Ajker Patrika

ইবির ৮ হল সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ

পল্লব আহমেদ সিয়াম, ইবি
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৩১
ইবির ৮ হল সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আটটি হলের সংস্কারকাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যায়ের প্রকৌশলীরাও এ সংস্কারকাজে সন্তুষ্ট নন বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব শাখা সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। তাই খোলার আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন ভবন সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য গত জুলাই মাসে অর্থ বরাদ্দ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। সেখানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বরাদ্দ পায় ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ টাকা আটটি হলকে বরাদ্দ দেয়। প্রকৌশল দপ্তর দরপত্রের মাধ্যমে আটটি হলের জন্য আটটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সংস্কারকাজের দায়িত্ব দেয়।

সংস্কারকাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর থেকে হলগুলো মেরামত ও রং করার জন্য বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। চলতি বছরের ৪ অক্টোবর ইবির সিন্ডিকেট সভায় ৯ অক্টোবর হল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্তের তিন মাস আগেই সংস্কারকাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, তা শুরু হয়েছে ৩ অক্টোবর। ফলে সংস্কারকাজ চলা অবস্থাতেই হলে উঠতে হয় আবাসিক শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলে ওঠার পর থেকেই নানা রকম ভোগান্তিতে পড়েছেন তাঁরা। হলগুলোতে বিদ্যুৎ ও পানির লাইনগুলো কোনো রকমে সচল করা গেছে। তবে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আগের বড় বেসিনগুলো সরিয়ে বসানো হয়েছে কম দামের ছোট বেসিন। নষ্ট হয়ে যাওয়া স্টিলের পানির ট্যাপ খুলে দেওয়া হচ্ছে নিম্নমানের প্লাস্টিকের ট্যাপ। কয়েকটি হলে ট্যাপ বসানোর দু-এক দিনের মধ্যে তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া হলের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ও ভাঙা অংশগুলোতে কোনো রকম সিমেন্ট ও বালুর আস্তরণ দিয়ে সংস্কারকাজ শেষ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা চলছে। সংস্কারকাজের শব্দে হলে থাকা আবাসিক শিক্ষার্থীরা মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে পারছেন না।

এ বিষয়ে লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাতে হল প্রশাসনকে দায়িত্ব দিলে এর এক-তৃতীয়াংশ বরাদ্দে আরও ভালো কাজ করা সম্ভব হতো। কিন্তু সিস্টেমের কাছে সবকিছুই আটকে যায়। আমরা প্রভোস্টরা এ সংস্কারকাজে সন্তুষ্ট হতে পারিনি।’

বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট নিলুফা বানু বলেন, ‘এসব কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের তদারকির কথা থাকলেও, তাঁরা কাজগুলোর কাছেই আসেন না। আমার বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা থাকার কারণে হলে থাকার সুযোগ হয় না। এই সুযোগে ঠিকাদাররা তাঁদের মতো করে কাজ করছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী শহীদ উদ্দিন মো. তারেক বলেন, ‘সংস্কারকাজ নিয়ে আমাদের কাছেও অভিযোগ আসছে। কয়েক জায়গার কাজে আমি নিজেও সন্তুষ্ট হতে পারিনি। অভিযোগ পাওয়ামাত্র আমরা লোক পাঠিয়ে সেটা ঠিক করার চেষ্টা করছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে খতিয়ে দেখা হবে।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘হলের সংস্কারকাজে অনিয়ম করলে আমাদের জন্যই খারাপ হবে। এ ক্ষেত্রে হল প্রভোস্টদের সচেতন থাকা দরকার। অনিয়ম হলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনকে জানাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত