Ajker Patrika

অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

মাহবুব আলম আরিফ, মুরাদনগর
অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

মুরাদনগর উপজেলার তিনটি গ্রামের প্রায় ২৫০টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পাশাপাশি এসব সংযোগে ব্যবহৃত প্রায় ১ হাজার ৫০০ ফুট পাইপ উত্তোলন করে জব্দ করা হয়।

গতকাল বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের নয়াকান্দি, দক্ষিণ দিলালপুর ও শুশুন্ডা গ্রামে এ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান চালান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মমিন। এতে বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষ থেকে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বৈধ গ্যাস সংযোগ থেকে এসব অবৈধ সংযোগ দেওয়া হয়। দুই থেকে তিন মাস আগে বৈধ গ্যাস সংযোগের সুবিধা ভোগকারীরা অবৈধ গ্যাস সংযোগের তালিকাসহ একটি অভিযোগ বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, পেট্রোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেন।

অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫-২০১৬ সালে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও দালাল চক্র বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন দেবীদ্বার আঞ্চলিক কার্যালয় ও জেলা কার্যালয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে উপজেলার ভুবনঘর, দড়িকান্দি, দুলারামপুর গ্রামে ১১ হাজার ফুট, বোরারচর, জাহাপুর গ্রামে ৩০ হাজার ফুট, দড়িকান্দি গ্রামে ১ কিলোমিটার, করকটিয়া, সোনাপুর গ্রামে ২ কিলোমিটার, সুবিলারচর গ্রামে ২ কিলোমিটার, কোম্পানীগঞ্জে ৩ কিলোমিটার, রানীমুহুরী, বড়ইয়াকুড়ি, বোরারচর গ্রামে ৬ কিলোমিটার, নোয়াকান্দি গ্রামে ৯০০ ফুট, ধামঘর গ্রামে ৩৫০ ফুট, পালাসুতা গ্রামে ৬ হাজার ফুট, পায়ব গ্রামে ২ কিলোমিটার, শুশুন্ডা গ্রামে ৩ কিলোমিটার, কুলুবাড়ি, বাখরনগর গ্রামের ৫ কিলোমিটার, মধ্যনগর, করিমপুর গ্রামে ৩ কিলোমিটার, নবীপুর গ্রামে ৩ কিলোমিটার, নগরপাড় গ্রামে দেড় কিলোমিটার, গুঞ্জর গ্রামে ৩ কিলোমিটার, পৈয়াপাথর গ্রামে দেড় কিলোমিটার ও নহল, রাবনগর, ধামঘর গ্রামে ৩ হাজার ৬০০ ফুট লাইনের মাধ্যমে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেয় ওই চক্রটি। তা ছাড়া গ্রাহকদের কাছ থেকে এসবের সংযোগের বিনিময়ে নেওয়া হয় কোটি কোটি টাকা।

ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন কোম্পানি ও পেট্রোবাংলার প্রধান কার্যালয় থেকে দুটি দল সরেজমিনে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পায়। পরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলে অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয় বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন কোম্পানি।

অবৈধ গ্যাস সংযোগের গ্রাহকেরা বলেন, ‘ঠিকাদার হারুন অর রশিদ প্রতি সংযোগের জন্য তাঁদের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা নেন। সংযোগ পাওয়ার পর থেকে বইয়ের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত বিল পরিশোধ করে আসছি। অনলাইনে আমাদের নামও আছে, তাহলে কেন গ্যাস সংযোগ বন্ধ হবে? আমাদের ব্যক্তিগত টাকা দিয়ে কেনা পাইপ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাহলে গ্যাস ডিসট্রিবিউশন কোম্পানি কীভাবে অনলাইনে আমাদের নাম তুলল, আমাদের কে বিল বই দিল?

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ঠিকাদার হারুন অর রশিদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বহুবার কল দেওয়া হলেও তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কুমিল্লা দপ্তরের ভিজিল্যান্স শাখার ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন জানান, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে অবৈধ গ্যাস সংযোগের একটি তালিকা করা হয়েছে। সেখানে মুরাদনগর উপজেলার প্রায় ৪০টি গ্রামের নাম রয়েছে। আজ তিনটি গ্রামের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। নিয়মিত এ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান চলবে। অপরদিকে যাঁরা এসব অবৈধ সংযোগ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত