Ajker Patrika

পুনর্নিমাণ হয়নি সেতুর পিলার

রাশেদ কামাল, কালিয়া (নড়াইল)
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ২৬
পুনর্নিমাণ হয়নি সেতুর পিলার

বালুবোঝাই বাল্কহেডের ধাক্কায় গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে কালিয়া সেতুর একটি পিলার ভেঙে নদীতে পড়ে । গত দুই মাসেও এর পুননির্মাণ করা হয়নি।

এছাড়াও নড়াইল জেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্নকারী ও উপজেলাটিকে দ্বিখণ্ডিত করা নবগঙ্গা নদীর ওপর নির্মাণাধীন কালিয়া সেতুর নির্মাণকাজ গত ৩ বছরে শেষ হয়নি। সেতুটির নির্মাণকাজের তৃতীয়বারের মতো বৃদ্ধি করা মেয়াদ ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ হবে কিনা তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানা সংশয় দেখা দিয়েছে। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হবে কবে, সেই প্রশ্নই এখন সাধারণ মানুষের।

নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ একনেকের সভায় নড়াইল-কালিয়া সড়কের নবগঙ্গা নদীর ওপর ৬৫ কোটি ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৩৪৪ টাকা ব্যয়ে ৬৫১.৮৩ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০.২৫ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট কালিয়া সেতুর নির্মাণের কাজ হাতে নেয় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। দাপ্তরিক কাজ শেষে মো. জামিল ইকবাল ও মো. মঈন উদ্দি বাশী নামক দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ এক বছরের মেয়াদে নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ২০১৯ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ না শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নকশা জটিলতা ও করোনাকালের দোহাই দিয়ে প্রথমবারে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এক বছর সময় বৃদ্ধি করে নেয়। সেই বর্ধিত সময়ের মধ্যেও কাজ শেষ না করে একই কায়দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে হাত করে আবারও ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সেতুটির নির্মাণকাজের সময়সীমা আরও এ বছর বাড়িয় নেন তাঁরা। গত ৩ বছরেও সেতুর কাজ শেষ না করতে পেরে আবারও তাঁরা একই ভাবে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত আরও এক বছর কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করে নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

একের পর এক সেতুটির নির্মাণকাজের সময়সীমা বৃদ্ধির ঘটনায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরাসহ সচেতন মহল। তাঁদের মতে গত ৩ বছরে সেতুটির প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ শেষ করা হয়েছে।

সেতুটির নির্মাণ শেষ হলে কালিয়া উপজেলাসহ নড়াইল জেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার যেমন নতুন দ্বার খুলে যাবে, তেমন কালিয়ার সঙ্গে নড়াইল জেলা সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেছেন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে স্বাধীনতার ৫০ বছরেও কালিয়ায় যেমন গড়ে ওঠেনি শিল্প-কলকারখানা, তেমন উপজেলার কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্যের কাঁচামাল বাজারজাত কারণে রয়েছে মারাত্মক সমস্যা। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক উন্নতি ঘটবে বলে মনে করেন তাঁরা। তাই সেতুটির নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরাসহ সচেতনমহল।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার মিনহাজুল ইসলাম বলেছেন, সেতুটির নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ, নকশা জটিলতা, ও প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ করোনা সংকটের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে এক বছর করে ৩ বার কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে ৬১ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বাল্কহেডের ধাক্কায় ভেঙে পড়া পিলারটি প্রতিস্থাপনের কোনো নির্দেশনা কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত দেয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পিলারটি পুনস্থাপন করা হবে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত