Ajker Patrika

ঈদের ছুটিতে চাঙা পর্যটন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ মে ২০২২, ০৮: ১৪
ঈদের ছুটিতে চাঙা পর্যটন

করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিধিনিষেধের আওতায় ছিল গত দুই বছরের ঈদ। ফলে খাতসংশ্লিষ্টদের দিনের পর দিন বেকার থাকতে হয়েছে। করোনার পর এবার বিধিনিষেধমুক্ত প্রথম ঈদ উদ্‌যাপিত হলো। তাই মানুষ দেশ-বিদেশে বেড়ানোর সুযোগ পেলেন। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড থেকে জানা যায়, ঈদকেন্দ্রিক অন্তত ১০ লাখ মানুষ দেশীয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণ করছেন আর বিদেশভ্রমণে গেছেন অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ।

করোনায় গত দুই বছর বিপর্যস্ত ছিল দেশীয় পর্যটন খাত। এখন আবার পর্যটনশিল্পের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জাবেদ আহমেদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঈদে পর্যটনকেন্দ্রে মানুষের ঢল দেখে আমরা আনন্দিত। পর্যটনশিল্পের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। পর্যটনসেবার মান বেড়েছে। নিরাপত্তাব্যবস্থা বেশ ভালো। ঈদের সময় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে কোনো অসুবিধা হয়নি।’

ঈদে দেশীয় পর্যটনকেন্দ্রে ১০ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করছেন জানিয়ে জাবেদ আহমেদ বলেন, ‘প্রায় ১০ লাখ ট্যুরিস্ট ৭ মে পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন পর্যটন গন্তব্যে থাকছেন। এ ছাড়া ঈদের সময় প্রায় পাঁচ লাখ পর্যটক দেশের বাইরে গেছেন।’

বাংলাদেশ আউটবাউন্ড ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট গোলাম কাদির বলেন, এবারের ঈদে ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন খাতের নবযাত্রা শুরু হয়েছে। ঈদের ছুটিতে পাঁচ লাখের মতো পর্যটক দেশের বাইরে গেছেন। তাঁদের মধ্যে আকাশপথে গেছেন তিন লাখের মতো, আর দুই লাখ পর্যটক স্থলপথে বিদেশে গেছেন।

গোলাম কাদির আরও বলেন, ‘স্থলপথে বেশি পর্যটক গেছেন ভারত ও নেপালে। আকাশপথে বেশি গেছেন দুবাই, তুরস্ক, থাইল্যান্ড, মালদ্বীপ ও মালয়েশিয়ায়।’

ঈদের ছুটিতে দেশীয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে বেশি ভিড় রয়েছে কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামে। তারপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে কুয়াকাটা, সুন্দরবন, সিলেটের জাফলং ও শ্রীমঙ্গলে। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (বিক্রয় উন্নয়ন ও জনসংযোগ) জিয়াউল হক হাওলাদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ পর্যটনকেন্দ্রে মানুষের ভিড় অনেক বেড়েছে। দেশের অন্য পর্যটনকেন্দ্রের তুলনায় কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামে চাপ বেশি। ঈদের ছুটিতে সারা দেশে পর্যটন করপোরেশনের মালিকানাধীন হোটেল-মোটেলের ৮৫ ভাগ রুম বুকিং রয়েছে।’সিলেটের জাফলংয়ে দর্শনার্থীদের ভিড়।

ঈদযাত্রায় আকাশপথে বাড়ি গেছেন ৪০ হাজার মানুষ: যাতায়াতে বাস, ট্রেন ও লঞ্চের ভোগান্তি থেকে বাঁচতে অনেকের প্রথম পছন্দ আকাশপথ। ফলে ঈদযাত্রায় বাড়ছে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের চাহিদা। এয়ারলাইনসের তথ্য বলছে, ঈদযাত্রায় আকাশপথে অন্তত ৪০ হাজার মানুষ বাড়ি ফিরেছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করোনার কারণে গত দুই বছর ঈদের সময় আকাশপথে যাত্রীর চাপ না থাকলেও এবার ঈদে বাড়তি চাপ ছিল। ঈদের কয়েক দিন আগে থেকে অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে শিডিউল ফ্লাইটের অধিকাংশ এয়ার টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। আকাশপথে সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী ও বরিশালের টিকিটের চাহিদা ছিল তুলনামূলক বেশি।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, ২৮ এপ্রিল থেকে ঈদের আগ পর্যন্ত সব কটি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বুকিং ছিল। যাত্রী চাপ সামলাতে শিডিউল ফ্লাইটের বাইরে রাজশাহীতে একটা ও সৈয়দপুরে দুটি বাড়তি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। ঈদের আগের কয়েক দিনের যাত্রীদের পরিসংখ্যান হিসাব করলে দেখা যায়, অন্তত ৪০ হাজার যাত্রী আকাশপথে ঢাকা ছেড়েছেন। ২৮ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত এই পাঁচ দিনে ২৫ থেকে ৩০ হাজার যাত্রী ফ্লাইটে বাড়ি ফিরেছেন।’

আকাশপথে দেশের বাইরে কতসংখ্যক যাত্রী গেছেন জানতে চাইলে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আকাশপথে দেশের বাইরে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বলা অনেক কঠিন। কারণ, এ সময় কোনো বাড়তি ফ্লাইট ছিল না।’

যাত্রী চাপ সামলাতে ঈদের আগে দিনে তিন-চারটি অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করেছে নভোএয়ার। সংস্থার হেড অব মার্কেটিং মেসবাহ উল ইসলাম বলেন, ‘২৮ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত শিডিউল ফ্লাইটের বাইরে তিন-চারটি অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করেছি। ঈদের পরে অনেকে এখন আকাশপথে ঢাকায় ফিরছেন। ৮ মে পর্যন্ত ঢাকাগামী অভ্যন্তরীণ সব ফ্লাইটের টিকিট বুকিং হয়ে গেছে।’

ঈদের ছুটিতে এবার মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে ভ্রমণপিয়াসীদের ঢল নামে

ঈদের আগে কয়েক দিনে আকাশপথে ৪০ হাজারের বেশি যাত্রী ভ্রমণ করেছেন বলে জানিয়েছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঈদের সময় আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের চেয়ে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে অনেক চাপ ছিল। ফলে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন এয়ারলাইনসে সবাই ফ্লাইট বাড়িয়েছিল। মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করেছেন। আমরা বিমানবন্দরে বাড়তি যাত্রীদের বসার ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করেছি। যেখানে দিনে আমাদের অভ্যন্তরীণ ৫-৬ হাজার যাত্রী থাকেন, সেখানে ঈদের আগে ৮-১০ হাজার যাত্রী হয়ে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

সাবেক ‘র’-এর প্রধানের নেতৃত্বে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত