Ajker Patrika

চোখে পড়ে না ধানের গোলা

রাসেল আহমেদ, তেরখাদা
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৪: ১৪
চোখে পড়ে না ধানের গোলা

তেরখাদা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এক সময় সম্ভ্রান্ত কৃষকের বাড়ির উঠোনে শোভা পেত ধান রাখার ‘গোলা ঘর’। এখন সেটা বিলুপ্তির পথে। বাঁশ দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি গোল আকৃতির কাঠামোই গোলা। এঁটেল মাটির মণ্ড তৈরি করে ভেতরে সে মাটির প্রলেপ লাগিয়ে রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে তার ওপরে পিরামিড আকৃতির টিনের চালা দিয়ে বিশেষ উপায়ে তৈরি করা হতো এই গোলা ঘর।

ছোট বড় মানভেদে এসব গোলায় ১০০ থেকে ৩০০ মণ ফসল সংরক্ষণ করা যায়। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসল প্রথমে রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে গোলায় সংরক্ষণ করতেন। এই গোলা ঘর টিকিয়ে রাখতে সরকারি সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন সচেতন কৃষক মহল।

উপজেলা সদরের কাটেংগা এলাকার কৃষক ইউনুস মোল্লা বলেন, এক সময় মাঠ ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু, আর গোলা ভরা ধান গ্রামের সম্ভ্রান্ত কৃষকের পরিচয় বহন করত। সভ্যতার বিবর্তন আর আধুনিক কৃষি সংরক্ষণ পদ্ধতি আবিষ্কারের ফলে হারাতে বসেছে কৃষকের ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা। আমরা পূর্বপুরুষদের ব্যবহৃত সেই ধানের গোলা ঘরটি এখন স্মৃতি চিহ্ন হিসাবে রেখে দিয়েছি।

শতদল কলেজের ক্রীড়া শিক্ষক বিপুল কুমার মৈত্রী বলেন, সত্তর-আশির দশকের দিকে এই সব ধানের গোলা ঘর কৃষক ও সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় ছিল। কারণ এই গোলায় কৃষি ফসল সংরক্ষণ টেকসই হওয়ায় সাধারণ মানুষ এটাকে সাদরে গ্রহণ করেছিলেন।

তিনিও পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে গোলা ঘরটি স্মৃতি হিসাবে এখনো টিকিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেন, এখন আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে মানুষের পারিবারিক ব্যবহার্য উপকরণে। ফলে প্রযুক্তির দৌড়ে টিকতে না পেরে গোলা ঘর এখন বিলুপ্তির পথে। তবে দেশের বিলুপ্তপ্রায় গোলা ঘর টিকিয়ে রাখতে কৃষি বিভাগের এগিয়ে আসা দরকার।

জয়সেনা গ্রামের কৃষক নিজাম খাঁ বলেন, আশি-নব্বই দশকের দিকে একটা গোলা তৈরিতে খরচ হতো ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। গোলা নির্মাণ করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় আগে দক্ষ শ্রমিক ছিল। এখন এই পেশাটিও হারিয়ে গেছে। এখন চট বা পলিথিনের বস্তায় অথবা প্লাস্টিকের ড্রামে ভরে ফসলাদি সংরক্ষণ করা হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ে কৃষকদের আবাদি ও বসবাসের জমির পরিমাণ অনেক কমে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত