাহ দেওয়া হয়।
গ্যালডাস বলেন, ‘এটা হতে পারে হাঁটতে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, গলফ খেলা কিংবা সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তৈরি করা। এসব কাজ মানসিক স্বাস্থ্যকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ভালো মানসিক স্বাস্থ্য থেকে আসে ভালো শারীরিক স্বাস্থ্য।’
বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা স্থানীয় পর্যায়ে স্থানীয় পরিষদ এবং পুরুষদের বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে মিলে পুরুষ স্বাস্থ্যের জন্য এ ধরনের প্রোগ্রাম তৈরির চেষ্টা করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় উদ্যোগগুলোর একটি হলো—মেনস শেডস মুভমেন্ট। এখানে পুরুষদের একত্রিত হওয়ার সুযোগ মেলে। তাঁরা একসঙ্গে বসে ব্যবহারিক প্রকল্পের কাজ করতে করতে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে এবং একে অপরকে মানসিকভাবে সহায়তা করে।
অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, এই ইতিবাচক উদ্যোগগুলোকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এখনই সময়। এ জন্য একটি জাতীয় পুরুষ স্বাস্থ্য কৌশল তৈরি করা খুবই জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
হোয়াইট বলেন, যুক্তরাজ্যে ২০২২ সালে নারীদের স্বাস্থ্য কৌশল তৈরি হয়েছিল। জাতীয় পুরুষ স্বাস্থ্য কৌশলটি তেমনই পুরুষদের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে কাজ করবে। তিনি আশা করেন, এই কৌশলটি পুরুষদের জন্য একটি ‘জেগে ওঠার বার্তা’ হিসেবে কাজ করবে।
পুরুষদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘আপনার কোমরের মাপ দেখুন। যদি বেশি ওজন থাকে, যদি পেট বড় হয়ে যায়, তাহলে এর পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। শরীরচর্চা করুন, বাইরে যান, মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। সুযোগ পেলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং করান। আর শরীরে কোনো পরিবর্তন দেখলে বা সমস্যা দেখা দিলে সাহায্য নিন।’

অ্যান্ড্রু হ্যারিসন। যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডফোর্ডের একটি যুব কেন্দ্রে পুরুষদের স্বাস্থ্য ক্লিনিক পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। একদিন ক্লিনিকের দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখেন সেখানে কেউ নেই। পরে আবার শুনলেন, কেউ তার নাম ডাকছে। চারদিকে তাকিয়ে পরে একটি জানালার পাশে এক যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। অবাক হয়ে কারণ জানতে চাইলে শোনেন ওই যুবক কনডম নিতে এসেছে।
কয়েক বছর আগের এই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে হ্যারিসন বলেন, ‘আমি প্রথম তলায় ছিলাম। ছেলেটা ভবনের বাইরের দিকের ড্রেনের পাইপ বেয়ে উপরে উঠে এসেছিল। সে সরাসরি রিসেপশনে এসে কনডম চাইতে লজ্জা পাচ্ছিল।’
এই ঘটনাটি তুলে ধরে যুক্তরাজ্যের পুরুষদের স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ভাবনার চিত্র। তাদের সমস্যাগুলোর পেছনে কারণ হিসেবে উঠে এসেছে—ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ এবং স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যোগাযোগ করার আত্মবিশ্বাস ও দক্ষতার অভাব।
বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ধূমপান, অ্যালকোহল পান ও মাদক গ্রহণের কারণে যুক্তরাজ্যের পুরুষেরা উচ্চ কোলেস্টেরল ও রক্তচাপের সমস্যায় বেশি ভোগে। ৭৫ বছর বয়সের আগেই হৃদ্রোগ, ফুসফুসের ক্যানসার, লিভারের রোগ এবং দুর্ঘটনায় প্রায় ৬০ শতাংশের বেশি হারে মৃত্যু হয়। এসব কারণে পুরুষদের গড় আয়ু নারীদের তুলনায় চার বছর কম।
পুরুষ স্বাস্থ্যে এই অবস্থা দেখে যুক্তরাজ্য কৌশল খুঁজছে কীভাবে পুরুষদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ অনেক আগেই নেওয়া উচিত ছিল। কারণ পুরুষেরা নারীদের তুলনায় কম বয়সে মারা যায়। কিন্তু পুরুষদের স্বাস্থ্যের অবস্থা এত খারাপ কেন এবং এ সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়ে এতকাল কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
দাতব্য সংস্থা মেনস হেলথ ফোরামের সহপ্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অ্যালান হোয়াইট লিডস বেকেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরুষদের জন্য একটি বিশেষ স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বলেন, পুরুষ স্বাস্থ্যের বিষয়টি আরও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা দরকার। উদাহরণ হিসেবে কোভিড মহামারির সময়কার কথা তুলে ধরেন তিনি।
হোয়াইট বলেন, কোভিডে নারীদের তুলনায় পুরুষ মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৯ হাজারেরও বেশি। সে সময় বিষয়টি নিয়ে কেউ ক্ষোভ দেখায়নি, যে কারণে বিষয়টি গুরুত্বও পায়নি।
হোয়াইট মনে করেন, শুধু জীবনধারার দোষ দিয়ে পুরুষদের খারাপ স্বাস্থ্যের ব্যাখ্যা দেওয়া খুব সহজ, কিন্তু ব্যাপারটি আসলে অনেক জটিল। এর পেছনে জৈবিক কারণও আছে। পুরুষদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে দুর্বল, যার ফলে সংক্রমণ সহজে প্রতিরোধ করতে পারে না। তবে অনেক পুরুষের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার দক্ষতাও কম থাকে।
অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘পুরুষেরা স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত বিষয়ে কম সচেতন। তারা কীভাবে নিজেদের স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলবে, কোন লক্ষণগুলো গুরুত্বপূর্ণ—তা চিনতে ও ব্যবস্থা নিতে শেখে না। সাধারণভাবে, কিশোর বয়স থেকে শুরু করে ৪০ বছর পর্যন্ত পুরুষদের স্বাস্থ্য প্রায় একই রকম থাকে। তারা অনেক সময় ধরে চিকিৎসকের কাছে যায় না।’
হোয়াইট বলেন, ‘নারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা। জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ, জরায়ু পরীক্ষা এবং পরে সন্তান জন্মদানের কারণে তারা নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যুক্ত থাকে, যেটা পুরুষদের ক্ষেত্রে হয় না।’
পুরুষ ও ছেলেদের বিষয়ে কাজ করে থাকে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ। তারা সরকারকে পুরুষদের জন্য একটি স্বাস্থ্য কৌশল তৈরি করতে উৎসাহিত করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই গ্রুপটির নীতিগত উপদেষ্টা মার্ক ব্রুকস মনে করেন এ অবস্থার পেছনে পুরুষের পুরুষত্ব জাহিরের চেষ্টাও একটা বড় কারণ।
তিনি বলেন, “আমাদের সমাজে পুরুষদের থেকে আলাদা রকমের প্রত্যাশা থাকে। তাদের বলা হয়, ‘পুরুষ হও’, শক্ত হও, সবকিছু চুপচাপ সহ্য করো।”
ব্রুকস মনে করেন, পুরুষদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে দারিদ্র্যের প্রভাবকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। সবচেয়ে দরিদ্র ১০ শতাংশ এলাকার মানুষের গড় আয়ু সবচেয়ে ধনী এলাকার তুলনায় ১০ বছর কম। এই পার্থক্য নারীদের চেয়ে পুরুষদের ক্ষেত্রে আরও বেশি। সবচেয়ে দরিদ্র এলাকাগুলোতে একজন পুরুষের ৭৫ বছর বয়সের আগেই মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ৩ দশমিক ৫ গুণ বেশি।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা এনএইচএস প্রতি ৪০ থেকে ৭৪ বছর বয়সীদের প্রতি পাঁচ বছর অন্তর একটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সুযোগ দেয়। এটি এমন অনেক রোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যেগুলোতে অবহেলার কারণে পুরুষদের অকালে মৃত্যু হয়ে থাকে। কিন্তু দেখা যায়, দশজন পুরুষের মধ্যে চারজনেরও কম এই সুযোগ গ্রহণ করেন।
ব্রুকস বলেন, “স্বাস্থ্যসেবার যেভাবে নকশা করা হয়েছে, তা পুরুষদের জন্য কার্যকরভাবে কাজ করছে না। আপনি পিছিয়ে পড়া সমাজ ও নির্মাণ বা কারখানার মতো ‘ব্লু-কলার’ পেশার শ্রমিকদের অবস্থা উপেক্ষা করতে পারেন না। নির্মাণকাজ বা কোনো ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় কাজ করা একজন লোকের পক্ষে স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা জিপির কাছে যাওয়ার জন্য ছুটি নেওয়া খুব কঠিন। ”
তিনি আশা করেন, কর্মীদের দুই ঘণ্টা বেতনসহ ছুটি দেওয়া হবে যাতে তাঁরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যেতে পারে। পাশাপাশি, এই স্বাস্থ্যসেবাগুলো যেন শিল্প এলাকা বা কারখানার কর্মীদের কর্মস্থলেই দেওয়া হয়।
তবে মার্ক ব্রুকস এটাও বলেন, শুধু স্বাস্থ্যসেবা নয়, বিষয়টি কর্মসংস্থানের সঙ্গেও জড়িত। পুরুষদের ৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে যেসব শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে, তাদের অনেকে এই সমস্যা প্রকাশ করতে ভয় পান। অনেকে প্রাথমিক লক্ষণগুলো উপেক্ষা করেন বা অসুস্থতা বসের কাছ থেকে গোপন রাখেন। তারা ভাবেন এতে তাদের চাকরি বা আয়ের ক্ষতি হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘চাকরি নিয়ে উদ্বেগ, আর্থিক দুশ্চিন্তা ও সম্পর্কজনিত সমস্যাগুলোই পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যার উচ্চহারের অন্যতম কারণ। আত্মহত্যা করা ব্যক্তিদের চার ভাগের তিন ভাগই পুরুষ।’
মেনস হেলথ ফোরামের সহপ্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অ্যালান হোয়াইট বলেন, বর্তমানে চলমান কাউন্সেলিংয়ের ধরনগুলো পুরুষদের মানসিক অবসাদ বা উদ্বেগের লক্ষণগুলো সহজে ধরতে পারে না। সেগুলোর পরিষেবাগুলো পুরুষদের প্রকাশভঙ্গির সঙ্গে মেলে না। পুরুষেরা সাধারণত রাগ দেখায়, অতিরিক্ত অ্যালকোহল খায় অথবা চুপচাপ হয়ে যায় ও মানুষকে দূরে ঠেলে দেয়।
এসব ক্ষেত্রে জাতিগত পার্থক্যগুলোও গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন হোয়াইট। তিনি বলেন, ইংল্যান্ডে কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ আর ভারত বা বাংলাদেশ থেকে আসা পুরুষদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি খুব বেশি।
তবে এসব তথ্যের মানে এটা নয় যে, পুরুষেরা তাদের নিজের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতন হতে আগ্রহী নয়। ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরুষ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পল গ্যালডাস বলেন, ‘পুরুষেরা নিজেদের কথা বলতে চায়, যুক্ত হতে চায় কিন্তু সেটা করতে হলে কার্যকর কাজ ও কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সুযোগ তৈরি করতে হবে।’
গ্যালডাস পুরুষ স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা সংস্থা ‘মোভেম্বার’-এর সঙ্গে একটি ছয় সপ্তাহের মানসিক ফিটনেস প্রোগ্রাম তৈরি করতে কাজ করেছেন। কোভিডের পর এনএইচএসের ফ্রন্টলাইন কর্মীদের ওপর এটি পরীক্ষা করা হয়েছিল। এখন এটি লিডস ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব তাদের যুব খেলোয়াড়দের জন্য ব্যবহার করছে।
এই প্রোগ্রামে পুরুষদের নিজেদের আচরণ কীভাবে মনের অবস্থাকে প্রভাবিত করে তা বুঝতে সাহায্য করা হয়। নিজেদের অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করতে ও স্বাস্থ্যকর কাজের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করতে তাদের উৎসাহ দেওয়া হয়।
গ্যালডাস বলেন, ‘এটা হতে পারে হাঁটতে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, গলফ খেলা কিংবা সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তৈরি করা। এসব কাজ মানসিক স্বাস্থ্যকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ভালো মানসিক স্বাস্থ্য থেকে আসে ভালো শারীরিক স্বাস্থ্য।’
বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা স্থানীয় পর্যায়ে স্থানীয় পরিষদ এবং পুরুষদের বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে মিলে পুরুষ স্বাস্থ্যের জন্য এ ধরনের প্রোগ্রাম তৈরির চেষ্টা করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় উদ্যোগগুলোর একটি হলো—মেনস শেডস মুভমেন্ট। এখানে পুরুষদের একত্রিত হওয়ার সুযোগ মেলে। তাঁরা একসঙ্গে বসে ব্যবহারিক প্রকল্পের কাজ করতে করতে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে এবং একে অপরকে মানসিকভাবে সহায়তা করে।
অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, এই ইতিবাচক উদ্যোগগুলোকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এখনই সময়। এ জন্য একটি জাতীয় পুরুষ স্বাস্থ্য কৌশল তৈরি করা খুবই জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
হোয়াইট বলেন, যুক্তরাজ্যে ২০২২ সালে নারীদের স্বাস্থ্য কৌশল তৈরি হয়েছিল। জাতীয় পুরুষ স্বাস্থ্য কৌশলটি তেমনই পুরুষদের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে কাজ করবে। তিনি আশা করেন, এই কৌশলটি পুরুষদের জন্য একটি ‘জেগে ওঠার বার্তা’ হিসেবে কাজ করবে।
পুরুষদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘আপনার কোমরের মাপ দেখুন। যদি বেশি ওজন থাকে, যদি পেট বড় হয়ে যায়, তাহলে এর পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। শরীরচর্চা করুন, বাইরে যান, মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। সুযোগ পেলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং করান। আর শরীরে কোনো পরিবর্তন দেখলে বা সমস্যা দেখা দিলে সাহায্য নিন।’

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫৩ জনের মৃত্যু হলো। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৪ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
৩ দিন আগে
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের
৩ দিন আগে
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে এই শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি...
৩ দিন আগে
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময়ের গবেষণার পর কিডনি প্রতিস্থাপনে এক বড় অগ্রগতির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন এক যুগান্তকারী সাফল্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যাতে দাতার ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। এতে অপেক্ষার সময় অনেক কমবে, আর অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো যাবে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫৩ জনের মৃত্যু হলো।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৪ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২৬, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৪, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৪, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৭০, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১০৭, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪১, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪১ ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত চারজনের মধ্যে তিনজনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা। অন্যজন বরিশাল বিভাগের (সিটি করপোরেশনের বাইরে) বাসিন্দা ছিলেন। তাঁদের বয়স যথাক্রমে ১৬, ৭০, ৩০ ও ৫৫ বছর।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৮১৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৫২১ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ১০, ফেব্রুয়ারিতে তিন, এপ্রিলে সাত, মে মাসে তিন, জুনে ১৯, জুলাইয়ে ৪১, আগস্টে ৩৯ ও সেপ্টেম্বরে ৭৬ জন মারা গেছে। মার্চে কারও মৃত্যু হয়নি। আর অক্টোবরে এখন পর্যন্ত ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫৩ জনের মৃত্যু হলো।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৪ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২৬, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৪, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৪, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৭০, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১০৭, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪১, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪১ ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত চারজনের মধ্যে তিনজনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা। অন্যজন বরিশাল বিভাগের (সিটি করপোরেশনের বাইরে) বাসিন্দা ছিলেন। তাঁদের বয়স যথাক্রমে ১৬, ৭০, ৩০ ও ৫৫ বছর।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৮১৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৫২১ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ১০, ফেব্রুয়ারিতে তিন, এপ্রিলে সাত, মে মাসে তিন, জুনে ১৯, জুলাইয়ে ৪১, আগস্টে ৩৯ ও সেপ্টেম্বরে ৭৬ জন মারা গেছে। মার্চে কারও মৃত্যু হয়নি। আর অক্টোবরে এখন পর্যন্ত ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

পুরুষদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘আপনার কোমরের মাপ দেখুন। যদি বেশি ওজন থাকে, যদি পেট বড় হয়ে যায়, তাহলে এর পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। শরীরচর্চা করুন, বাইরে যান, মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। সুযোগ পেলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং করান। আর শরীরে কোনো পরিবর্তন দেখলে বা সমস্যা দেখা দিলে সাহায্য
০৬ এপ্রিল ২০২৫
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের
৩ দিন আগে
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে এই শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি...
৩ দিন আগে
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময়ের গবেষণার পর কিডনি প্রতিস্থাপনে এক বড় অগ্রগতির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন এক যুগান্তকারী সাফল্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যাতে দাতার ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। এতে অপেক্ষার সময় অনেক কমবে, আর অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো যাবে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের আবাসস্থল!
গবেষণা অনুসারে, ব্রাশের আর্দ্র প্লাস্টিক তন্তুগুলোতে প্রতিনিয়ত জমা হয় মুখগহ্বরের লালা, ত্বকের কোষ, খাবারের কণা এবং পরিবেশ থেকে আসা জীবাণু। এই ক্ষুদ্র জীবজগৎ আমাদের হার্পিস ভাইরাস, ক্যানডিডা ইস্ট এবং শৌচাগারের ফ্লাশ থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া বহন করতে পারে।
জার্মানির রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেসের অণুজীব বিজ্ঞানী ড. মার্ক-কেভিন জিন-এর মতে, টুথব্রাশে জীবাণু আসার প্রধান তিনটি উৎস হলো—ব্যবহারকারীর মুখ, ব্যবহারকারীর ত্বক এবং ব্রাশটি যেখানে রাখা হয় সেই পরিবেশ (বাথরুম)।
সাধারণত মুখের জীবাণু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক নয়। তবে এগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকে অনেক বিপজ্জনক অতিথি! যেসব ক্ষতিকর জীবাণু টুথব্রাশে জমে এর মধ্যে অন্যতম হলো:
দাঁত ক্ষয়ের কারণ: দাঁত ক্ষয় এবং মাড়ির প্রদাহ সৃষ্টিকারী স্ট্রেপটোকক্কি এবং স্ট্যাফাইলোকক্কি।
পেটের সংক্রমণ: ই-কোলাই, সিউডোমোনাস এরুগিনোসা এবং এন্টারোব্যাকটেরিয়া-এর মতো জীবাণু, যা সাধারণত পেটের সংক্রমণ ও খাদ্য বিষক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত।
হাসপাতালের জীবাণু: ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া-এর মতো রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুও টুথব্রাশে পাওয়া গেছে। এগুলো সাধারণত হাসপাতালে সংক্রামিত রোগের সাধারণ কারণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাথরুম উষ্ণ ও আর্দ্র থাকায় এটি জীবাণুর বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ স্থান। সবচেয়ে উদ্বেগের কারণটি হলো—শৌচাগার।
যখনই ফ্লাশ করা হয়, তখন মল ও পানির সূক্ষ্ম কণার (অ্যারোসল) একটি মেঘ ১ দশমিক ৫ মিটার (৫ ফুট) পর্যন্ত বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এই স্প্রে-এর সঙ্গে ফ্লু, কোভিড-১৯ এবং নরোভাইরাসের মতো সংক্রামক ভাইরাস এবং মলে থাকা ব্যাকটেরিয়া বহন করে। আপনার টুথব্রাশ যদি শৌচাগারের কাছাকাছি থাকে, তাহলে এই দূষণ ব্রাশের তন্তুগুলোতে জমা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, ফ্লাশ করার আগে কমোড সিট নামিয়ে দেওয়া উচিত।
ঝুঁকি কতটা এবং প্রতিকার কী?
শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. এরিকা হার্টম্যান বলেছেন, বেশির ভাগ সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে টুথব্রাশ থেকে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি খুব কম। তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের জন্য এই জীবাণুগুলো বড় উদ্বেগের কারণ হতে পারে। যেমন:
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু: ইতালির এক গবেষণায় দেখা গেছে, পরীক্ষিত টুথব্রাশগুলোর শতভাগেই একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত ছিল, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মধ্যম উদ্বেগের বিষয়।
পরিষ্কার রাখার সহজ উপায়
চিকিৎসা ও দন্ত্যচিকিৎসকেরা টুথব্রাশ যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কয়েকটি সহজ কৌশল অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন:
১. বাতাসে শুকানো: ব্যবহারের পর টুথব্রাশের মাথা ঢেকে না রেখে সোজা করে, উন্মুক্ত স্থানে রাখুন। কভার বা বদ্ধ পাত্র ব্যবহার করলে সেখানে আর্দ্রতা জমে জীবাণুর বৃদ্ধি ঘটে।
২. দূরে রাখুন: শৌচাগার থেকে যতটা সম্ভব দূরে টুথব্রাশ রাখুন।
৩. ডিসইনফেকশন: সপ্তাহে একবার ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য ব্রাশের মাথা অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ-এর (যেমন ০.১২% ক্লোরহেক্সিডিন বা ০.০৫% সিটিলপাইরিডিনিয়াম ক্লোরাইডযুক্ত দ্রবণ) মধ্যে চুবিয়ে রাখা যেতে পারে। কেউ কেউ ১ শতাংশ ভিনেগার দ্রবণে ডুবিয়ে রাখারও পরামর্শ দেন।
৪. সময়মতো পরিবর্তন: দাঁতের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাগুলো প্রতি তিন মাস বা ১২ সপ্তাহ অন্তর টুথব্রাশ বদলানোর পরামর্শ দেয়। ড. জিনের গবেষণা অনুযায়ী, ব্যবহারের ১২ সপ্তাহ পর ব্রাশে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছায়। এ ছাড়া ব্রাশের তন্তুগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হলে দ্রুত বদলে ফেলা উচিত।
তথ্যসূত্র: বিবিসি

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের আবাসস্থল!
গবেষণা অনুসারে, ব্রাশের আর্দ্র প্লাস্টিক তন্তুগুলোতে প্রতিনিয়ত জমা হয় মুখগহ্বরের লালা, ত্বকের কোষ, খাবারের কণা এবং পরিবেশ থেকে আসা জীবাণু। এই ক্ষুদ্র জীবজগৎ আমাদের হার্পিস ভাইরাস, ক্যানডিডা ইস্ট এবং শৌচাগারের ফ্লাশ থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া বহন করতে পারে।
জার্মানির রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেসের অণুজীব বিজ্ঞানী ড. মার্ক-কেভিন জিন-এর মতে, টুথব্রাশে জীবাণু আসার প্রধান তিনটি উৎস হলো—ব্যবহারকারীর মুখ, ব্যবহারকারীর ত্বক এবং ব্রাশটি যেখানে রাখা হয় সেই পরিবেশ (বাথরুম)।
সাধারণত মুখের জীবাণু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক নয়। তবে এগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকে অনেক বিপজ্জনক অতিথি! যেসব ক্ষতিকর জীবাণু টুথব্রাশে জমে এর মধ্যে অন্যতম হলো:
দাঁত ক্ষয়ের কারণ: দাঁত ক্ষয় এবং মাড়ির প্রদাহ সৃষ্টিকারী স্ট্রেপটোকক্কি এবং স্ট্যাফাইলোকক্কি।
পেটের সংক্রমণ: ই-কোলাই, সিউডোমোনাস এরুগিনোসা এবং এন্টারোব্যাকটেরিয়া-এর মতো জীবাণু, যা সাধারণত পেটের সংক্রমণ ও খাদ্য বিষক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত।
হাসপাতালের জীবাণু: ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া-এর মতো রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুও টুথব্রাশে পাওয়া গেছে। এগুলো সাধারণত হাসপাতালে সংক্রামিত রোগের সাধারণ কারণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাথরুম উষ্ণ ও আর্দ্র থাকায় এটি জীবাণুর বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ স্থান। সবচেয়ে উদ্বেগের কারণটি হলো—শৌচাগার।
যখনই ফ্লাশ করা হয়, তখন মল ও পানির সূক্ষ্ম কণার (অ্যারোসল) একটি মেঘ ১ দশমিক ৫ মিটার (৫ ফুট) পর্যন্ত বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এই স্প্রে-এর সঙ্গে ফ্লু, কোভিড-১৯ এবং নরোভাইরাসের মতো সংক্রামক ভাইরাস এবং মলে থাকা ব্যাকটেরিয়া বহন করে। আপনার টুথব্রাশ যদি শৌচাগারের কাছাকাছি থাকে, তাহলে এই দূষণ ব্রাশের তন্তুগুলোতে জমা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, ফ্লাশ করার আগে কমোড সিট নামিয়ে দেওয়া উচিত।
ঝুঁকি কতটা এবং প্রতিকার কী?
শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. এরিকা হার্টম্যান বলেছেন, বেশির ভাগ সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে টুথব্রাশ থেকে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি খুব কম। তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের জন্য এই জীবাণুগুলো বড় উদ্বেগের কারণ হতে পারে। যেমন:
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু: ইতালির এক গবেষণায় দেখা গেছে, পরীক্ষিত টুথব্রাশগুলোর শতভাগেই একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত ছিল, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মধ্যম উদ্বেগের বিষয়।
পরিষ্কার রাখার সহজ উপায়
চিকিৎসা ও দন্ত্যচিকিৎসকেরা টুথব্রাশ যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কয়েকটি সহজ কৌশল অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন:
১. বাতাসে শুকানো: ব্যবহারের পর টুথব্রাশের মাথা ঢেকে না রেখে সোজা করে, উন্মুক্ত স্থানে রাখুন। কভার বা বদ্ধ পাত্র ব্যবহার করলে সেখানে আর্দ্রতা জমে জীবাণুর বৃদ্ধি ঘটে।
২. দূরে রাখুন: শৌচাগার থেকে যতটা সম্ভব দূরে টুথব্রাশ রাখুন।
৩. ডিসইনফেকশন: সপ্তাহে একবার ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য ব্রাশের মাথা অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ-এর (যেমন ০.১২% ক্লোরহেক্সিডিন বা ০.০৫% সিটিলপাইরিডিনিয়াম ক্লোরাইডযুক্ত দ্রবণ) মধ্যে চুবিয়ে রাখা যেতে পারে। কেউ কেউ ১ শতাংশ ভিনেগার দ্রবণে ডুবিয়ে রাখারও পরামর্শ দেন।
৪. সময়মতো পরিবর্তন: দাঁতের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাগুলো প্রতি তিন মাস বা ১২ সপ্তাহ অন্তর টুথব্রাশ বদলানোর পরামর্শ দেয়। ড. জিনের গবেষণা অনুযায়ী, ব্যবহারের ১২ সপ্তাহ পর ব্রাশে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছায়। এ ছাড়া ব্রাশের তন্তুগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হলে দ্রুত বদলে ফেলা উচিত।
তথ্যসূত্র: বিবিসি

পুরুষদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘আপনার কোমরের মাপ দেখুন। যদি বেশি ওজন থাকে, যদি পেট বড় হয়ে যায়, তাহলে এর পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। শরীরচর্চা করুন, বাইরে যান, মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। সুযোগ পেলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং করান। আর শরীরে কোনো পরিবর্তন দেখলে বা সমস্যা দেখা দিলে সাহায্য
০৬ এপ্রিল ২০২৫
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫৩ জনের মৃত্যু হলো। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৪ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
৩ দিন আগে
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে এই শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি...
৩ দিন আগে
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময়ের গবেষণার পর কিডনি প্রতিস্থাপনে এক বড় অগ্রগতির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন এক যুগান্তকারী সাফল্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যাতে দাতার ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। এতে অপেক্ষার সময় অনেক কমবে, আর অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো যাবে।
৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে এই শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তেজগাঁওয়ে সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম মোসাদ্দেক হোসেন। সমিতির মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের পরপরই আমরা সমিতির পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি থেকে প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করেছি। সে অনুযায়ী, ইতিমধ্যে দেশের শীর্ষ ৪৫টি কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য এলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুড়ে যাওয়া পণ্যের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক, ভ্যাকসিন, হরমোন, ডায়াবেটিক ও ক্যানসার জাতীয় ওষুধ উৎপাদনের কাঁচামালও রয়েছে।’
ডা. জাকির হোসেন জানান, অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ভস্মীভূত হওয়ায় শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এই আকস্মিক ক্ষতি বহুবিধ ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
তিনি আরও জানান, ওষুধ শিল্প দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় শতভাগ পূরণ ছাড়াও রপ্তানি সম্ভাবনা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ খাত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ সুনাম অর্জন করেছে। বাংলাদেশে তৈরি মানসম্পন্ন ওষুধ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ ১৬০ টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
সমিতি জানায়, দেশের ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় ৯০ শতাংশ চীন, ভারত ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এ ছাড়া প্যাকেজিং উপকরণ, যন্ত্রপাতি ও স্পেয়ার পার্টসও আমদানি করা হয়। এসব কাঁচামালের বড় অংশ জীবন রক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
সমিতির কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মাদ হালিমুজ্জামান বলেন, ‘কিছু স্পেয়ার পার্টস ও মেশিনারিজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা আবার আমদানি সময়সাপেক্ষ। এখনো সাপ্লাই চেইনে সমস্যা হচ্ছে না, তবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।’
সমিতির নেতারা বলেন, যেসব পণ্য অন্যান্য বিমানবন্দরে নামানো হয়েছে, সেসব নিয়েও আমরা চিন্তিত—কারণ এসব কাঁচামাল নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়। এখানেও আমরা এক ধরনের ক্ষতির মুখে রয়েছি। পুড়ে যাওয়া পণ্যের একটি বড় অংশ ছিল নারকোটিকস বিভাগ থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত। এসব পণ্য পুনরায় আমদানি জটিল ও সময়সাপেক্ষ, কারণ এতে ধাপে ধাপে বহু অনুমোদন নিতে হয়।
সমিতির ধারণা, পুড়ে যাওয়া পণ্যের হিসাব আরও বাড়বে। প্রতিটি কাঁচামালের ওপর নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট চূড়ান্ত পণ্যের উৎপাদন অনিশ্চয়তায় পড়বে। প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থনৈতিক প্রভাব পড়তে পারে বলেও সমিতির হিসাব।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ফার্মা খাতের ঝুঁকি ও সম্ভাব্য সংকট এড়াতে সরকারের কাছে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে সমিতি। এর মধ্যে রয়েছে—পুড়ে যাওয়া পণ্যের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে পরিশোধিত শুল্ক, ডিউটি, ট্যাক্স ও ভ্যাট ফেরতের ব্যবস্থা, ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের এলসি-সংক্রান্ত ব্যাংক চার্জ ও সুদ মওকুফ, পুনরায় আমদানির ক্ষেত্রে ব্যাংক মার্জিন ও অন্যান্য চার্জ মওকুফ করে সহজ শর্তে এলসি খোলার সুযোগ দেওয়া, কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত মালামালের বিপরীতে ধার্য চার্জ/দণ্ড মওকুফ করা, নারকোটিকস বিভাগের অনুমোদিত পণ্য পুনরায় আগের অনুমোদনের ভিত্তিতে দ্রুত আমদানির অনুমতি দেওয়া, অফিস ছুটির দিনেও কাস্টমস কার্যক্রম আংশিকভাবে চালু রাখা, কোল্ড চেইন পণ্য দ্রুত রিলিজ নিশ্চিত করা, অক্ষত চালান দ্রুত মূল্যায়ন ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে অবহিত করা, ডিজিডিএ, নারকোটিকস, কাস্টমস, এনবিআর, বিমান কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে জরুরি বৈঠক আহ্বান করে সমাধানমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে এই শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তেজগাঁওয়ে সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম মোসাদ্দেক হোসেন। সমিতির মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের পরপরই আমরা সমিতির পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি থেকে প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করেছি। সে অনুযায়ী, ইতিমধ্যে দেশের শীর্ষ ৪৫টি কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য এলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুড়ে যাওয়া পণ্যের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক, ভ্যাকসিন, হরমোন, ডায়াবেটিক ও ক্যানসার জাতীয় ওষুধ উৎপাদনের কাঁচামালও রয়েছে।’
ডা. জাকির হোসেন জানান, অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ভস্মীভূত হওয়ায় শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এই আকস্মিক ক্ষতি বহুবিধ ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
তিনি আরও জানান, ওষুধ শিল্প দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় শতভাগ পূরণ ছাড়াও রপ্তানি সম্ভাবনা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ খাত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ সুনাম অর্জন করেছে। বাংলাদেশে তৈরি মানসম্পন্ন ওষুধ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ ১৬০ টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
সমিতি জানায়, দেশের ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় ৯০ শতাংশ চীন, ভারত ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এ ছাড়া প্যাকেজিং উপকরণ, যন্ত্রপাতি ও স্পেয়ার পার্টসও আমদানি করা হয়। এসব কাঁচামালের বড় অংশ জীবন রক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
সমিতির কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মাদ হালিমুজ্জামান বলেন, ‘কিছু স্পেয়ার পার্টস ও মেশিনারিজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা আবার আমদানি সময়সাপেক্ষ। এখনো সাপ্লাই চেইনে সমস্যা হচ্ছে না, তবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।’
সমিতির নেতারা বলেন, যেসব পণ্য অন্যান্য বিমানবন্দরে নামানো হয়েছে, সেসব নিয়েও আমরা চিন্তিত—কারণ এসব কাঁচামাল নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়। এখানেও আমরা এক ধরনের ক্ষতির মুখে রয়েছি। পুড়ে যাওয়া পণ্যের একটি বড় অংশ ছিল নারকোটিকস বিভাগ থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত। এসব পণ্য পুনরায় আমদানি জটিল ও সময়সাপেক্ষ, কারণ এতে ধাপে ধাপে বহু অনুমোদন নিতে হয়।
সমিতির ধারণা, পুড়ে যাওয়া পণ্যের হিসাব আরও বাড়বে। প্রতিটি কাঁচামালের ওপর নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট চূড়ান্ত পণ্যের উৎপাদন অনিশ্চয়তায় পড়বে। প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থনৈতিক প্রভাব পড়তে পারে বলেও সমিতির হিসাব।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ফার্মা খাতের ঝুঁকি ও সম্ভাব্য সংকট এড়াতে সরকারের কাছে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে সমিতি। এর মধ্যে রয়েছে—পুড়ে যাওয়া পণ্যের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে পরিশোধিত শুল্ক, ডিউটি, ট্যাক্স ও ভ্যাট ফেরতের ব্যবস্থা, ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের এলসি-সংক্রান্ত ব্যাংক চার্জ ও সুদ মওকুফ, পুনরায় আমদানির ক্ষেত্রে ব্যাংক মার্জিন ও অন্যান্য চার্জ মওকুফ করে সহজ শর্তে এলসি খোলার সুযোগ দেওয়া, কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত মালামালের বিপরীতে ধার্য চার্জ/দণ্ড মওকুফ করা, নারকোটিকস বিভাগের অনুমোদিত পণ্য পুনরায় আগের অনুমোদনের ভিত্তিতে দ্রুত আমদানির অনুমতি দেওয়া, অফিস ছুটির দিনেও কাস্টমস কার্যক্রম আংশিকভাবে চালু রাখা, কোল্ড চেইন পণ্য দ্রুত রিলিজ নিশ্চিত করা, অক্ষত চালান দ্রুত মূল্যায়ন ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে অবহিত করা, ডিজিডিএ, নারকোটিকস, কাস্টমস, এনবিআর, বিমান কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে জরুরি বৈঠক আহ্বান করে সমাধানমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ।

পুরুষদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘আপনার কোমরের মাপ দেখুন। যদি বেশি ওজন থাকে, যদি পেট বড় হয়ে যায়, তাহলে এর পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। শরীরচর্চা করুন, বাইরে যান, মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। সুযোগ পেলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং করান। আর শরীরে কোনো পরিবর্তন দেখলে বা সমস্যা দেখা দিলে সাহায্য
০৬ এপ্রিল ২০২৫
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫৩ জনের মৃত্যু হলো। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৪ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
৩ দিন আগে
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের
৩ দিন আগে
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময়ের গবেষণার পর কিডনি প্রতিস্থাপনে এক বড় অগ্রগতির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন এক যুগান্তকারী সাফল্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যাতে দাতার ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। এতে অপেক্ষার সময় অনেক কমবে, আর অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো যাবে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় গবেষণার পর কিডনি প্রতিস্থাপনে এক বড় অগ্রগতির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন এক যুগান্তকারী সাফল্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যাতে দাতার ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। এতে অপেক্ষার সময় অনেক কমবে, আর অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো যাবে।
এই বিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে নেচার বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং জার্নালে। সেই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিজ্ঞানবিষয়ক সংবাদমাধ্যম সায়েন্সএলার্ট জানিয়েছে, কানাডা ও চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একদল গবেষক এমন এক ‘সর্বজনীন’ কিডনি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন, যা তাত্ত্বিকভাবে যেকোনো রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব।
গবেষণার অংশ হিসেবে এই কিডনি এক ব্রেইন-ডেড রোগীর (যে অবস্থায় কোনো ব্যক্তির মস্তিষ্ক কার্যক্রম বন্ধ করে দিলেও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কৃত্রিমভাবে চালু রাখা হয়) দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। সেই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অনুমতি নিয়েই এটি করা হয়েছিল। কিডনিটি কয়েক দিন ধরে কার্যকর অবস্থায় ছিল।
কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার জৈব রসায়নবিদ স্টিফেন উইদার্স বলেন, ‘মানুষের দেহে এই প্রক্রিয়া সফলভাবে কাজ করতে দেখা এটাই প্রথম। এটা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি ফল আরও উন্নত করার বিষয়ে অমূল্য ধারণা দিচ্ছে।’
বর্তমানে রক্তের গ্রুপ টাইপ ‘ও’ যাঁদের, তাঁরা কেবল টাইপ ‘ও’ দাতার কাছ থেকে কিডনি নিতে পারেন। কিন্তু যেহেতু টাইপ ‘ও’ কিডনি অন্য রক্তের গ্রুপের মানুষের শরীরেও কাজ করতে পারে, তাই এ ধরনের কিডনির চাহিদা বেশি, জোগান কম। ফলে অপেক্ষার তালিকার অর্ধেকের বেশি মানুষ টাইপ ‘ও’ কিডনির জন্য অপেক্ষায় থাকেন।
রক্তের ভিন্ন গ্রুপের কিডনি প্রতিস্থাপন এখন সম্ভব হলেও সেটি অত্যন্ত জটিল ও ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। এতে সময় লাগে অনেক, ঝুঁকিও বেশি। পাশাপাশি এতে জীবিত দাতা দরকার হয়। কারণ, গ্রহীতার শরীরকে আগেই প্রস্তুত করতে হয়। গবেষকেরা এবার এমন এক কৌশল ব্যবহার করেছেন, যেখানে বিশেষ এনজাইম দিয়ে টাইপ ‘এ’ কিডনিকে টাইপ ‘ও’ কিডনিতে রূপান্তর করা যায়। এই এনজাইমগুলো টাইপ ‘এ’ রক্তের বিশেষ সুগার মলিকিউল বা চিনির অণু (অ্যান্টিজেন) কেটে সরিয়ে দেয়।
গবেষকেরা এই এনজাইমগুলোর তুলনা করেছেন ‘আণবিক কাঁচি’র সঙ্গে। উইদার্স বলেন, ‘যেভাবে গাড়ির লাল রং ঘষে তুলে নিলে নিচের নিরপেক্ষ প্রাইমার দেখা যায়, ঠিক সেভাবেই এই প্রক্রিয়ায় কিডনির ওপর থেকে রক্তের গ্রুপের চিহ্ন মুছে দেওয়া যায়। তখন শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা আর কিডনিটিকে ‘বাইরের অপরিচিত’ অঙ্গ হিসেবে বিচার করে না।’
তবে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ বাকি। জীবিত মানুষের শরীরে এই পরীক্ষা শুরু করার আগে আরও গবেষণা দরকার। পরীক্ষায় দেখা গেছে, তৃতীয় দিনে কিডনিতে আবার টাইপ ‘এ’-ব্লাড গ্রুপের কিডনির কিছু চিহ্ন দেখা দিতে শুরু করে। ফলে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা প্রতিক্রিয়া দেখায়। তবে প্রতিক্রিয়াটি সাধারণ সময়ের তুলনায় অনেক কম ছিল, বরং শরীর কিডনিটিকে সহ্য করার চেষ্টা করছিল বলেও ইঙ্গিত পেয়েছেন গবেষকেরা।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ১১ জন মানুষ কিডনি না পেয়ে মারা যান, আর তাঁদের অধিকাংশই টাইপ ‘ও’ কিডনির অপেক্ষায় থাকেন। এ কারণেই বিজ্ঞানীরা বিকল্প পথ খুঁজছেন। এমনকি শূকরের কিডনি ব্যবহার বা নতুন অ্যান্টিবডি তৈরি করে এই সংকট কমানোর চেষ্টা চলছে।
