Ajker Patrika

হাঁটুর ব্যথা কমাবে কানে পরার ডিভাইস

অনলাইন ডেস্ক
কানে হালকা বৈদ্যুতিক তরঙ্গ প্রেরণের মাধ্যমে হাঁটুর ব্যথা কমানো যেতে পারে। ছবি: টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়, এল পাসো
কানে হালকা বৈদ্যুতিক তরঙ্গ প্রেরণের মাধ্যমে হাঁটুর ব্যথা কমানো যেতে পারে। ছবি: টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়, এল পাসো

জুতার ফিতা বাঁধা, গাড়িতে ওঠা বা সিঁড়ি দিয়ে নামা—এসব সহজ কাজই যখন হাঁটু ব্যথায় কষ্টকর হয়ে ওঠে, তখন হতাশ হয়ে পড়েন অনেকেই। হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা ওএ এমনই একটি সাধারণ সমস্যা, যা নিত্যদিনের জীবনকে করে তোলে যন্ত্রণাদায়ক। তবে এবার আশার আলো দেখাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা। তারা কানে পরার জন্য এমন একটি ডিভাইস তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে হাঁটুর ব্যথা কমানো যায়।

টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় এল পাসোর (ইউটিইপি) ড. কোসাকু আয়াগির নেতৃত্বে, হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল ও বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত একটি গবেষণায় প্রাথমিক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, কানে হালকা বৈদ্যুতিক তরঙ্গ প্রেরণের মাধ্যমে হাঁটুর ব্যথা কমানো যেতে পারে।

গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন ইউটিইপির সহকারী অধ্যাপক ও ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট ড. কোসাকু আয়াগি। তিনি বলেন, ‘বর্তমান ওএ চিকিৎসা অনেক সময় স্বস্তি দেয় না এবং ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। তাই আমরা ব্যথার মূল প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে উপশমের চেষ্টা করছি।’

এই নতুন পদ্ধতির কেন্দ্রে রয়েছে ভেগাস স্নায়ু—যা শরীরের বিশ্রাম ও পরিপাকের মতো কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। স্ট্রেসের সময় এই স্নায়ুর কাজ কমে যায় এবং ব্যথা আরও তীব্র হয়।

তাই কানের মাধ্যমে ভেগাস স্নায়ু উদ্দীপনার মাধ্যমে হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিসজনিত ব্যথা কমানো যায় কি না, তা অনুসন্ধান করেছেন গবেষকেরা।

ড. আয়াগির পদ্ধতিতে, কানের বাইরের অংশে একটি ছোট ডিভাইস বসিয়ে সেখানে হালকা বৈদ্যুতিক তরঙ্গ পাঠানো হয়। এর মাধ্যমে ভেগাস স্নায়ু সক্রিয় হয়। এই চিকিৎসাটির নাম ট্রান্সকিউটেনিয়াস অরিকুলার ভেগাস নার্ভ স্টিমুলেশনবা টিভিএসএস।

প্রাথমিক পরীক্ষায়, হাঁটুর ব্যথায় ভোগা ৩০ জন অংশগ্রহণকারী ৬০ মিনিট ধরে এই চিকিৎসা নেন। তাঁদের মধ্যে ১১ জন উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যথা কমার কথা জানান। যদিও এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং সুনিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না, তবে গবেষকেরা আশা দেখছেন।

ড. আয়াগি বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের হাঁটুর ব্যথা উপশমে ওষুধ ছাড়াই কার্যকর ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন একটি পদ্ধতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।’

তবে জনসাধারণের জন্য এখনো এই চিকিৎসা চালু হয়নি। সামনে বড় আকারে একটি স্টাডি হবে, যেখানে কিছু অংশগ্রহণকারী আসল চিকিৎসা এবং বাকিরা প্লেসিবো পাবেন। ফলাফল ইতিবাচক হলে, একদিন হয়তো কানের মাঝেই মিলবে হাঁটুর ব্যথার সহজ সমাধান।

তাঁদের গবেষণা সম্প্রতি অস্টিওআর্থ্রাইটিস অ্যান্ড কার্টিলেজ ওপেন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত