Ajker Patrika

ক্লাস ফেলে ছাত্রীদের নিয়ে সড়ক অবরোধ

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২২, ১৪: ৫৫
Thumbnail image

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের একটি সড়ক সংস্কারের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের দিয়ে আড়াই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের দিয়ে এই মানববন্ধন করানোর অভিযোগ উঠেছে বামনডাঙ্গা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম শহীদের বিরুদ্ধে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া দুই প্রতিষ্ঠান হলো উপজেলার বামনডাঙ্গা বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও বামনডাঙ্গা বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ওই দুই বিদ্যালয়সংলগ্ন সুন্দরগঞ্জ-রংপুর মহাসড়কে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় স্কুল দুটিতে কোনো ক্লাস নেওয়া হয়নি।

এমনকি মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ শেষে বিদ্যালয় দুটি ছুটি দেওয়া হয়। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয় দুটির প্রধান ফটকের সামনের প্রায় ১০০ মিটার সড়কে ভগ্নদশা দীর্ঘদিন ধরে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মচারীসহ হাজারো লোক যাতায়াত করেন। বৃষ্টি হলেই সড়কটিতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। পানি নামার পথ না থাকায় এ পানি জমে থাকে কয়েক দিন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় যাতায়াতকারীদের। এ অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। কিন্তু সড়কটি সংস্কার করা হচ্ছে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, সড়কটি সংস্কার করা দরকার। বিষয়টি তাঁরাও স্বীকার করেন। তবে ক্লাস বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করানোটা ঠিক হয়নি। শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হয়েছে, সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধনে অংশ নিতে।

উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেল বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফেরত পাঠাই।’ শিক্ষার্থীদের দিয়ে এ ধরনের কাজ কারানোটা উচিত হয়নি মনে করেন তিনিও।

আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেল আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সব সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। বিশেষ করে শিক্ষা ও যোগাযোগব্যবস্থায়। কাজেই জলাবদ্ধতার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানালে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হতো।

বামনডাঙ্গা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম শহীদ বলেন, ‘সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নয়। ১১টার পরপর শিক্ষার্থীদের স্কুলে নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা প্রচণ্ড ঘেমে যাওয়ার কারণে নাম হাজিরা করে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে বামনডাঙ্গা বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কাশেমের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি ধরেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মু. মাহমুদ হোসেন মণ্ডল বলেন, সড়কের জলাবদ্ধতার বিষয়টি কখনো তাঁকে জানানো হয়নি। তা ছাড়া, শিক্ষার্থীদের দিয়ে সড়ক অবরোধের বিষয়টিও তিনি জানেন না। অন্যের মুখে শুনেছেন। এটি করা ঠিক হয়নি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম হারুন-উর-রশিদ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। কেন তাঁরা এটি করেছেন, কারণ জানতে চাইব।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দিয়ে সড়ক অবরোধ করিয়ে ঠিক করেননি প্রধান শিক্ষকেরা। তাঁদের কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে চাইব—কেন তাঁরা এ ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করেছেন। তা না হলে আমি নিজেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব। শুনেছি, তাঁরা শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে এটি করেছেন।’ সেই সঙ্গে সড়কের অংশটুকু সংস্কার করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে উপজেলা প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত