Ajker Patrika

সময় বাড়িয়েও সুনামগঞ্জের ফসল রক্ষা বাঁধের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি

মোসাইদ রাহাত, সুনামগঞ্জ
সময় বাড়িয়েও সুনামগঞ্জের ফসল রক্ষা বাঁধের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি

সুনামগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এবার বরাদ্দ ছিল বেশি। আবহাওয়াও ছিল তুলনামূলক অনুকূলে। কিন্তু তারপরও নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি বাঁধের নির্মাণকাজ। যতটুকু কাজ হয়েছে, তার মান নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। অনেক বাঁধেই করা হয়নি দুরমুশের কাজ। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দাবি, এখন পর্যন্ত ৯৮ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।

এদিকে বড় কোনো দুর্যোগ এলে একটি বাঁধও টিকবে না বলে মনে করছেন কৃষক ও হাওর আন্দোলনের নেতারা। এখনো বাঁধের ২৫ ভাগ কাজ বাকি বলে তাঁদের অভিযোগ। 
পাউবোর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সুনামগঞ্জের ৯৫টি হাওরের মধ্যে ৪০টিতে এবার ৫৯১ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে ৭৩৪টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩০ কোটি টাকা। গত ১৫ ডিসেম্বর শুরু হয়ে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি। তবে ৭ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হলেও কাজ শেষ হয়নি। 
সরেজমিন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, মধ্যনগর, দিরাই ও ধর্মপাশা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ ফসল রক্ষা বাঁধের মাটির কাজ শেষ। তবে দুরমুশের কাজ হয়নি। বাঁধের ধারে লাগানো হয়নি ঘাসও।

জামালগঞ্জের হালির হাওরের ২৬ নম্বর পিআইসির ঘনিয়ার বিলের ক্লোজারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ একটি বাঁধ। ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই বাঁধের কাজ শেষ হলেও ঝুঁকিতে ছিল হাওরের ভেতরের দিকের বাঁধসংলগ্ন গভীর গর্তটি। পরে কৃষকের চাপে পাউবো গর্তটি ভরাটে উদ্যোগ নেয়। তবে নামমাত্র মাটি ফেলে কাজের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

জামালগঞ্জ পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম জনি বলেন, ‘হালির হাওরের ঘনিয়ার বিলের ক্লোজার ও শনি হাওরের নান্টুখালী ক্লোজারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা নজরদারিতে রেখেছি।’

এদিকে যাচ্ছেতাইভাবে বাঁধের কাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়। তিনি বলেন, ‘এবারের বাঁধের কাজ পানি উন্নয়ন বোর্ড গোপনেই শেষ করতেছে। যার কারণ, তারা ৭ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়িয়েও কাজ শেষ করতে পারেনি। তাদের দাবি ৯৮ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে, কিন্তু আমরা মাঠে গিয়ে দেখেছি, এখনো ২৫ শতাংশ বাঁধের কাজ বাকি।’ তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ের তুলনায় এবার আবহাওয়া ভালো থাকলেও গাফিলতির কারণে অতিরিক্ত সময় বাড়িয়েও কাজ শেষ করা যায়নি। আমরা খুব শিগগির এসব কাজের অনিয়ম তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন ডাকব।’

সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের বাঁধের কাজ সমাপ্ত, ৯৮ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সেসব বাঁধে ঘাস লাগানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের চাপ দিচ্ছি, নজরদারির মধ্যে রাখছি। তা ছাড়া কিস্তির টাকা পাচ্ছেন না বলে যারা দাবি করেছেন, তাঁদের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁদের বরাদ্দের বাকি টাকা দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত