Ajker Patrika

৯ কোটি টাকার কাঁচা ইট নষ্ট

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ০৬
৯ কোটি টাকার কাঁচা ইট নষ্ট

চুয়াডাঙ্গায় চলতি মৌসুমে এখনো ইট উৎপাদনে যেতে পারেননি ইটভাটা মালিকেরা। জ্বালানি (কয়লা) সংকট ও দ্বিগুণেরও বেশি মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিলম্বিত হচ্ছে ইট উৎপাদন। এরই মধ্যে অসময়ের বৃষ্টি আরও ক্ষতি করেছে ইটভাটার মালিকদের। হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে জেলার ৯৫টি ইটভাটায় অন্তত ৯ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলে দাবি করেছে ইটভাটা মালিক সমিতি। কয়লার দাম ও অসময়ের বৃষ্টির ক্ষতিতে লোকসানে পড়েছেন মালিকেরা। একই সঙ্গে এ বছর ইট উৎপাদনে অনেক বেশি সময়ক্ষেপণ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে করে নির্মাণকাজ বাধাগ্রস্ত হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

জানা গেছে, গত বছর প্রতি টন কয়লার দাম ছিল সাড়ে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। কিন্তু চলতি মৌসুমে খরচ বেড়ে টনপ্রতি মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৯ থেকে ২২ হাজার টাকায়। আর এ কারণে অন্যান্য মৌসুমের চেয়ে অনেক দেরিতে ইটকাটা শুরু হয়। এ কারণে মাটিতেই পড়ে ছিল কাঁচা ইট। এরই মধ্যে বৃষ্টি দেয় বাগড়া। যার ফলে নষ্ট হয়ে যায় কাঁচা ইট। এরপর নষ্ট হওয়া ইট সরাতেও বেড়েছে খরচ। এতে দ্বিগুণ খরচে লোকসানে নাজেহাল ভাটা মালিকেরা।

চুয়াডাঙ্গা সদর ও আশপাশের বিভিন্ন ইটভাটা ঘুরে জানা যায়, গত বছরের ইট এরই মধ্যে বিক্রি শেষ। কিন্তু নতুন করে উৎপাদনে না যাওয়ায় জেলাজুড়ে ইটের বেশ সংকট তৈরি হচ্ছে। ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারি উন্নয়নকাজে ঠিকাদাররা ইট কিনে কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। আর নতুন ইট উৎপাদনের পর যে দামে বিক্রি হবে, তা বর্তমান বাজার দরের দ্বিগুণ। ভাটা সংশ্লিষ্টরা জানান, সাধারণত ইট উৎপাদনে যাওয়ার সময় সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে। সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়েই মাটি কেনা, মাটি থেকে কাঁচা ইট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়। কাঁচা ইট রোদে শুকিয়ে অক্টোবর মাসেই প্রথম কিস্তি ইট পোড়ানো শুরু করেন। কিন্তু এবার নভেম্বর মাস শুরুর পরও ইট উৎপাদন শুরু করা যায়নি।

ভাটামালিকদের ভাষ্য, গত বছর এক টন কয়লার দাম ছিল সাড়ে ৮ হাজার থেকে সাড়ে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। অথচ কয়েক মাসের ব্যবধানে এখন ১৯ থেকে ২২ হাজার টাকা এক টন কয়লার দাম। তা-ও প্রয়োজন অনুযায়ী পাওয়া যাবে কি না ঠিক নেই। এরই মধ্যে বৃষ্টিতে কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে। সে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতেও সময় লাগবে। এতে ইটের বড় সংকটও তৈরি হবে।

দামুড়হুদা উপজেলার ইটভাটা মালিক বকুল হোসেন জানান, একটি মৌসুমে আট রাউন্ডে ৭ থেকে ৮ লাখ করে মোট ৫০ থেকে ৬০ লাখ ইট তৈরি হয়। একেক রাউন্ডে ইট পোড়াতে সময় লাগে ২০ থেকে ২৫ দিন। এবার কয়লার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। আবার চলতি মৌসুমের প্রায় দুই মাস চলে গেছে। দাম না কমা পর্যন্ত কেউ ভাটা চালু করবে বলে মনে হচ্ছে না। এ ছাড়া বৃষ্টিতে অনেক ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে এবার ইট উৎপাদনে এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাটার মালিক আসিরুল ইসলাম সেলিম জানান, প্রতি রাউন্ডে ৭ থেকে ৮ লাখ ইট পোড়ানো হয়। এতে প্রায় ১৩০ টন কয়লা লাগে। এতে ৮ রাউন্ড পোড়ালে ১ হাজার টনের বেশি কয়লা প্রয়োজন হয়। তিনি আরও বলেন, ১ হাজার টন কয়লার দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা। সেই কয়লা এবার কিনতে হবে সোয়া ২ কোটি টাকায়। আবার টাকা হলেই কয়লা মিলছে না। সময়মতো সাপ্লাই পাওয়া যাচ্ছে না।

চুয়াডাঙ্গা জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোতালেব জানান, ২২ হাজার টাকায় কয়লা ক্রয় করা ব্যাপক ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন ভাটার মালিকেরা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এখনই এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তা না হলে বাজারে আসা নতুন ইটের উৎপাদন খরচ ব্যাপক বেড়ে যাবে।

মোতালেব আরও বলেন, এমনিতে এ বছর দেরিতে ইট কাটা শুরু হয়েছে। যখনই ইট কাটা শুরু হলো তখনই বাগড়া দিল বৃষ্টি। এতে ৯ কোটি টাকার কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

মেয়াদোত্তীর্ণ ঠিকাদারের নিয়ন্ত্রণে সার্ভার, ঝুলে আছে ৭ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

যুবককে ধর্ষণের প্রত্যয়নপত্র দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত