Ajker Patrika

১০ টাকা কেজির চাল পেলেন বিত্তবানেরা

গৌরনদী প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ০০
১০ টাকা কেজির চাল পেলেন বিত্তবানেরা

গৌরনদী উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি বিধিমালা উপেক্ষা করে মৃত ব্যক্তি, পাকা ভবনের মালিক, প্রবাসী, বিত্তবান, এক ঘরে একাধিক কার্ড এবং অন্য এলাকার বাসিন্দার নামে কার্ড বিতরণের তথ্য মিলেছে। ফলে এ কর্মসূচির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বহু হতদরিদ্র পরিবার।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় জনপ্রতিনিধিদের তালিকা অনুযায়ী ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলার সাত ইউনিয়নে কার্ড ইস্যু করা হয়েছে।

সরেজমিন স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বার্থী ইউনিয়নের তালিকায় রয়েছে পার্শ্ববর্তী কালকিনি উপজেলার কালকিনি গ্রামের ১১৭ নম্বর কার্ডধারী মো. সাহেব আলী ফকির, একই গ্রামের ১১৮ নম্বর কার্ডধারী ইমামুল ইসলামের নাম। বার্থী ইউনিয়নের তালিকায় ১৫০০ নম্বর কার্ডধারী দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর স্ত্রী ১৩৯৬ নম্বর কার্ডধারী নাছিমা বেগম, বার্থী গ্রামের ১৭১৫ নম্বর কার্ডধারী মো. আবুল কালাম আজাদ ও তার সহোদর সৌদিপ্রবাসী ১৫১৯ নম্বর কার্ডধারী মো. আলামিন প্যাদা। সুবিধাভোগীরা গত সাড়ে ৫ বছর ধরে ১০ টাকা কেজি দরের চাল গ্রহণ করে আসছে।

শরিকল ইউপির নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য সৈয়দ মিজানুর রহমান বাদশা অভিযোগ করে বলেন, ‘সদ্য সাবেক মেম্বার ফারুক হোসেন সরদার সাড়ে ৫ বছর আগে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় একশ কার্ড ইস্যু করে বিতরণ করেন। পক্ষপাতিত্ব করে তাঁর স্ত্রী ফরিদা বেগম, সহোদর জলিল সরদার, রিয়াজ সরদারের নামে কার্ড বরাদ্দ করান। এ ছাড়া ইরাক প্রবাসী রাসেল হাওলাদার, কুয়েত প্রবাসী শাহাদাত সরদার, মালয়েশিয়া প্রবাসী সুমন চৌকিদারসহ বিত্তবানদের মধ্যে কার্ড ইস্যু করে বিতরণ করেন। গত ১৫ নভেম্বর এলাকাবাসীর আপত্তির মুখে ৬৬টি কার্ড জব্দ করা হয়।’

ফারুক সরদার বলেন, নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য বাদশা নিজের সমর্থকদের মাঝে কার্ডগুলো বিতরণের জন্য জব্দ করেছেন। ভুক্তভোগীরা গত ইউএনও বরাবরে লিখিত অভিযোগ করলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করেন তিনি।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল বাসার বলেন, তদন্তে জব্দকৃত ৬৬টি কার্ডের মধ্যে ২ জন মৃত ব্যক্তি, ৩ জন প্রবাসী, ২২ জন বিত্তবান ও ৩৯ জন বিভিন্ন ভাতাভোগীর নামে ইস্যু রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নবনির্বাচিত একাধিক জনপ্রতিনিধি জানান, শরিকলের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মতো তদন্ত করলে বাকি ইউপিগুলোতেও অনিয়মের ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা আশোক কুমার জানান, শরিকল ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডে তিনি তদন্ত করে ৮টি কার্ড বাতিলের জন্য ইউএনওর কাছে সুপারিশ করেন। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তালিকা থেকে বিত্তবানদের নাম বাদ দেওয়া হবে।

উপজেলা খাদ্য বান্ধব কমিটির সভাপতি ও ইউএনও বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ইস্যুকৃত কার্ডের তালিকা সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী যাচাই বাছাইয়ের জন্য সাত ইউপি চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত