Ajker Patrika

ঘোষিত হয় স্বাধীনতার রূপরেখা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ঘোষিত হয় স্বাধীনতার রূপরেখা

আজ ৩ মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা ঘোষণার দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাঠ করা হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার। এতে ঠিক করা হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা, জাতীয় সংগীত, জাতির পিতা এবং জাতীয় স্লোগান। আর আন্দোলনের ধারা হিসেবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত কর-খাজনা বন্ধ রাখা এবং সশস্ত্র সংগ্রামের কথা বলা হয়।

দুর্বার আন্দোলনের খবর যেন সবখানে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্য পাকিস্তানি সামরিক জান্তা সংবাদপত্রে সেন্সর আরোপ করেছিল। ওই দিন ১১০ নম্বর সামরিক আদেশ জারি করা হয়। আদেশ লঙ্ঘনের দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান ছিল। শুধু সেন্সর আরোপই নয়, কোনোভাবেই যাতে বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রামের খবর বহির্বিশ্বে পৌঁছাতে না পারে, সে জন্য প্রতিটি সংবাদপত্রের অফিসে ফোন করে এবং সশরীরে গিয়ে হুমকি-ধমকিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সব হুমকি-ধমকি ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই পরদিন আন্দোলনের খবর ফলাও করে প্রকাশ করেছিল ঢাকার কাগজগুলো।

পল্টন ময়দানে ৩ মার্চের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার বিশাল সমাবেশের পাঁচ কলাম ছবি এবং ওই জনসমুদ্রে ভাষণদানরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুই কলাম ছবিসহ দৈনিক ইত্তেফাক পরদিন প্রধান শিরোনাম করেছিল ‘ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত কর-খাজনা বন্ধ’। পাশেই ঢাকার পল্টন ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্য দেওয়ার একটি আলোকচিত্রের ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘বাংলার মানুষ খাজনা দেয়, ট্যাক্স দেয় রাষ্ট্র চালানোর জন্য—গুলি খাওয়ার জন্য নয়।’

ক্যাপশনের নিচে বড় আকারে একটি আলোকচিত্রে দেখা যায় পল্টন ময়দানের জনসভায় অংশ নেওয়া জনতার একাংশ। প্রধান প্রতিবেদনের নিচে ছিল যথাক্রমে ‘প্রেসিডেন্ট কর্তৃক নেতৃ-সম্মেলনের আমন্ত্রণ’ এবং ‘শেখ মুজিব কর্তৃক “বন্দুকের নলের মাথায়” সম্মেলনের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান’। পত্রিকাটির প্রথম পাতায় অন্যান্য শিরোনামের মধ্যে ছিল ‘উচ্ছৃংখলতা প্রতিহত করার কর্মসূচি’, ‘চট্টগ্রামে হাঙ্গামার বিবরণ’, ‘আহতদের পাশে বঙ্গবন্ধু’, ‘আমি যদি না থাকি’, ইত্যাদি।

ওই দিন বিকেলে ঢাকার পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগ ও জাতীয় শ্রমিক লীগ আয়োজিত জনসভায় বঙ্গবন্ধুর সামনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেছিলেন ছাত্রলীগের তখনকার সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ। ইশতেহারে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সাত কোটি মানুষের জন্য স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাম বলা হয়েছিল বাংলাদেশ। স্বাধীন দেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে নির্বাচন করা হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা...’ গানটি। সেই সব খবরে ঠাসা ছিল পরদিনের প্রায় সব সংবাদপত্র।

এ ছাড়া ছাত্র ইউনিয়নের এক সমাবেশে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে সংগ্রাম পরিচালনা করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। পরদিন দৈনিক সংবাদ এ-সংক্রান্ত খবরের শিরোনাম করেছিল ‘শহীদ মিনারে ছাত্র ইউনিয়নের সভা: যুক্তফ্রন্ট গঠন করিয়া সংগ্রাম পরিচালনার ডাক’। দৈনিক পাকিস্তান শিরোনাম করেছিল “এপসু’র সভা: এ সংগ্রাম কেউ রুখতে পারবে না”। পত্রিকাটির প্রধান শিরোনাম ছিল ‘ইয়াহিয়ার প্রস্তাব: মুজিবের প্রত্যাখ্যান’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত