মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা
২৪ আগস্ট, ১৯৯৫, দিনাজপুর। কিশোরী ইয়াসমিনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল সেদিন।
এরপর বিভিন্ন ঘটনাপরম্পরায় বাংলাদেশ সরকার ২৪ আগস্টকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। কিন্তু প্রায় তিন দশক পর দেখা যাচ্ছে, দেশে নারী নির্যাতনের হার কমেনি তো বটেই, বেড়ে চলেছে উদ্বেগজনক হারে। কিশোরী ইয়াসমিন যে কারণে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিল, সেই ধর্ষণের হার প্রতিবছর যেভাবে বাড়ছে তাতে দিবসটি পালনের যৌক্তিকতার ক্ষেত্রেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে ২৯৫ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৮ জন শিশুসহ ৭৩ জন। এর মধ্যে ১০ শিশু, ৯ জন নারীসহ ১৯ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, ১ শিশু ও ২ জন নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ১ জন শিশুর ক্ষেত্রে ধর্ষণের পর আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। এ ছাড়া ৯ শিশুসহ ১৩ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
ডেডলাইন ২০২২
২ আগস্ট, ২০২২, টাঙ্গাইল। ছিনতাই করা চলন্ত বাসে যাত্রীদের তিন ঘণ্টা জিম্মি করে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ দেশে একই সঙ্গে বাস ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা এর আগে ঘটেছে বলে শোনা যায়নি। ভুক্তভোগীর অপরাধ, তিনি ডাকাতির প্রতিবাদ করেছিলেন।
৫ আগস্ট রাতে গাজীপুরে যাত্রীবাহী বাসে চলন্ত অবস্থায় এক নারীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। ৬ আগস্ট পঞ্চগড়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় এক কিশোরী।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এক জরিপে জানিয়েছে, এ বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসের মধ্যে ১ হাজার ৯৯৯ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে আছে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, যৌন নিপীড়ন, যৌতুকের কারণে নির্যাতন, পারিবারিক সহিংসতা ও অ্যাসিড-সন্ত্রাসের মতো ভয়াবহ বিষয়। এ ছাড়া আছে উত্ত্যক্ত করার মতো নিয়মিত ঘটনা।
ঘটনা চলমান
এ শুধু আগস্ট মাস বা ১৯৯৫ সাল কিংবা ২০২২ সালের ঘটনা নয়। আমাদের সমাজে নারী নির্যাতন একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ বলেন, ‘একজন পুরুষ বা সামগ্রিকভাবে পুরুষেরা বা পিতৃতান্ত্রিক সমাজে এরা কেউই অপরাধ হিসেবে ধর্ষণের প্রকৃত ধরন চিহ্নিত করে না এবং নারীর এই নিপীড়নের মাত্রা কখনোই উপলব্ধি করে না।…ধর্ষণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অনুষ্ঠিত হয় নারীর প্রতি শাস্তি হিসেবে।… ব্যক্তিগত পর্যায়েও বেশির ভাগ ধর্ষণই সংঘটিত হয় নারীর অবাধ্যতার শাস্তি হিসেবে। পুরুষ নিতান্ত যৌন পরিতৃপ্তির জন্য ধর্ষণ করে না।’
আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ জানান, ধর্ষণের প্রবণতা বৃদ্ধির পেছনে কারণ হচ্ছে মিসোজিনি বা নারীবিদ্বেষ বা নারীর প্রতি পুরুষের ঘৃণা বৃদ্ধি পাওয়া। আমাদের দেশে তিন দশকজুড়ে চলমান রাজনৈতিক প্রচারণা, পরিবর্তন, এসবের মূল বৈশিষ্ট্য লক্ষ করলে দেখা যাবে, সমাজকে অগ্রসর করে নেওয়ার বিপরীতে পেছন দিকে ঠেলে নেওয়ার ঝোঁক বেড়েছে। ফলে আমাদের এখানে নারীর প্রতি বিদ্বেষ বেড়েছে। ধর্ষণের হার বেড়ে যাওয়া সমাজে সেই মিসোজিনি বা নারীবিদ্বেষ বৃদ্ধিরই বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
পুরুষের অনুশোচনা
নিপীড়ক হিসেবে পুরুষেরা কি কখনো কখনো অনুতপ্ত বা অনুশোচনায় ভোগেন? এ বিষয়ে পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেনের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এলআইসি) মীর আবু তৌহিদ বলেন, ‘একজন নিপীড়ক, একজন অপরাধী। তাদের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের জন্য ‘ক্রিমিনাল সাইকোলজি’ নামের একটি আলাদা ফিল্ডই রয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, নিপীড়নের কারণের ওপর নির্ভর করে বলা যায়, নিপীড়কেরা দুই ধরনের। এক ধরনের, অপরাধগুলো করে নিজের আনন্দের জন্য, মানসিক-শারীরিক বা অর্থনৈতিক লাভের আশায়। তাদের ক্ষেত্রে ভিকটিমকে তারা দেখে অবজেক্ট হিসেবে। অনেক সময় তারা ‘সেলফ নিউট্রালাইজেশন’-এর মাধ্যমে তাদের অপরাধকে জাস্টিফাই করে এবং ভিকটিমকেই অপরাধের জন্য দায়ী করে। ফলে তাদের অনুশোচনায় ভোগার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
আরেকটি ধরন হচ্ছে, মানসিক সমস্যা থেকে, পারিপার্শ্বিক চাপে বা সহযোগী হিসেবে এ ধরনের নিপীড়নে অংশ নিয়ে থাকে। তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই অনুশোচনা হতে পারে। অনেক সময় তাদের ভেতরে একধরনের মানসিক দ্বন্দ্বও হয়তো তৈরি হয়। তবে সেটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আইনের আওতায় আসার পরে বা সমাজের চোখে নিপীড়ক হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পরে।’
নারী নির্যাতনের ঘটনায় অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে, অপরাধের ধরনের জন্য নিত্যনতুন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সহকারী মহাপরিদর্শক মীর আবু তৌহিদ।
নিপীড়ক হিসেবে পুরুষদের কোন ধরনের মনস্তাত্ত্বিক বিষয় কাজ করে? এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষ, নারী-পুরুষ উভয়ই নিপীড়ক হতে পারে। লিঙ্গভেদে নিপীড়নের ধরন এবং মাত্রায় পার্থক্য থাকলেও, সবারই সে কাজ করার আশঙ্কা থাকে। ইতিবাচকভাবে ধরে নিই, মানুষমাত্রই ভালো। বিভিন্ন প্রতিকূল অভিজ্ঞতায় সেই ভালো মানুষেরাই একেকজন অপরাধী হয়ে ওঠেন।’
গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিপীড়ন করেন, তাঁরা নিজেরাও নিপীড়ন বা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন; বিশেষ করে তাঁদের শৈশবের অভিজ্ঞতা খুবই নেতিবাচক। নিপীড়ন করার সময় তাঁরা কিছুটা প্রাপ্তির আনন্দ পেয়ে থাকেন। পরে আবার অনুশোচনায় ভোগেন। যেহেতু বাংলাদেশে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য এখনো বিস্তৃত, তাই লিঙ্গভিত্তিক নির্যাতন বা শোষণের ঘটনাও অহরহ ঘটছে।
ড. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘দেশব্যাপী তরুণদের নিয়ে এক গবেষণায় আমরা দেখেছি, দেশের অর্ধেকের বেশি তরুণ বৈষম্যমূলক জেন্ডার নর্ম ধারণ করেন। যেমন ৬৩ শতাংশ তরুণ মনে করেন, পোশাকের কারণে নারী ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হন।’ বিশ্লেষণ যেভাবেই করা হোক না কেন, এগুলো অপরাধ। ড. আজহারুল ইসলাম বলেছেন, ‘প্রধানত আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে এগুলোকে প্রতিহত করতে হবে।… ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র একটি বাস্তুতন্ত্রে নিবিড়ভাবে আবদ্ধ। এখানে কোনো একটি অংশে ব্যাপক বৈষম্য আর অনিয়ম বহাল থাকলে অন্য অংশেও তার প্রভাব পড়ে।’
আজ নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। আগামী বছরের এই দিনে নারীর প্রতি নির্যাতনের মাত্রা কি কমবে?