উইদার্স বলেন, ‘বছরের পর বছর মৌলিক বিজ্ঞানের কাজ শেষ পর্যন্ত যখন রোগীর চিকিৎসায় কাজে লাগে, তখনই বোঝা যায়, আমরা কত দূর এসেছি। আমাদের আবিষ্কার এখন বাস্তবের কাছাকাছি—এটাই আমাদের এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দেয়।’

দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় গবেষণার পর কিডনি প্রতিস্থাপনে এক বড় অগ্রগতির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন এক যুগান্তকারী সাফল্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যাতে দাতার ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। এতে অপেক্ষার সময় অনেক কমবে, আর অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো যাবে।
এই বিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে নেচার বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং জার্নালে। সেই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিজ্ঞানবিষয়ক সংবাদমাধ্যম সায়েন্সএলার্ট জানিয়েছে, কানাডা ও চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একদল গবেষক এমন এক ‘সর্বজনীন’ কিডনি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন, যা তাত্ত্বিকভাবে যেকোনো রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব।
গবেষণার অংশ হিসেবে এই কিডনি এক ব্রেইন-ডেড রোগীর (যে অবস্থায় কোনো ব্যক্তির মস্তিষ্ক কার্যক্রম বন্ধ করে দিলেও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কৃত্রিমভাবে চালু রাখা হয়) দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। সেই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অনুমতি নিয়েই এটি করা হয়েছিল। কিডনিটি কয়েক দিন ধরে কার্যকর অবস্থায় ছিল।
কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার জৈব রসায়নবিদ স্টিফেন উইদার্স বলেন, ‘মানুষের দেহে এই প্রক্রিয়া সফলভাবে কাজ করতে দেখা এটাই প্রথম। এটা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি ফল আরও উন্নত করার বিষয়ে অমূল্য ধারণা দিচ্ছে।’
বর্তমানে রক্তের গ্রুপ টাইপ ‘ও’ যাঁদের, তাঁরা কেবল টাইপ ‘ও’ দাতার কাছ থেকে কিডনি নিতে পারেন। কিন্তু যেহেতু টাইপ ‘ও’ কিডনি অন্য রক্তের গ্রুপের মানুষের শরীরেও কাজ করতে পারে, তাই এ ধরনের কিডনির চাহিদা বেশি, জোগান কম। ফলে অপেক্ষার তালিকার অর্ধেকের বেশি মানুষ টাইপ ‘ও’ কিডনির জন্য অপেক্ষায় থাকেন।
রক্তের ভিন্ন গ্রুপের কিডনি প্রতিস্থাপন এখন সম্ভব হলেও সেটি অত্যন্ত জটিল ও ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। এতে সময় লাগে অনেক, ঝুঁকিও বেশি। পাশাপাশি এতে জীবিত দাতা দরকার হয়। কারণ, গ্রহীতার শরীরকে আগেই প্রস্তুত করতে হয়। গবেষকেরা এবার এমন এক কৌশল ব্যবহার করেছেন, যেখানে বিশেষ এনজাইম দিয়ে টাইপ ‘এ’ কিডনিকে টাইপ ‘ও’ কিডনিতে রূপান্তর করা যায়। এই এনজাইমগুলো টাইপ ‘এ’ রক্তের বিশেষ সুগার মলিকিউল বা চিনির অণু (অ্যান্টিজেন) কেটে সরিয়ে দেয়।
গবেষকেরা এই এনজাইমগুলোর তুলনা করেছেন ‘আণবিক কাঁচি’র সঙ্গে। উইদার্স বলেন, ‘যেভাবে গাড়ির লাল রং ঘষে তুলে নিলে নিচের নিরপেক্ষ প্রাইমার দেখা যায়, ঠিক সেভাবেই এই প্রক্রিয়ায় কিডনির ওপর থেকে রক্তের গ্রুপের চিহ্ন মুছে দেওয়া যায়। তখন শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা আর কিডনিটিকে ‘বাইরের অপরিচিত’ অঙ্গ হিসেবে বিচার করে না।’
তবে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ বাকি। জীবিত মানুষের শরীরে এই পরীক্ষা শুরু করার আগে আরও গবেষণা দরকার। পরীক্ষায় দেখা গেছে, তৃতীয় দিনে কিডনিতে আবার টাইপ ‘এ’-ব্লাড গ্রুপের কিডনির কিছু চিহ্ন দেখা দিতে শুরু করে। ফলে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা প্রতিক্রিয়া দেখায়। তবে প্রতিক্রিয়াটি সাধারণ সময়ের তুলনায় অনেক কম ছিল, বরং শরীর কিডনিটিকে সহ্য করার চেষ্টা করছিল বলেও ইঙ্গিত পেয়েছেন গবেষকেরা।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ১১ জন মানুষ কিডনি না পেয়ে মারা যান, আর তাঁদের অধিকাংশই টাইপ ‘ও’ কিডনির অপেক্ষায় থাকেন। এ কারণেই বিজ্ঞানীরা বিকল্প পথ খুঁজছেন। এমনকি শূকরের কিডনি ব্যবহার বা নতুন অ্যান্টিবডি তৈরি করে এই সংকট কমানোর চেষ্টা চলছে।
উইদার্স বলেন, ‘বছরের পর বছর মৌলিক বিজ্ঞানের কাজ শেষ পর্যন্ত যখন রোগীর চিকিৎসায় কাজে লাগে, তখনই বোঝা যায়, আমরা কত দূর এসেছি। আমাদের আবিষ্কার এখন বাস্তবের কাছাকাছি—এটাই আমাদের এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দেয়।’

পুরুষদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক হোয়াইট বলেন, ‘আপনার কোমরের মাপ দেখুন। যদি বেশি ওজন থাকে, যদি পেট বড় হয়ে যায়, তাহলে এর পরিবর্তন আনার চেষ্টা করুন। শরীরচর্চা করুন, বাইরে যান, মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। সুযোগ পেলেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং করান। আর শরীরে কোনো পরিবর্তন দেখলে বা সমস্যা দেখা দিলে সাহায্য
০৬ এপ্রিল ২০২৫
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫৩ জনের মৃত্যু হলো। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৪ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
৩ দিন আগে
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের
৩ দিন আগে
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে এই শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি...
৩ দিন আগে