২৪ আগস্ট, ১৯৯৫, দিনাজপুর। কিশোরী ইয়াসমিনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল সেদিন।
এরপর বিভিন্ন ঘটনাপরম্পরায় বাংলাদেশ সরকার ২৪ আগস্টকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। কিন্তু প্রায় তিন দশক পর দেখা যাচ্ছে, দেশে নারী নির্যাতনের হার কমেনি তো বটেই, বেড়ে চলেছে উদ্বেগজনক হারে। কিশোরী ইয়াসমিন যে কারণে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিল, সেই ধর্ষণের হার প্রতিবছর যেভাবে বাড়ছে তাতে দিবসটি পালনের যৌক্তিকতার ক্ষেত্রেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে ২৯৫ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৮ জন শিশুসহ ৭৩ জন। এর মধ্যে ১০ শিশু, ৯ জন নারীসহ ১৯ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, ১ শিশু ও ২ জন নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ১ জন শিশুর ক্ষেত্রে ধর্ষণের পর আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। এ ছাড়া ৯ শিশুসহ ১৩ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
ডেডলাইন ২০২২
২ আগস্ট, ২০২২, টাঙ্গাইল। ছিনতাই করা চলন্ত বাসে যাত্রীদের তিন ঘণ্টা জিম্মি করে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ দেশে একই সঙ্গে বাস ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা এর আগে ঘটেছে বলে শোনা যায়নি। ভুক্তভোগীর অপরাধ, তিনি ডাকাতির প্রতিবাদ করেছিলেন।
৫ আগস্ট রাতে গাজীপুরে যাত্রীবাহী বাসে চলন্ত অবস্থায় এক নারীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। ৬ আগস্ট পঞ্চগড়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় এক কিশোরী।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এক জরিপে জানিয়েছে, এ বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসের মধ্যে ১ হাজার ৯৯৯ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে আছে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, যৌন নিপীড়ন, যৌতুকের কারণে নির্যাতন, পারিবারিক সহিংসতা ও অ্যাসিড-সন্ত্রাসের মতো ভয়াবহ বিষয়। এ ছাড়া আছে উত্ত্যক্ত করার মতো নিয়মিত ঘটনা।
ঘটনা চলমান
এ শুধু আগস্ট মাস বা ১৯৯৫ সাল কিংবা ২০২২ সালের ঘটনা নয়। আমাদের সমাজে নারী নির্যাতন একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ বলেন, ‘একজন পুরুষ বা সামগ্রিকভাবে পুরুষেরা বা পিতৃতান্ত্রিক সমাজে এরা কেউই অপরাধ হিসেবে ধর্ষণের প্রকৃত ধরন চিহ্নিত করে না এবং নারীর এই নিপীড়নের মাত্রা কখনোই উপলব্ধি করে না।…ধর্ষণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অনুষ্ঠিত হয় নারীর প্রতি শাস্তি হিসেবে।… ব্যক্তিগত পর্যায়েও বেশির ভাগ ধর্ষণই সংঘটিত হয় নারীর অবাধ্যতার শাস্তি হিসেবে। পুরুষ নিতান্ত যৌন পরিতৃপ্তির জন্য ধর্ষণ করে না।’
আইনজীবী ইমতিয়াজ মাহমুদ জানান, ধর্ষণের প্রবণতা বৃদ্ধির পেছনে কারণ হচ্ছে মিসোজিনি বা নারীবিদ্বেষ বা নারীর প্রতি পুরুষের ঘৃণা বৃদ্ধি পাওয়া। আমাদের দেশে তিন দশকজুড়ে চলমান রাজনৈতিক প্রচারণা, পরিবর্তন, এসবের মূল বৈশিষ্ট্য লক্ষ করলে দেখা যাবে, সমাজকে অগ্রসর করে নেওয়ার বিপরীতে পেছন দিকে ঠেলে নেওয়ার ঝোঁক বেড়েছে। ফলে আমাদের এখানে নারীর প্রতি বিদ্বেষ বেড়েছে। ধর্ষণের হার বেড়ে যাওয়া সমাজে সেই মিসোজিনি বা নারীবিদ্বেষ বৃদ্ধিরই বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
পুরুষের অনুশোচনা
নিপীড়ক হিসেবে পুরুষেরা কি কখনো কখনো অনুতপ্ত বা অনুশোচনায় ভোগেন? এ বিষয়ে পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেনের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এলআইসি) মীর আবু তৌহিদ বলেন, ‘একজন নিপীড়ক, একজন অপরাধী। তাদের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের জন্য ‘ক্রিমিনাল সাইকোলজি’ নামের একটি আলাদা ফিল্ডই রয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, নিপীড়নের কারণের ওপর নির্ভর করে বলা যায়, নিপীড়কেরা দুই ধরনের। এক ধরনের, অপরাধগুলো করে নিজের আনন্দের জন্য, মানসিক-শারীরিক বা অর্থনৈতিক লাভের আশায়। তাদের ক্ষেত্রে ভিকটিমকে তারা দেখে অবজেক্ট হিসেবে। অনেক সময় তারা ‘সেলফ নিউট্রালাইজেশন’-এর মাধ্যমে তাদের অপরাধকে জাস্টিফাই করে এবং ভিকটিমকেই অপরাধের জন্য দায়ী করে। ফলে তাদের অনুশোচনায় ভোগার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
আরেকটি ধরন হচ্ছে, মানসিক সমস্যা থেকে, পারিপার্শ্বিক চাপে বা সহযোগী হিসেবে এ ধরনের নিপীড়নে অংশ নিয়ে থাকে। তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময়ই অনুশোচনা হতে পারে। অনেক সময় তাদের ভেতরে একধরনের মানসিক দ্বন্দ্বও হয়তো তৈরি হয়। তবে সেটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আইনের আওতায় আসার পরে বা সমাজের চোখে নিপীড়ক হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পরে।’
নারী নির্যাতনের ঘটনায় অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে, অপরাধের ধরনের জন্য নিত্যনতুন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সহকারী মহাপরিদর্শক মীর আবু তৌহিদ।
নিপীড়ক হিসেবে পুরুষদের কোন ধরনের মনস্তাত্ত্বিক বিষয় কাজ করে? এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষ, নারী-পুরুষ উভয়ই নিপীড়ক হতে পারে। লিঙ্গভেদে নিপীড়নের ধরন এবং মাত্রায় পার্থক্য থাকলেও, সবারই সে কাজ করার আশঙ্কা থাকে। ইতিবাচকভাবে ধরে নিই, মানুষমাত্রই ভালো। বিভিন্ন প্রতিকূল অভিজ্ঞতায় সেই ভালো মানুষেরাই একেকজন অপরাধী হয়ে ওঠেন।’
গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা নিপীড়ন করেন, তাঁরা নিজেরাও নিপীড়ন বা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন; বিশেষ করে তাঁদের শৈশবের অভিজ্ঞতা খুবই নেতিবাচক। নিপীড়ন করার সময় তাঁরা কিছুটা প্রাপ্তির আনন্দ পেয়ে থাকেন। পরে আবার অনুশোচনায় ভোগেন। যেহেতু বাংলাদেশে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য এখনো বিস্তৃত, তাই লিঙ্গভিত্তিক নির্যাতন বা শোষণের ঘটনাও অহরহ ঘটছে।
ড. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘দেশব্যাপী তরুণদের নিয়ে এক গবেষণায় আমরা দেখেছি, দেশের অর্ধেকের বেশি তরুণ বৈষম্যমূলক জেন্ডার নর্ম ধারণ করেন। যেমন ৬৩ শতাংশ তরুণ মনে করেন, পোশাকের কারণে নারী ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হন।’ বিশ্লেষণ যেভাবেই করা হোক না কেন, এগুলো অপরাধ। ড. আজহারুল ইসলাম বলেছেন, ‘প্রধানত আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে এগুলোকে প্রতিহত করতে হবে।… ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র একটি বাস্তুতন্ত্রে নিবিড়ভাবে আবদ্ধ। এখানে কোনো একটি অংশে ব্যাপক বৈষম্য আর অনিয়ম বহাল থাকলে অন্য অংশেও তার প্রভাব পড়ে।’
আজ নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। আগামী বছরের এই দিনে নারীর প্রতি নির্যাতনের মাত্রা কি কমবে?
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৭ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